কেমন কাটল প্যারিসে মেসির প্রথম কয়েক মাস

কৈশোর-তারুণ্য-প্রথম যৌবনের ক্লাব বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে নাম লিখিয়েছেন লিওনেল মেসি। বর্তমানে আছেন প্যারিসে। কিন্তু কেমন কাটল নতুন এই শহরে তার প্রথম কয়েক মাস? বিবিসিতে এ প্রসঙ্গে বিশেষ ‘ইনসাইড স্টোরি’ লিখেছেন ক্রীড়া সাংবাদিক গুইলেম বালাগুয়ে। রোর বাংলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো সেটির পূর্ণাঙ্গ বাংলা অনুবাদ। 

লিওনেল মেসির সাইনিং ঘোষণার দিন যখন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের ওয়েবসাইটে তার নাম লেখা দেড় লক্ষ শার্ট বিক্রির জন্য ওঠে, মাত্র সাত মিনিটের মধ্যেই সেগুলো সব ফুরিয়ে যায়।

পিএসজির এমন অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে, চার বছর আগে যখন নেইমার তাদের দলে নাম লেখান। তারপরও এ কথা নির্দ্বিধায় বলায় যায় যে, আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসির আগমনকে কেন্দ্র করে যে ধরনের উন্মাদনা-উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে পিএসজিও রীতিমতো চমকে গেছে।

তবে এই কাহিনীর মূল নায়ক যিনি, তার জন্য কিন্তু এই সবকিছুই একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। ছোট্ট বালক হিসেবে, ১৩ বছর বয়সে, বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এখন তার বয়স হয়েছে ৩৪, এবং তাকে ও তার পরিবারকে মানিয়ে নিতে হচ্ছে এমন একটি শহরের নতুন জীবনে, যেখানে তিনি এর আগে শেষবার এসেছিলেন ২০১৯ এর ডিসেম্বর। সেবার এই শহরে তার আগমনের উদ্দেশ্য ছিল রেকর্ড ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর সংগ্রহ।

মেসি ও তার ছয় ব্যালন ডি’অর; Image Source: France Football

চলতি বছরের আগস্টে মেসি ফ্রান্সে পা রাখার পর থেকেই, পিএসজির সকলে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে তাকে এই নতুন শহরে বরণ করে নেয়ার। আন্দের এরেরার বাড়িতে তার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত বার্বিকিউ পার্টির মাঝেই হয় একটি গ্রুপ মিটিং। তাছাড়া পিএসজির ড্রেসিংরুমে ঢোকার পর থেকেও মেসি অনুভব করেছেন, সকলেই তার পাশে রয়েছে।

এমনকি সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্ডার সার্জিও রামোস, যার সঙ্গে স্পেনে থাকতে মেসির একাধিক দ্বৈরথ জমেছে, তিনিও অবিলম্বে মেসিকে স্বাগত জানান। তাছাড়া পিএসজিতে তিনি সাইনিং করার আগেই আনহেল ডি মারিয়া, নেইমার ও লিয়েনড্রো প্যারেডেসদের সঙ্গে খেলার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করে নিয়েছিলেন।

নেইমার তো আরো এক কাঠি সরেস। তিনি মেসিকে তার দশ নম্বর শার্টের প্রস্তাবও দেন, যদিও মেসি সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বেছে নেন ৩০ নম্বর শার্ট, যে শার্ট পরে তার টিনেজ বয়সে বার্সার সিনিয়র টিমে অভিষেক হয়েছিল।

কিলিয়ান এমবাপের উষ্ণ অভ্যর্থনাও ছিল মেসির জন্য একটি বড় ধরনের আনন্দময় চমক। এমবাপে চমৎকার স্প্যানিশ বলেন, ফলে মেসির সঙ্গে সহজেই ভাব বিনিময় করতে পারেন তিনি। এদিকে একই ধরনের অভ্যর্থনা জোটে দলের সদা-উৎফুল্ল ‘জোকার’ মার্কো ভেরাত্তির কাছ থেকেও।

পিএসজি বস ও স্বদেশী মরিসিও পচেত্তিনোর সঙ্গেও মেসির বরাবরই সুসম্পর্ক রয়েছে। এটিও তার পিএসজিতে চলে আসার ব্যাপারকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তারা একে অপরকে বোঝেন, একই ভাষায় কথা বলেন (আক্ষরিক ও রূপক অর্থে), এবং মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার সংবাদ ঘোষণার পরপরই ফোনে কথা বলে নেন। সব মিলিয়ে তাদের সম্পর্কের ইতিহাসটা বেশ অনেকদিনের।

দুই বছরের চুক্তিতে প্যারিসে এসেছেন মেসি, সঙ্গে রয়েছে তৃতীয় বছরের অপশন; Image Source: Francois Mori/AP/picture alliance

পিএসজিতে ট্রেনিংয়ের প্রথম দিন মেসির জন্য অপেক্ষা করে ছিল আরো কিছু বিস্ময়। তাকে জিমের সরঞ্জামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন ম্যানেজার-পুত্র সেবাস্তিয়ানো পচেত্তিনো। ব্যাপারটিতে মেসি ধন্দে পড়ে যান। প্রথমত, তিনি এ কারণে অবাক হন যে, একসময় যে ছোট বাচ্চাকে তিনি বার্সেলোনার ফ্ল্যাটে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেছেন, সে-ই আজ তাকে কীভাবে ট্রেনিং করতে হবে শেখাচ্ছে! দ্বিতীয়ত, তিনি নিশ্চিত ছিলেন না এসব সরঞ্জাম তার কোনো কাজে লাগবে। হ্যাঁ, বার্সেলোনায়ও তিনি এগুলো দেখেছেন বটে, কিন্তু কেউ তো কখনো তাকে এগুলো ব্যবহার করতে বলেনি!

এটি মেসির পরিবর্তনের আরো একটি উদাহরণ। কিন্তু এগুলো সবই মাঠের বাইরের কথা। মাঠের ব্যাপারস্যাপার তার জন্য অনেকটা পরিচিতই থেকেছে। ২৯ আগস্ট রেইমসের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয়ের দিন প্রথম পিএসজির হয়ে খেলেন তিনি, এবং সেদিন থেকেই পিএসজি খেলেছে এমন একটি দল হিসেবে, যেটি গড়ে উঠেছে তাকে কেন্দ্র করে। আক্রমণভাগে তারা প্রথমেই নজর রাখছে মেসির রাইট উইং থেকে কোণাকুণি দৌড়ে, তারপর সবাই মিলে একসঙ্গে ছোট ছোট পাস খেলে হানছে সম্মুখভাগের শেষ আঘাতটি।

নেইমারও খুব খুশি নিজেকে আবারো একজন উইঙ্গারে রূপান্তরিত করতে পেরে। এতদিন তিনি পিএসজির আক্রমণের কেন্দ্রে ছিলেন। সবকিছু আবর্তিত হতো তাকে ঘিরে। কিন্তু মেসি আসার পর থেকে তিনি চলে গেছেন বাঁয়ে, ঠিক যেমনটি তিনি করতেন বার্সেলোনাতে।

গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচে দৃশ্যপট অবশ্য খানিকটা ভিন্ন ছিল। পিএসজি দ্রুতই উপলব্ধি করে যে বলের দখল নিয়ে আধিপত্য করতে পারবে না তারা। তাই তারা নির্ভর করতে থাকে কাউন্টার অ্যাটাকে। এই কাজটি তারা বেশ ভালোভাবেই করে। তবে বলাই বাহুল্য, এভাবে খেললে মেসির থেকে সর্বোচ্চটা পাওয়া যাবে না।

সামনের দিনগুলোতে পিএসজি চাইবে বলের পজেশন ম্যাচের অধিকাংশ সময়জুড়ে নিয়ন্ত্রণের। তবে সেক্ষেত্রে উদয় ঘটতে পারে আরেকটি সমস্যার: এ ধরনের খেলার ধরন মেসি ও নেইমারকে যতটা সাহায্য করে, এমবাপ্পেকে ততটা করে না। কেননা এমবাপের দৌড়ানোর জন্য জায়গার প্রয়োজন। তাই দলের সেরা তিন খেলোয়াড়ের মধ্যে এই যে ভিন্নতা, সেখানে ভারসাম্য নিয়ে আসাটা হবে পচেত্তিনোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

রক্ষণভাগে অবশ্য এই তিন ফরওয়ার্ডকেই আরো বেশি পরিশ্রম করতে হবে। প্রথম কয়েক ম্যাচে এমন কিছু উদাহরণ দেখা গেছে যেখানে দলটি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। বারবারই তিন মহাতারকার সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে বাকি দলের।

মেসি, নেইমার, এমবাপে জুটি; Image Source: Getty Images

গেল সপ্তাহান্তে এই বিচ্ছিন্নতার ফল হাতেনাতে পেয়েছে পিএসজি। রেনের কাছে ২-০ ব্যবধানে হেরে বসেছে তারা, যেটি এ মৌসুমে লিগে তাদের প্রথম পরাজয়। এদিকে গোলমুখে একটিও শট নিতে পারেনি তারা। অথচ এর আগপর্যন্ত লিগ ১-এর আটটি ম্যাচেই জিতেছিল তারা, এবং লিলের কাছ থেকে শিরোপা পুনরুদ্ধারে সঠিক পথেই এগোচ্ছিল।

কয়েক সপ্তাহ আগে, নিজের হোম ডেব্যুতে মেসির সাবস্টিটিউশন নিয়ে অনেক কথাই হয়েছিল। ২০ সেপ্টেম্বরের সে ম্যাচে লিওঁর বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জেতে পিএসজি। কিন্তু সেই সবকিছুকে ছাপিয়ে প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয় হুট করে মাঠ ছাড়ার পর মেসির ‘স্তব্ধ’ ও ‘হতভম্ব’ হয়ে পড়া। কিন্তু ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত সংবাদগুলো ছিল বিভ্রান্তিকর, অতিরঞ্জিত।

এ কথা তো নিশ্চিতভাবেই সত্য যে মেসি প্রতিটি ম্যাচের প্রতিটি মিনিটই খেলতে চান। কিন্তু তারপরও পচেত্তিনো তাকে মাঠ থেকে তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন এ কারণে যে, মেসি তার হাঁটুতে অস্বস্তিবোধ করছিলেন। পিএসজি বস কোনো সমস্যার আঁচ করেছিলেন, এবং তার শঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি বলে প্রমাণিত হয়। মেসি পরের কয়েকদিনের ট্রেইনিং মিস করেন।

দলের প্রতি মেসির কমিটমেন্টের ব্যাপারে কখনোই কোনো প্রশ্ন ছিল না। তার প্রমাণও কয়েকদিনের ব্যবধানেই তিনি দিয়েছেন। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জেতার ম্যাচে ৭৪ মিনিটে একটি চোখ-ধাঁধানো গোল করার পর তিনি রক্ষণ দেয়ালের পেছনে মাটিতে শুয়ে ‘ড্রাট এক্সক্লুডার’-এর ভূমিকা নেন। যখন দলের অধিনায়ক মারকুইনহোস তাকে এ পজিশন নিতে বলেন (সাধারণত এই ভূমিকায় থাকেন ভেরাত্তি, কিন্তু ততক্ষণে তাকে সাবস্টিটিউট করা হয়েছিল), মেসি দুবার ভাবেননি।

এটিও আরেকটি দৃষ্টান্ত যে বাইরের পৃথিবী মেসির মন-মানসিকতার কেমন ভুল ব্যাখ্যা করে। অনেক সাবেক খেলোয়াড়ের মেসিকে মাটিতে শুয়ে থাকতে দেখে আঁতে ঘা লাগে এবং একজন গ্রেট খেলোয়াড়ের এমন ‘অপমান’ সহ্য করতে না পেরে তারা সমালোচনায় মুখর হন। অথচ মেসি নিজে কিন্তু এই ব্যাপারটি নিয়ে মোটেই জলঘোলা করেননি। তিনি শুধু তা-ই করেছেন, যা দলের স্বার্থে প্রয়োজন হয়েছে।

‘ড্রাট এক্সক্লুডার’-এর ভূমিকায় মেসি; Image Source: Getty Images

রেনের বিপক্ষে হার বাদ দিলে, পিএসজিতে যোগদানের পর মেসি একটিমাত্র ছোটখাট সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, এবং সেটি এসেছে মাঠের বাইরে থেকে।

ফরাসি সংবাদপত্র এল’ইকুইপের প্রথম পাতায় প্রকাশিত হয়েছে পিএসজিতে মেসির চুক্তি ও বেতনের বিস্তারিত, যা তার একদমই মনঃপুত হয়নি। স্পেনে থাকতে তার বেতনের তথ্য ফাঁস হতে বহু বছর লেগে গিয়েছিল, অথচ ফ্রান্সে তা হতে লাগল দু’মাসেরও কম সময়। অবশ্য ওই প্রতিবেদনটির তথ্য-উপাত্ত অসত্য বলেই জানা গেছে।

এই বিরক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মেসির পরিবারের প্যারিসে বাড়ি কেনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া আরেক নাটক। স্থানীয় গণমাধ্যম বিষয়টিকে নানাভাবে রঙ চড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা নিয়মিতই এস্টেট এজেন্ট ও প্রোপার্টি এক্সপার্টদের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে, যেখানে ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে মেসির পরিবার কী ধরনের বাড়ি কিনতে চাইছে।

স্পেনে এমনটি ছিল না। সেখানে ফুটবলই ছিল মুখ্য প্রসঙ্গ। সকলেই জানত মেসি কোথায় থাকেন, কিন্তু তার পরিবারের গোপনীয়তাকে সবসময়ই শ্রদ্ধা করা হতো।

ফ্রান্সের অবস্থা অনেকটাই ভিন্ন, এবং মেসি এ ধরনের অযাচিত নাক গলানোকে একদমই পছন্দ করছেন না। বিশেষত এ কারণে যে, এতে করে তার পরিবারের নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

মেসির পরিবারের প্রধান লক্ষ্য হলো যত শীঘ্রই সম্ভব কোথাও থিতু হওয়া। যদিও এ ব্যাপারটি খুব একটা সহজ হবে না। বার্সেলোনার উপকণ্ঠে ক্যাস্টেলডেফেলসে মেসির যে বাড়ি ছিল, সেটির সঙ্গে ছিল বাগান ও চারপাশে প্রচুর খোলা জায়গা। কিন্তু প্যারিসে এ ধরনের বাড়ি খুব বেশি নেই।

এই মুহূর্তে মেসির পরিবার মাঝেমধ্যে তাদের হোটেলের নিকটবর্তী পার্কে ঘুরতে যায়, কিন্তু সবসময় তাদের সঙ্গে আঠার মতো লেগে থাকে নিরাপত্তা প্রহরী। তবে আশাব্যঞ্জক তথ্য হলো, বাড়ির সন্ধান প্রায় শেষের পথে, এবং সবকিছু গুছিয়ে আনার কাজটি করছেন স্বয়ং মেসির স্ত্রী আন্তোনেলা।

প্যারিসে মেসি ও তার পরিবার; Image Source: Getty Images

মেসির জীবনে আন্তোনেলার ভূমিকা নিয়ে যতই বলা হোক, তা বেশি হবে না। তিনি তো কেবল মেসির পার্টনার এবং তার সন্তানদের মা-ই নন। তিনি মেসির সবচেয়ে কাছের বন্ধু ও বিশ্বস্ত সহচর। এ ধরনের পরিস্থিতিতেও মেসির পরম নির্ভরতার প্রতীক তিনি। সবকিছু ঠিকভাবে চলছে কি না, তা নিশ্চিতের কাজটি সবসময়ই করেন আন্তোনেলা।

রোজারিওর স্থানীয় আন্তোনেলা রোকুজোকে মেসি প্রথম দেখেন, যখন তার নিজের বয়স সবে পাঁচ বছর। মেসির ছোটবেলার প্রিয় বন্ধু ও ফুটবলার লুকাস স্ক্যাগলিয়ার কাজিন আন্তোনেলা।

২০০৮ সাল থেকেই এই দম্পতি একত্রে রয়েছেন। মেসি নিজের মুখেই বলেছেন, প্যারিসে আসার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তার জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজটি ছিল প্রথমে তার স্ত্রীকে এবং পরে তার সন্তানদের এই স্থানান্তরের বিষয়টি জানানো।

কিন্তু আন্তোনেলা হলেন তাদের পরিবারের মূল ভিত। সবসময় তাদের পরিবারকে শক্ত ও দৃঢ় রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। নিজের সোলমেট ও সন্তানদের পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা ছাড়া মেসি যে বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে আসতেন, তা চিন্তাও করা যায় না।

মেসির ছেলেরাও তার বাবার মতোই হয়েছে। বড় দুজন পিএসজির ইয়ং সাইডে সপ্তাহে দুদিন ট্রেইনিং করে, এবং সেটির দায়িত্বও সামলান আন্তোনেলাই। তিনি সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যান, নিয়ে আসেন, এবং বাকি কিছুটা সময় কাটান নিজের ব্যক্তিগত কাজে: নিজের স্পন্সরশিপ, পার্টনারশিপ ও এন্ডর্সমেন্টে, এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকায়।

মেসির জীবনের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম আন্তোনেলা; Image Source: Getty Images

মেসির পরিবার যখনই তাদের হোটেলের জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়, অন্তত দুই-একজন সমর্থকদের তারা দেখতে পায়ই। অবশ্য শুরুর দিকের উন্মাদনার ঢেউ এখন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছে। অন্তত সেই মাত্রায়, যখন ভক্ত-সমর্থকদের ভিড় সামলাতে লাগানো হোর্ডগুলো খুলে ফেলা গেছে।

কিন্তু বিস্তৃত অর্থে প্যারিসে ‘মেসিম্যানিয়া’ থামার কোনো চিহ্নই কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। যখন আমি ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচের দিন ক্লাব শপে গেলাম মেসির নাম লেখা পিএসজির একটি হোম বা অ্যাওয়ে শার্ট কিনতে, তা পেলাম না। কারণ ইতোমধ্যেই সব শার্ট বিক্রি হয়ে গেছে।

তবে সিটির বিপক্ষে ওই ম্যাচে যে গোলটি তিনি করলেন, এবং আরো যে অসংখ্য গোলের প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার পায়ে, তাতে ধারণা করাই যায় যে আমরা উপভোগ করতে চলেছি প্যারিসে মেসির দারুণ একটি।

This article is in Bengali language. It is a translation of a BBC article titled 'Lionel Messi: The inside story of Paris St-Germain forward's first months in France' written by Guillem Balague. Necessary references have been hyperlinked inside. 

Featured Image © The Quint

 

 

Related Articles

Exit mobile version