“এটা মনে হয় বাচ্চা মানুষের মতো, আমার ব্যাট আমিই খেলবো! আর কেউ খেলতে পারবে না। দলের স্বার্থে যেকোন জায়গায় খেলতে রাজি থাকা উচিত। আপনি ১০০-২০০ করলেন, দল হারলো, এই ব্যক্তিগত অর্জন দিয়ে কী হবে?”
-সাকিব আল হাসান, বিশ্বকাপের আগে টি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।
অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল বিশ্বকাপের আগে জানিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশের বিশ্বকাপগামী দল ঘোষণার আগে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (বিভিন্ন সূত্রমতে, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান স্বয়ং) তাকে প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নিরুৎসাহিত করেন, পরবর্তীতে ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকে নামার প্রস্তাব দেন। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে ওপেনিং করা তামিম ইকবাল রাজি হননি এই প্রস্তাবে। এরপরই সাকিব আল হাসান তার সাক্ষাৎকারে দলের প্রয়োজনে যেকোন জায়গায় ব্যাট করার প্রসঙ্গে কথা বলেন।
দলের প্রয়োজনে যে কাউকে যেকোনো জায়গায় ব্যাট করানোর এই ব্যাপারটাকে সাধারণভাবে ব্যাটিং অর্ডারের নমনীয়তা বলা যায়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাটসম্যানকে যে ব্যাটিং অর্ডারের নির্দিষ্ট জায়গাতেই নামতে হবে, এমনটা নয়। একেবারেই সাম্প্রতিক একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। বেন স্টোকসের অনুপস্থিতিতে ইংল্যান্ডের চার নম্বর জায়গাটা পেয়েছিলেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ওপেনার ডেভিড মালান আর জনি বেয়ারস্টোর দুর্দান্ত শুরুর পরে তিনে নামা জো রুটও যখন বড় ইনিংসের পথে, আটত্রিশতম ওভারে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটল দলীয় ২৬৬ রানে, সেই সময়ে হ্যারি ব্রুক নন, বরং ক্রিজে আসলেন জস বাটলার। উদ্দেশ্যটা খুবই পরিষ্কার — যেহেতু মারকাটারি ব্যাটিংয়ে ব্রুকের (ওয়ানডে স্ট্রাইক রেট ৯০.৩২) তুলনায় বাটলারের (ওয়ানডে স্ট্রাইক রেট ১১৮.০৪) পারদর্শিতা বেশি, সময় এবং সুযোগটা তিনিই কাজে লাগাতে চাইলেন।
চাইলে এমন উদাহরণ আরো অনেক দেওয়া যায়। কখনো রানের গতি বাড়ানোর জন্য, কখনো উইকেটে টিকে থাকার জন্য, আবার কখনো ডানহাতি-বাঁহাতি বোলিংয়ের বিরুদ্ধে সুবিধা পাওয়ার জন্য দলগুলো এমনটা হরহামেশাই করে থাকে। যেমন এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের হয়ে নম্বর ফোরে ব্যাট করেছিলেন লোকেশ রাহুল, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলেন ইশান কিষাণ।
‘ধান ভানতে শিবের গীত‘ গাওয়া হয়ে যাচ্ছে হয়তো, মূল প্রসঙ্গে আসা যাক। সাকিব আল হাসান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ দলেও ব্যাটিং অর্ডারের এই অদলবদলটা খুব ভালোভাবে চোখে পড়ছে। এই বছরের ওয়ানডে পরিসংখ্যানই দেখা যাক প্রথমে, একই সাথে তুলনা করা যাক সাবেক নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবালের সাথে। অনিয়মিত অধিনায়ক বলে লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তকে আপাতত বিবেচনার বাইরে রাখা হলো।
এ বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশ দল ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ খেলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ঐ সিরিজে বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন তামিম ইকবাল, এবং সিরিজের তিনটা ম্যাচেই বাংলাদেশ দলের প্রথম আটজন ব্যাটসম্যানের ক্রম ছিল হুবহু একই। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবাল আর লিটন কুমার দাস, এরপর যথাক্রমে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, এবং মেহেদী হাসান মিরাজ।
ইংল্যান্ড সিরিজের পরে বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ অনুষ্ঠিত হয় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, ঐ সিরিজের প্রথম দুটো ম্যাচেও ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম সাতজনের ক্রম ছিল একই। ওপেনিংয়ে তামিম-লিটন, এরপর শান্ত, সাকিব, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিক এবং ইয়াসির আলী। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ দশ উইকেটে জয় লাভ করে বিধায় ঐ ম্যাচকে ধর্তব্যের বাইরে রাখা হলো।
এরপরে বাংলাদেশ যায় ইংল্যান্ডে। চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। এবং অবশ্যই, প্রথম দুটো ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম সাত ব্যাটসম্যান ছিলেন অপরিবর্তিত। তামিম-লিটন ইনিংসের গোড়াপত্তন করেছিলেন, এরপর যথাক্রমে এসেছিলেন শান্ত, সাকিব, হৃদয়, মুশফিক এবং মিরাজ। আট-নয়ে আসা তাইজুল-শরিফুল স্বীকৃত ব্যাটসম্যান বা অলরাউন্ডার নন বিধায় তাদের বিবেচনার বাইরে রাখা হলো। তৃতীয় ম্যাচে চোটের জন্য অনুপস্থিত ছিলেন সাকিব আল হাসান, তাই নম্বর ফোরে লিটনকে খেলিয়ে ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী করা হয় রনি তালুকদারকে।
আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম ছয়জন ব্যাটসম্যানও ছিলেন বাংলাদেশের নিয়মিত মুখ। তামিম, লিটন, শান্ত, সাকিব, হৃদয়, মুশফিক, এবং সাত-আটে আফিফ-মিরাজ। এরপরই তামিমের সেই ‘অবসর-কাণ্ড’, এবং অধিনায়কত্বের সমাপ্তি। ঐ সিরিজের বাকি দুটো ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন লিটন দাস।
ব্যাটসম্যান | ওপেনিং | তিন | চার | পাঁচ | ছয় | সাত | আট |
তামিম ইকবাল | ৯ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
লিটন দাস | ৮ | ০ | ১ | ০ | ০ | ০ | ০ |
নাজমুল হোসেন শান্ত | ০ | ৯ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
সাকিব আল হাসান | ০ | ০ | ৫ | ৩ | ০ | ০ | ০ |
তাওহীদ হৃদয় | ০ | ০ | ০ | ৬ | ০ | ০ | ০ |
মুশফিকুর রহিম | ০ | ০ | ৩ | ০ | ৬ | ০ | ০ |
মাহমুদউল্লাহ | ০ | ০ | ০ | ০ | ৩ | ০ | ০ |
আফিফ হোসেন | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ৪ | ০ |
মেহেদী হাসান মিরাজ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ৩ | ৪ |
ইয়াসির আলী | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ২ | ০ |
রনি তালুকদার | ১ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
অর্থাৎ এটা নিশ্চিত, তামিমের অধিনায়কত্বে যেকোনো সিরিজে বাংলাদেশের দলের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের পজিশন নির্দিষ্ট। খেলার অবস্থা যা-ই হোক, ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তন ঘটে না। পাশাপাশি সিরিজ শুরুর আগেই ব্যাটসম্যানরা ভালোভাবেই জানেন তাদের ব্যাটিংয়ের পজিশন।
এবার আসা যাক সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে।
এশিয়া কাপ থেকে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব পান সাকিব। তামিম-লিটনের অনুপস্থিতিতে তার অধীনে অভিষেক হয় তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নাঈম শেখের সাথে ওপেন করেন তানজিদ। এরপরে ব্যাটিংয়ে আসেন যথাক্রমে শান্ত, সাকিব, হৃদয়, মুশফিক, মিরাজ এবং মাহেদী। তবে ঐ ম্যাচের ব্যাটিং ব্যর্থতার পরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ম্যাচেই ব্যাটিং অর্ডারে ব্যাপক রদবদল দেখা যায়। ওপেন করেন নাঈম-মিরাজ, এরপরে যথাক্রমে হৃদয়, শান্ত, মুশফিক, সাকিব, শামীম এবং আফিফ। পরিবর্তনের এই ধারা অব্যাহত থাকে সুপার ফোরের তিন ম্যাচেও।
ব্যাটসম্যান | ওপেনিং | তিন | চার | পাঁচ | ছয় | সাত | আট |
নাঈম শেখ | ৪ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
লিটন দাস | ১ | ২ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
তানজিদ হাসান তামিম | ২ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
মেহেদী হাসান মিরাজ | ৩ | ০ | ০ | ১ | ০ | ১ | ০ |
নাজমুল হোসেন শান্ত | ০ | ১ | ১ | ০ | ০ | ০ | ০ |
তাওহীদ হৃদয় | ০ | ১ | ০ | ২ | ২ | ০ | ০ |
সাকিব আল হাসান | ০ | ০ | ৪ | ০ | ১ | ০ | ০ |
মুশফিকুর রহিম | ০ | ০ | ০ | ২ | ২ | ০ | ০ |
শামীম হোসেন | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ৪ | ০ |
আফিফ হোসেন | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ২ |
মাহেদী হাসান | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ২ |
এনামুল হক বিজয় | ০ | ১ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
এশিয়া কাপের পরে নিউ জিল্যান্ড সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন লিটন, তৃতীয় ম্যাচে শান্ত। অনিয়মিত অধিনায়ক বিবেচনায় তাদেরও হিসেবের বাইরে রাখা হলো। একই কারণে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচগুলোকেও রাখা হলো ধর্তব্যের বাইরে।
বিশ্বকাপের ক্ষেত্রেই আসা যাক। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওপেন করেছেন তানজিদ-লিটন, এরপর মিরাজ, শান্ত, সাকিব এবং মুশফিক। অপর দুই ব্যাটসম্যান, তাওহীদ হৃদয় এবং মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের প্রয়োজন হয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচে আবারও ব্যাটিং অর্ডারে রদবদল, তানজিদ-লিটনের পর এদিন একে একে এলেন শান্ত, সাকিব, মিরাজ, মুশফিক, হৃদয় এবং মাহেদী। অর্থাৎ, পরিবর্তন চলছেই।
কিন্তু এমন পরিবর্তন কি অস্বাভাবিক? সাকিব কি এমনটা আগেও করেননি। এই উত্তর খুঁজতে এই বছরের শুরুর দিকে ফিরে যাওয়া যাক আবারও। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তামিমের অধিনায়কত্বের বর্ণনা তো আগেই দেওয়া হয়েছে, এবার আসা যাক টি-টোয়েন্টি সিরিজে। ঐ সিরিজের তিন ম্যাচেই ওপেন করেছিলেন লিটন-রনি, তিনে শান্ত। চারে প্রথম দুটো ম্যাচ খেলেছেন হৃদয়, শেষ ম্যাচ সাকিব। প্রথম ম্যাচে পাঁচ-ছয়ে ছিলেন সাকিব-আফিফ, দ্বিতীয় ম্যাচে পাঁচ থেকে সাতে ছিলেন মিরাজ-সাকিব-আফিফ। আয়ারল্যান্ড আর আফগানিস্তান সিরিজেও চলে এই রদবদল প্রক্রিয়া।
ব্যাটসম্যান | ওপেনিং | তিন | চার | পাঁচ | ছয় | সাত | আট |
লিটন দাস | ৮ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
রনি তালুকদার | ৭ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
নাজমুল হোসেন শান্ত | ০ | ৭ | ০ | ১ | ০ | ০ | ০ |
তাওহীদ হৃদয় | ০ | ০ | ৪ | ৩ | ০ | ০ | ০ |
সাকিব আল হাসান | ০ | ১ | ৩ | ২ | ২ | ০ | ০ |
আফিফ হোসেন | ১ | ০ | ০ | ০ | ১ | ১ | ০ |
শামীম হোসেন | ০ | ১ | ০ | ০ | ৩ | ০ | ০ |
মেহেদী হাসান মিরাজ | ০ | ০ | ০ | ১ | ০ | ২ | ০ |
সাকিবের এই ‘নমনীয়’ অধিনায়কত্বের ব্যাপারটা জাতীয় দলেই প্রথম নয়, বিপিএলের গত দুটো মৌসুমেও একই ঘটনা দেখা গেছে। দুটো মৌসুমেই ফরচুন বরিশালের অধিনায়কত্ব করেছেন সাকিব, দুটো মৌসুমেই ব্যাটিং অর্ডারে বারবার পরিবর্তন এনেছেন। ২০২২ বিপিএলেই আসা যাক।
ব্যাটসম্যান | ওপেনিং | তিন | চার | পাঁচ | ছয় | সাত | আট |
মুনিম শাহরিয়ার | ৬ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
ক্রিস গেইল | ৮ | ০ | ০ | ২ | ০ | ০ | ০ |
নাজমুল হোসেন শান্ত | ৩ | ৪ | ০ | ২ | ১ | ০ | ০ |
সাকিব আল হাসান | ০ | ৩ | ৬ | ১ | ১ | ০ | ০ |
তাওহীদ হৃদয় | ০ | ১ | ৩ | ৩ | ২ | ০ | ১ |
ডোয়াইন ব্রাভো | ১ | ০ | ০ | ৪ | ৪ | ০ | ০ |
নুরুল হাসান | ০ | ১ | ২ | ০ | ৩ | ১ | ২ |
জিয়াউর রহমান | ০ | ১ | ০ | ১ | ০ | ১ | ৩ |
জেক লিনটট* | ১ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
সৈকত আলী | ৩ | ১ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
ইরফান শুক্কুর | ০ | ০ | ০ | ১ | ০ | ১ | ২ |
*জেক লিনটট একটা ম্যাচে নয় নম্বরে ব্যাট করেছিলেন।
মুনিম শাহরিয়ার আর ক্রিস গেইলে ধাতস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত ওপেনিং নিয়েও বেশ কাটাছেঁড়া চলেছে বরিশাল দলে। তবে ‘২৩-এর বিপিএলে ঐ কাটাছেঁড়াটা চলেছে পুরো বিপিএল জুড়েই। শুধু ওপেনিং নয়, পুরো ব্যাটিং অর্ডার নিয়েই।
ব্যাটসম্যান | ওপেনিং | তিন | চার | পাঁচ | ছয় | সাত | আট |
এনামুল হক বিজয় | ১১ | ১ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
মেহেদী হাসান মিরাজ | ৪ | ১ | ১ | ০ | ১ | ০ | ৩ |
সাকিব আল হাসান | ০ | ৩ | ৭ | ১ | ০ | ০ | ০ |
মাহমুদউল্লাহ | ১ | ২ | ৪ | ১ | ৪ | ০ | ০ |
ইফতিখার আহমেদ | ০ | ১ | ০ | ৫ | ৫ | ০ | ০ |
চতুরঙ্গ ডি সিলভা | ২ | ২ | ১ | ১ | ০ | ০ | ২ |
করিম জানাত | ০ | ০ | ১ | ০ | ৩ | ৪ | ৩ |
ইব্রাহিম জাদরান | ১ | ৩ | ২ | ১ | ১ | ০ | ০ |
সাইফ হাসান | ৪ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
ফজলে মাহমুদ | ২ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ |
সব মিলিয়ে এটা পরিষ্কার যে, অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরা অবস্থায় সাকিব তার দলের ব্যাটিং অর্ডারে নমনীয়তা পছন্দ করেন। কোন ব্যাটসম্যানকে যে প্রতি ম্যাচে একই পজিশনে খেলাতে হবে, বা অনুসরণ করতে হবে একটি নির্দিষ্ট ব্যাটিং অর্ডারই, এই নীতির পক্ষপাতী সাকিব নন। বরং দলের প্রয়োজন, ম্যাচের অবস্থা, প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা ও ব্যাটসম্যানদের শক্তির জায়গা, সব বিবেচনায় নিয়েই সাকিব ব্যাটিং অর্ডার সাজান এবং সময়ে সময়ে তা পরিবর্তন করেন। মাশরাফি বিন মুর্তজাকেও অনেক সময়ে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করতে দেখা যেত। ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে মিরাজকে ওপেন করিয়েছিলেন তিনি, ঐ টুর্নামেন্টে ইমরুল কায়েস খেলেছিলেন মিডল অর্ডারে। কখনো কখনো মাশরাফি নিজেই মিডল অর্ডারে উঠে আসতেন, অবশ্যই সার্বিক বিবেচনা করে। জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে তামিমকে তেমন কিছু করতে খুব কমই দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যাটিং অর্ডার অনুসরণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি।
স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যেকের অধিনায়কত্বের ধরণ ভিন্ন। তবে ব্যাটিং অর্ডারে এত বেশি রদবদলটা সাকিব ছাড়া বাংলাদেশের আর কারো অধিনায়কত্বে খুব একটা দেখা যায় না। এই ভিন্নভাবে চিন্তার জন্যই হয়তো সাকিব অন্য সকলের চেয়ে আলাদা!