পোর্ট অব স্পেনে জহির খানদের চোখে চোখ রেখে প্রতি-আক্রমণ। বাউন্সারের জবাবে বেপরোয়া, দুর্বিনীত ব্যাটিং। লর্ডসের সবুজ গালিচায় জেমস অ্যান্ডারসন-গ্রায়েম সোয়ানদের তুলোধুনো করা। অনার্স বোর্ডে নাম তোলার গৌরব অর্জন। মিসবাহ-উল হকের পাকিস্তানকে রুখে দিয়ে খুলনায় ডাবল সেঞ্চুরির ক্লাবে নাম লেখানো। ঘরের মাঠে সাদা পোশাকে প্রথমবার শক্তিধর ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে ভূপাতিত করার মঞ্চ তৈরি করা ইনিংস। বুলাওয়েতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরিতেই বাংলাদেশকে তিনশ’র বেশি রান তাড়া করার ‘অনাবিষ্কৃত অঞ্চল’ জয়ের স্বাদ এনে দেয়ার কৃতিত্ব।
২২ গজে এমন আরও অনেক রোমাঞ্চকর সময়ের ফ্রেমে নিজের ব্যাটিংয়ের সৌন্দর্য্যে দীপ্যমান ওপেনার তামিম ইকবাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ সব ইনিংস খেলে নিজেকে মেলে ধরেছেন তিনি। আসুন চোখ বুলাই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন অবধি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের খেলা সেরা ১০ ইনিংসে।
টেস্ট
-
২০০৯, কিংসটাউন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তামিম ১২৮
টেস্ট ক্রিকেটে তামিমের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিংসটাউনের ওই ম্যাচ অবশ্য নানা কারণে ঘটনাবহুল ছিল। বোর্ডের সঙ্গে শীর্ষ ক্রিকেটারদের দ্বন্দ্বে হুট করে অকূল পাথারে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আনকোরা একটা দল মাঠে নামায় ক্যারিবিয়ানরা, যেখানে সাত ক্রিকেটারের টেস্ট অভিষেক হয়। মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বে সেটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ।
প্রথম ইনিংসে ২৩৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের ইনিংস শুরু হতেই ৬.৩ ওভার বোলিং করে ইনজুরিতে পড়েন অধিনায়ক মাশরাফি। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকরা করে ৩০৭ রান। ৬৯ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নামে বাংলাদেশ। খর্বশক্তির উইন্ডিজদের বিরুদ্ধে তামিমের সেঞ্চুরিতেই ৩৪৫ রান তোলে টাইগাররা। ৮২ রানে ইমরুলের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে জুনায়েদ সিদ্দিকীর সঙ্গে ১৪৬ রানের জুটি গড়েন তামিম। চতুর্থ দিনের লাঞ্চের পর ২০৬ বলে সাদা পোশাকে প্রথমবার তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পান তামিম। ১৭টি চারে ২৪৩ বলে ১২৮ রান করে দলকে শক্ত অবস্থান এনে দিয়েছিলেন এই বাঁহাতি।
ক্রিকেট দলীয় খেলা। সেখানে দলকে জেতানোই ক্রিকেটারদের জন্য বড় তৃপ্তির। সেক্ষেত্রে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি তামিমকে আজীবনই প্রশান্তি দিবে।
-
২০১০ লর্ডস, ইংল্যান্ড, তামিম ১০৩
লর্ডসের এই সেঞ্চুরিটা শুধু তামিম কেন, ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের দাপটের একটা প্রতিচ্ছবিই হয়েই এখনও জ্বলজ্বল করছে। কদাচিৎ সাফল্য, একটু একটু লড়াইয়ের যুগে অ্যান্ডারসন-ফিন-সোয়ানদের তুলোধুনো করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তামিম। অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের দলটার সঙ্গে বিশ্ব ক্রিকেটও অবাক বিস্ময়ে দেখেছিল লর্ডসের সবুজ গালিচায় ব্যাট হাতে এই বঙ্গ সন্তানের শাসন।
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৫০৫ রান করে। বাংলাদেশ ২৮২ রানে অলআউট হয়। ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে টপ-অর্ডাররা রান পেলেও মিডল অর্ডারসহ ব্যাটিং লাইনের বাকি অংশ প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। ম্যাচের চতুর্থ দিনের শুরুতে প্রথম ইনিংস শেষ হয়। লাঞ্চে গিয়েছিলেন তামিম ৩১ রানে অপরাজিত থেকে। ফিরে এসে চা বিরতির আগেই ৯৪ বলে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। সেঞ্চুরি উদযাপনের মুহূর্তেই ড্রেসিংরুমের দিকে আঙ্গুল নির্দেশ করে মর্যাদাপূর্ণ অনার্স বোর্ডে নাম লিখতে বলেছিলেন তামিম। লর্ডসের দর্শকরা করতালিতে অভিবাদন জানিয়েছিলেন এই বাঁহাতিকে।
ওই ম্যাচে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম উঠেছিল শাহাদাত হোসেনেরও। প্রথম ইনিংসে ৯৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত। ফিনের শিকার হওয়ার আগে তামিম ১০০ বলে খেলেছিলেন ১০৩ রানের (১৫ চার, ২ ছয়) ইনিংস। ইমরুলের ৭৫, জুনায়েদের ৭৪ রানে ৩৮২ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। যদিও ম্যাচটা হারতে হয়েছিল ৮ উইকেটে।
-
২০১০ ম্যানচেস্টার, ইংল্যান্ড, তামিম ১০৮
তামিমের ঝলক লর্ডসেই থেমে থাকেনি। ওই সফরের দ্বিতীয় টেস্টেও চোখ ধাঁধাঁনো ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ম্যাচটা বাংলাদেশ ইনিংস ব্যবধানে হারলেও তামিমের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং চিরস্মরণীয়। প্রতিপক্ষকে সুইং বিষে কাবু করতে সিদ্ধহস্ত অ্যান্ডারসন-ফিনরা এই বাঁহাতিকে থামাতেই গলদঘর্ম হয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে তার সেঞ্চুরিতেই ২১৬ রান করে বাংলাদেশ, যার অর্ধেক রানই এসেছে তামিমের ব্যাট থেকে। চা বিরতির পরপরই ১০০ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ১১৪ বলে ১০৮ রান (১১ চার, ১ ছয়) করেছিলেন এই বাঁহাতি।
পরপর এই দুই দাপুটে শতকের বদৌলতেই তামিম সেবার ‘উইজডেন টেস্ট প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
-
২০১৫ খুলনা, পাকিস্তান, তামিম ২০৬
ওই সিরিজে ওয়ানডেতে দুই সেঞ্চুরি করে দারুণ ছন্দে ছিলেন তামিম। পরে টেস্টেও তার ব্যাট হেসেছিল। খুলনায় তুলে নিয়েছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। যা এখন পর্যন্ত তার একমাত্র দ্বিশতক। সাদা পোশাকে ব্যাটসম্যান তামিমকে বড় স্বীকৃতি এনে দিয়েছিল সেই ইনিংস।
খুলনায় সিরিজের প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে মূলত রুখে দিয়েছিল তামিম-ইমরুলের জুটি। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৩২ রানের জবাবে হাফিজের ডাবলে পাকিস্তান করেছিল ৬২৮ রান। ২৯৬ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশকে তখন চোখ রাঙাচ্ছিল হার। তবে রানপ্রসবা খুলনার উইকেটে ভিন্ন গল্প লেখার অপেক্ষায় ছিলেন তামিম-ইমরুল। ৩১২ রানের বিশাল জুটিতে ম্যাচের চিত্রই বদলে দেন দু’জনে। ম্যাচটা ড্র হয়ে যায়।
পঞ্চম দিনের সকালে দু’জনেই দেড়শ পূর্ণ করেন। মুশফিক ইনজুরিতে পড়ায় প্রায় একশ ওভার কিপিং করা ইমরুলকে টেনে ধরে হ্যামস্ট্রিং। ১৫০ রান করে তিনি ফিরে যান। সঙ্গী ফিরলেও তামিম ঠিকই ডাবলের মাইলফলক স্পর্শ করেন। মুশফিকের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিয়ান হন। ২৭৮ বলে ১৭টি চার ও ৭টি ছক্কায় ২০৬ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। প্রবল চাপের মুখে লড়াকু ব্যাটিংয়ে হার এড়ানোর স্মারক হয়েই থাকবে এই ইনিংস।
-
২০১৬ মিরপুর, ইংল্যান্ড, তামিম ১০৪
নিরাপত্তা নিয়ে অনেক জল ঘোলা করার পর বাংলাদেশ সফরে এসেছিল ইংল্যান্ড। চট্টগ্রামে ধুন্ধুমার লড়াইয়ের পর পঞ্চম দিনের সকালে সিরিজের প্রথম টেস্ট হেরেছিল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে হারের পর মিরপুরে স্পিনজালে ইংলিশদের আটকানোর সব আয়োজন সম্পন্ন হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ীই অ্যালিস্টার কুকের দলটির নাকের জল- চোখের জল এক হয়ে পড়েছিল মিরাজ-সাকিবদের ঘূর্ণি জাদুতে। ‘র্যাংক টার্নার উইকেট’ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্যও চ্যালেঞ্জিং ছিল।
মিরপুরে প্রথম ইনিংসে তামিমের সেঞ্চুরি, মুমিনুলের ৬৬ রানের পরও বাংলাদেশ ২২০ রানের বেশি যেতে পারেনি। ম্যাচের প্রথম ঘন্টা থেকেই উইকেটে সাপের ফনা তুলে নেচে উঠেছিল বল। সেখানে ১৪৭ বলে ১২টি চারে মহামূল্য ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন তামিম, যেটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। অন্তত উইকেটের কন্ডিশন বিবেচনায় তো বটেই। বলাই বাহুল্য, সেখানে পরে মুশফিক-সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা দাঁড়াতেই পারেননি।
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড করে ২৪৪ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তামিমের ৪০, ইমরুলের ৭৮, মাহমুদউল্লাহর ৪৭, সাকিবের ৪১ ও শুভাগত হোমের অপরাজিত ২৫ রানে ৩৯৬ রান করে বাংলাদেশ। ২৭৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে মিরাজের ঘূর্ণিতে ১৬৪ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। তৃতীয় দিনের শেষ ঘন্টায় ১০৮ রানের মধুর জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে মুশফিকের দল। সাদা পোশাকে প্রথমবার ইংল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ।
-
২০১৭ মিরপুর, অস্ট্রেলিয়া, তামিম ৭১, ৭৮
এক বছর আগেই মিরপুরে ইংল্যান্ডকে হারানোর বিজয় গাঁথা আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিল বাংলাদেশ দলকে। এবার অস্ট্রেলিয়াকেও একই কৌশলের বেড়াজালে আটকে দেয় বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনের সকালে ২০ রানের দারুণ জয় নিয়ে ইতিহাস গড়ে মুশফিক বাহিনী। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আসে প্রথম টেস্ট জয়। ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরির পরও স্টিভ স্মিথের দলটি হারের তিক্ততা নিয়েই মাঠ ছাড়ে।
এই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেননি তামিম। তবে দুই ইনিংসেই দু’টি অমূল্য হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। ব্যাটসম্যানদের জন্য শ্বাপদসংকুল উইকেটে তার দুই হাফসেঞ্চুরির মহিমা সত্যিই অপরিসীম ছিল। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ২৬০ রান। ১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কাঁপতে থাকা স্বাগতিকদের আস্থা যুগিয়েছিল তামিম-সাকিবের ব্যাট। ১৫৫ রানের জুটি গড়েন তারা। তামিম ১৪৪ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলেন, সাকিব করেন ৮৪ রান।
অস্ট্রেলিয়ার ২১৭ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২২১ রান করতে সমর্থ হয়, যেখানে বড় অবদান তামিমের। ইনিংস-সর্বোচ্চ ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। রীতিমতো মৃত্যুকূপে রূপ নেয়া উইকেটে ১৫৫ বল খেলেছিলেন তিনি। তাতেই স্মিথ বাহিনীকে ২৬৫ রানের টার্গেট দিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে তাইজুল-সাকিবরা বল হাতে এনে দিয়েছিলেন দারুণ জয়।
ওয়ানডে
-
২০০৯, বুলাওয়ে, জিম্বাবুয়ে, তামিম ১৫৪
২০০৮ সালে মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম। ১২৯ রান করেছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতেই বাংলাদেশ নতুন দিগন্তের সন্ধান এনে দিয়েছিলেন। ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে তখন প্রায় নিয়মিতই হারাতো বাংলাদেশ। কিন্তু তখনও বড় স্কোর গড়া, বড় রান তাড়া করার ক্ষেত্রে জড়তা-ভয়, মানসিক শক্তির অভাবটা ছিল।
বুলাওয়েতে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ ছিল এটি। চালর্স কভেন্ট্রির অবিশ্বাস্য ১৯৪ রানের ইনিংসে ৮ উইকেটে ৩১২ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। এই রান তাড়া করে জেতার মনোবল তখনও বাংলাদেশ দলে ছিল না। তামিমের ১৫৪ রানের অনন্য ইনিংসেই সে পাহাড় জয় করে বাংলাদেশ, ৪ উইকেটে জয় পায়। ওপেনিংয়ে নেমে তামিম খেলেছেন ইনিংসের ৪৫তম ওভার অব্দি। কেউই লম্বা সময় তাকে উইকেটে সঙ্গ দিতে পারেননি। তবে এই বাঁহাতি ঝড় তুলে এগিয়েছেন দুরন্ত বেগে। স্বাগতিকদের তুলোধুনো করে ১৩৮ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন।
-
২০১৫, মিরপুর, পাকিস্তান, তামিম ১৩২
২০১৫ বিশ্বকাপে আশানুরূপ রান না পাওয়ায় বেশ সমালোচিত হয়েছিলেন তামিম। বিশ্বকাপের পরপরই পাকিস্তানের বিপক্ষে সব কিছুর জবাব দিয়েছিলেন রানের জোয়ারে। অধিনায়ক মাশরাফি সাহস যুগিয়েছিলেন, পাশে থেকেছেন এবং তামিমের সেরাটা বের হয়ে এসেছিল। আজহার আলীর নেতৃত্বাধীন দলটার বোলিং লাইনআপ খারাপ ছিল না। জুনায়েদ খান, ওয়াহাব রিয়াজ, রাহাত আলী, সাঈদ আজমলদের বোলিংকে পাত্তাই দেননি তামিম। সমালোচনার সব ঝাঁঝ যেন পাক বোলারদের উপরই মিটিয়েছেন।
মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে ১৩৫ বলে ১৩২ রানের (১৫ চার, ৩ ছয়) ইনিংস খেলেন তিনি। চাপের সমুদ্র পাড়ি দেয়া এই সেঞ্চুরি আত্মবিশ্বাস ফিরিয়েছিল তামিমের ব্যাটে। পরে মুশফিকও সেঞ্চুরি করায় বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ৩২৯ রান তুলেছিল। মাশরাফির দল ম্যাচ জিতেছিল ৭৯ রানে।
-
২০১৫ মিরপুর, পাকিস্তান, তামিম ১১৬*
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও তামিমের ব্যাটের তোপে পুড়েছিল পাকিস্তান। মিরপুরে বাংলাদেশের বোলাররা পাকিস্তানে বেঁধে রেখেছিল ২৩৯ রানে। তামিম-মুশফিকের ব্যাট এই ম্যাচেও জ্বলে উঠেছিল। তৃতীয় উইকেটে ১১৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। মুশফিক ৬৫ রান করে ফিরলেও তামিম অপরাজিত ছিলেন। ১১৬ বলে অপরাজিত ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ছন্দ ফিরে পেয়ে এই বাঁহাতি আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের ধারায় ফিরে যান। ১৭ চার, ১ ছয়ে সাজিয়েছিলেন তার ইনিংস। তার সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ পেয়েছিল ৭ উইকেটের জয়। নিশ্চিত হয়েছিল সিরিজ জয়ও।
-
২০১৭ ডাম্বুলা, শ্রীলঙ্কা, তামিম ১২৭
ওই সিরিজে শ্রীলঙ্কার মাটিতে নিজেদের শততম টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজের শুরুতেও স্বাগতিকদের উড়িয়ে দিয়েছিল টাইগাররা। ডাম্বুলায় প্রথম ওয়ানডেতে তামিমের সেঞ্চুরিতে ৯০ রানের জয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সিরিজটা যদিও পরে ১-১ এ ড্র হয়েছিল। তামিমের সঙ্গে সাব্বির-সাকিবের হাফ সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ৩২৪ রানের বড় স্কোর গড়েছিল বাংলাদেশ।
ওপেনিংয়ে নেমে ইনিংসের ৪৯তম ওভারে আউট হয়েছিলেন এই ওপেনার। একপ্রান্ত আগলে খেলে গেছেন। কিছুটা শ্লথ গতির হলেও ১৪২ বলে ১২৭ রানের (১৫ চার, ১ ছয়) এই ইনিংস দিয়েই শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথমবার দাপুটে জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। এবং সেটাও স্বাগতিকদের এমন শাসন করে।