মোহাম্মদ আশরাফুল। কারো চোখে ট্রাজেডির নায়ক, কারো চোখে ভিলেন। তবে এটা সত্যি যে, বাংলাদেশের প্রথম সুপারস্টার তিনি। কনিষ্ঠতম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে যখন আত্মপ্রকাশ করলেন, তার নামের ভেতর দিয়েই বাংলাদেশকে চিনেছিল অনেকে। কার্ডিফ, নটিংহ্যাম, গল, চট্টগ্রাম; আশরাফুলকে মনে রাখবে টেস্ট ও ওয়ানডের অনন্য সব কীর্তির জন্য। তারপরও আশরাফুলের ক্যারিয়ারের সব ফরম্যাটে গড় ২৫-এর নিচে।
নিজের আরেকটা রূপ বের করে আনলেন ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে। বিপিএলে করা সেই অন্যায়ের শাস্তি হিসেবে তিন বছর সব ধরনের ক্রিকেটে ছিলেন নিষিদ্ধ। আর পরের দুই বছর ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট ও জাতীয় দলে নিষিদ্ধ ছিলেন। অবশেষে ১৩ আগস্ট, ২০১৮ তারিখে আশরাফুল মুক্ত হচ্ছেন সব নিষেধাজ্ঞা থেকে। এবার আশরাফুল স্বপ্ন দেখছেন ইতিহাসটা নতুন করে লেখার।
নতুন জীবনের এই নতুন শুরুর জন্য প্রস্তুতি নিতে এখন আছেন ইংল্যান্ডে। সেখান থেকেই ফোনে রোর বাংলাকে বিস্তারিত বলেছেন নিজের স্বপ্ন, পাঁচ বছর নিষেধাজ্ঞায় থাকা সময়ের যন্ত্রণা, অন্যায়ের কথা এবং শাস্তির জীবনের কথা।
হঠাৎ লন্ডনে কেন? ক্রিকেটের কিছু?
ইংল্যান্ডের আবহাওয়ায় ট্রেনিং করা আর কিছু ম্যাচ খেলার জন্য এলাম। ২০১৯ বিশ্বকাপ তো এখানে। যদি জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে পারি এই অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগবে। দেশে বসেও তো ট্রেনিং, জিম; এসব করছিলাম। ভাবলাম, ইংল্যান্ডে গিয়ে করি। পাশাপাশি কিছু গ্রেড লেভেলের ম্যাচও খেলছি। রতন ভাইয়ের (শহিদুল ইসলাম) সাথে ওভালে গিয়ে ট্রেনিং করলাম।
জাতীয় দল মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী তাহলে?
আত্মবিশ্বাসী বলব না; আশাবাদী। আমাকে কিছু না দেখে জাতীয় দলে নিয়ে নেবে, এমন আশা করছি না। কিন্তু নিজেকে যদি প্রমাণ করতে পারি, ঘরোয়া ক্রিকেটে যথেষ্ট পরিমানে রান করতে পারি; তাহলে আশা তো করতেই পারি। এই আশা নিয়েই তো পাঁচ বছর ধরে কষ্ট করে যাচ্ছি। আশা করি, এর ফল পাব আমি।
আপনার ওপর থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। এখন বিপিএল খেলতে পারবেন, জাতীয় দলের জন্য বিবেচনায় আসতে পারবেন। এই সময়ের অনুভূতিটা কী?
আলহামদুলিল্লাহ। এই সময়টার জন্য গত পাঁচ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। সত্যিকার অর্থে আমি দিন গুনেছি বলতে পারেন, কবে ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট আসবে। আমি রোজ হিসেব করতাম, আর কয়দিন বাকি আছে। অবশেষে দিনটা এল। এই দিনটা মাথায় রেখেই আমি পরিশ্রম করেছি। এখন আমার কোথাও খেলতে বাঁধা নেই। বিশেষ করে বিপিএলে খেলাটা আমার জন্য বড় একটা উপকারের ব্যাপার হবে। বিপিএলে আমি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট খেলতে পারব, ওখানে সবার নজর থাকবে। ভালো পারফরম্যান্স করতে পারলে দ্রুত সবার চোখে পড়ব। এটা আমার জন্য খুব জরুরী ছিল। পাঁচ বছর আগে একটা অন্যায় করেছিলাম, অবশেষে সেই অন্যায়ের শাস্তি পুরো শেষ হল।
আপনার অনেক ভক্তের দাবি, আপনার শাস্তি বেশি হয়েছে। আপনি কি মনে করেন, শাস্তিটা আরো কম হতে পারত?
যে শাস্তি পায়, সে তো মনে করবেই যে, আরো কম শাস্তি হলে ভালো হত। আমার ভক্তরাও তো তা-ই চাইবে। কম হলে তো আমি খুশিই হতাম। তাহলে আমার কষ্টটাও কম হত। কিন্তু এখানে আমি বা আমার ভক্তরা কী চায়, সেটা তো ব্যাপার না। ব্যাপার হল, একটা আন্তর্জাতিক আইন আছে। সেই অনুযায়ী আমার বিচার হয়েছে। আর আমাকে শাস্তি দেওয়াটা একটা দৃষ্টান্ত তৈরীর ব্যাপার ছিল। তাই আমি এই শাস্তির সাথে কখনো দ্বিমত পোষণ করি না।
এই শাস্তির ভেতর দিয়ে কি সেই অন্যায়ের স্মৃতিটাকে পুরোপুরি ভুলে যেতে পেরেছেন? পুরোপুরি মুছে গেছে ওই ব্যাপারগুলো?
পুরোপুরি কী আর মুছে ফেলা যায়? অন্যায়ের একটা দাগ তো থেকেই যায়। হ্যা, ওই অন্যায়টাকে শেষ করার জন্যই এই পাঁচটা বছর জীবন থেকে বিসর্জন দিয়েছি। আমি চেয়েছি, ওটা যেন আমার সাথে আর না থাকে। তবে এটাও সত্যি যে, আমি ওটা ভুলতে চাই না। কারণ, ওই ঘটনা আমাকে এবং ক্রিকেটকে অনেক শিক্ষা দিয়েছে। ওটা ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। অন্যায়টা ভুলতে চাই; কিন্তু শিক্ষাটা মনে রাখতে চাই।
শিক্ষাটা কেমন?
দেখুন, আজকের যুগ হল ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের যুগ। আমি যে অবস্থায় পড়েছিলাম, এই অবস্থায় এই যুগে যে কেউ পড়তে পারে। কিন্তু আমাকে দেখে একটা শিক্ষা সবাই নিতে পারে যে, এসব প্রলোভনে পা দেওয়া যাবে না। আমি সবসময় বলি, আমি খুব ভাগ্যবান। ভাগ্যবান বলে আবার ক্রিকেটে ফেরার সুযোগ পেয়েছি। একই অবস্থায় পড়লে অন্য কেউ হয়তো এই সুযোগ নাও পেতে পারে। তাই আমি সব তরুণ ক্রিকেটারকে বলি, আমার কাছ থেকে শিক্ষা নাও। এমন প্রলোভন জীবনে আসবে। কিন্তু সেটা ফিরিয়ে দিতে জানতে হবে। অন্যায়কে, দুর্নীতিকে ‘না’ বলতে শিখতে হবে। আমি যে ভুল করেছি, সেটা যেন আর কেউ না করে, এটাই আমার জীবনের শিক্ষা।
এই পাঁচ বছর কেমন কেটেছে? ক্রিকেট ছাড়া প্রথম তিন বছর…
খুব কঠিন। খুব কঠিন। বিশেষ করে প্রথম তিন বছরের কথা যেটা বললেন। দেখেন, আমি তো ক্রিকেট ছাড়া জীবনে কিছু কখনো ভাবিনি। সেই ছোটবেলায় ওয়াহিদ স্যার যখন আমাকে ক্রিকেটের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছেন, তারপর থেকে এটাই আমার জীবন। আমি রামপুরা থেকে হেঁটে হেঁটে ধানমন্ডি গিয়ে প্র্যাকটিস করেছি। ক্রিকেট নিয়ে ভেবেছি, ক্রিকেটই দেখেছি, ক্রিকেটই খেলেছি। কিন্তু সেই আমাকে তিন বছর ক্রিকেটের বাইরে থাকতে হয়েছে। আমি একটা বড় ম্যাচ খেলতে পারিনি। পানি ছাড়া মাছের বেঁচে থাকার মতো বেঁচে ছিলাম। কথাগুলো শুনতে ভাবুক ধাঁচের মনে হতে পারে, কিন্তু এটাই সত্যি। আমার জীবনে এত কঠিন সময় আর আসেনি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই যে, সেই সময়টা শেষ হয়েছে। গত দুই বছর ধরে কিছু ক্রিকেট খেলতে পারছি। আর এখন তো সব ধরনের ক্রিকেটই খেলতে পারব। অবশেষে কঠিন সময়টা পার করে এসেছি।
পরিবার থেকে, বন্ধুদের থেকে বা মিডিয়া থেকে কেমন সমর্থন পেয়েছেন?
আবারো বলি, আমি খুব ভাগ্যবান মানুষ। আমার মতো এই কাজ অন্য কেউ করলে সমাজ হয়তো তাকে পুরোপুরি ছুড়ে ফেলে দিত। আমি আগ বাড়িয়ে সব অন্যায় স্বীকার করার জন্য হোক, বা অন্য কোনো কারণে হোক, এই সময়টায় মানুষ আমাকে দারুণ সমর্থন দিয়েছে। আর পরিবারের কথা তো বলার দরকারই নেই। তারা সবসময় আমার পাশে ছিল। বন্ধুরা ছিল। এমনকি সাধারণ মানুষ আর মিডিয়ারও দারুণ সমর্থন পেয়েছি। লোকে বারবার জিজ্ঞেস করেছে, আশরাফুল কবে ফিরবে, আশরাফুলকে দেখতে চাই। এসব কথাবার্তা আমাকে টিকিয়ে রেখেছে।
ক্রিকেট কাঠামো থেকে, মানে বিসিবি থেকে কেমন সমর্থন পেয়েছেন?
এটা আমি বলতে যাচ্ছিলাম, ক্রিকেট বোর্ডকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। তারা আমাকে দারুণ সমর্থন দিয়েছেন। যখন কোথাও খেলার অনুমতি ছিল না, তখন বিশেষ ব্যবস্থায় আমার ট্রেনিং চালু রাখার জন্য তারা অনুমতি দিয়েছেন। বোর্ডে আমি যখনই গেছি বা কোথাও যখনই বোর্ড সভাপতির সাথে দেখা হয়েছে, উনি উৎসাহ দিয়েছেন। বোর্ডের সিইও সুজন ভাই (নিজামউদ্দিন চৌধুরী) খুব সাহায্য করেছেন। সবাইকে এই সুযোগে ধন্যবাদ জানাই।
বাবাকে মিস করছেন এই সময়ে?
অনেক, অনেক মিস করছি। আবার আব্বা ছিলেন আমার সবসময়ের সবচেয়ে বড় সমর্থক। আমার আব্বা কিন্তু নিজে তার এলাকায় বেশ নামকরা মানুষ ছিলেন। কিন্তু লোকেদের কাছে পরিচয় দিতেন, আমি আশরাফুলের বাবা। আমার শাস্তি পাওয়ার পর এই মানুষটাই সবচেয়ে বেশি আমার পাশে থেকেছেন, আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আজকের এই দিনটা দেখতে পেলে উনিই সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। কিন্তু তিনিই আজ আমার পাশে নেই।
আপনার এই শাস্তিপূর্ব যুগের একটা আলাপ করা যাক। আপনি দেশের সেরা ব্যাটসম্যান বলে বিবেচিত ছিলেন। কিন্তু তিন ফরম্যাটেই আপনার গড় ২৫-এর নিচে। নিজের প্রতি সুবিচার কি আসলে কখনো করতে পেরেছেন?
নাহ। পারিনি। পারিনি বলেই তো আমার রান এত কম, গড় এত খারাপ। আমাকে তো লোকে মনে রেখেছে কয়েকটা ভালো ইনিংস খেলার জন্য। আমার ক্যারিয়ার নিয়ে আমার খুবই আফসোস আছে। আমি যতদিন আগের পর্বে খেলেছি, কখনো নিজের পোটেনশিয়াল অনুযায়ী ধারাবাহিক হতে পারিনি। বারবার সাফল্যের জন্য নিজেকে বদলেছি। পরিণত আচরণ করতে পারিনি। তার ফলেই নিয়মিত রান পাইনি। এটা নিয়ে আমি খুবই দুঃখ করি যে, আমার এর চেয়ে অনেক বেশি বড় বড় ইনিংস খেলা উচিত ছিল।
আপনি আবার জাতীয় দলের স্বপ্ন দেখছেন। ধরা যাক, জাতীয় দলে আবার ফিরে এলেন। সে ক্ষেত্রে আমরা কি বদলে যাওয়া এক আশরাফুলকে দেখার আশা করতে পারি?
আমি এটুকু বলতে পারি, আমি এখন বুঝতে পারি যে, কী করে নিয়মিত বড় স্কোর করতে হয়। এক্ষেত্রে গত প্রিমিয়ার লিগে ১৩ ম্যাচে আমার ৫টা সেঞ্চুরির কথা বলতে পারি। আমি আগের চেয়ে এখন অনেক পরিণত। আমি নিজের ভেতর থেকে বুঝি যে, একটা বড় ইনিংস খেলা মানেই সব হয়ে গেছে, তা নয়। প্রতিদিন আমাকে আগের চেয়ে ভালো খেলতে হবে।
প্রিমিয়ার লিগে ৫টা সেঞ্চুরির পর বলেছিলেন, এর পেছনে আপনার বন্ধু মাশরাফির একটা অবদান আছে?
হ্যাঁ। আমি এই লিগেও শুরুর দিকে ভালো করছিলাম না। তখন ও একদিন ডেকে বললো, ‘দ্যাখ, তুই কখনোই এতো কম রান করার ব্যাটসম্যান না। তোর আরো নিয়মিত বড় ইনিংস খেলার কথা। ফিটনেসটা ফেরা আর ফোকাসটা বাড়া। তাহলে রান পাবি।’ সেই দিন আমার ভেতর একটা বদল এসেছে। আমি ভাবলাম, আমাকে আরও নিয়মিত রান করতে হবে এবং ফিটনেস বাড়াতে হবে। সেই থেকে আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। তার ফলও পেয়েছি। লিগের শেষ ৬ ম্যাচে ৪টা সেঞ্চুরি ও একটা হাফ সেঞ্চুরি করেছি।
এবার লিগ তাহলে আপনাকে পরিণত করে দিল?
বলা যায়। ওই যে বললাম, আমার কী করা উচিত, সেটা বুঝতে শিখেছি। খুব কম বয়সে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলাম। ফলে কখনোই নিজের গুরুত্বটা সেভাবে বুঝতে পারিনি। এখন আমি এটুকু বুঝতে পারি যে, আমার পক্ষে কী করা সম্ভব।
ফিটনেসের কী অবস্থা? বলছিলেন যে, ফিটনেস বাড়ানোর জন্য অনেক পরিশ্রম করছেন?
ভাত খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। সেই সাথে জিমে অনেক পরিশ্রম করছি। ইংল্যান্ডে আসার আগে বিসিবির ট্রেনার, আমার বন্ধু আশিক মজুমদারের সাথে চুক্তি করে তিন মাস ওনার পরামর্শে ট্রেনিং করেছি। আমি ইতোমধ্যে প্রায় আট কেজি ওজন কমিয়েছি। আরও তিন/চার কেজি কমাব। তাহলে আমি মনে করি, সেরা মানে পৌছানো সম্ভব।
এখনই কী জাতীয় দলের স্বপ্ন দেখছেন?
তা কী করে সম্ভব? আমি তো আগেই বলেছি, ৫টা সেঞ্চুরি করেই জাতীয় দল আশা করা যায় না। আমার জন্য সুখবর হল, এখন আমাকে বিবেচনা করা হবে। আমার এখন লক্ষ্য হল জাতীয় ক্রিকেট লিগের আগে নিজেকে পুরোপুরি তৈরি করে ফেলা। এরপর বিপিএল-এ নিজের সেরা পারফরম্যান্সটা করা। এগুলো সব নিয়মিত করতে পারলে তখন জাতীয় দলের কথা ভাবা যাবে।
আপনি ২০১৩ সালে সর্বশেষ জাতীয় দলে খেলেছেন। তারপর থেকে আমাদের জাতীয় দল কতটা বদলে গেছে, সেটা কি অনুসরণ করেছেন?
অবশ্যই। বাংলাদেশ জাতীয় দল এখন বিশ্বে সমীহ তৈরী করা একটা দল। এই সময়ে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে তো বড় দল হয়ে উঠেছে। অনেকগুলো সিরিজ জিতেছে তারা। বিশ্বকাপে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দারুণ করেছে। এখন বাংলাদেশ নিয়মিত জিতছে। আমি যে অবস্থায় রেখে এসেছিলাম, তার থেকে অনেকটাই বদলে গেছে।
এই জাতীয় দল তো অনেক স্থিতিশীল। এখানে নিজের জায়গা দেখেন আদৌ কোথাও?
আমি চাই না যে, কেউ খারাপ খেলুক, তার বদলে আমি সুযোগ পাই। আমি চাইব সবচেয়ে ভালো যে করছে, তার চেয়ে ভালো করে সুযোগ পেতে। তাহলে সেটা জাতীয় দলের জন্যই ভালো হবে। তবে এটা সত্যি যে, অভিজ্ঞতাই এখনো জাতীয় দলের মূল ব্যাপার হয়ে আছে। আপনি দেখেন, জাতীয় দলে সেই সিনিয়র পাঁচ জনই কিন্তু নিয়মিত পারফরম করছে। বাকিরা দারুণ ট্যালেন্টেড। কিন্তু ধারাবাহিক না। ফলে আমার অভিজ্ঞতা এখানে প্রয়োজনীয় হলেও হতে পারে। তবে আমি জানি, আমাকে অনেক পারফরম করতে হবে সে অবধি যেতে হলে।
এবার যদি জাতীয় দলে ফেরেন, লক্ষ্যটা কী থাকবে?
পুরোনো আশরাফুল যেন না ফেরে। আমি মাঝে মাঝে একটা দুইটা ভালো ইনিংস খেলার জন্য জাতীয় দলে আর ফিরতে চাই না। এবার ফিরলে নিয়মিত আমার ব্যাট থেকে রান আসবে, এই ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে চাই। আমার যা সম্ভাবনা, সেটা পুরোটা কাজে লাগাতে চাই।
শেষ প্রশ্ন। বয়স ৩৪ পার করে ফেললেন। এই বয়সে কী আসলে এত স্বপ্ন দেখা যায়?
বয়সটা তো একটা সংখ্যা। আমার ব্যাচমেট মাশরাফি এখনো দলের সেরা বোলার। এই ওয়েস্ট ইন্ডিজেও দলকে ম্যাচ জেতাল। ও পারলে আমি পারব না কেন। আমার চেয়ে বেশি বয়সে বিশ্বে ক্রিকেটারের অভিষেকেরও নজির আছে। আমি তো নতুন করেই শুরু করতে চাচ্ছি।
ফিচার ছবি- Ap