‘অনেক পরিকল্পনা করতে হবে আমাদের’, সংবাদ সম্মেলনে সাকিব

মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম বললেন, সংবাদ সম্মেলন শেষ। সাকিব আল হাসান হেসে বললেন, ‘কেন? উনি প্রশ্ন করতে চাচ্ছেন। করতে দেন। চলুক।’

সাধারণত মিডিয়ায় বেশী কথা বলতে পছন্দ করেন না সাকিব। কিন্তু এই টেস্টে এই নিয়ে তৃতীয়বার সংবাদ সম্মেলনে এলেন। নিজেই বললেন, সতীর্থদের ওপর চাপ কমানোর জন্য এটা করেছেন। ম্যাচের চতুর্থ দিনে সাকিব তার ইতিহাসের দীর্ঘতম সংবাদ সম্মেলন করলেন, যেখানে বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচ নিয়ে তাৎপর্যপূর্ন আলোচনা করেছেন তিনি।

সেই সংবাদ সম্মেলনে যা কিছু বললেন তিনি, সেগুলোই তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।

প্রতীকী ছবি। পড়ে আছেন মিরাজ, বাংলাদেশও যেন তাই; Image Credit: BCB

 

বেশি চাপে আছেন নাকি?

হ্যাঁ, অবশ্যই, যে ধরনের ম্যাচ আমরা আশা করছিলাম, তার পুরো বিপরীত অবস্থা। স্বাভবিকভাবেই চাপ তো থাকবেই।

সেই চাপের কারনেই কী আপনি নিজেই সংবাদ সম্মেলনে এলেন?

টিমমেটদের ওপর থেকে চাপ কমানোর একটা উপায় এটা বলতে পারেন। বাট মাঠের চাপ তো থাকবেই, যতদিন ক্রিকেট খেলব, ততদিনই থাকবে। এটা মেনে নিতে হবে। এটা নিয়ে বেশি একটা চিন্তা করার কিছু নেই।

বিসিবি সভাপতি বলেছেন, এই টেস্টের পরিকল্পনায় ভুল ছিলো।

পরিকল্পনা ঠিকমতো যদি এক্সিকিউট হতো তাহলে এরকম হতো না। যেহেতু পরিকল্পনা ঠিকমতো এক্সিকিউট হয়নি, তাই এরকম হয়েছে। তখন এটাই বলা স্বাভাবিক যে পরিকল্পনায় ভুল ছিল।

মোসাদ্দেক তিন নম্বরে নেমে ওভাবে আউট হলেন। এটা কী হতাশার?

সত্যি কথা বলতে, ফার্স্ট ইনিংসে আমরা যতজন ব্যাটিং করেছি, সবচেয়ে বেশি কমফোর্টেবল ওকে মনে হয়েছে স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে। আমরা যেহেতু স্পিন বেশি ফেস করছিলাম, কাল রাত থেকেই প্ল্যান করা হচ্ছিল যে, ও ওপরের দিকে ব্যাট করলে, ফার্স্ট ইনিংসে যেভাবে ব্যাট করেছে, ওভাবে করতে পারলে, ভালো হবে। বড় ইনিংস খেলারও অভিজ্ঞতা আছে, কারণ ফার্স্ট ক্লাসে বোধ হয় চারটা কি পাঁচটা ডাবল সেঞ্চুরি করেছে।  আমাদের চারশ চেজ করতে হলে এরকম কিছু প্লেয়ারদেরকে দরকার হতো, যাদের বড় ইনিংস অভ্যাস আছে বা খেলে অভ্যস্ত। সে কারণেই এই প্ল্যান। অ্যাট দ্য সেইম টাইম, নবী যেহেতু লেফটিদের এগেইন্সটে অনেক বেশি এফেক্টিভ হবে, সে কারণে আমাদের লেফট রাইট কম্বিনেশন করার প্ল্যান ছিল। সে কারণে ওকে প্রমোট করা হয়েছিল। যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যাট করছিল, ততক্ষণ খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। (শটটা) এক্সিকিউট করতে পারে নাই। এটা ওর ব্যর্থতা, মেনেই নিতে হবে। বাট আমি বলব যে, ওপরে না মেরে নিচে মারলে তাহলে চারটা রান হতো, ও আউটও হতো না। ও থাকলে সিচুয়েশন অন্যরকম হতো। ফার্স্ট বা সেকেন্ড ইনিংসে যতক্ষণ খেলছে, কখনো মনে হয়নি, স্পিনের এগেইন্সটে ও আউট হবে।

প্রথম ইনিংসে স্পিনের বিপক্ষে সবচেয়ে কমফোর্টেবল মনে হয়েছে মোসাদ্দেককেই; Image Credit: BCB

 

আমাদের সমস্যা কি টেকনিক্যাল, নাকি মানসিক?

দুইটাই বলতে পারেন। টেকনিক্যালি সমস্যাও বলতে পারেন। যেহেতু আমরা রিস্ট স্পিনার খেলি না। সেটা লেফট বা রাইট হ্যান্ডার, দুইটাই আমাদের জন্য নতুন কিছু। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের অ্যাডজাস্ট করার একটা ব্যাপার থাকবে এখানে। যদিও আমরা পরিকল্পনা করেছি বা প্রিপারেশন নিয়েছি। আমাদের যারা নেটে বোলার আছে এরকম, ওদের এনে আমরা প্র্যাকটিস করেছি। কিন্তু যতক্ষণ না আপনি ম্যাচ খেলছেন বা সাকসেসফুল হচ্ছেন, ততক্ষণ ওই প্র্যাকটিসটা খুব একটা কাজে আসবে না। যখন ওটা খেলার পরে ম্যাচে সাকসেসফুল হবেন, তখন ওটা কাজে আসবে। আমি বলব না, কারও অ্যাপ্রোচে সমস্যা ছিল। আমি বলব, এক্সিকিউশনে অনেক প্রবলেম। বড় মন নিয়ে না খেলার একটা প্রবলেম। আপনি এক্সিকিউট করতে না পারার একটা প্রবলেম হচ্ছে, যখন আপনি ভয়ে ভয়ে মারতে যাবেন, তখন এক্সিকিউশনে সমস্যা হবে। লিটনেরটা দেখেন, যখন টি-টোয়েন্টিতে খেলে, তখন রিভার্স সুইপ কেন, যত শটই খেলে ওর ব্যাটে লাগে। কিন্তু টেস্ট ম্যাচে ও এটা করতে পারেনি। এটা ওরও ব্যর্থতা, আমাদের দলের জন্যও ব্যর্থতা যে আমরা এরকম করতে পারছি না। কোচও এই কথাই বলেছে যে আমরা যেন মন খুলে খেলি। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমরা অনেক ভয় নিয়ে খেলি, অনেক প্রেশার নিয়ে খেলি। আসলে দিনশেষে এটা ক্রিকেট ম্যাচ; অবশ্যই ইমপরট্যান্ট আমাদের জন্যে। কিন্তু দুনিয়ার সব কিছু এটাই না। কিন্তু আমরা অনেক সময় এত বেশি প্রেশার নিয়ে ফেলি নিজেদের উপরে, পারফর্ম করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়; এবং যখন করতে পারি না, তখন প্রেশারটা আরও বেশি পড়ে।

জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা বেশি জাতীয় লিগ বা বাংলাদেশ লিগের ম্যাচ খেলছেন না। এটা কি একটা সমস্যা হচ্ছে?

আমি তো চার পাঁচ বছর খেলিনি, কোনো সমস্যা হয়নি। এখন বুঝতে হবে, ওদের কী সমস্যা হচ্ছে।  এখন এনসিএল খেলেই সমস্যা হচ্ছে, নাকি না খেলে সমস্যা হচ্ছে। দুইটারই সমস্যা থাকতে পারে। খেলাও একটা সমস্যা হতে পারে। ওখানে গেলে এত ইজি বোলিং অ্যাটাক পেয়ে যায়, দুইশ দুইশ করে মারে। চার-পাঁচটা দুইশ মারে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চার-পাঁচ রান করাও সমস্যা হয়ে যায়। সো, দুইটারই সমস্যা থাকতে পারে। ওটা আপনার বুঝতে হবে, কার জন্য কী সমস্যাটা। সবার জন্য এক মেডিসিন কাজ হবে, এটা বলা ভুল।

আপনি মাঝে বলেছিলেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে। সেই পরিকল্পনাটা কেমন হতে পারে?

দেখুন, এরকম প্ল্যানিং বলতে হলে বিশাল প্ল্যান। অনেক প্ল্যান আছে, অনেক কিছু আছে। অনেক কিছু ঠিক করার পর অনেক রকম কাজ করতে হবে। এই প্রসেসিংটা অনেক লম্বা। যখন আমরা খারাপ করি, তখন এগুলা নিয়ে কথা হয়। যখন আমরা ভালো করি, এগুলা সব বন্ধ হয়ে যায়। এই বিষয়গুলো অনেক ব্যালান্স করা জরুরি।

সাকিব-সৌম্য-মিরাজদের পাশাপাশি কাল বৃষ্টির দিকেও তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ; Image Credit: BCB

 

টেস্টে এমন ব্যাটিং অর্ডার বারবার বদল করাটা খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে চাপে ফেলে দেয় কি না।

না। চারশ’ চেজ করতে গেলে আপনাকে ভিন্ন কিছু করতে হবে। আমরা তো কখনো চারশ’ চেজ করিনি। যদি দুইশ’ চেজ করতাম, আমাদের ব্যাটিং অর্ডার ওরকমই থাকত। যেহেতু চারশ’ চেজ করছিলাম, আমাদের কিছু প্রস্তুতির দরকার ছিল। আমরা প্রথম ইনিংসে তো খেলেছি দুইশ’ই করেছি। এখন এর থেকে আর কতই বা খারাপ হতে পারে। ভালো করার ইচ্ছাতেই পরিকল্পনাগুলো করা হয়। যখন পরিকল্পনা কাজে আসে, তখন বলা হয়, ‘ওয়াও কী প্ল্যান ছিল!’ যখন কাজে আসে না, তখন মনে হয়, প্ল্যানিং ভুল ছিল।

ব্যাটিং অর্ডারে এই যে বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশন ঠিক রাখার চেষ্টা করেছেন, টেস্টে কি এটা দরকার আছে?

জিনিসটা যেটা ছিল, ওদের একটা পেস বোলার। আর নবী এক পাশ থেকে বল করবে। পেস বোলার হয়তো হোল্ড করবে চার-পাঁচ ওভার রান দিয়ে, বল পুরনো করার জন্য। ডান-বাম হওয়াতে একটা জিনিস ভাল যে, নবি দেখেন প্রথম স্পেলে কোনো উইকেট পায়নি। প্রথম ইনিংসে কিন্তু প্রথম স্পেলে উইকেট পেয়েছিল। ওখান থেকে আমরা সাকসেসফুল হইনি, কারণ যাদের বড় ইনিংস খেলার কথা ছিল, তারা খেলতে পারেনি। পরিকল্পনায় খুব যে সমস্যা, তা কিন্তু না। একটা প্লেয়ার যেকোনো জায়গায় ব্যাট করতে পারে। আপনি যদি চারশ’ চেজ করেন, সৌম্য আটে নেমেছে, আমি মানলাম, তার তো দ্বিতীয় নতুন বলও খেলা লাগতে পারতো, পারতো না? সাদমানকেও তো দ্বিতীয় নতুন বল খেলতে হতে পারতো। আপনি যদি চারশ’ চেজ করেন, আপনাকে ব্যাট করতে হবে ১৩০ ওভার চোখ বন্ধ করে। ১৩০ ওভার ব্যাট করা চাট্টিখানি কথা না। আমাদের ওই প্ল্যান ছিল, সেকেন্ড নিউ বল যখন ওরা ফেস করবে, তখন খেলা আমাদের হাতে থাকার মতো অবস্থায় থাকবে। এই কারণে আমরা অনেক প্ল্যান করি। প্ল্যানিং আসলে কখনো ভুল হয় না, কিংবা ঠিক হয় না। প্ল্যানিং যখন সফল হয়, তখন ওটা ঠিক। যখন সফল হয় না, তখন ওটা ভুল।

এভাবেই বাংলাদেশকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে আফগানিস্তান; Image Credit: BCB

 

উদ্বোধনী জুটিতে একজন ডানহাতি, একজন বাঁহাতি রাখতেই হতো?

আমি তো কালকে এই আলোচনাও করেছি যে দুই ডানহাতি আমি পাঠাব কি না। আমি মোসাদ্দেককে ওপেন করতে পাঠাতে চেয়েছিলাম। সত্যি কথা, এটা আমি এখন বললাম। সবাই মিলে এই আলোচনার পরে এই প্ল্যান করা হয়েছে যে, এভাবে যাই, তাহলে আমাদের কাছে একটা সুযোগ আছে। সকালবেলা টিম মিটিংয়ে ওটা সেট করে আমরা মাঠে এসেছি। ওই বিশ্বাসটা সবার ছিল। এমন না, আমি বিশ্বাস করেছি বা কোচ বিশ্বাস করেছে। পুরো পনেরজন এই বিশ্বাস করেছে। শুধু আমার সিদ্ধান্ত হলে মোসাদ্দেক আর লিটন ওপেন করত। যেহেতু আমার সিদ্ধান্ত পুরো ছিল না, সেহেতু সাদমান গিয়েছে, এবং সাদমান খুব ভাল ব্যাট করেছে। ও যদি বড় খেলতে পারতো, ওইখানে আমাদের একটা জুটি হওয়ার চান্স থাকতো। আরেকটি জিনিস, নবী যখন আবার এসেছে, আমরা যখন দু’জন বাঁহাতি, তখন কিন্তু সাদমানের উইকেট নিয়ে নিয়েছে। আমরা ওই প্ল্যান করেছি যে, ওই প্রভাবটা তার না থাকে। তাহলেও তো একটা দিক আমরা বাঁচলাম।

চেজ শুরু করার সময়ে কী মনে হয়েছিল যে, ৩৯৮ রান পার করতে পারি আমরা?

৩০ রান পর্যন্ত মনে হয়েছিল, সম্ভব। কারণ, উইকেটটা এখনো খারাপ হয়নি। যথেষ্ট ভাল আছে। রিস্ট স্পিনাররা ওদের বাড়তি সুবিধা পাবেই; যেটা যেকোনো ফ্লাট উইকেটেই পায় চার নম্বর বা পাঁচ নম্বর দিনে। কিন্তু উইকেটটা আনপ্লেয়েবল না। আমার মনে হয়, আমরা বেটার অ্যাপ্লিকেশন কিংবা বড় মন নিয়ে যদি খেলতে পারতাম, আরও বেটার কিছু করা সম্ভব হতো। আমি যেমন শুরুতে বলেছিলাম, ব্যাটসম্যানরা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। উইকেট হয়তো আমরা যেমন চেয়েছিলাম, তেমন পাইনি। তার মানে এই না যে, আমরা ভেঙে পড়ব। এখানে আমাদের কোয়ালিটি শো করার জায়গা ছিল, যেটা আমরা খুব ভালোভাবেই ফেল করেছি।

বিরতিতে ড্রেসিংরুমে ফিরছেন সাদমান-লিটন, ত্রিশ রানে থাকা দল তখন অসম্ভব এক স্বপ্ন দেখছে; Image Credit: BCB

 

আমাদের কি সামর্থ্যেরই অভাব আছে বলে মনে হয়?

সামর্থ্য সবার ভেতরেই আছে। আমাদের দলে যত প্লেয়ার খেলছে, একমাত্র সাদমান বাদে এমন কেউ নাই, যে বড় ইনিংস খেলে নাই, বা দলকে জেতানোর পেছনে বড় ভূমিকা ছিল না কখনও। তারা যেহেতু পারে, তার মানে সামর্থ্য অবশ্যই আছে। একটা বিষয় হলো, আপনার ট্যালেন্ট আছে এবং সেটা মাঠেও প্রদর্শন করা। আরেকটা হলো, ট্যালেন্ট আছে, কিন্তু সেটা কখনো দেখাতে না পারা। এটা খুবই সূক্ষ্ম একটা পার্থক্য। কিন্তু এটাই আপনার বড় খেলোয়াড় ও ছোট খেলোয়াড়দের আলাদা করে দেয়।

আফগান খেলোয়াড়দের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পুরো ম্যাচ জুড়ে আমাদের চেয়ে ভালো মনে হয়েছে।

ভালো! কিন্তু আমরা তো আসলে ওদের সেই পজিশনে আনতেই পারিনি, যখন ক্যারেক্টার শো করা দরকার। যদি আনতে পারতাম, তখন আসলে বোঝা যেত যে, ওদের কত ক্যারেক্টার আছে। যেহেতু ঐ পজিশনেই আনতে পারিনি, তাহলে ওদের ক্যারেক্টার কী দেখবো! আমরা যদি আজকে ২ উইকেটে ২০০ রান করতে পারতাম, তখন না হয় কালকে ওদের ক্যারেক্টার, ডিটারমিনেশন, আরও সব দেখতাম। যেহেতু আনতেই পারিনি, এখন এ প্রশ্নের উত্তর কী দেব।

এই ম্যাচটা কি আমাদের ক্রিকেটের জন্য একটা ধাক্কা?

ভালো একটাই জিনিস যে, ম্যাচটা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মধ্যে পড়বে না। আমাদের ক্রিকেটের জন্য, আমাদের জন্য হতাশাজনক অবশ্যই যে, নতুন একটা দলের কাছে আমরা হেরে গেলাম। তবে নতুন দল মানেই যে তারা জিততে পারবে না, এমনটাও ঠিক না। তাহলে ইংল্যান্ড ২০০ বছর ধরে খেলে, আমরা ১৫-২০ বছর ধরে খেলে তাদের বিপক্ষে জিতেছি। তখন তাদের কেমন লাগার কথা? তাই বিষয়টা এমন না। অবশ্যই তাদের (আফগানিস্তান) সম্মান দিতে হবে। তারা ভালো খেলেই এমন একটা পজিশনে এসেছে, যেখান থেকে তারা জিততে পারে। আমি যেটা বললাম, হয়তো আমরা আরও ভালো কিছু করতে পারতাম। তখন ওদের একটা চ্যালেঞ্জের মুখে আনতে পারতাম, টেস্ট ক্রিকেটের যে পরীক্ষা, সেটা আমরা নিতে পারিনি।  এটা অবশ্যই হতাশার।

‘ম্যাচটা এখন হাতের মুঠোয়’, এটাই কি সতীর্থদের বুঝাচ্ছেন নবী? Image Credit: BCB

 

এখন কী মনে হচ্ছে যে, এই দলটার বিপক্ষে একটা পেসার অন্তত দলে রাখা উচিত ছিল?

আমি যেটা ম্যাচের আগের দিনও বলেছি, পেসারদের জায়গাটা ডিজার্ভ করতে হবে তো, নাকি? আপনি যদি দেখেন, আজকেই আমি পেসারদের পরিসংখ্যান দেখেছিলাম। আমাদের পেসারদের ইকোনমি ৪.৪১। ওরা যদি পুরো ৯০ ওভার বোলিং করে, তাহলে একদিনেই রান দেবে ৪০০। আমরা তাহলে কিন্তু প্রথম দিনই টেস্টের বাইরে। ইকোনমি রেট যদি ২.৮ কিংবা ২.৯ থাকে, এবং ওরকম স্ট্রাইকরেট থাকলে তখনই না আমরা ওদেরকে পিক করতে পারব। আমাদের কোনো বোলার যদি আমাদের কাজেই না আসে, তাকে নিয়ে লাভটা কী?  শেষ কয়েক বছরে আমাদের হোম কন্ডিশনে যেসব ম্যাচ আমরা জিতেছি, কয়টা পেস বোলার কতটা উইকেট নিয়েছে, কয় ওভার বোলিং করেছে, কত ইকোনমি রেটে, সেটা জানা জরুরী।

তাহলে পেসারদের এখান থেকে বের করে আনার উপায় কী?

আমাদের যে নতুন পেস বোলিং কোচ আছে, ও প্রতিদিন পেসারদের নিয়ে কাজ করছে। যে পরিমাণে হার্ডওয়ার্ক করছে, তাতে মনে হচ্ছে অচিরেই আমরা ভালো পেসার পেতে পারি।

একটা টেস্ট ম্যাচ জিততে হলে আপনার সব ধরনের বোলার থাকতে হবে। আপনার রিস্ট স্পিনার থাকতে হবে।  অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো ১৪০-১৫০ গতিতে বল করার একজন পেসার থাকতে হবে। একটা বোলার থাকতে হবে, যে সারাদিন বোলিং এক জায়গায় করবে, যেন রান না হয়। তারপর একটা-দুইটা এক্স ফ্যাক্টর থাকতে পারে। যতদিন না হবে, আমাদের নির্দিষ্ট প্ল্যান করে ম্যাচ জিততে হবে। যখন ওই পরিকল্পনা ঠিক না হবে, ততদিন এভাবেই যেতে হবে।

উইকেট সম্পর্কে কি ম্যাচ শুরুর আগে জানতে পেরেছিলেন যে, এরকম হবে?

উইকেট কেমন, সেটা বুঝতে পারলে তো পরিকল্পনা অন্যরকম হতে পারতো। এটা অবশ্যই হতাশার। এটা জানা জরুরী যে আমরা যে রকম চেয়েছিলাম, সেটা পাচ্ছি না। এটা মাঠে নামার পর জানলে তো আমরা গন, তখন কিছু করার থাকে না। আমরা যে পরিকল্পনা করে নামি, সেই ফিডব্যাকটা যদি পাই, তাহলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। অবশ্যই ওই ফিডব্যাকটা দেওয়া উচিত।

This article is on Shakib Al Hasan's astounding press conference that left the media personnel speechless. Unusual of him, Shakib finished the press conference on a high note. Above are the excerpts.

Featured Image: BCB

Related Articles

Exit mobile version