চকলেটের ঝকঝকে মোড়কের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ক্ষুধা, ধ্বংস আর দারিদ্র্য

চকলেট, শব্দটি মাথায় আসার সাথে সাথে সুন্দর একটি মিষ্টি স্বাদ মাথায় ঘুরপাক খায়। এই লেখা পড়ছেন আর চকলেটের মিষ্টি সুন্দর স্বাদের সাথে পরিচিতি নেই এই পাঠক খুঁজে পাওয়া যাবে না। বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলো থেকেই বেরিয়ে আসে সুস্বাদু চকলেট। কিন্তু এই মিষ্টি চকলেটের সুন্দর মোড়কের কোথাও এর পিছনে লুকিয়ে থাকা দারিদ্র্য, শিশুশ্রম, অপমৃত্যুর খোঁজ পাওয়া যাবে না।

চকলেট শিল্পের প্রধান কাঁচামাল ‘কোকোয়া বীজ’ (cocoa), এটি উৎপাদনের পেছনে আছে আফ্রিকার ক্ষুদ্র চাষিদের সংগ্রাম, সুলভ শ্রমের জন্য শিশু পাচার, নব্য দাসত্ব, মধ্যসত্ত্বভোগী ক্ষমতাবান কোম্পানির দাম নিয়ন্ত্রণের দুষ্টচক্র। এই চক্র চাহিদা, মজুদ আর দামের নিয়ন্ত্রণ করে সূক্ষ্মভাবে চাষিকে বঞ্চিত করে। এখানে বেশি কোকোয়া উৎপাদন করলেও দাম স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাবে আবার কম উৎপাদন করলে পেট চলবে না। আর এই চক্রের খপ্পরে বেশি কোকোয়া উৎপাদনের নেশায় আইভরি কোস্ট আর ঘানায় সাধারণ চাষিরা মাইলের পর মাইল সংরক্ষিত বনাঞ্চল ধ্বংস করছেন।

দারিদ্র্য আর প্রতারণার এই বাস্তব গল্প শুরু করা যাক আফ্রিকার আইভরি কোস্ট আর ঘানা থেকে। বিশ্বব্যাপী যে চকলেট তৈরি হয় তার কাঁচামাল কোকোয়া বীজের ৬০ শতাংশই উৎপাদিত হয় পশ্চিম আফ্রিকার এই দুই দেশে। এর মাঝে আইভরি কোস্ট একাই বিশ্বের চল্লিশ ভাগ কোকোয়ার যোগানদাতা। তাই এর মোট জিডিপির প্রায় ১৫ শতাংশেরও বেশি আসে কোকোয়া রপ্তানি করে, যা দেশের রপ্তানি আয়েরও অর্ধেক।

চকলেটের কাঁচামাল ‘কোকোয়া বীজ’; Image source: phys.org

বিচ্ছিন্নভাবে ছোট ছোট জমিতে কোকোয়া চাষ হয়, বেশিরভাগই শহর থেকে দূরে, বনাঞ্চলের কাছে। দীর্ঘকাল পেরিয়ে গেলেও কোকোয়া বীজ চাষের ন্যূনতম আধুনিকায়ন হয়নি, ফলে প্রচুর মানুষের শ্রম দরকার এটিকে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য, বিশেষ করে সঠিক সময়ে কোকোয়া ফল সংগ্রহ করার জন্য। সঠিক সময়ে কোকোয়া ফল সংগ্রহ না করলে কোকোয়া বীজের গুণগত মান ঠিক থাকে না। সংগ্রহের পর সেই কোকোয়া ফল থেকে বীজকে আলাদা করে ফার্মেন্টেশনের জন্য রেখে দিতে হয় কিছুদিন। এই ফার্মেন্টেশনের ফলেই বীজের ভেতরে কিছু এনজাইম তৈরি হয় তা চকলেটের মিষ্টি গন্ধের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

নিয়মিত গাছ রক্ষণাবেক্ষণ, পানি দেওয়া, সঠিক সময়ে কোকোয়া গাছ থেকে ফল সংগ্রহ, সংগ্রহের পর ফার্মেন্টেশন এবং তার পরে শুকিয়ে সেই বীজ বিক্রির জন্য প্রস্তুত করার পুরো কাজ কোকোয়া চাষিরা নিজেরাই করে, পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়ায় এখনো যন্ত্রের ব্যবহার নেই বললেই চলে।

 

চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে কোকোয়া চাষ যেমন বেড়েছে তেমনই দরকার পড়েছে প্রচুর শ্রমিকের। ঘানা এবং আইভরি কোস্টে পাচারকৃত শিশুদের দাস হিসেবে কোকোয়া চাষে ব্যবহার হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু হয় নব্বইয়ের দশকে। আমেরিকা আর ইউরোপের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সরব হয়ে উঠে এর ব্যাপারে। ব্রিটিশ ডকুমেন্টারি ‘Slavery: A Global Investigation (2000)’  তৈরির সময় আফ্রিকার প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছে শিশুদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। যেখানে দেখা যায় উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা শিশুদের দাস হিসেবে ব্যবহার করছে কোকোয়া চাষিরা। দিনের পর দিন কোনো ধরনের বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য করছে, কাজ না করলে তাদের শারিরীক নির্যাতন করার প্রমাণ পাওয়া যায়।

কোকোয়া বীজ উৎপাদনে দীর্ঘফিন ধরেই অভিযোগ আছে শিশুশ্রমের; Image source: sociozen.com

এই প্রামাণ্য তথ্যচিত্র খুব দ্রুত সময়েই চকলেটের ভোক্তাদের মাঝে সাড়া ফেলে। চাষিদের চরম দারিদ্র্যের ছবি বিশ্বব্যাপী ফুটে উঠে, যেখানে চাষিরা বিপুল পরিমাণে কোকোয়া চাষ করেও দিনে মাত্র এক ডলারের কাছাকাছি আয় করেন। তাই চকলেট কোম্পানি সহ পশ্চিমা ক্রেতা, এনজিও এবং আরো অনেকেই দাবি তুলেন আইভরি কোস্ট আর ঘানা তাদের কোকোয়া চাষকে দাসমুক্ত করতে না পারলে তাদের বয়কট করার। চকলেট কোম্পানিগুলো ২০০০ সালে প্রতিশ্রুতি দেয় ২০০৫ সালের মাঝেই চকলেটের কাঁচামাল কোকোয়া বীজের উৎপাদনে যাতে শিশুশ্রম বা বেআইনি কাজ না হয় তা নিশ্চিতের চেষ্টা তারা করবে। কিন্তু তারা কি আসলেই তা করতে পেরেছে?

ক্ষমতা কার কাছে? 

বেশিরভাগ চকলেট কোম্পানি যাদের মোড়ক আমরা চকলেটের গায়ে দেখি, তাদের বেশিরভাগই সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে কোকোয়া বীজ ক্রয়ে জড়িত না। আইভরি কোস্ট আর ঘানা থেকে কোকোয়া বীজের সংগ্রহ আর প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাতের পুরো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে হাতে গোনা কয়েকটি শক্তিশালী কোম্পানি, যারা পরিচিত ‘কোকোয়া ট্রেডার’ নামে। পশ্চিমা গণমাধ্যম আর নানা সংস্থার চাপে এই কোম্পানিগুলো প্রতিশ্রুতি দেয় শিশুশ্রমের ব্যাপারটি সমাধানে কাজ করার।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মাধ্যম আইভরি কোস্ট এবং ঘানার উপর বয়কট দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়। এ ধরনের বয়কট এড়াতে আইভরি কোস্ট এবং ঘানা কিছু ব্যবস্থা নেয়। বিশেষ করে কোকোয়া বীজের সার্টিফেকশনের ব্যবস্থা করে, যেখানে জানা যাবে কোন এলাকা থেকে কোকোয়া বীজ আসছে, সেটি শিশুশ্রম এবং সংঘাত মুক্ত কিনা, চাষিদের কাছে টাকা যাচ্ছে কিনা। তবে কোকোয়ার বাজার আফ্রিকা থেকে সরে যাবার ভয়ে সাধারণ চাষিরাও এখন অনেকাংশে পশ্চিমা গণমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে নারাজ। তবে পরিবারকে সাহায্য করার সুবাদে এখনো লক্ষ লক্ষ শিশু কিশোর সরাসরি কোকোয়া চাষের বিভিন্ন ধাপে জড়িত। তাহলে সার্টিফিকেশন কাজ করছে কি?

চকলেট উৎপাদকরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তার বাস্তবায়ন হচ্ছে না; Image source: nationofchange.org

কোকোয়ার বাজারের মারপ্যাঁচ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইভরি কোস্ট আর ঘানার প্রত্যন্ত এলাকায় বিচ্ছিন্ন চাষিরা কোকোয়া বীজের চাষ করেন। একটি কোকোয়া গাছ থেকে গড়ে এক কেজি বীজ পাওয়া যায়। একজন চাষি এক মৌসুমে গড়ে বিশ, ত্রিশ কিংবা চল্লিশ কেজি বীজের যোগান দিতে পারেন।

কোকোয়ার দাম নির্ধারিত হয় লন্ডন কিংবা নিউ ইয়র্কের বাজারে। আইভরি কোস্ট আর ঘানা তাদের স্থানীয় চাষিদের জন্য আন্তর্জাতিক মূল্যের সাথে সমন্বয় করে ঠিক করে দেয় ‘ফার্ম গেইট প্রাইস’। কিন্তু যেহেতু চাষিদের সাথে রপ্তানিকারকদের সরাসরি যোগাযোগের কোনো অবকাঠামো নেই এই দেশগুলোতে, তাই একদম তৃণমূল থেকে রপ্তানিকারক পর্যন্ত পৌঁছাতে কম করে হলেও সাত থেকে আটবার হাত বদল হয়।

কৃষকের কাছ থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ‘Pisteur’ বা বীজ সংগ্রাহক, বীজ সংগ্রাহকরা পিক-আপ ট্রাক কিংবা মোটরবাইকে করে পাঁচ-সাত টন পর্যন্ত বীজ সংগ্রহ করে। বীজ সংগ্রাহকরা সাধারণত তাদের চেয়ে বড় সংগ্রাহক কিংবা বেশিরভাগ সময়েই ‘কো-অপারেটিভ’ বা ‘কনট্রাক্টর’ এর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে বীজ সংগ্রহ করে। তারা বিপুল পরিমাণ বীজ পৌঁছে দেয় ‘কো-অপারেটিভ’ এর গুদামে।

কো-অপারেটিভগুলো সাধারণত শহরকেন্দ্রিক, বেশিরভাগই ব্যক্তি মালিকানায় পরিচালিত। এই কো-অপারেটিভগুলো ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কিংবা বড় কোনো রপ্তানিকারকের কাছ থেকে ধার করে বীজ কেনার কাজটি করে থাকেন। প্রাথমিক ধাপে সকল প্রকার ট্যাক্স, কাগজপত্রের বিষয়াদি থেকে শুরু করে সার্টিফিকেশনের কাজকর্ম করে। কৃষক বা বীজ সংগ্রাহকদের বেশিরভাগই সার্টিফিকেশনের মারপ্যাঁচ বুঝে না।

প্রত্যন্ত এলাকায় ছোট ছোট চাষিদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাদের সার্টিফেকশন দেওয়ার মতো অবকাঠামো নেই আইভরি কোস্ট কিংবা ঘানার, পাশাপাশি চাষি কিংবা বীজ সংগ্রাহকরা জটিল কাগজকর্মের হিসাবে যেতে রাজি না। সুতরাং তারা প্রতিবছর সরকারের বেঁধে দেওয়া ফার্মগেট মূল্যের অনেক কমেই বিক্রি করছেন কোকোয়া। তৃণমূলের কোকোয়া ব্যবসার লাভের পুরোটাই চলে যায় আদতে মধ্যসত্ত্বভোগীদের হাতে। যাদের সংরক্ষ্ণের গুদাম, নিজেদের পরিবহন ব্যবস্থা, প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে সার্টিফিকেশন আদায়ের সক্ষমতা আছে।

আর অন্যদিকে কোকোয়া বীজ বিক্রি করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চাষিদের। বেশিরভাগ এলাকাতেই নেই সুপেয় পানি, স্কুল কিংবা চিকিৎসা ব্যবস্থা। তাই কোকোয়া চাষিদের সন্তানদের প্রায় সবাই কোকোয়া চাষে জড়িয়ে পড়ছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাঁধা পড়ে যাচ্ছে তারা নিরক্ষরতার জালে। এমনকি পশ্চিমা গণমাধ্যমের সংবাদে উঠে আসছে এই বীজের তৈরি চকলেট নিজের চোখে কখনো দেখেনি এমন চাষিও আছে। জীবন আর জীবিকার তাগিদেই তারা চাষ করে যাচ্ছেন এই কোকোয়া।

কোকোয়া গাছ, হালকা হলুদাভ গোলাপী ফলের ভেতরেই মিলেবে কোকোয়া বীজ; Image source: theconversation.com

ছোট থেকে বড় মধ্যসত্ত্বভোগী

কোকোয়া বীজের বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি লাভ করে রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলো (Cocoa Traders)। হাতে গোনা কয়েকটি কোম্পানি পুরো বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর মাঝে প্রধান তিনটি হলো ব্যারি ক্যালাবো (Barry Callebaut), কারগিল (Cargill), ওলাম (Olam)। এই কোম্পানিগুলো রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে সরাররি মিলিয়ন মিলিয়ন টন কোকোয়া বীজ কিনে। কোকোয়া বীজের এই ব্যবসা করতে বিপুল পরিমাণ মূলধন এবং বাজার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে নামতে হয়।

এই ঝুঁকি এড়াতে চকলেট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো সেই বাণিজ্যে না গিয়ে কোকোয়া ট্রেডারদের কাছ থেকে কোকোয়া বীজ কিংবা অর্ধপ্রক্রিয়াজাত কোকোয়া-লিকার, কোকোয়া-বাটার, কোকোয়া-পাউডার কিনে নেয়।

তাই চকলেট বাণিজ্যের পুরো বাজারের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করে বড় তিন থেকে পাঁচটি কোকোয়া ট্রেডার কোম্পানি। বিশ্বব্যাপী কোকোয়া বীজের দামের উপর সরাসরি প্রভাব রাখতে সক্ষম এই কোম্পানিগুলো। আর এই কাজটি তারা করছেও নিয়মিত, কোকোয়া বীজের দাম ১৯৭০ সালে ছিল ৫৭০০ ডলার প্রতি টন, সেখান থেকে প্রতি বছর কোকোইয়া বীজের উৎপাদন বাড়ার সাথে সাথে এর দাম কমছে। ২০১৫ সালে এই দাম এসে দাঁড়ায় ৩৪০০ ডলার প্রতি টন এবং ২০১৬ সালে তা এক ধাক্কায় ১৯১৭ ডলার প্রতি টন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কোকোয়া বীজের দাম যত কমছে আফ্রিকার চাষিরা ততই বেশি কোকোয়া উৎপাদন করতে চাইছে। কারণ তাদের বিশ্বাস কোকোয়া যত বেশি চাষ করা যাবে, তাদের আয় তত বাড়বে। কিন্তু বিশ্ববাজারে কোকোয়া ট্রেডারদের কারসাজি উল্টে দিচ্ছে তাদের হিসাব।

https://e360.yale.edu/assets/site/ezgif.com-gif-maker.mp4

ভিডিও: হ্রাস পাচ্ছে বনাঞ্চল; Source: Map Hub

আইভরি কোস্টের চাষিরা তাদের কোকোয়া চাষ বাড়াতে নিয়মিত ভিত্তিতে ধ্বংস করছেন তাদের ‘রিজার্ভ ফরেস্ট’। ১৯৯০ সাল থেকে আইভরি কোস্ট তাদের বনাঞ্চলের ৮৫% হারিয়েছে কোকোয়া চাষের কারণে। সরেজমিন জরিপে দেখা যায়, আইভরি কোস্টের কাগজে কলমে থাকা ২৪৪টি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ২০০টি হারিয়ে গেছে কোকোয়ার ভয়াল গ্রাসে।

Image source: MIGHTY EARTH

এই খাত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যারা কাজ করছেন তাদের মত অনুসারে, এ সমস্যার সমাধানে চকলেট কোম্পানিগুলোর এগিয়ে আসা বাঞ্চনীয়। চকলেট শিল্প পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধশালী শিল্প, দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে চকলেটের দাম দফায় দফায় বাড়িয়েও ন্যায্য মুজুরী পাচ্ছে না চাষিরা। চকলেট কোম্পানিগুলোর সাথে সরাসরি যোগাযোগের অভাবে মধ্যসত্ত্বভোগীদের হাতে চলে যাচ্ছে এই শিল্পের লভ্যাংশের টাকা। আশার কথা, বেলজিয়ান চকলেট নির্মাতা এবং বিশ্বের অন্যতম বড় কোকোয়া ট্রেডার ‘ব্যারি ক্যালাবো’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি কোকোয়া কিনতে এবং তাদের জীবনের মান উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী। তবে বাকি কোম্পানিগুলোও একই পথে না নামলে সহসাই এই সমস্যার কোনো সমাধান দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। 

তাই কোকোয়া উৎপাদনকারী দেশুগুলোর সরকারকে উদ্যোগী হয়ে চকলেট কোম্পানিগুলোকে সরাসরি চাষিদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার এবং তাদের সাথে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা, সম্ভব হলে আফ্রিকার দেশগুলোতেই তাদের কারখানা স্থাপনের ব্যবস্থা করে দেওয়া। আফ্রিকার সরকার, স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর মনিটরিং, সার্টিফিকেশনের পাশাপাশি সংরক্ষিত বনাঞ্চল ধ্বংস না করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, উন্নত জাতের কোকোয়া নিয়ে কাজ করা এখন সময়ের দাবি। চকলেটের ঝকঝকে মোড়কের আড়ালে দারিদ্র্য, শিশুশ্রম আর বনাঞ্চল ধ্বংস বন্ধ হোক এটাই বিশ্বের চকলেটপ্রেমীদের চাওয়া।

This article is about how cocoa bean production exploits child labor, and it's impact on rainforest destruction and severe poverty in Ghana and Côte d'Ivoire. 

Information source:

1. Slavery: A Global Investigation (Directed by Kate Blewett, Brian Woods With Kevin Bales.)

2. White Man's Burden and the New Colonialism in West African Cocoa Production (Bama Athreya, https://www.jstor.org/stable/10.2979/racethmulglocon.5.1.51 )

3. Rotten: Bitter Chocolate ( Documentary, Director: Abigail Harper)

Featured image source: greenamerica.org

Related Articles

Exit mobile version