বালোতেল্লি! আগুয়েরোওওও!
২০১২ সালের ১৩ মে; দিনটি সব ফুটবলপ্রেমীরই মনে থাকার কথা। প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার ইঁদুর দৌড়ে আগুয়েরোর শেষ মুহূর্তের গোলে লিগ শিরোপা যায় সিটিজেনদের ঘরে। প্রিমিয়ার লিগ নামকরণের পর সেটিই সিটিজেনদের প্রথম শিরোপা। আর মজার ব্যাপার হলো, প্রিমিয়ার লিগে বালোতেল্লির একমাত্র অ্যাসিস্টও এটি। তার চেয়ে বড় কথা, এই গোল দিয়েই বিশ্বকে বার্তা দেয় সিটিজেনরা, নতুন এক পরাশক্তির আবির্ভাব হচ্ছে ফুটবল বিশ্বে।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
সময়টা ১৮৮০ সাল। ইংল্যান্ডে, বিশেষ করে ম্যানচেস্টারের গর্টনে প্লেগের মহামারী তখন প্রকোপে। যার দরুন বেকার সমস্যা, বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম অনেকাংশেই বেড়ে যায়। তখন সেইন্ট মার্কস আর ওয়েস্ট গর্টন নামে দুটি চার্চ এগিয়ে আসে। দুই চার্চের প্রধান রিভারেন্ড কনেল আর উইলিয়াম বিস্টো সিদ্ধান্ত নেন একটি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করার। যার প্রধান লক্ষ্য ছিল ফুটবলের মাধ্যমে শান্তি নিয়ে আসা। এভাবে এই দুই চার্চের সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় তৎকালীন ক্লাব আর্ডউইক ফিল্ড, যার বর্তমান নাম ম্যানচেস্টার সিটি।
নগর-প্রতিদ্বন্দ্বীদের মতো ইতিহাস সমৃদ্ধ ক্লাব নয় ম্যানচেস্টার সিটি। ১৮৮০ সালে যাত্রা শুরু করার পর সিটিজেনদের ১৯ বছর লাগে প্রথম ডিভিশনে পা রাখার জন্য। এরপর পাঁচ বছরের মাথায়, ১৯০৪ সালে এফএ কাপ জিতে প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় ক্লাবটি। তারপরের অধ্যায়টুকু অন্ধকারই বলা যায়। এর প্রায় তিন যুগ পর প্রথম লিগ কাপ জেতে তারা। ১৯৩৭ সালে সেই শিরোপা জেতার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল এরিক ব্রুকের। সিটিজেনদের হয়ে এতদিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে তিনিই ছিলেন। এ বছর এককভাবে রেকর্ডটি নিজের করে নেন সার্জিও আগুয়েরো।
তারপর ঠিক ৩০ বছর। মাঝখানে শুধুমাত্র একটি এফএ কাপ জয়। সিটিজেনদের পুরোপুরি অন্ধকার সময়টা ছিল এই তিন দশকই। অতঃপর ১৯৬৮-৬৯ সালে তারা তাদের দ্বিতীয় লিগ শিরোপা জয় করতে সক্ষম হয়। মাঝে কিছু এফএ কাপ, কমিউনিটি শিল্ড জিতলেও বড় ক্লাব হয়ে ওঠার মতো কিছু করতে পারেনি ম্যানচেস্টার সিটি।
উত্থানের শুরু
২০০১ সালে কোচ কেভিন কিগ্যানের হাত ধরে মূল উত্থানের সূত্রপাত হয়। সে বছরই তিনি দলে ভেড়ান আনেলকা, পিটার স্মেইকেল্, ভিভিয়ান ফো এর মতো খেলোয়াড়দের। এর দরুন ২০০২ থেকে প্রিমিয়ার লিগে নিয়মিত হতে পারে সিটিজেনরা। ২০০২ সালে কমনওয়েলথ গেমসের জন্য ৪০ হাজার দর্শকের ধারণ ক্ষমতার ইতিহাদ স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়। ২০০৩ এ মেইন থেকে ইতিহাদে তাঁবু গড়ে কিগ্যান বাহিনী। বর্তমানে ইতিহাদের ধারণক্ষমতা প্রায় ৫৫ হাজার। কেভিন কিগ্যানের সময়ে ম্যানসিটি তেমন সাফল্য না পেলেও আগাম বার্তা দিয়ে রাখে অন্যান্য পরাশক্তিদের। এই সময়টাতে ম্যানচেস্টার ডার্বিগুলো উত্তেজনা ছড়াতে শুরু করে। মূলত কেভিন কিগ্যান ম্যানচেস্টার সিটির উত্থানের অগ্রদূত হিসেবে ধরা হয়।
শেখ মনসুর যুগ
সিটির ইতিহাসে এই ধনকুবেরের নাম স্বর্ণাক্ষরেই লেখা থাকবে। আরব আমিরাতের এই ধনকুবেরই ঢেলে সাজিয়েছেন সিটিকে। ২০০৮ সালের ৪ই আগস্ট ২১০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে ক্লাবটি কিনে নেন আরব আমিরাতের বর্তমান সহকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ মনসুর বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি সিটিকে। ২০১০ এর মধ্যেই ক্লাবটির মূল্য এসে দাঁড়ায় ৯০০ মিলিয়নে।
ক্লাবটি কেনার পরপরই সেই সময়কার ব্রিটিশ রেকর্ড ট্রান্সফার ফি ৩২.৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে রবিনহোকে দলে ভেড়ান শেখ মনসুর। রোনালদোর জন্য ১৩৪ মিলিয়নের মেগা অফারও করেন। যদিও রোনালদো তখন ছোট ক্লাব বলে খেলতে চাননি সিটিতে। ২০০৯ সালে সিটির কোচ হিসেবে যোগ দেন রবার্তো মানচিনি। মানচিনি এসেই দলে ভেড়ান বোয়াটেং, বালোতেল্লি, সিলভা, কোলারভ, মিলনার, তোরেদের মতো তারকাদের। যার ফল হাতেনাতেই পায় সিটিজেনরা। ২০১০-১১ সিজনে লিগ টেবিলে ৫ম স্থান অর্জন করে সিটিজেনরা। যা কিনা প্রিমিয়ার লিগ নামকরণের পর তখন পর্যন্ত সিটির সর্বোচ্চ সাফল্য। পরের বছরই হাতে আসে বহু আরাধ্য লিগ শিরোপা। ২০১১-১২ মৌসুমে নগর-প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে শেষ দিন পর্যন্ত যুদ্ধ করে শিরোপায় হাত রাখে মানচিনির শিষ্যরা। কিন্তু উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ব্যর্থতার কারণে দল ছাড়েন মানচিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হন চিলিয়ান কোচ ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনি। তার সাথে সিটি কিনে নেয় দারুণ ফর্মে থাকা সার্জিও আগুয়েরোকে। চির প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ভাগিয়ে আনে আগুয়েরোরই আর্জেন্টাইন সতীর্থ কার্লোস তেভেজকেও। যার সুবাদে ১৩-১৪ মৌসুমে আবারও লিগ শিরোপা ঘরে আনে সিটিজেনরা। এদিকে ২০১৫-তে চেলসিতে ব্রাত্য হতে থাকা ডি ব্রুইনকে কিনে নেয় তারা। এভাবে ধীরে ধীরে দলকে গুছিয়ে আনেন শেখ মনসুর।
পেপ গার্দিওলা: সিটিজেনদের আশা
লিগে সাফল্য পেলেও চ্যাম্পিয়নস লিগে সিটির পারফরম্যান্স বরাবরই হতাশাজনক। আর বড় ক্লাব হয়ে উঠতে হলে চ্যাম্পিয়নস লিগের সাফল্য না হলেই নয়। যার কারণে শেখ মনসুর ২০১৬ সালে বায়ার্ন থেকে উড়িয়ে আনেন পেপ গার্দিওলাকে। ক্ষুরধার মস্তিষ্ক আর কোচিংয়ে অভাবনীয় সাফল্যের জন্য বিশ্ব ফুটবলে নিজের জন্য আলাদা একটা জায়গা ইতোমধ্যে তৈরি করে নিয়েছেন পেপ। এসে প্রথমেই নিজের মতো করে দল সাজানো শুরু করেন তিনি। অন্যদিকে দেদারসে টাকা ঢালতেও পরোয়া করেননি শেখ মনসুর। পেপের প্রথম মৌসুমেই অনেক তারকা প্লেয়ারদের দলে ভেড়ায় সিটি। তার মধ্যে রয়েছে স্টোনস, সানে, জিসুস নাভাস, গন্ডুগান, ওটামেন্ডি, নলিতো, ব্রাভো। মৌসুমের শুরুটা দুর্দান্তই করে সিটিজেনরা। কিন্তু হঠাৎ করে হোঁচট খাওয়ায় তালগোল পাকিয়ে ফেলে সিটি। শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে ৩য় থেকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় সিটিজেনদের। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ১২ গোলের রোমান্স শেষে মোনাকো হারিয়ে দেয় ম্যানচেস্টার সিটিকে। ততদিনে পেপের ব্যর্থতা নিয়ে রব উঠে গেছে। সিজনের শুরুতে ডিফেন্সের পিছনে অনেক টাকা খরচ করার জন্য সমালোচনা শুনতে হয়েছিলো পেপকে। ব্যর্থতার পর সেটা মহামারী আকার ধারণ করে। কিন্তু লোকটির নাম পেপ গার্দিওলা। তিনি এত সহজে হার মানতে রাজি নন।
১৭-১৮ মৌসুম শুরুর আগে তিনি দলে ভেড়ান এডারসন, দানিলো, ওয়াকার, মেন্ডি, বার্নার্ডো সিলভাদের। আর এই মৌসুমটা শুরু হয় স্বপ্নের মতোই। পেপের হাত ধরে প্রিমিয়ার লিগে এখনো ২৭ ম্যাচে মাত্র একটিতে হার সিটির। সাথে ৭৯ গোল, ওল্ড ট্রাফোর্ডে গিয়ে জয় নিয়ে আসা, আর্সেনালের টানা ১৪ ম্যাচ জিতার রেকর্ড ছোঁয়া তো আছেই। মৌসুমের অর্ধেক যেতে না যেতেই পুরো ফুটবল বিশ্বের নজর কাড়তে সমর্থ্য হয় গার্দিওলার ম্যানসিটি। বলার অপেক্ষা রাখে না, এসব কিছুর পিছনে রয়েছে পেপ গার্দিওলা নামক টেকো মাথার লোকটির রণকৌশল। চলুন দেখে আসি সিটির এই অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে থাকা গার্দিওলার রণকৌশল।
অ্যাটাকিং ফুলব্যাক
আধুনিক ফুটবলে অ্যাটাকিং ফুলব্যাক একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ শুরু হয় ফুলব্যাক থেকেই। আর পেপ গার্দিওলার ট্যাকটিক্সেও ফুলব্যাকদের গুরুত্ব অপরিসীম। বার্সাতে ছিল আলভেজ-আবিদাল জুটি, তেমনি বায়ার্নে ছিল আলাবা-লাম জুটি। সিটিতে এসে ভালো কোনো ফুলব্যাক পাননি পেপ। জাবালেতা থাকলেও বয়স ছিল অনেক বেশি। তাই এই মৌসুমে গার্দিওলা জোর দেন ফুলব্যাকদের উপর। কিনে আনেন ওয়াকার, মেন্ডি আর দানিলোকে। যার দরুন এই মৌসুমের শুরু থেকেই দারুণ এটাকিং ফুটবলের পসরা সাজায় সিটিজেনরা। লিগে ম্যাচপ্রতি গড়ে ৩ গোল তারই প্রমাণ।
মিডফিল্ড মায়েস্ত্রো
ফুটবলে এখন ব্যবধান গড়ে দেয় শক্তিশালী মিডফিল্ডই। আর এদিক দিয়ে সিটিজেনরা অনেক এগিয়ে। ডি ব্রুইন আর সিলভা জুটি যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই ত্রাসের নাম। আর সাথে সাথে সাইড বেঞ্চের মিডফিল্ডও ঈর্ষণীয়। তোরে, গন্ডুগান, বার্নার্ডো সিলভা- কেউ কারো থেকে কম নন। এই সিজনে এখন পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে ২৭ ম্যাচ খেলে ডি ব্রুইন করেছেন ৭ গোল ও ১৪ অ্যাসিস্ট, আর ২১ ম্যাচে ডেভিড সিলভা করেছেন ৫ গোল ও ৮ অ্যাসিস্ট। এই পরিসংখ্যানই যথেষ্ট সিটির এই মিডফিল্ড ডুয়োর কারিশমা বোঝানোর জন্য।
জিসুস-আগুয়েরো জুটি
প্রথমে সবাই সন্দিহান ছিল এই জুটিকে নিয়ে। কিন্তু গার্দিওলার ট্যাকটিক্সের সাথে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছেন দুজনই। বক্সের ভিতর দুজনই বিধ্বংসী। আর ফলস নাইন আর পিউর নাইন এই দুই ক্ষেত্রেই জিসুস প্রশংসার দাবিদার। আর আগুয়েরোর তো সিটির উত্থানেরই প্রতিরূপ। সিটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা, ডার্বিতে ৮ গোল নিয়ে আছেন ৫ নাম্বারে (সিটিজেনদের মধ্যে প্রথম)। এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত দুজনের সম্মিলিত গোল ৩৯টি। আগুয়েরো ২৭ আর জিসুস ১২টি। সিটির মোট গোলের পেছনে তাদের অবদান প্রায় ৩৬%।
সুইপার কিপার
সুইপার কিপার আধুনিক ফুটবলের একটি টার্ম। যার কাজ হচ্ছে ডিফেন্সের কাছাকাছি থেকে লং পাস দিয়ে অ্যাটাক তৈরি করা। এই সামর্থ্য না থাকার জন্য জো হার্টকে ইতিহাদ ছাড়তে হয়। বার্সেলোনা থেকে তার জায়গায় আসেন ক্লদিও ব্রাভো। কিন্তু আশানুরূপ পারফরম্যান্স না করতে না পারায় দ্রুতই পেপের আস্থা হারান তিনি। তাই এই সিজনে পেপ বেনফিকা থেকে ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার এডারসনকে নিয়ে আসেন ইতিহাদে। এডারসনের কৃতিত্বে এখন পর্যন্ত মাত্র ২০টি গোল হজম করে সিটি, যা প্রিমিয়ার লিগে এই সিজনে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।
ডিফেন্স ও প্রেসিং ফুটবল
গার্দিওলার প্রেসিং ফুটবল এবং ডিফেন্সের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সও সিটির সাফল্যে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। হাই প্রেসিং করে প্রতিপক্ষকে সবসময় ব্যস্ত রাখার সাথে ডিফেন্সের প্লেয়ারদের প্রায়ই গোল পাওয়া সিটিকে এগিয়ে দেয় অনেকাংশেই। আর এর পেছনের মূল দুই কাণ্ডারি হলেন ওটামেন্ডি আর স্টোনস। ডিফেন্সের পাশাপাশি গোল করাতেও দক্ষ এই দুই ডিফেন্ডার। চলতি সিজনে এখন পর্যন্ত এই দুজন গোল করেছেন ৮টি। সদ্য হওয়া ম্যানচেস্টার ডার্বিতেও জয়সূচক গোলটি আসে ওটামেন্ডির পা থেকে।
গতিময় ফুটবল
গতিময় ফুটবল প্রিমিয়ার লিগেরই অংশ। কিন্তু এই সিটি সেই গতির সাথে নিয়ে এসেছে ছন্দও। সেজন্য প্রশংসার দাবিদার দুই উইংগার লেরয় সানে আর রাহিম স্টারলিং। গতি আর ড্রিবলিং দিয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স কে তাসের ঘরের মতো গুঁড়িয়ে দেওয়ার সামর্থ্য দুজনের রয়েছে। আর এই সিজনে শেষ মুহূর্তে গোল করাটা তো অভ্যাসই বানিয়ে ফেলেছেন স্টারলিং।
গোলবলের খেলা মানেই অনিশ্চয়তায় ঢাকা। ম্যানচেস্টার সিটি এবার কতদূর যাবে, তা সময়ই বলে দেবে। ২৭ ম্যাচ শেষে ১৬ পয়েন্টের লিড, অলৌকিক কিছু না হলে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাটা এবার সিটিজেনদের ঘরেই যাচ্ছে। তবে তার চেয়ে বড় ব্যাপার হলো পরাশক্তি হয়ে উঠার ক্ষমতা যে এই সিটিজেনদের আছে, তা তারা জানান দিয়ে যাচ্ছে প্রতি ম্যাচেই। নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করছে ইউরোপের বাকি পরাশক্তিদের।
গত দশ বছরে ইউরোপীয় ফুটবলে ম্যানসিটির যে উত্থান তা শুধু ঈর্ষণীয়ই নয়, যেকোনো ফুটবল ক্লাবের জন্য অনুপ্রেরণাও। মাত্র এই কয়েক বছরের ব্যবধানে মধ্যম সারির এক দল থেকে আজ ইউরোপের পরাশক্তি হয়ে উঠেছে ক্লাবটি। এই উত্থানের সূচনা হয়েছিল শেখ মনসুরের হাত ধরে। ইউরোপের সামনের সারির একটি দল হতে হলে যে পরিমাণ অর্থনৈতিক সামর্থ্য দরকার, তা ভালোভাবেই দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মনসুর মালিকানা পাওয়ার পর প্লেয়ার কিনতে কখনোই কার্পণ্য করেনি সিটি। একের পর এক দলে ভিড়িয়েছে তারকা ফুটবলারদের। শুধু ফুটবলার নয়, দলে ভিড়িয়েছেন প্রোফাইলিক সব কোচকে। মানচিনি, পেলিগ্রিনির আঁকা ক্যানভাসে এখন নিজের তুলির আঁচড় দিচ্ছে গার্দিওলা। গার্দিওলা যে ক্লাবেই গিয়েছেন, নিজের পদচিহ্ন রেখে গিয়েছেন। হয়তো সাজানো বাগানই আরও গুছিয়ে সাজিয়েছেন, কিন্তু গার্দিওলার শিষ্যরা কখনো দ্বিতীয় সেরা রূপে অবতীর্ণ হয়নি। তবে কি নতুন আরেক পরাশক্তির সাথে পরিচিত হচ্ছে ফুটবল বিশ্ব? জবাব পাওয়া যাবে খুব শীঘ্রই।