যেকোনো দলের রক্ষণভাগের জন্য ফুলব্যাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে যেকোনো ফুটবল দলের জন্যে এই ভূমিকাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে একটা সময় ছিল, যখন ফুটবলের দুনিয়াতে একজন ফুলব্যাকের ভূমিকা ছিল খুবই নিরস। তাদের কাজ ছিল নিজ নিজ অবস্থান ধরে রাখা এবং সুযোগ বুঝে উপরে বল সাপ্লাই দেয়া। তবে সবচেয়ে মারাত্মক বিষয় হচ্ছে, তাদের বাঁধাধরা একটা জার্সি নাম্বার ছিল- জার্সি নাম্বার ২, কখনোবা ৩।
তবে সেই দিন এখন আর নেই। বিশেষ করে কাউন্টার অ্যাটাকিং ফুটবলের জগতে একজন আক্রমণাত্মক ফুলব্যাক না থাকা অকল্পনীয়। অ্যাটাক বা কাউন্টার অ্যাটাক যা-ই বলুন না কেন, দ্রুতগতির কৌশলী একজন ফুলব্যাক তার কারিশমায় নিমেষেই বদলে দিতে পারেন খেলার হিসাব-নিকাশ। এমনকি যেকোনো দলের সামগ্রিক কাঠামোর কৌশলী সুইচের চাবিকাঠিও তাদের হাতেই যে গচ্ছিত থাকে, এমন বললে অত্যুক্তি হয় না। আজ আমরা কথা বলবো এমনই কিছু আগ্রাসী রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের নিয়ে, যারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নান্দনিক ফুটবল প্রদর্শনীতে গোটা ফুটবলবিশ্বকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন।
পাওলো মালদিনি
বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ইতালি ও এসি মিলানের রক্ষণভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে ছিলেন ৬ ফুট উচ্চতার এক জাদুকর। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে মাত্র ১৬ বছর সিরি এ-তে তার অভিষেক হয়েছিল উদিনেসের বিপক্ষে, তা-ও বদলি খেলোয়াড় হিসেবে। তবে পরের মৌসুমেই সুযোগ হয় এসি মিলানের প্রাথমিক একাদশে নিয়মিত খেলোয়াড় হওয়ার। তারপর? বাকিটা ইতিহাস।
রক্ষণভাগের হয়ে ইতিহাস গড়া সেই মানুষটির নাম পাওলো মালদিনি। একজন ডিফেন্ডার হওয়ার সত্ত্বেও অসাধারণ পজিশনিংয়ের কারণে খেলার সময় খুব কমই ট্যাকল করতে হতো তাকে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আমাকে যদি ট্যাকল করতেই হয়, তাহলে ভুল যা করার তা ইতিমধ্যে করেই ফেলেছি।” ডিফেন্ডার কথাটি শুনলেই হয়তো মাথায় আসে সেকেলে কিন্তু জুতসই ট্যাকেলের কথা। কিন্তু ৪৭ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার তার পুরো ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন ০.৫৬ শতাংশ চ্যালেঞ্জের হার নিয়ে।
তিনি প্রাথমিক দলে নিয়মিত হন ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে। সেই সময় মাত্র ১৭ বছর বয়সী মালদিনির হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল ৩ নাম্বার জার্সিটি। রাজকপাল ছিল বটে তার। পরের মৌসুমেই এসি মিলানের হয়ে জিতে নেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপা। পরের তিন মৌসুমে মিলান কোনো লিগ শিরোপা না জিতলেও, টানার দু’বার চ্যাম্পিয়নস লীগ জিতে নেয় সেই সময়কার এসি মিলান দলটি। তারপর আবার ১৯৯১-৯২ মৌসুম থেকে শুরু করে ১৯৯২-৯৩ পর্যন্ত এসি মিলান টানা তিনটি লিগ শিরোপা জেতে। সেই সময় ফ্রাঙ্কো বারেসির অধিনে আলেসান্দ্রো কোস্তাকুর্তা, মাউরো টাসোট্টির সাথে মালদিনির সমন্বয়ে গঠিত সেই সময় মিলানের রক্ষণভাগটি ছিল যেন অপ্রতিরোধ্য। ফলাফল, ১৯৯১-৯২ মৌসুমে মিলান অপরাজিত থেকে সিরি এ চ্যাম্পিয়ন হয় এবং ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে সিরি এ শিরোপার পাশাপাশি জিতে নেয় তাদের পঞ্চম (মালদিনির তৃতীয়) চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা।
পুরো বিশ্ব জুড়েই তাকে স্মরণ করা হয় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ডিফেন্ডার হিসেবে। করবেই না কেন? মিলানের হয়ে জিতেছেন ২১টি শিরোপা যার মধ্যে রয়েছে ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ৭টি লিগ শিরোপা। এছাড়াও ব্যক্তিগত সাফল্যের ঝুলিও কম ভারি নয়। তিনি দু’বার ব্যালন ডি’অরে তৃতীয় স্থান লাভ করেন (১৯৯৪, ২০০৩)। ‘৯৫-তে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে দ্বিতীয় স্থান, ২০০৪ সালের সিরি-এ বর্ষসেরা ডিফেন্ডার নির্বাচিত হন। এছাড়াও তার নাম আছে ফিফার সর্বকালের সেরা ১০০ জন খেলোয়াড়ের তালিকায়। ২৪ বছরের ক্যারিয়ার জীবনে তিনি এসি মিলানের হয়ে খেলেছেন সর্বমোট ৯০২টি ম্যাচ। এসি মিলানের হয়ে এত লম্বা সময় জুড়ে অন্য কোনো খেলোয়াড় আগে এত ম্যাচ খেলেননি। ২০০৯ সালে ৪১ বছর বয়সি পাওল মালদিনি ফুটবল খেলা থেকে অবসরে যান। আর তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে এসি মিলান ক্লাবটিও তাদের ৩ নাম্বার জার্সিটি অবসরে পাঠিয়ে দেয় অর্থাৎ ভবিষ্যতে মালদিনির সম্মতি না নিয়ে ক্লাবের অন্য কোনো খেলোয়াড় জার্সিটি পরতে পারবে না।
রবার্তো কার্লোস
রবার্তো কার্লোস নামটি শুনলেই প্রথমেই মাথায় আসে ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সের বিপক্ষের সেই বিখ্যাত ফ্রি-কিকের কথা। ‘৯৮ এর বিশ্বকাপকে সামনে রেখে চারটি দেশকে ফ্রান্সে আয়োজন করা হয় এক বিশেষ টুর্নামেন্ট, টুর্নোয়া ডি ফ্রান্স। সেই টুর্নামেন্টেরই উদ্বোধনী ম্যাচের ২১ মিনিটের মাথায় স্বাগতিক ফ্রান্সের বিপক্ষে প্রায় ৩৫ মিটার দূর থেকে নেয়া এক বাঁকানো ফ্রি-কিক থেকে এক অসাধারণ গোল। তিনি শট নেয়ার পর এত দ্রুত জালে জড়িয়ে গিয়েছিল যে গোলরক্ষক ফ্যাবিয়ান বার্থেজের তাকিয়ে দেখা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
ফ্রান্সের বিপক্ষে কার্লোসের বিখ্যাত সেই গোলটি
১৯৯১ সালে ১৮ বছর বয়সী কার্লোসের ক্যারিয়ার জীবনের শুরু হয়েছিল ব্রাজিলের উনিয়াউ সাও জুয়াউ নামের একটি অখ্যাত ক্লাবে। ১৯৯২ সালে ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা, একে তো বয়স মাত্র ১৯, আবার খেলেন এক ছোটখাটো একটি ক্লাবে, তা সত্ত্বেও ডাক পেলেন ব্রাজিলের জাতীয় দলে।
সে বছরই, ধারে যোগ দেন অ্যাটলেটিকো মিনেইরো তে, তারপর সেখান থেকে চলে যান পালমেইরাস ক্লাবে। সেই দলে দুই সিজন খেলেন এবং তার দল পরপর দুবারই জিতে নিয়ে ব্রাজিলিয়ান লিগ শিরোপা। সেই সময় তার উপর চোখে পরে অ্যাস্টন ভিলার। শেষমেশ যোগ দেন ইতালির জায়ান্ট ইন্টার মিলানে। শুরুটা ভালোই হয়েছিল সেখানে, অভিষেক ম্যাচেই তার ফ্রি-কিক থেকে করা গোলে ইন্টার জয়লাভ করে ভিসেজঞ্জার বিপক্ষে। শুরুটা ভালো হলেও ক্লাবের হয়ে সেই মৌসুমের শেষটা ভালো ছিল না তার। পয়েন্ট টেবিলের সাত নম্বরে থেকে সেই বছর লিগ শেষ করতে হয়েছিল ইন্টার মিলানকে। এদিকে ক্লাব ম্যানেজার রয় হাজসন তাকে ডেকে নিয়ে জানালেন, তিনি তাকে উইঙ্গার হিসেবে খেলাতে চান। কিন্তু কার্লোসের ইচ্ছা তিনি লেফট ব্যাক হিসেবেই খেলবেন। কথা বললেন ক্লাবের মালিকের সাথে। শেষমেশ বাধ্য হয়ে ক্লাব ছাড়তে হলো তাকে।
ভাগ্য সুপ্রসন্নই বলতে হবে, কেননা সেবছরই তিনি যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। শুরু হলো তার নতুন করে পথ চলা। সেই থেকে শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি ৩৭০ ম্যাচে করেছেন ৪৭টি গোল, জিতেছেন ৪টি লিগ শিরোপা, ৩টি করে চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং স্প্যানিশ কাপ। ২০০২ সালে ব্রাজিলের হয়ে জিতেছেন বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপে তিনি ছয় ম্যাচ খেলেছিলেন, গোলও করেছিলেন একটিতে। বলা বাহুল্য সেই গোলটিও ছিল ফ্রি-কিক থেকে করা। তাকে এখনও বলা হয় ফুটবলের ইতিহাসের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক লেফট-ব্যাক। ব্যক্তিগত সাফল্য হিসেবে, ১৯৯৭ সালে জিতেছেন ফিফা প্লেয়ার অব দ্য ইয়ারের রৌপ্য, ২০০২ সালে হয়েছেন ব্যালন ডি’অর রানারআপ এবং দুবার করে জিতেছেন উয়েফা ক্লাব ডিফেন্ডার অব দ্য ইয়ার। তার নামও রয়েছে ফিফার সেরা ১০০ খেলোয়াড়ের তালিকায়।
হাভিয়ের জানেত্তি
জানেত্তি একাধারে খেলতে পারতেন রক্ষণভাগের দুই দিকেই, আর প্রয়োজনে যেতেন মাঝমাঠের ও’প্রান্তে। বিশেষ করে নিজের প্রয়োজনে মাঠের প্রতিটি ইঞ্চি ব্যবহারের দক্ষতা জানেত্তিকে পরিচিত দিয়েছে বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডারদের একজন হিসেবে।
জানেত্তি পেশাদারি ফুটবল জীবন শুরু করেন ১৯ বছর বয়সে দ্বিতীয় বিভাগের দল টলারেসের হয়ে, সেই ১৯৯২। সেখানে এক মৌসুম পার করার পর তরুণ ডিফেন্ডার যোগ দেন ব্যানফিল্ড ক্লাবে। সেই দলের হয়ে তার অভিষেক হয় ১৯৯৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রিভার প্লেট ক্লাবের বিপক্ষে। অভিষেকের ১৭ দিন পরই নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের বিপক্ষে পেশাদারি জীবনের দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। ব্যানফিল্ডের হয়ে তার অসাধারণ পারফর্মেন্স অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাকে জনপ্রিয় করে তোলে। ফলাফল, ডাক মেলে জাতীয় দল থেকে।
পরের মৌসুম শুরু হওয়ার আগে স্থানীয় নামকরা ক্লাব বোকা জুনিয়র্স তাকে সাইন করার আগ্রহ দেখায়, কিন্তু তিনি ব্যানফিল্ডের হয়ে আরেক মৌসুম খেলার সিদ্ধান্ত নেন। পরে ১৯৯৫ সালে যোগ দেন ইন্টার মিলানে। তারপর থেকে ইন্টারের হয়ে খেলেছেন ১৯টি মৌসুম ও সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সর্বমোট ৮৫৮টি ম্যাচ। এই ১৯টি মৌসুমের লম্বা ক্যারিয়ার জীবনে তিনি জিতেছেন মোট ১৬টি শিরোপা এর ১৫টি এসেছে তার অধিনায়কত্বে। ৫টি লিগ শিরোপা, ৪টি কোপা ইতালিয়া এবং ১টি করে চ্যাম্পিয়নস লিগ, উয়েফা কাপ ও ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ জেতার কৃতিত্ব আছে তার দখলে। ২০১৪ সালের ১৮ মে লিগের শেষ ম্যাচ দিয়ে তিনি ইতি টানেন তার খেলোয়াড়ি জীবনের। ২২ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারে তিনি রেড কার্ড দেখেছেন মাত্র দুবার। এছাড়া ১২ বছর তিনি একবারও রেড কার্ড না দেখার রেকর্ড আছে তার দখলে।
ফিলিপ লাম
যদিও ক্যারিয়ারের দীর্ঘ সময়টুকু পার করেছেন ফুল ব্যাক হিসেবেই, তবে শেষভাগে তাকে খেলতে দেখা গেছে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবেও। খেলায় অসাধারণ পারফরমেন্সের মাধ্যমে ডিফেন্ডিং ব্যাপারটিকে রীতিমত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা মানুষটিকে ডাকা হয় ম্যাজিক ডোয়ার্ফ বলে ( Magic Dwarf; অর্থাৎ জাদুকরী বামন)। আসলেই যেন রক্ষণভাগের ক্ষুদে জাদুকর ফিলিপ লাম। একজন পূর্ণ ডিফেন্ডারের সবগুলো গুণ তো তার ছিলই, এরও পাশাপাশি ছিল বিপক্ষদলের রক্ষণভাগ গুঁড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা। সুযোগ পেলে ডি বক্সের বাইরে থেকে নিজে বাঁকানো শট নিতেন এবং প্রায়ই ক্রস করতেন নিজ দলের খেলোয়াড় লক্ষ্য করে। রক্ষণভাগের দু’প্রান্তেই সাবলীলভাবে খেলতে পারতেন তিনি, দলের প্রয়োজনে অবস্থান করতেন মাঝমাঠের খেলোয়াড় হয়ে।
লামের পেশাদার ফুটবলে জীবন শুরু হয় বায়ার্ন মিউনিখ জুনিয়র দলের হয়ে। তখন তার বয়স মাত্র ১১ বছর। তারপর ১৭ বছর বয়সে, নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের বি টিমে জায়গা করে নেন লাম। এত অল্প বয়সেই তার মধ্যে ফুটবল খেলার অসাধারণ প্রতিভা দেখে তার এক কোচ হারমান হামেলস বলেছিলেন, “যদি ফিলিপ লাম বুন্দেসলিগায় খেলতে না পারে, মনে হয় না আর কেউ কখনো পারবে ।” দুই বছর সেখানে রাইট ব্যাক, রাইট মিডফিল্ডার এবং ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলার পর শেষমেশ তিনি ডাক পান বায়ার্নের মূল দলে। শুরু হয় নতুন অধ্যায়ের।
বায়ার্নের হয়ে তার অভিষেক ঘটে ২০০২ সালের ১৩ নভেম্বর চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপের পর্বের একটি ম্যাচে। সেদিন আরসি লেন্সের মোকাবেলায় খেলার প্রায় শেষার্ধের ৯২ মিনিটের মাথায় লাল জার্সি গায়ে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে পা রাখেন লাম। অবশ্য পরের মৌসুমে আবার ধারে চলে যেতে হয় ভিএভবি স্টুটগার্টে। তিনি রাইটব্যাক হওয়া সত্ত্বেও সেখানে তাকে খেলতে হয়েছিল লেফট ব্যাক হিসেবে। স্টুটগার্টের হয়ে ২০০৩-০৪ মৌসুমের প্রথম ম্যাচেরই ৭৬ মিনিতে তার অভিষেক হয়। পাঁচ ম্যাচ তার পারফর্মেন্স দেখার পর কোচ তাকে মূল দলের স্টার্টিং লাইনআপে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। লাম তার বুন্দেসলিগা ক্যারিয়ারের প্রথম গোলটি করেন স্টুটগার্টের হয়ে ২০০৪ সালে। সেখানে থাকাকালীন সময়েই লাম ডাক পান জার্মানির জাতীয় দলে খেলার। ২০০৫ সালের জুলাইয়ে লাম ফিরে আসেন বায়ার্ন মিউনিখে। তবে ইঞ্জুরির থাকার কারণে সেই মৌসুমে তিনি বায়ার্নের মূল দলের হয়ে প্রথম ম্যাচটি খেলেন নভেম্বর মাসে। শুরু হয় বায়ার্নের হয়ে তার পুনরায় পথচলা।
ইঞ্জুরির কারণে লাম প্রায় এক বছর ছিলেন জার্মানি জাতীয় দলের বাইরে। তবে ইঞ্জুরি থেকে ফেরার পরপরই আবার জায়গা করে নেন স্টার্টিং লাইনআপে। ২০০৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে সেবারের টুর্নামেন্টের গোলের খাতা খোলেন দৃষ্টিনন্দন এক গোল দিয়ে। এমনকি সেই বিশ্বকাপের একমাত্র জার্মান খেলোয়াড় হিসেবে ৬৯০ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি।
১৮ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারে বায়ার্নের হয়ে তিনি জিতেছেন মোট আটটি লীগ শিরোপা, একটি করে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ। এছাড়া জিতেছেন ছয়টি জার্মান কাপ ও ৩টি জার্মান সুপার কাপ। আর জাতীয় দলের হয়ে অর্জন হিসেবে আছে অধিনায়ক হিসেবে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়।