১.
আরেকবার বন্ধুর ফ্ল্যাটের দরজায় নক করলেন গুস্তাভ হার্টমান! এই নিয়ে তৃতীয়বার। কিন্তু আগের দু’বারের মতো এবারও নকের জবাব দিল না কেউ। বন্ধুর নাম ম্যাথিয়াস সিন্ডেলার, একটা কফিশপের উপরের এক ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে সে।
আরও কিছুক্ষণ নক করলেন গুস্তাভ। ফলাফল আগের মতোই। এবার শঙ্কিত হয়ে উঠলেন তিনি। সিন্ডেলারের হয়েছেটা কী? ঘুমাচ্ছে নাকি? এত শব্দেও ঘুম ভাঙছে না, এ কেমন ঘুম?
দরজা ভাঙার সিদ্ধান্ত নিলেন গুস্তাভ। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে আবিষ্কার করলেন, তার আশঙ্কাই সত্যিতে পরিণত হয়েছে। বিছানায় নগ্নাবস্থায় পড়ে আছে সিন্ডেলার, মারা গেছে আগেই। আর পাশেই পড়ে আছেন তার বান্ধবী, ক্যামিলা ক্যাস্টিনোলা। তার অবস্থাও খুব ভালো নয়, রীতিমতো মুমূর্ষু অবস্থায় ধুঁকছেন তিনি। ঘরের হিটার নষ্ট হয়ে নির্গত হয়েছে কার্বন মনোক্সাইড, সেই বিষেই মৃত্যু হয়েছে সিন্ডেলারের।
বন্ধুর এই আকস্মিক মৃত্যুতে বিমূঢ় হয়ে গেলেও মাথা ঠাণ্ডা রাখলেন হার্টমান, দ্রুত পুলিশে খবর দিলেন। পুলিশ চলে এলো। সিন্ডেলার আর ক্যামিলাকে নিয়ে যাওয়ার পরে বাইরে তাকালেন হার্টমান।
জানুয়ারি মাসের ধূসর এক দিন। আকাশে জমে আছে ধূসর মেঘ, যেন একটু পরেই নেমে আসবে মুষলধারার রূপে। দূরে কুচকাওয়াজ করছে ধূসর ইউনিফর্ম পরিহিত একদল সৈনিক। এত সব ধূসরের মাঝে ধূসর এক ছবিতে পরিণত হয়েছেন অস্ট্রিয়ার সর্বকালের সেরা ফুটবলার ম্যাথিয়াস সিন্ডেলার।
কী বিষণ্ণ একটা দিন!
২.
কে এই ম্যাথিয়াস সিন্ডেলার?
বর্তমানে যারা ফুটবল দেখেন, ম্যাথিয়াস সিন্ডেলার নামটা তাদের বেশিরভাগের কাছেই খুব পরিচিত নাম নয়। সেটা অবশ্য খুব স্বাভাবিকও, কারণ সিন্ডেলার মারা গেছেন প্রায় ৮০ বছর আগে। তাকে সরাসরি দেখেছেন, এমন কেউই আর প্রায় বেঁচে নেই। তবে তার দেশ অস্ট্রিয়াতে এখনও তাকে স্মরণ করা হয় গভীর শ্রদ্ধার সাথে, অস্ট্রিয়ার সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে।
সিন্ডেলার জন্মেছিলেন ১৯০৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারিতে, মোরাভিয়ার কজলভে। জায়গাটা বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রে অবস্থিত, তবে সে সময় অস্ট্রো-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। জন্মের পর তার যে নাম রাখা হয়েছিল, তার উচ্চারণটা ছিল ম্যাটেয সিন্ডেলার। দুই বছর বয়সে মা-বাবার সাথে ভিয়েনায় চলে আসেন সিন্ডেলার, এবং তখন থেকেই তার ‘ম্যাটেয’ নামটা একটু অন্যভাবে উচ্চারণের কারণে পরিণত হয় ‘ম্যাথিয়াস’-এ।
সিন্ডেলারের বাবা পেশায় ছিলেন একজন ইটের কারিগর। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধে যোগ দেন তিনি, এবং সেখানেই প্রাণ হারান। চার সন্তান নিয়ে অথৈ সাগরে পড়ে যান সিন্ডেলারের মা। বাড়তি অর্থ উপার্জনের জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হতো তাকে। সেই সময়ে ভিয়েনার রাস্তায় অন্য বাচ্চাদের সাথে একটা জীর্ণ ফুটবল নিয়ে খেলে বেড়াতেন সিন্ডেলার। অর্থাৎ, ভিয়েনার একদম রাস্তা থেকে উঠে এসেছিলেন এই ফুটবলার।
১৫ বছর বয়সে এএসভি হার্থা ভিয়েনায় যোগ দেন তিনি। সেখানে ছয় বছর কাটান, নিজেকে আরও শাণিত করে নেন সে সময়ে। এরপর তাকে দলে ভেড়ায় এফকে অস্ট্রিয়া ভিয়েনা। এই ক্লাবটা ছিল ভিয়েনার সে সময়ের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় ক্লাব, যার আগের নাম ছিল উইনার অ্যামেচার এসভি। মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই ক্লাবের হয়েই খেলেছেন সিন্ডেলার। সে সময়ে নিখুঁত পরিসংখ্যান রাখা হতো না অনেক ক্ষেত্রেই, তাই সিন্ডেলার যে কতগুলো গোল করেছেন, সে বিষয়ে নিখুঁত হিসেব নেই। তবে মনে করা হয়, ৭০৩ ম্যাচ খেলে ৬০০’রও অধিক গোল করেছিলেন এই ফুটবলার। মনে রাখা প্রয়োজন, সময়টা ১৯৩০’র দশক। পরিসংখ্যানটা তাই সে সময়ের প্রেক্ষিতে অসাধারণ বললেও কমই বলা হয়।
অস্ট্রিয়া ভিয়েনার হয়ে সিন্ডেলার অস্ট্রিয়ান কাপ জিতেছেন ৫ বার, লিগ জিতেছেন ১ বার। দু’বার জিতেছেন মিট্রোপা কাপ, যাকে মনে করা হয় ইউরো কাপের পূর্বসূরী। দুরন্ত গতি, ফুটবল পায়ে নিয়ে বিচিত্র সব কারিকুরি আর কৃশকায় হওয়ার কারণে তিনি পরিচিত হয়ে যান ‘ডের প্যাপিয়েরনে’ নামে, ইংরেজিতে যার মানে, ‘দ্য পেপারম্যান’। তার আরও একটা নাম ছিল, ‘দ্য মোজার্ট অফ ফুটবল’।
দাবা খেলায় সর্বোচ্চ খেতাবকে বলা হয় ‘গ্র্যান্ডমাস্টার’ খেতাব। গ্যারি ক্যাসপারভ-বিশ্বনাথন আনন্দ থেকে শুরু করে আমাদের নিয়াজ মোর্শেদরা এই ‘গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পেয়েছেন দাবা খেলায় চূড়ান্ত পারদর্শীতা দেখিয়েই। সে সময়ের থিয়েটার সমালোচক আলফ্রেড পোলগার বলেছিলেন,
‘সিন্ডেলার ছিলেন ফুটবল মাঠের গ্র্যান্ডমাস্টার।’
অস্ট্রিয়া ভিয়েনার হয়ে দুই বছর খেলার পরে এক জাদুকরের সাথে পরিচয় হলো সিন্ডেলারের। জাদুকরের নাম হুগো মেইসল।
না, প্রথাগত জাদুকর ছিলেন না হুগো, তার জাদুর স্টেজ ছিল ফুটবল নামের মাঠ। হুগো মেইসল আর ম্যাথিয়াস সিন্ডেলারের যুগলবন্দীতে দারুণ এক দলে পরিণত হলো অস্ট্রিয়া। এমনই যে, তাদের দলের নামই হয়ে গেল ‘উন্ডারটিম’। সহজ ইংরেজিতে যাকে বলে, ‘ওয়ান্ডার টিম’। ১৯৩১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৩২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ১৪ ম্যাচে অপরাজিত ছিল এই ওয়ান্ডার টিম। ওয়ান্ডার টিমের জয়রথের নিচে চাপা পড়ল জার্মানি, হাঙ্গেরি, ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডের মতো দলও। আর ব্যবধানটাগুলো কী! সুইসদেরকে হারালো ৮ – ১, হাঙ্গেরিকে ৮ – ২, জার্মানিকে ৬ – ০ এবং ফ্রান্সকে ৪ – ০ ব্যবধানে! অস্ট্রিয়াই যে সে সময়ে পৃথিবীর সেরা দল, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল না আর কারোরই।
এখানে কোচ মেইসলের কোচিং দর্শনের কথা সামান্য না বললেই নয়। মেইসলের কোচিংয়ের একটা দর্শন ছিল পজিশনবেজড ফুটবল না খেলা। মানে, মাঠে খেলোয়াড়দের নির্দিষ্ট কোনো পজিশন থাকবে না। ভ্রূ কুঁচকে যাচ্ছে? কিছু মনে পড়ছে কি? মাঠে নির্দিষ্ট পজিশন থাকবে না… আরে, এটা তো টোটাল ফুটবল!
ঠিক ধরেছেন। সত্তরের দশকে রাইনাস মিশেলস নামের এক কোচের মাথা আর ইয়োহান ক্রুইফ নামের এক ফুটবলারের পা’য়ের মাধ্যমে যে টোটাল ফুটবল শিল্পে পরিণত হয়েছিল, তার শুরুটা করেছিলেন এই হুগো মেইসলই। এই নিয়ে আরেকদিন গল্প করা যাবে। আমরা আবার ওয়ান্ডার টিমে ফিরি।
১৪ ম্যাচের জয়রথ থামলো ১৯৩২ সালের ডিসেম্বরে। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ইংল্যান্ডের সাথে ৪ – ৩ গোলে হেরে গেল অস্ট্রিয়া। সিন্ডেলার একটা গোলও করলেন। কিন্তু হেরে গেলেও প্রশংসার বন্যায় ভাসলেন তারা, ইংলিশ মিডিয়া সিন্ডেলারকে অভিহিত করলো ‘জিনিয়াস’ নামে। আর যে রেফারি এই ম্যাচের দায়িত্বে ছিলেন, তিনি বলেই দিলেন, সিন্ডেলারের গোলটা স্রেফ ‘মাস্টারপিস’। এরকম গোল আগে কখনো হয়নি, ভবিষ্যতেও কখনো হবে না। সিন্ডেলারের গোলটা ছিল অনেকটা ১৯৮৬ বিশ্বকাপে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ম্যারাডোনার গোলের মতো, বেশ কয়েকজনকে কাটিয়ে গোলে শট নিয়েছিলেন সিন্ডেলার।
১৯৩৪ সালে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর বসলো ইতালিতে। অস্ট্রিয়াই যে সেবারের চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে, সে ব্যাপারে সন্দেহ করার লোক ছিল খুব সামান্যই। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালেন বেনিটো মুসোলিনি!
দাঁড়ান! বিশ্বকাপের মধ্যে মুসোলিনি আসছেন কোত্থেকে?
মুসোলিনি সে সময় ইতালি শাসন করছেন যে! ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ জেতার জন্য মরিয়া হয়ে ছিলেন তিনি। এই লক্ষ্যে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে গণহারে খেলোয়াড় আমদানি শুরু করলেন, নাগরিকত্বও দিয়ে দিলেন কিছুদিনের মধ্যে। আর ইতালি জাতীয় দল যে কী বিষম চাপের মুখে ছিল, তা আর বলার কোনো প্রয়োজন নেই।
সেবারের বিশ্বকাপ হয়েছিল নকআউট পদ্ধতিতে। মানে, হারলেই বিদায়। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সকে ৩ – ২ ব্যবধানে হারালো অস্ট্রিয়া, গোল পেলেন সিন্ডেলার। কোয়ার্টার ফাইনালে হাঙ্গেরিকে হারালো ২ – ১ ব্যবধানে। সেমিতে উঠেই পড়লো স্বাগতিক ইতালির সামনে।
ইতালির সাথে ম্যাচে মাঠের অবস্থা খারাপ ছিল খুব, স্বাভাবিক খেলা খেলতেই বেগ পাচ্ছিল অস্ট্রিয়া। এর সাথে যুক্ত হলো চোরাগুপ্তা আক্রমণ। সিন্ডেলারকে আটকাতে পারলেই অর্ধেক কাজ হয়ে যাবে বুঝতে পেরে ট্যাকলের পর ট্যাকল করা হলো তাকে। তারপরও চেষ্টা কম করেননি সিন্ডেলার, কিন্তু সবই বিফল হলো লুইস মন্টি নামের এক ডিফেন্ডারের সামনে।
ভালো কথা, লুইস মন্টিকে চেনেন তো? এই লোক দুই বিশ্বকাপে দুই দেশের হয়ে ফাইনাল খেলেছেন। ১৯৩০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার ছিলেন, ১৯৩৪ এ খেলেন ইতালির হয়ে।
প্রথমার্ধের ১১ মিনিটেই প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দিয়েছিলেন জিওসেপ্পে মিয়াজ্জা, সেই গোল আর শোধ করতে পারলো না অস্ট্রিয়া। সেমিতেই থেমে গেল তাদের যাত্রা, এমনকি তৃতীয় স্থান নির্ধারণীতেও জার্মানির কাছে হেরে গিয়ে চতুর্থ হলো তারা।
৩.
সিন্ডেলার সম্পর্কে আরও কিছু বলার আগে সে সময়ের ইউরোপের দিকে একটু তাকানো যাক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ১৯৩৯ সালে। তবে তার এক বছর আগেই বিপুল বিক্রমে অস্ট্রিয়া দখল করে নেয় জার্মানি। একজন অস্ট্রিয়ান হিসেবে সিন্ডেলার কখনোই মেনে নিতে পারেননি বিষয়টা। সেই সাথে ইহুদীদের উপরে ব্যাপক অত্যাচার শুরু করে জার্মানবাহিনী। ওদিকে অস্ট্রিয়া ভিয়েনার কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে অধিকাংশ সমর্থকও ছিল ইহুদী। ক্লাবে খেলার সূত্রে তাদের সাথে ভালো রকমের ওঠাবসা ছিল সিন্ডেলারের। জার্মানদের উপরে বিতৃষ্ণা ক্রমশই বাড়ছিল তার।
বিতৃষ্ণা মেটানোর একটা সুযোগ এসে গেল সিন্ডেলারের সামনে। অস্ট্রিয়ান ফুটবল দল বলে আর কিছু থাকবে না, দুই দল মিলিয়ে একটা দল করা হবে। এবং সে দলটাই জার্মান জাতীয় দল হিসেবে খেলবে। অস্ট্রিয়া দখলের পর এমনটাই চাইছিল জার্মানি। তবে তার আগে শেষবারের মতো অস্ট্রিয়া আর জার্মানির মধ্যে একটা ম্যাচ আয়োজন করলো তারা। এবং এটাও জানিয়ে দিল, ম্যাচটা গোলশূন্য ড্র হলে সবচেয়ে ভালো হয়।
সেটাই হয়তো হতো। কারণ, বল পায়ে পেয়েও নাকি এমন সব মিস করছিলেন সিন্ডেলার, যা কি না কল্পনাও করা যায় না। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ৭০ মিনিটে ঘটনা ঘটেই গেল, গোল করে বসলেন তিনি।
শুধু গোল করলেও হয়তো একটা কথা ছিল। এরপর তিনি দর্শকসারিতে বসে থাকা জার্মান অফিসারদের সামনে গিয়ে উদযাপনও করলেন। যদিও, এ নিয়ে দ্বিমতও আছে বেশ। কেউ বলেছেন, নিশ্চিতভাবেই উদযাপন করেছিলেন সিন্ডেলার। আবার কেউ বলেছেন, সিন্ডেলার কোনো উদযাপনই করেননি। যেটাই হোক না কেন, সিন্ডেলারের গোল করাটা যে ভালোভাবে নেয়নি জার্মান কর্তৃপক্ষ, তা আর না বললেও চলে।
তার গোলের পর আরও এক গোল করেন একজন অস্ট্রিয়ান। অস্ট্রিয়া ম্যাচটা জেতে ২ – ০ গোলের ব্যবধানে।
এই ঘটনার পর জার্মান দলে খেলার জন্য সরাসরি প্রস্তাব দেয়া হয় সিন্ডেলারকে। সিন্ডেলারও সাফ জানিয়ে দেন, তার বয়স হয়ে গেছে ৩৫, অবসর নেবেন এবার। একজন ইহুদীর কাছ থেকে একটা ক্যাফে কিনে নেন তিনি, সেই সাথে আস্তানা পাতেন ক্যাফের উপরে।
এরপরের ঘটনা পাঠককে আগেই বলা হয়েছে। সিন্ডেলারের যে বান্ধবীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সে-ও আর বাঁচেনি, হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তার। সিন্ডেলারের শেষকৃত্যে প্রায় বিশ হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল। ব্রিটিশ-অস্ট্রিয়ান জার্নালিস্ট রবিন স্ট্রুমার যেটাকে অভিহিত করেছিলেন ‘নাজিদের বিরুদ্ধে ভিয়েনার প্রথম এবং শেষ র্যালি’ হিসেবে।
৪.
সিন্ডেলারের মৃত্যুটা কি শুধুই দুর্ঘটনা? সত্যি কি হিটার নষ্ট হয়েছিল? নাকি গোল করে তাদের অহমিকায় যে আঘাত ‘পেপারম্যান’ করেছিলেন, তারই নির্জলা প্রতিশোধ নিয়েছিল জার্মানরা? অথবা, ইহুদীদের সাথে এত দহরম মহরমই কি শেষমেষ ‘কাল’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল সিন্ডেলারের জন্য?
অনেকেই অনেক কথা বলেছেন বটে, কিন্তু আজ প্রায় আশি বছর পরও সিন্ডেলারের মৃত্যুরহস্যের সুরাহা হয়নি। দ্য মোজার্ট অফ ফুটবলের মৃত্যু তাই হয়ে আছে ফুটবল ইতিহাসের এক আক্ষেপ হিসেবেই।