এল ক্লাসিকো কোনটাকে বলা হয় পাঠক? সবাই তো জানেন নিশ্চয়ই, রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বার্সেলোনার লড়াইকে। কিন্তু অলিখিতভাবে ‘ইউরোপিয়ান ক্লাসিকো’ বলা হয় কোনটিকে জানেন? রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বায়ার্ন মিউনিখের লড়াইকে।
২০১৭-১৮ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে তেমনই এক ধুন্ধুমার ইউরোপিয়ান ক্লাসিকোর অপেক্ষায় গোটা ফুটবল বিশ্ব। গত চার বছরে তিনবারের ইউরোপ সেরা রিয়ালের মুখোমুখি দাপটের সাথে জার্মান লিগ শাসন করা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অন্যতম ধারাবাহিক পরাশক্তি বায়ার্ন মিউনিখ। আজ এই লড়াইয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে এই লিখাটি।
কে আসছে কেমন শক্তি নিয়ে?
রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ঘরোয়া ২০১৭-১৮ মৌসুমটা ভুলে যাওয়ার মতো। এই জানুয়ারি পর্যন্তও খোদ অত্যন্ত আশাবাদী রিয়াল ফ্যানরাও ভাবতে পারেন নি রিয়াল এত দূর অবধি আসবে। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে সেই চিরচেনা রিয়াল। উড়তে থাকা পিএসজিকে হারিয়ে কোয়ার্টারে জুভেন্টাসকেও নিজের মাঠে উড়িয়ে দেয় রিয়াল। কিন্তু বার্নাব্যুতে রিয়াল হয়ে ছিল নিজের ঘরোয়া ফর্মের প্রতিভূ হয়ে। খাদের শেষ সীমানায় চলে গিয়েও রেহাই হয় রোনালদোর পেনাল্টিতে।
বায়ার্নের মৌসুমের শুরুটা ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত, অনেকটা রিয়ালের মতোই। লিগে৫ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকার সময় চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির কাছে ৩-০ গোলের হার- মৌসুমের শুরু হয় কার্লো আনচেলত্তির বরখাস্তের মধ্য দিয়ে। অবসর ভেঙে বায়ার্নের হাল ধরতে আসেন বায়ার্ন ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যানেজার ইয়ুপ হেইঙ্কেস, যার হাত ধরেই বায়ার্নের সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়। এসেই বায়ার্নকে নিয়ে আসেন সেই দুর্দম্য অবস্থানে। লিগ শেষ হওয়ার মাসখানেক আগেই বায়ার্ন জিতে নেয় ঘরোয়া শ্রেষ্ঠত্ব। উঠে গেছে জার্মান কাপের ফাইনালেও। আবার চ্যাম্পিয়নস লিগেও সেমিতে উঠে আসে আর কোনো হোঁচট না খেয়েই। একইভাবে মৌসুম শুরু করা দুই দল এমন এক সময় মুখোমুখি হচ্ছে যখন এক দলের সামনে ট্রেবল জয়ের হাতছানি আর অপর এক দলের সামনে মৌসুমে মুখরক্ষার লড়াই।
লড়াইয়ের খুঁটিনাটি
রক্ষণভাগ
একদম শুরু থেকে আসা যাক। রাইটব্যাকে রিয়াল ও বায়ার্নের যে দুজন প্রথম পছন্দ, তাদের দুজনের মধ্যেই আসলে বিশ্বের সেরা রাইটব্যাকের প্রতিযোগিতা। বায়ার্নের কিমিখ তরুণ ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী স্বকীয়। সেন্টারব্যাক, মাঝমাঠ ও রাইটব্যাক তিন জায়গায়ই সাবলীল এই জার্মান লামের স্থান এমনভাবে পূরণ করছেন জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে যে, অনেকে টেরই পাচ্ছেন না লামের অবসর নেয়াটা।
কারভাহাল রিয়ালের সাম্প্রতিক সাফল্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দারুণ ব্যালান্সড খেলোয়াড়, রিয়ালের খেলার যে মূল শক্তি ‘উইং প্লে’, তার আধার বলা যায় কারভাহাল ও মার্সেলোকে। অভিজ্ঞতায় কারভাহাল কিমিখের চেয়ে খানিক এগিয়ে থাকলেও সব মিলিয়ে দুই দলই এই শক্তির ব্যাপারে সাম্যাবস্থায়।
ঠিক একই কাহিনী লেফটব্যাক নিয়ে। বার্সার জর্দি আলবাকে হিসেবে রেখে যদি বিশ্বের সেরা তিনজন লেফটব্যাকের তালিকা করা হয় তবে বাকি দুজন এই আলবা ও মার্সেলো। দুজনই তাঁদের দলের সাম্প্রতিক সাফল্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রিয়ালের গেমপ্লেতে মার্সেলো অনস্বীকার্য। খোঁড়াতে থাকা রিয়াল আক্রমণের দৈন্য ঢাকার ভারও অনেকটা থাকে মার্সেলোর উপর। অনেকসময় তার রক্ষণের উদাসীনতা দলকে বিপদে ফেললেও রিয়ালের বাঁপাশের এখনো ভরসা মার্সেলো। ঠিক একইভাবে বায়ার্নের উইংপ্লে ব্যাপকভাবে আলবার উপর নির্ভরশীল। আলবার ব্যাকআপ বেরনাত ও মার্সেলোর ব্যাকআপ থিও-ও যেকোনো বড় দলে সহজেই প্রথম পছন্দের লেফটব্যাক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
সেন্টার ব্যাকে বায়ার্নের প্রথম পছন্দ হুমেলস-বোয়াটেং জুটি। হুমেলস বিশ্বের অন্যতম সেরা ঠাণ্ডা মাথার সেন্টারব্যাক। বাতাসে ভেসে আসা বলে হুমেলস দারুণ সপ্রতিভ। বায়ার্নের ব্যাকআপ সেন্টারব্যাক সুলেও বায়ার্ন ও জার্মানির ভবিষ্যৎ। প্রায় দানবাকৃতি এই ডিফেন্ডার হুমেলস বা বোয়াটেং যে কারোর বদলে সহজেই খেলতে পারেন। রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম পছন্দের জুটি রামোস-ভারান। যদি আপনি ৩০টি ম্যাচকে বিবেচনায় নেন, রামোসের অনেক ভুল চোখে পড়বে কিন্তু রামোসকে যদি ‘টাস্কম্যান’ ভাবেন তাহলে রামোস বিশ্বে অদ্বিতীয়। রামোস যদি কোনো একদিন টার্গেট করে খেলেন, তবে তিনি প্রায় দুর্ভেদ্য। রামোস-ভারানে জুটি নিজেদের দিনে অনবদ্য। ব্যাকআপ হিসেবে আছেন আপাদমস্তক মাদ্রিদিস্তা নাচো, যদিও সুস্থ নাচোকে পাওয়া নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে। তরুণ ভালেহোও তার বয়সানুপাতে ভালই স্থিরতা ও পারফর্মেন্স দিয়ে যাচ্ছেন যখন সুযোগ পাচ্ছেন।
মাঝমাঠ
মাঝমাঠকে বিবেচনায় রাখলেও বিশ্বের সেরা দুই দল বায়ার্ন ও রিয়াল। রিয়ালের তূণে আছেন ক্রুস, মড্রিচ, ক্যাসেমিরো, কোভাচিচ, লরেন্তে, ইস্কো, সেবায়োসের মতো অস্ত্র। বায়ার্নও কম যায় না। তাদের ভাণ্ডারে আছে হামেস, টলিসো, ভিদাল, মার্টিনেজ, রুডি, থিয়াগো আলকান্তারার মতো মিডফিল্ডার।
রিয়াল যখন বায়ার্ন থেকে ক্রুসকে মাত্র ২৫ মিলিয়ন ইউরোতে কেনে তখন অনেকে এটাকে ‘ট্রান্সফার ডাকাতি’ বলেছিলেন, কারণ এত কম দামে এই মানের খেলোয়াড় হালের বাজারে অসম্ভব। বায়ার্নও প্রতিশোধ নিয়েছে রিয়ালের কাছ ঠেকে হামেস রদ্রিগেজকে এনে। জাবি আলোনসো মাঝমাঠে প্রতিস্থাপন করেছেন টলিসো। প্রথম মৌসুমে বেশ মানিয়েও নিয়েছেন। রয়েছেন জাভির উত্তরাধিকার খ্যাত থিয়াগো আলকান্তারা। ভিদালের আকস্মিক ইনজুরি বায়ার্নের জন্য এক বিশাল ধাক্কা। বক্স টু বক্স রোলে ভিদাল বিশ্বের অন্যতম সেরা। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে জাভি মার্টিনেজের খেলার সম্ভাবনাই বেশি। রয়েছেন তরুণ প্রতিভা রুডি। ২০১৭ কনফেডারেশন কাপ জেতায় এই তরুণ জার্মানের ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। রুডি যেকোনো সময় বায়ার্নের মাঝমাঠের যে কারোর বদলে নামার জন্য যথেষ্ট সামর্থ্য রাখেন।
২০১৬ চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার সময় থেকেই রিয়ালের মাঝমাঠ মোটামুটি একই রকম। ক্রুস-মড্রিচ-ক্যাসেমিরোর এই ত্রয়ীই রিয়ালকে এনে দিয়েছে টানা দুটো চ্যাম্পিয়নস লিগ। মড্রিচের চোটের সমস্যা না থাকলে এই ত্রয়ীই প্রথম ঠেকে নামবেন। মড্রিচ না খেললে তার বদলে নামতে পারেন স্বদেশী কোভাচিচ। মাঝমাঠ ও আক্রমণের সমন্বয়ে থাকবেন ইস্কো। স্পেনের হয়ে ইস্কোর খেলা এককথায় অসাধারণ। রিয়ালের হয়ে মৌসুম যত এগোয়, ইস্কো ততই ভাল খেলতে থাকেন। পজিশনভিত্তিক খেলার ধরনের জন্য ইস্কো পারফেক্ট। রিয়াল, বায়ার্নের মতো এত ক্লাসিক মাঝমাঠের মহারণ সচারচর দেখা যায় না।
খেলার আসল ফলাফল মাঝমাঠের উপর নির্ভর করবে। কে জিতবে মাঝমাঠের মহারণ? এটা অনেকটা কোচের কৌশলের উপরেও নির্ভর করে।
আক্রমণ
ঠিক এই জায়গায়ই খানিকটা ফারাক। বায়ার্নের রয়েছে কোম্যান, রিবেরি, রোবেনের মতো উইংগার। রিবেরি-রোবেন ৩৫ পেরিয়ে গেলেও এখনো ধার রয়ে গেছে। রয়েছেন রিয়াল ঠেকে আসা হামেস। হামেস বায়ার্ন আক্রমণকে দিয়েছেন নতুন মাত্রা। হেইঙ্কেসের অধীনে হামেস আরো পরিণত। হামেস মোটামুটি স্বাধীনভাবে খেলে থাকেন। প্লে-মেকিং, গোল করা, গোল বানানো সব কিছুতেই তিনি আছেন। ফরোয়ার্ডে আছেন মুলার ও লেভান্ডস্কি। মুলার অন্যমাপের একজন প্লেয়ার। খুব একটা দৃষ্টিনন্দন না হয়েও গোল করা কী গোল বানানো সব কিছুতেই তিনি আছেন। আর লেভান্ডস্কি তো গোলমেশিন। স্ট্রাইকার ব্যাকআপ হিসেবে থাকা ওয়াগনারের উচ্চতা তার সবচেয়ে বড় শক্তি। অনেক লম্বা ডিফেন্ডারও খাবি খায় তাকে সামলাতে। জুভেন্টাসের মানজুকিচ যেভাবে হেডে দুই গোল দিয়েছিলেন, এমনভাবে দুর্বল মার্কিং করলে রিয়ালের অবস্থা বেগতিক করতে এই দুজনই যথেষ্ট।
রিয়ালের আক্রমণভাগে কেবল একটা নামই আসে ইদানীং- রোনালদো। রোনালদোকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। যেটা রিয়ালের জন্য চিন্তার তা হলো বেল, বেনজেমার ফর্ম। এই মৌসুমে দুজনের কেউই রিয়ালের মতো দলের ফরোয়ার্ডের ধাঁচের খেলছেন না। রোনালদো কোনো ম্যাচে ফ্লপ গেলে রিয়ালের হাল ধরার মতো কেউ বেল-বেনজেমা যে হতে পারবেন তা নিয়ে খোদ ফ্যানরাও নিশ্চিত নন। বরং তরুণ অ্যাসেন্সিও ও লুকাস ভাসকেজ যখনই নামছেন, নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলছেন। দলের এই পর্যন্ত আসার পেছনে তাঁদের ভূমিকা যথেষ্ট। তবে কেন রিয়ালকে আক্রমণে ভয়ানক দেখায় চ্যাম্পিয়নস লিগে? আসলে রিয়ালের মাঝমাঠ দারুণ ফ্লো-তে থাকে, মার্সেলো-কারভাহাল ওভারল্যাপ করতেই থাকেন, ইস্কো, অ্যাসেন্সিও বা ভাসকেজরা তাঁদের দায়িত্বের সবটাই পালন করেন আর অবশ্যই একজন, রোনালদোর গোলগুলো। আসলে রোনালদোকে বাদ দিলে রিয়ালের আক্রমণভাগের অবস্থা বেশ সঙ্গিন।
বায়ার্নের ভিটামিন ‘J’
বায়ার্নের ভেতরে রিয়াল মাদ্রিদ নিয়ে ওয়াকিবহাল কেউ যদি থাকেন তবে তারা হলেন হামেস রদ্রিগেজ ও ইয়াপ হেইঙ্কেস। হামেস রিয়ালে ছিলেন দুই মৌসুম আর হেইঙ্কেস রিয়ালকে জিতিয়েছিলেন সপ্তম চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফিটি। তারা দুজনই বায়ার্নের খোঁড়াতে থাকা দলকে এনে দিয়েছেন আলাদা মাত্রা। চিরচেনা এই বায়ার্ন এর পেছনে এই দুজনের অবদান অনস্বীকার্য। হেইঙ্কেস যেবার রিয়ালকে নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতেন সেবারও লিগে রিয়ালের অবস্থান ছিল এর চেয়ে বেশী সঙ্গিন। তাই তিনি ভালই জানেন এই অবস্থায় রিয়াল কতটা মরিয়া। পিএসজির বিপক্ষে সবাই যখন ভাবছিলেন সম্ভাব্য রিয়ালের পরাজয় তখন এই হেইঙ্কসেই বলেছিলেন যে, তার অভিজ্ঞতা মাফিক রিয়ালই ফেভারিট। তাই-ই হয়েছিল। আর হামেসকে বায়ার্ন পেয়েছে বলা যায় জিদানের সাথে হামেসের বনিবনা না হওয়ার কারণে। বায়ার্নের একই ধাঁচের খেলায় হামেস এনে দিয়েছেন নতুন মাত্রা। রিয়ালের বিপক্ষে সাবেক রিয়ালের খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্স রিয়ালের জন্য সুখকর না। তাই হামেসকে নিয়ে রিয়াল তক্কে তক্কে থাকবেই।
সেই সাথে রয়েছেন হেইঙ্কেস। মরিনহোর উড়তে থাকা মাদ্রিদকে সেমিফাইনালে হারিয়েছিলেন এই হেইঙ্কেসই। তার বায়ার্ন মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই ট্রেবল জয়ী ২০১২-১৩ মৌসুমের কথা। কার্লোর গতবারের বায়ার্ন হেইঙ্কেসের বায়ার্নের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক থাকলেও ব্যালান্সড ছিল না। এই বায়ার্ন অনেক বৈচিত্র্যময়। অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পেয়েও সম্ভাব্য অনেক উপায়ে খেলিয়ে পরীক্ষা করে রেখেছেন। পোড় খাওয়া কার্লো বা গার্দিওলারা পারেননি হেইঙ্কেসের কীর্তি পুনরাবৃত্তি করতে, এখন আসরে আবার স্বয়ং হেইঙ্কেস!
রিয়ালের এক্স ফ্যাক্টর
রিয়ালের আসল ফ্যাক্টর বা এক্স ফ্যাক্টর একজনই- রোনালদো। রোনালদো তার নিজের সেরা দিনে যেকোনো রক্ষণের জন্য ত্রাস। তবে রিয়ালের মাথায় থাকবে নাভাসের ভুলভাল নিয়ে, যেগুলো কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে। কোচ জিদান অবশ্যই এক বড় ফ্যাক্টর। জুভেন্টাসের সাথে পাওয়া রিয়ালের পেনাল্টি নিয়ে অনেকটা অনভিপ্রেত যেসব সমালোচনা আসছে সেটাকে যদি জিদান কোনোভাবে ‘আমরা বনাম বাকি দুনিয়া’ মন্ত্রে রূপান্তরিত করে দলকে উজ্জীবিত করতে পারে সেটা যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই ভয়ানক হবে।
তবে এখনবধি কোনো বড় প্রতিপক্ষের সাথে না খেলাটা বায়ার্নের জন্য প্রশ্নবোধক হয়ে থাকবে, সেভিয়ার সাথে তাঁদের জয় খুব একটা আশাব্যঞ্জক ধাঁচে ছিল না। অন্যদিকে রিয়াল এবার খেলেছে বরুশিয়া, টটেনহাম, পিএসজি, জুভেন্টাসের মতো বড় দলের সাথে, তাই মানসিক দিক দিয়েও রিয়াল খানিকটা এগিয়ে থাকবে।
রিয়ালকে ভোগাবে তার আক্রমণভাগ। সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোতে রোনালদো বাদে গোল করার সংখ্যা ভয়াবহ। অতীতে যে যখনই খেলার আগে বাক্যবাণের দ্বারা রিয়ালকে উস্কে দিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগে, তার কপাল পুড়েছে তত বেশী। ২০১৪ সালে বায়ার্ন প্রেসিডেন্ট নিজেদের মাঠে রিয়ালকে নরকের আগুনের ভয় দেখানোর পর সেই মাঠেই ৪-০ তে বায়ার্নকে হারিয়ে আসে! এবার বায়ার্ন সতর্ক। প্রেসিডেন্ট, কোচ থেকে খেলোয়াড়- সবার মুখেই রিয়ালের প্রশংসা। দারুণ মাইন্ডগেম চলছে!
কেমন হতে পারে একাদশ
দুই দলেরই এত বৈচিত্র্য যে সঠিকভাবে বলাটা একটু কষ্টকর। হেইঙ্কেসের প্রিয় ফর্মেশন ৪-২-৩-১ হলেও প্রায়ই ৪-১-৪-১ এ খেলান। তবে রিয়ালের সাথে মনে হয় না একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার নিয়ে খেলবেন। তেমনি জিদানেরও প্রিয় ফর্মেশন ৪-৩-৩ হলেও ম্যাচ বুঝে ৪-৩-১-২ ও ৪-৪-২ তে খেলান। মড্রিচ সুস্থ থাকলে ৪-৩-১-২ এ খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
বায়ার্ন মিউনিখ (৪-২-৩-১)
উয়েলরিখ
কিমিখ-হুমেলস-বোয়াটেং-আলাবা
মার্টিনেজ- থিয়াগো
মুলার-হামেস-রিবেরি
লেভান্ডস্কি
রিয়াল মাদ্রিদ (৪-৩-১-২)
নাভাস
কারভাহাল-রামোস-ভারানে-মার্সেলো
মড্রিচ-ক্যাসেমিরো-ক্রুস
ইস্কো
রোনালদো-বেনজেমা
এবারের রিয়াল মাদ্রিদ-বায়ার্ন দ্বৈরথকে বলা হচ্ছে ‘ফাইনালের আগের ফাইনাল’ হিসেবে। অতি যুক্তিবাদীরা একে ‘সম্ভাব্য বিজয়ীদের দ্বৈরথ’ও বলছেন। সে যা-ই হোক, ধুন্ধুমার এক মহারণের অপেক্ষায় গোটা ফুটবল বিশ্ব।
ফিচার ছবিসত্ত্ব: YouTube