শুরু হয়ে গেছে ফুটবল বিশ্বকাপ মহারণ। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টকে বলা হয় দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। আগামী একটা মাস পুরো পৃথিবী বুঁদ হয়ে থাকবে ফুটবল উন্মাদনায়। পৃথিবীবাসীর এই উল্লাস-উচ্ছ্বাস কিন্তু একদিনে তৈরি হয়নি। এই ইতিহাস প্রোথিত আছে আজ থেকে ৮৮ বছর আগের পৃথিবীতে। ১৯৩০ সালের ১৩ জুলাই যে মহারণ শুরু হয়, তার প্রবহমানতা আজও বহমান। ইতিহাসের পথ ধরে দেখে আসি সেই খেলাগুলোর রেকর্ড কর্নার থেকে যাদের উপক্রমণিকায় এই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার প্রাণসঞ্চার হতো। আজ থাকছে ধারাবাহিক দুই পর্বের দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব। প্রথম পর্বের লিঙ্ক…
১৯৮২ বিশ্বকাপ, স্পেন
এই বিশ্বকাপে মোট ২৪টি দল ছয়টি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয়। মোট ৫২টি ম্যাচ হয় স্পেনের ১৭টি স্টেডিয়ামে। ১৪৬টি গোলের দেখা পায় স্পেন বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপেই প্রথমবারের মতো পেনাল্টি শুট আউটের মাধ্যমে খেলার নিষ্পত্তি করা হয়। ১৩ জুন অনুষ্ঠেয় প্রথম ম্যাচটি বিগত চার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের গোলশূন্য ড্র থাকার বলয় থেকে বেরিয়ে আসে। তবে খেলার ফলাফল হতাশ করে আর্জেন্টিনাকে।
আর্জেন্টিনা বনাম বেলজিয়াম
স্টেডিয়াম: ন্যু ক্যাম্প (বার্সেলোনা)
দর্শক সংখ্যা: ৯৫, ০০০
গ্রুপ: তিন
ফলাফল: বেলজিয়াম ১ আর্জেন্টিনা ০
হাফ টাইম: গোলশূন্য ড্র ছিল প্রথমার্ধ
গোলদাতা
বেলজিয়াম: আরভিন ভ্যানডেনবার্গ (৬২’)
রেফারি: ভজটেক ক্রিস্টোভ (স্লোভাকিয়া)
সহকারি রেফারি: ক্যারোলি পালোতাই (হাঙ্গেরি) ও আলোজ্জি জারগুজ (পোল্যান্ড)
হলুদ কার্ড: দুটি
আর্জেন্টিনা: ড্যানিয়েল বার্টোনি (৫৫’)
বেলজিয়াম: লুক মিলক্যাম্পস (৫০’)
কোনো লাল কার্ড প্রদর্শিত হয়নি।
১৯৮৬ বিশ্বকাপ, মেক্সিকো
এই বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় মায়ান সভ্যতার দেশ মেক্সিকোতে। এটি ছিল স্প্যানিশ ভাষাভাষী দেশের টানা তৃতীয় বিশ্বকাপ আয়োজন। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা, ১৯৮২ সালে স্পেন। মোট ২৪টি দল ছয়টি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয়। মোট ৫২টি ম্যাচ মেক্সিকোর ১২টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ১৩২ গোলের এই বিশ্বকাপেই ডিয়েগো ম্যারাডোনা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার ‘নন্দিত ও নিন্দিত’ Hand of God গোলটি করেন। মে মাসের শেষদিনে ঐতিহ্যবাহী মেক্সিকান ওয়েভের তালে তালে শুরু হয় ত্রয়োদশ ফিফা বিশ্বকাপ।
ইতালি বনাম বুলগেরিয়া
স্টেডিয়াম: অ্যাজটেক স্টেডিয়াম (মেক্সিকো সিটি)
দর্শক সংখ্যা: ৯৬, ০০০
গ্রুপ: এ
ফলাফল: ইতালি ১ বুলগেরিয়া ১
হাফ টাইম: ১ – ০; ইতালি এগিয়ে ছিল
গোলদাতা
ইতালি: আলেসান্দ্রো আলতোবেল্লি (৪৩’)
বুলগেরিয়া: নাসকো সিরাকোভ (৮৫’)
রেফারি: এরিক ফ্রেডরিকসন (সুইডেন)
সহকারি রেফারি: এডগার্ডো মেন্ডেস (মেক্সিকো) ও ভলকার রোথ (জার্মানি)
হলুদ কার্ড: তিনটি
ইতালি: জুসেপ্পে বারগোমি (৪৮’), অ্যান্তোনিও ক্যাব্রিনি (৬৪’)
বুলগেরিয়া: আলেকজান্ডার মারকোভ (৫১’)
লাল কার্ড: প্রদর্শিত হয়নি
১৯৯০ বিশ্বকাপ, ইতালি
১৯৯০ বিশ্বকাপের মধ্য দিয়ে ইতালি (মেক্সিকো প্রথম) দুটি বিশ্বকাপ আয়োজনের কৃতিত্ব অর্জন করে। মোট ২৪টি দল ছয়টি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয়। ১২টি স্টেডিয়ামে মোট ৫২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়; মোট গোলসংখ্যা ১১৫। ৮ জুন আর্জেন্টিনা বনাম ক্যামেরুনের খেলা দিয়ে মাঠে গড়ায় ১৯৯০ ইতালি বিশ্বকাপ।
আর্জেন্টিনা বনাম ক্যামেরুন
স্টেডিয়াম: জুসেপ্পে মিয়াজ্জা (মিলান)
দর্শক সংখ্যা: ৭৩, ৭৮০
গ্রুপ: বি
ফলাফল: ক্যামেরুন ১ আর্জেন্টিনা ০
হাফ টাইম: গোলশূন্য ড্র
গোলদাতা
ক্যামেরুন: ফাঁসোয়া ওমাম বিয়িক (৬৭’)
রেফারি: মিচেল ভট্রট (ফ্রান্স)
সহকারি রেফারি: ভিনসেন্ট মাউরো (আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র) ও মাইকাল লিস্টকিয়েভিচ (পোল্যান্ড)
হলুদ কার্ড: চারটি
আর্জেন্টিনা: রবার্তো সেনসিনি (২৭’)
ক্যামেরুন: ভিক্টর এনডিপ (২৩’), বেঞ্জামিন ম্যাসিং (১০’) ও এমিল এমবু (৫৩’)
লাল কার্ড: দুটি
ক্যামেরুন: আন্দ্রে কানা-বিয়িক (৬১’) ও ম্যাসিং (৮৯’; দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পাওয়ায়)
১৯৯৪ বিশ্বকাপ, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র
এই বিশ্বকাপ স্মরণাতীত দর্শক টানতে সক্ষম হয়। ১৪১টি গোল সমৃদ্ধ ৫২টি ম্যাচ ৯টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। মোট ২৪টি দল ছয়টি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয় এই বিশ্বকাপে। ১৭ জুন জার্মানি-বলিভিয়ার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় পঞ্চদশ ফুটবল বিশ্বকাপ।
জার্মানি বনাম বলিভিয়া
স্টেডিয়াম: সোলজার ফিল্ড (শিকাগো)
দর্শক সংখ্যা: ৬৩, ১১৭
গ্রুপ: সি
ফলাফল: জার্মানি ১, বলিভিয়া ০
হাফ টাইম: ০ – ০
গোলদাতা
জার্মানি: ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমান (৬১’)
রেফারি: আর্তুরো ব্রিজিও কার্টার (মেক্সিকো)
সহকারি রেফারি: ইউজেন ব্রাজ্জালে (অস্ট্রেলিয়া) ও গর্ডন ডানস্টার (অস্ট্রেলিয়া)
চতুর্থ রেফারি: রড্রিগো সেকেইরা বাডিয়া (কোস্টারিকা)
হলুদ কার্ড: ছয়টি
জার্মানি: দুটি; ইয়ুর্গেন কহলার (৬’), আন্দ্রেয়াস মোলার (৫৪’)
বলিভিয়া: চারটি; ভ্লাদিমির সোরিয়া (৩৭’), জুলিও বাল্ডিভিয়েসো (৩৯’), কার্লোস বোরখা (৬৬’), গুস্তাবো কিনতেরোস (৮৯’)
লাল কার্ড: একটি
বলিভিয়া: মার্কো এটচেভেরি (৮২’)
১৯৯৮ বিশ্বকাপ, ফ্রান্স
১৯৯৮ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো মোট ৩২টি দল আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয়। এই বিশ্বকাপেই প্রথমবারের মতো চতুর্থ রেফারি ইলেকট্রনিক ডিসপ্লে বোর্ড ব্যবহার করে। গোল্ডেন গোলের প্রবর্তন এই বিশ্বকাপে করা হয়। প্রতি ম্যাচে সর্বোচ্চ তিনজন খেলোয়াড় পরিবর্তনের ব্যবস্থাও ১৯৯৮ বিশ্বকাপে প্রচলন করা হয়।
১০টি স্টেডিয়ামে মোট ৬৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়; গোলসংখ্যা ২.৭ গড়ে ১৭১টি। ১০ জুন ব্রাজিল-স্কটল্যান্ড ম্যাচের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ষোড়শ বিশ্বকাপ ফুটবল।
ব্রাজিল বনাম স্কটল্যান্ড
স্টেডিয়াম: ফ্রান্স স্টেডিয়াম (প্যারিস)
দর্শক সংখ্যা: ৮০, ০০০
গ্রুপ: এ
ফলাফল: ব্রাজিল ২, স্কটল্যান্ড ১
হাফ টাইম: ১ – ১
গোলদাতা
ব্রাজিল: সিজার সাম্পাইও (৫’), টম বয়েড (৭৪’; আত্মঘাতী গোল)
স্কটল্যান্ড: জন কলিন্স (৩৮’, পেনাল্টি থেকে)
রেফারি: জোসে মারিয়া গার্সিয়া আরান্দা (স্পেন)
সহকারি রেফারি: ফার্নান্দো ত্রেসাকো গ্রাসিয়া (স্পেন) ও জর্জ লুইস (কলম্বিয়া)
চতুর্থ রেফারি: গামাল মাহমুদ (মিসর)
হলুদ কার্ড: তিনটি
ব্রাজিল: দুটি; সিজার সাম্পাইও (৩৭’), অ্যাল্ডেইর (৪৫’+২’ অর্থাৎ প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের দু’মিনিটে)
স্কটল্যান্ড: ড্যারেন জ্যাকসন (২৫’)
লাল কার্ড: প্রদর্শিত হয়নি
২০০২ বিশ্বকাপ, দক্ষিণ কোরিয়া-জাপান
২০০২ বিশ্বকাপ অনেক কিছুর প্রথম ও শেষ। প্রথম এশিয়া মহাদেশে অনুষ্ঠিত কোনো বিশ্বকাপ; দুটি দেশের (জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া) প্রথমবারের মতো একসাথে বিশ্বকাপ আয়োজন; গোল্ডেন গোল নিয়মের ইতি ঘটে এই বিশ্বকাপ থেকে। মোট ৩২টি দল আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয়। ১৬১ গোলের এই বিশ্বকাপে মোট ৬৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় দুই দেশের ২০টি স্টেডিয়ামে। ৩১ মে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মুখোমুখি হয় প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া আফ্রিকার প্রতিনিধি সেনেগাল।
ফ্রান্স বনাম সেনেগাল
স্টেডিয়াম: সিউল ওয়ার্ল্ড কাপ স্টেডিয়াম (সিউল)
দর্শক সংখ্যা: ৬২, ৫৬১
গ্রুপ: এ
ফলাফল: সেনেগাল ১ ফ্রান্স ০
হাফ টাইম: ১ – ০
গোলদাতা
সেনেগাল: পেপ বুবা দিউপ (৩০’)
রেফারি: আলি বুজসাইম (সংযুক্ত আরব আমিরাত)
সহকারি রেফারি: আলি আল ত্রাইফি (সৌদি আরব) ও জর্জ রাত্তালিনো (আর্জেন্টিনা)
চতুর্থ রেফারি: ফেলিপে রামোস রিসো (মেক্সিকো)
হলুদ কার্ড: দুটি
ফ্রান্স: ইমানুয়েল পেতি (৪৫’+২’ অর্থাৎ প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের দু’মিনিটে)
সেনেগাল: সিসে (৫১’)
লাল কার্ড: নেই
২০০৬ বিশ্বকাপ, জার্মানি
এই বিশ্বকাপে (গত দুটি বিশ্বকাপের ন্যায়) মোট ৩২টি দল আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয়। ১৪৭ গোলের এই আসরে মোট ৬৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় জার্মানির ১২টি স্টেডিয়ামে। ৯ জুন স্বাগতিক জার্মানি-কোস্টারিকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় ২০০৬ ফুটবল মহারণ।
জার্মানি বনাম কোস্টারিকা
স্টেডিয়াম: অ্যালিয়ান্জ্ অ্যারেনা (মিউনিখ)
দর্শক সংখ্যা: ৬৬, ০০০
গ্রুপ: এ
ফলাফল: জার্মানি ৪, কোস্টারিকা ২
হাফ টাইম: ২ – ১; জার্মানি এগিয়ে ছিল
গোলদাতা
জার্মানি: ফিলিপ লাম (৬’), মিরোস্লাভ ক্লোসা (১৭’, ৬১’), ফ্রিংগ্স (৮৭’)
কোস্টারিকা: ওয়াঞ্চোপ (১২’, ৭৩’)
রেফারি: হোরাসিও মার্সেলো এলিজোন্ডো (আর্জেন্টিনা)
সহকারী রেফারি: দারিও গার্সিয়া (আর্জেন্টিনা) ও রডোল্ফো ওতেরো (আর্জেন্টিনা)
চতুর্থ রেফারি: কার্লোস চান্দিয়া (চিলি)
হলুদ কার্ড: একটি
কোস্টারিকা: ড্যানি আলবার্টো ফনসেকা (৩০’)
লাল কার্ড: নেই
২০১০ বিশ্বকাপ, দক্ষিণ আফ্রিকা
আফ্রিকা মহাদেশে আয়োজিত প্রথম বিশ্বকাপ। বিগত কয়েকটি বিশ্বকাপের গতানুগতিকতায় মোট ৩২টি দল আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয়; মোট ৬৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ১০টি স্টেডিয়ামে। ২.৩ গড়ে ১৪৫টি গোল হয়। এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো স্বাগতিক কোনো দেশ গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ে যায়। অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ড তাদের গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচে পরাজিত না হয়েও প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়ে; কারণ তিনটি ম্যাচই ড্র হয়েছিল। ১১ জুন দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম মেক্সিকোর খেলা দিয়ে শুরু হয় ১৯তম বিশ্বকাপ ফুটবল।
দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম মেক্সিকো
স্টেডিয়াম: সকার সিটি স্টেডিয়াম (জোহানেসবার্গ)
দর্শক সংখ্যা: ৮৪, ৪৯০
গ্রুপ: এ
ফলাফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১, মেক্সিকো ১
হাফ টাইম: ০ – ০
গোলদাতা
দক্ষিণ আফ্রিকা: সাবালালা (৫৫’)
মেক্সিকো: রাফায়েল মার্কেজ (৭৯’)
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: দক্ষিণ আফ্রিকার মিডফিল্ডার সাবালালা
বল দখলে মেক্সিকো ছিল এগিয়ে (৫৮%)
কর্নার: মেক্সিকোর পাঁচটি কর্নারের বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার ছিল চারটি
অফ সাইড: দক্ষিণ আফ্রিকা ৩, মেক্সিকো ৬
রেফারি: রাভশান ইরমাটোভ (উজবেকস্তান)
সহকারী রেফারি: রাফায়েল ইলিয়াসোভ (উজবেকস্তান) ও বাখাদির কচকারোভ (কিজগিজস্তান)
চতুর্থ রেফারি: মোহাম্মদ সালেহ (মালয়েশিয়া)
হলুদ কার্ড: চারটি
দক্ষিণ আফ্রিকা: দুটি; দিকগাকোই (২৭’), মাসিলেলা (৭০’)
মেক্সিকো: দুটি; জুয়ারেজ (১৮’), টোরাডো (৫৭’)
লাল কার্ড: নেই
২০১৪ বিশ্বকাপ, ব্রাজিল
পাঁচ যুগেরও বেশি সময় পরে সাম্বা উৎসবের দেশ ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপ ফুটবল। মোট ৩২টি দল আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয়। এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো গোল-লাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মিনিটের মধ্যে গায়েব হয়ে যায় এমন ভ্যানিশিং স্প্রের ব্যবহারও শুরু হয় এই বিশ্বকাপে। এই স্প্রে দিয়ে ফ্রি কিকের বল কোথায় বসাতে হবে আর ফ্রি কিক নেওয়ার সময় রক্ষণদেয়াল তৈরি করতে কতটুকু দূরত্ব থাকবে, তা নির্ধারণ করা হতো। ৬৪টি ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৭১টি গোল হয়; যা কিনা এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। তবে ২০১৪ বিশ্বকাপ একা এই রেকর্ডের অধিকারী নয়। ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপেও সম পরিমাণ গোল হয়েছিল সম পরিমাণ ম্যাচে। খেলা হয় মোট ১২টি স্টেডিয়ামে। প্রথম ম্যাচটি ১৩ জুন (বাংলাদেশ সময়) অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়া
স্টেডিয়াম: অ্যারেনা কোরিন্থিয়াস (সাও পাওলো)
দর্শক সংখ্যা: ৬২, ১০৩ (প্রায়)
গ্রুপ: এ
ফলাফল: ব্রাজিল ৩, ক্রোয়েশিয়া ১
হাফ টাইম: ১ – ১
গোলদাতা
ব্রাজিল: নেইমার (২৯’, ৭১’; দ্বিতীয়টি পেনাল্টি থেকে), অস্কার (৯০+১’ অর্থাৎ দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে এই গোলটি হয়)
ক্রোয়েশিয়া: মার্সেলো (১১’; আত্মঘাতী গোল)
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার নেইমার
বলের দখলে ব্রাজিল এগিয়ে ছিল (৫৮%)
কর্নার: ব্রাজিল ৭, ক্রোয়েশিয়া ৩
রেফারি: উইচি নিশিমুরা (জাপান)
সহকারি রেফারি: তরু সাগারা (জাপান) ও তোশিউকি নাগি (জাপান)
চতুর্থ রেফারি: আলি রেজা ফাঘানি (ইরান)
হলুদ কার্ড: চারটি
ব্রাজিল: দুটি; নেইমার (২৭’), লুইজ গুস্তাভো (৮৮’)
ক্রোয়েশিয়া: করলুকা (৬৫’), লভরেন (৬৯’)
লাল কার্ড: নেই
২০১৮ বিশ্বকাপ, রাশিয়া
পূর্ব ইউরোপে অনুষ্ঠেয় প্রথম বিশ্বকাপ এটি। পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ৩২টি দেশকে নিয়ে রাশিয়ায় শুরু হয়েছে ২১তম ফুটবল বিশ্বকাপ। ১৪ জুন (বাংলাদেশ সময়ানুযায়ী) স্বাগতিক রাশিয়া ও সৌদি আরবের খেলা দিয়ে শুরু হয়েছে এ যাবৎকালের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট। এই বিশ্বকাপে মাঠের রেফারিকে সাহায্য করার জন্য প্রথমবারের মতো সংযুক্ত করা হয়েছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (VAR)।
রাশিয়া বনাম সৌদি আরব
স্টেডিয়াম: লুঝনিকি স্টেডিয়াম (মস্কো)
গ্রুপ: এ
ফলাফল: রাশিয়া ৫, সৌদি আরব ০
হাফ টাইম: ২-০
গোলদাতা: গাজিন্সকি (১২’), চেরিশেভ (৪৩’, ৯০’+১’), জিউবা (৭১’) ও গোলোভিন (৯০’+৪’)
কর্নার: রাশিয়া ৬, সৌদি আরব ২
অফসাইড: রাশিয়া ৩, সৌদি আরব ১
বলের দখল: ৬০% পরাজিত সৌদি আরবের দখলে ছিল
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রাশিয়ার চেরিশেভ
রেফারি: নেস্টর পিটানা (আর্জেন্টিনা)
হলুদ কার্ড: দুটি; রাশিয়াঃ গোলোভিন (৮৮’); সৌদি আরব: তাইসীর (৯০’+৩’)
লাল কার্ড: প্রদর্শিত হয়নি
ফিচার ইমেজ: wallpaperswide.com