পাঠক-দর্শকদের ভালোবাসায় সফলতার ৫ বছর পেরিয়ে রোর বাংলা পা রেখেছে অগ্রযাত্রার ৬ বছরে। অর্ধ-দশকের এই যাত্রাকালে ১৩ সহস্রাধিক কন্টেন্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আমরা, পেয়েছি সকলের কাছ থেকে ভালবাসা, ও গঠনমূলক নানা সমালোচনা, যেগুলো আমাদের ক্রমোন্নতিতে অবদান রেখেছে নিঃসন্দেহে।
এই উপলক্ষে আমরা রোর বাংলার প্রতিটি বিভাগের সেরা ৫টি করে লেখা প্রকাশ করতে চলেছি পুরো অক্টোবর মাসজুড়েই। আজ থাকছে ‘খেলাধুলা’ বিভাগের লেখাগুলো।
১
‘জাদুকর’ শব্দটির অর্থ কি? প্রচলিত অর্থে কোনো মানুষ যদি এমন কিছু কৌশল দেখায়, যা সাধারণ মানুষের আয়ত্তের বাইরে এবং সেটা দেখে দর্শকরা মুগ্ধ হয়, সেটাই জাদু হিসেবে বিবেচিত হয়। কাজগুলো যে মানুষটা করে থাকে, তাকেই জাদুকর বলা হয়।
ফুটবল মাঠেও যুগে যুগে এমন কিছু জাদুকর এসেছেন। ইউটিউব ঘাটলে রোনালদিনহোর একটা ভিডিও ক্লিপ পাওয়ার কথা। সেই ক্লিপে দেখা যায়, রোনালদিনহো নাইকির বুট পড়ে বলকে শট মেরে গোলবারে লাগাচ্ছেন। বল বারে লেগে ফেরত আসার পর সেটা মাটিতে পড়তে না দিয়ে অসাধারণ দক্ষতায় আবার বারে মারছেন। ইউটিউবের প্রথম মিলিয়ন বার দেখা ক্লিপ এটা। দেখলে আসলে আশ্চর্যই লাগে, কীভাবে একজন মানুষ এই কাজটা এত সুচারুভাবে করতে পারেন। বলটা যেন তার কথা শোনে। এই কারণেই রোনালদিনহোকে ‘ম্যাজিশিয়ান’ বা জাদুকর বলা হতো।
তবে আপনি জেনে অবাক হতে পারেন, জাদুকরের মতো কাজগুলো প্রায় প্রতিনিয়তই করতেন উনিশ শতকের শুরুর দিকে এক বাঙালি ফুটবলার। তার নাম সৈয়দ আবদুস সামাদ। ম্যাজিশিয়ান কিংবা জাদুকর উপাধি আরো অনেক খেলোয়াড় পেলেও সামাদের সাথে উপাধিটা নামের অংশে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। এমনকি তার কবরের গায়ে লাগানো নামফলকেও ‘জাদুকর সামাদ’ই লেখা রয়েছে।
তার সম্পর্কে জানতে পড়ে নিন এই লেখাটি:
জাদুকর সামাদ: বাংলার একজন অতিমানব
২
ইতিহাসে ব্রাজিলের স্থান যদি হয় অনিন্দ্যশৈলীর ফুটবলার তৈরির জন্য, তবে ইতালির স্থান হবে কোচদের পীঠস্থান হিসেবে। ফুটবল জগতে একটা কথা মাঝে মাঝেই বলা হয় যে, ‘ইতালির ইতিহাসে কে সেরা কোচ তা নির্ণয় করো, ব্যস! বিশ্বসেরা কোচের নামও বোনাস হিসেবে পেয়ে যাবে!’
একসময় লাতিন আমেরিকার দলগুলো ভাল ট্যাকটিশিয়ানের অভাব বোধ করতো। তখন ওরা আক্ষেপ করে বলতো যে, ইতালির যুবদলের কোচেরাও নাকি অনেক লাতিন দেশের কোচদের চেয়ে ভাল! ইতালিয়ান ফুটবল মানেই ট্যাকটিক্স, ইতালিয়ান ফুটবলের শুরু আর শেষ কথা এই ট্যাকটিক্সই। ঠিক তেমনই একজন মহীরূহ ট্যাকটিশিয়ান ২০০৬ এর বিশ্বকাপজয়ী কোচ মার্সেলো লিপ্পি। পুরো লেখাটাতেই থাকবে কেবল সাফল্যের গল্প, আর একই সমান্তরালে চোরাগুপ্তা কিছু ব্যর্থতার। লেখার যবনিকায় দেখা যাবে অসাধারণ সাফল্য আর চিরশ্রেষ্ঠত্বের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকবে সেই চোরাগোপ্তা ব্যর্থতাগুলো।
তার সম্পর্কে জানতে পড়ে নিন এই লেখাটি:
অমরত্বের অপেক্ষায় মার্সেলো লিপ্পি
৩
২০০৮ থেকে ২০১২ সময়টা স্বপ্নের মতোই কেটেছিলো বার্সেলোনার। এই ৪ মৌসুমে সম্ভাব্য ১৯টির ১৪টি শিরোপাই যে ঘরে তুলেছিলো কাতালানরা! পেপ গার্দিওলার অধীনে বার্সেলোনা যেন হয়ে উঠেছিলো ভিনগ্রহের এক দল, যাদের ফুটবল স্টাইল টিকি-টাকার সামনে অসহায় ছিল বাকি দলগুলো। পেপ গার্দিওলার বার্সেলোনা টিকি-টাকা খেলতো প্রায় নিখুঁতভাবে, এজন্য অনেকেই ভেবে নেন এই স্টাইলের জনক হয়তো এই টেকো ভদ্রলোকই। কিন্তু আসলেই কি তাই?
না, আসলে ব্যাপারটা সেরকম কিছু না। পেপ গার্দিওলা কেবলমাত্র তার নিজের খেলোয়াড়ি জীবনে পাওয়া শিক্ষাকেই নিখুঁত করেছেন, যে শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন এক ডাচ কিংবদন্তির থেকে। টিকি-টাকার আবিষ্কারক এই ডাচ শিক্ষকই, তার নাম ইয়োহান ক্রুইফ।
ক্রুইফ কবে এবং কীভাবে টিকি-টাকা তৈরি করেছিলেন সেই কাহিনি জানতে পড়ে নিন এই লেখাটি:
৪
না ছিল রেকর্ডের ঝনঝনানি, না ছিল চোখে মায়াঞ্জন বুলিয়ে যাবার বাড়াবাড়ি। উল্টো এক ইনিংসেই চার সুযোগ ছিল জানলে তাকে ভালোর স্বীকৃতি দিতেও দ্বিধায় ভুগতে হয় বিস্তর। স্রেফ মাঠের ক্রিকেট দিয়ে বাসিল ডি’অলিভিয়েরার শতকটিকে যে আর দশটা ইনিংস থেকে পৃথক করবো, তার কোনো উপায় ত্রিকালজ্ঞ রাখেননি।
তবে অন্য এক উপায় ঈশ্বর রেখেছেন, ক্রিকেটকে তিনি কেবল মাঠের খেলার গণ্ডিতেই আটকে রাখেননি। সেখানে তিনি রাজনীতি-কূটনীতি দিয়েছেন, জাত্যাভিমান দিয়েছেন, দিয়েছেন কুসংস্কার, রাজায়-রাজায় লড়াই, মস্ত কালো ছায়ারূপে তাতে জাত-পাত ভেদাভেদও মিশিয়েছেন। মাঠের এগারোজনের বদলে ডি’অলিভিয়েরার লড়াইয়ের কাহিনীটাও তিনি অন্যত্রই লিখেছিলেন।
আজ সে গল্পই বলব। শুনতে পড়ে নিন এই লেখাটি:
বর্ণবাদ এবং একজন বাসিল ডি’অলিভিয়েরা
৫
অ্যালেক্স হেস নামের এক বিখ্যাত ব্রিটিশ সাংবাদিক দ্রগবার সাক্ষাৎকার নিতে চাইছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। হঠাৎ একদিন ফোন এলো, ওপাশ থেকে দরাজ গলায় একজন বললেন,
“হ্যালো, আমি দিদিয়ের বলছি। আবিদজানে চলে এসো, হতাশ হবে না নিশ্চিত, বরং লেখার আরো অনেক খোরাক পাবে।”
অ্যালেক্স দোনামনা করেও শেষ অবধি চলেই যান আবিদজানে। সেই সফরটা অ্যালেক্সের অনেক চিন্তাধারাই বদলে দেয়। তার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ফুটবলারের স্থানটা হয়ে যায় দিদিয়ের দ্রগবার। কেন? সেই সাক্ষাৎকারে দ্রগবার একটি কথা উল্লেখ করেই পুরো ঘটনায় যাওয়া যাক। তিনি বলেছিলেন,
“আমি অনেক ট্রফি জিতেছি, অ্যালেক্স। কিন্তু এদের কোনোটিই আমাকে গৃহযুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার চেয়ে বেশি মর্যাদা ও আনন্দ দেয়নি!”
বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি মিস দেয়া যাবে না মোটেও: