সাইবার অস্ত্র নিয়ে বিশ্বনেতাদের লড়াই | পর্ব ৩


(পর্ব ৩-এর পর) 

সাইবার অস্ত্র নির্মাণকারী কোম্পানিগুলোর কোনোটিই এনএসওর মতো সফল হতে পারেনি। ইসরায়েল সরকারের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ারেও পরিণত হয়েছে কোম্পানিটি। এই ফার্মের শুরুটা হয় তেল আবিবের বাইরে একটা কৃষি সমবায়ের মুরগির ব্যবসা থেকে। ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ওই ভবনের মালিক বুঝতে পারেন কোডাররা মুরগির চেয়ে লাভজনক ব্যবসা এনে দিতে পারবে। তিনি ওই জায়গার মাঝে হালকা পরিবর্তন এনে সস্তায় অফিস ভাড়া খোঁজা টেক স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর কাছে ভাড়া দেওয়া শুরু করেন।

সেখানে কাজ করা স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর প্রতিষ্ঠাতা ঝানু প্রোগ্রামারদের মাঝে শালেভ হুলিও ছিলেন একটু আলাদা। তিনি ছিলেন একজন ক্যারিশমাটিক নেতা। তার সাথে যে কেউই স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে কথা বলতে পারত। তার ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলেন পুরোনো স্কুল বন্ধু ওমরি লেভি। তারা দুজনই বাধ্যতামূলক সামরিক দায়িত্ব পালন করে আসেন কমব্যাট ইউনিটে, প্রযুক্তি বা গোয়েন্দা বিভাগে নয়। তারা কয়েক বছর ধরে সংগ্রাম করেন ব্যবসা সফল কোনো পণ্য খুঁজে পাওয়ার জন্য। তারা একটা ভিডিও মার্কেটিং পণ্য তৈরি করেন। কিন্তু ২০০৮ এর বিশ্ব মন্দার সময় তাদের কোম্পানি বিলীন হয়ে যায়। এরপর তারা কমুনিটেক নামে আরেকটা কোম্পানি চালু করেন, যার সেবার মাধ্যমে সেলফোন মেরামতকারী কর্মীরা অনুমতি সাপেক্ষে গ্রাহকদের ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারত।

শালেভ হুলিও; Image Source: Concordia

এই আইডিয়া তাদের জন্য খুব একটা অনুপ্রেরণাদায়ী ছিল না। তাই দুই বন্ধু তখন ভিন্ন ধরনের ক্রেতার খোঁজ শুরু করলেন। তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতার খবর টের পেয়ে এক ইউরোপীয় গোয়েন্দা সংস্থা যোগাযোগ করল। দ্রুতই তারা উপলব্ধি করতে পারলেন, তাদের পণ্য গ্রাহক সেবার চেয়ে আরো বড় সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক বছর ধরেই ফোনে যোগাযোগের তথ্য উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও এনক্রিপশন সিস্টেম আসার পর থেকে তথ্য উদঘাটন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তারা যোগাযোগটা কাদের মধ্যে হচ্ছে, সেটা ধরতে পারলেও তাদের মধ্যে কী বার্তা আদান-প্রদান হয়েছে, সেটা জানা সম্ভব হচ্ছিল না। তারা যদি পুরো ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে সক্ষম হয়, তাহলে এনক্রিপশন হওয়ার আগেই ডেটা তাদের কাছে চলে আসবে। কমিউনিটেক ইতোমধ্যে ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি আয়ত্তে নিয়ে এসেছে। তাদের শুধু দরকার অনুমতি ছাড়াই ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলা।

এভাবেই এনএসওর জন্ম। হুলিও আর লেভির পণ্য আরো উন্নত করার জন্য উপর মহলের সাথে যোগাযোগের প্রয়োজন ছিল। এ কারণে তারা কোম্পানিতে তৃতীয় আরেক অংশীদার নিয়ে আসেন। তিনি হচ্ছেন নিভ কারমি, যার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ও মোসাদে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল। তারা তাদের নামের প্রথম অক্ষর থেকে কোম্পানির নাম দেন (নিভ, শালেভ, ওমরি)। এটা অনেকটা এনএসএ’র মতো শোনাচ্ছিল। তারা তখন কর্মী নিয়োগ দেওয়া শুরু করেন। তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল এই কর্মী নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের কর্মী সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। এর সদর দপ্তর হার্জলিয়াতে। এখানে অ্যাপল আর অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আলাদা আলাদা ল্যাবের ব্যবস্থা আছে। কোম্পানির হ্যাকাররা এখানে রাখা স্মার্টফোনগুলোতে দুর্বলতা বের করার জন্য সার্বক্ষণিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।   

হার্জলিয়ায় থাকা এনএসওর সদর দপ্তর; Image Source: AFP

এনএসওর রিসার্চ টিমের প্রায় সব সদস্যই গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাবেক কর্মী। বেশিরভাগ সদস্য কাজ করে এসেছেন ইসরায়েলি গুপ্তচরবৃত্তির সবচেয়ে বড় সংস্থা সামরিক গোয়েন্দা অধিদপ্তর আমান (AMAN) থেকে। এদের অনেকেই আমানের ইউনিট ৮২০০ থেকে আসা। কোম্পানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মীরা বিভিন্ন অভিজাত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে এসেছেন। এগুলোর মধ্যে আছে ইউনিট ৮২০০ এর একটা গোপন প্রোগ্রাম আরাম (ARAM), যেখানে শুধুমাত্র সবচেয়ে মেধাবীদের অল্প কয়েকজনকে সুযোগ দেওয়া হয়। তাদেরকে সবচেয়ে উন্নত পর্যায়ের সাইবার অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।         

বিশ্বের খুব কম জায়গাতেই এমন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এনএসওর হার্জলিয়াতে এমন কর্মীর সংখ্যা কয়েক শত। এটা এনএসওকে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে দারুণভাবে সাহায্য করেছে। কোম্পানিতে কাজ করা সকল প্রকৌশলীই প্রতিদিন কাজ করেন ‘জিরো ডেজ’ (Zero Days) খুঁজে বের করার জন্য। জিরো ডেজ হচ্ছে ফোন সফটওয়্যারগুলোর নিত্যনতুন দুর্বলতা খুঁজে বের করা, যেন সেখানে সহজে পেগাসাস সফটওয়্যার ইনস্টল করা যায়। প্রতিদ্বন্দ্বি কোম্পানিরা যেখানে জিরো ডেজ খুঁজে বের করতে হিমশিম খায়, এনএসও সেখানে ফোন হ্যাকের একটা রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে দ্রুতই আরেকটা রাস্তা বের করে ফেলে।

২০১১ সালে এনএসওর প্রকৌশলীরা পেগাসাসের প্রথম সংস্করণের কোডিং শেষ করেন। এনএসও আশা করেছিল তাদের শক্তিশালী নতুন অস্ত্র দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে দ্রুতই অনেক ক্রেতা খুঁজে পাবে। কিন্তু অনেক দেশ, বিশেষ করে ইউরোপীয় দেশগুলো শুরুতে দ্বিধান্বিত ছিল বিদেশি গোয়েন্দাদের তৈরি পণ্য নিয়ে। ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর কর্মীরা ছিলেন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তাই সম্ভাব্য ক্রেতা দেশগুলো চিন্তিত ছিল ইসরায়েল স্পাইওয়্যারগুলোর আড়ালে হয়তো আরো শক্তিশালী স্পাইওয়্যার ঢুকিয়ে দিতে পারে, যার মাধ্যমে মোসাদ তাদের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।

মেজর জেনারেল আভিগদর বেন গাল; Image Source: Ilan Ron

কোম্পানির ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য হুলিও এনএসওর চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করেন মেজর জেনারেল আভিগদর বেন-গালকে। তিনি ছিলেন খুবই সম্মানিত কমব্যাট অফিসার এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইহুদি নিধন কার্যক্রম থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তি। তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর কোম্পানির চারটি মূল ভিত্তির কথা উল্লেখ করেন।

  • এনএসও নিজে তার সিস্টেম পরিচালনা করবে না।
  • এনএসও শুধু বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করবে। কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানির কাছে করবে না।
  • এনএসও কোন সরকারের কাছে পণ্য বিক্রি করবে, তা আগে যাচাই-বাছাই করে দেখবে।
  • এনএসও প্রতিটি বিক্রয়ের লাইসেন্স নেওয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে সহযোগিতা করবে।

নিয়ন্ত্রকদের সাথে এনএসওর এই সম্পর্ক রাখার সিদ্ধান্তটা নির্দেশ করে তারা ইসরায়েলের পররাষ্ট্র নীতির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে ভূমিকা রাখতে চায়। বেন-গাল এই তদারকিকে এনএসওর বিকাশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখেন। এতে হয়তো এনএসও কোন দেশগুলোর কাছে পণ্য বিক্রি করবে, তার ব্যাপারে বিধিনিষেধ চলে আসবে। কিন্তু একই সাথে ক্রেতা দেশগুলো পণ্য কীভাবে ব্যবহার করবে, সেক্ষেত্রে জনগণের সমালোচনার মুখোমুখি হওয়া থেকেও কোম্পানিকে রক্ষা করবে। এনএসও স্বেচ্ছায় সরকারকে তদারকি করতে দেওয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও পরিকল্পনাটা নিয়ে খুশি ছিল। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী থাকা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর এক সামরিক উপদেষ্টা জানান,

এনএসওর কার্যক্রম আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকায় আমরা এটা দিয়ে কূটনৈতিক মুনাফা তুলে আনতে পারব।

কোম্পানিটি খুব দ্রুতই তাদের প্রথম সাফল্য পায়। মেক্সিকো তখন ড্রাগ কার্টেলের বিরুদ্ধে বেগ পেতে হিমশিম খাচ্ছিল। তার একটা কারণ ছিল ব্ল্যাকবেরি মেসেজিং সার্ভিসের এনক্রিপ্টেড সুবিধা থাকা। এটা কার্টেল পরিচালকদের সুবিধা দিয়ে আসছিল। মেক্সিকো তাদের এই যোগাযোগ ব্যবস্থা হ্যাক করার উপায় খুঁজছিল। এনএসএ একটা উপায় বের করে। কিন্তু আমেরিকান এজেন্সিটি শুধু বিক্ষিপ্তভাবে কিছু সুযোগ দেয় মেক্সিকোকে। হুলিও ও বেন-গাল তখন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ফেলিপে কালদেরনের সাথে সাক্ষাৎ করেন তাদের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে। এনএসএ যা করতে পারবে, পেগাসাসও তাই করতে পারবে এবং এটা পরিচালনা করার ক্ষমতা থাকবে পুরোপুরিই মেক্সিকো কর্তৃপক্ষের হাতে। কালদেরন প্রস্তাবে রাজি হন।

মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিলিপে কালদেরন; Image Source: Getty Images

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এনএসওকে মেক্সিকোতে পেগাসাস সফটওয়্যার বিক্রির ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেয়। তাদের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হয়ে যায়। দ্রুতই সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল সিকিউরিটি বা সিজেন (CISEN) এর গোয়েন্দারা পেগাসাস মেশিন দিয়ে কাজ শুরু করেন। তারা জোয়াকিন গুজম্যানের সিনালোয়া কার্টেলের সাথে জড়িত এক ব্যক্তির ফোন নাম্বারের পেগাসাস সফটওয়্যার ইনস্টল করেন। তখন ব্ল্যাকবেরিকে সফলভাবে হ্যাক করা সম্ভব হয়। গোয়েন্দারা বার্তাগুলো তখন পড়তে পারছিলেন। এমনকি বিভিন্ন ব্ল্যাকবেরি ডিভাইসগুলোর অবস্থানগুলোও দেখা যাচ্ছিল। এটা যেন অনেকটা ম্যাজিকের মতোই কোনো ব্যাপার ছিল। মেক্সিকো তখন এই নতুন সিস্টেমের মাধ্যমে তাদের বিজয় দেখতে পায়।

ইসরায়েলের জন্যও এটা একটা আশীর্বাদ হয়ে আসে। মেক্সিকো ল্যাটিন আমেরিকার একটা প্রভাবশালী অঞ্চল। এই অঞ্চলে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিপক্ষ দেশগুলোর সহায়তায় ইসরায়েল বিরোধী বিভিন্ন গ্রুপ গড়ে উঠায় ইসরায়েল এখানে বছরের পর বছর কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছে। মেক্সিকোর সাথে সাইবার অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তি হওয়ায় ইসরায়েলের প্রতি তাদের পররাষ্ট্র নীতির কোনো পরিবর্তন এসেছে কিনা তার সরাসরি কোনো প্রমাণ না থাকলেও কিছু কার্যক্রম দেখে এর প্রভাব উপলব্ধি করা যায়।

জাতিসংঘের সম্মেলনে মেক্সিকোর ইসরায়েল বিরোধী ভোটের দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও তারা ধীরে ধীরে ইসরায়েল সম্পর্কিত কোনো ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকা শুরু করে। ২০১২ সালে কালদেরনের স্থলভিষিক্ত হন এনরিক পেনা নিয়েতো। তিনি ২০১৬ সালে ইসরায়েল সফর করেন। ২০০০ সালের পর থেকে এটা ছিল কোনো মেক্সিকান প্রেসিডেন্টের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। পরবর্তী বছর নেতানিয়াহু মেক্সিকো সিটিতে সফর করেন। এটা ছিল মেক্সিকোতে প্রথম কোনো ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সফর। খুব দ্রুতই মেক্সিকো ঘোষণা দেয় তারা জাতিসংঘে ফিলিস্থিনপন্থী বিভিন্ন প্রস্তাবনায় ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। নেতানিয়াহুর এক মুখপাত্র অবশ্য জানান, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী পেগাসাস বিক্রির বিনিময়ে অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে কোনো প্রকার সুবিধা নেননি। এগুলো পুরোটাই ভিত্তিহীন।

২০১৭ সালে মেক্সিকো সিটিতে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও এনরিক পেনা নিয়েতো; Image Source: AFP

মেক্সিকোর উদাহরণ এনএসওর সাথে কাজ করার সম্ভাবনা ও বিপদ দুই দিকের অবস্থাই তুলে ধরে। ২০১৭ সালে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক এক গবেষণা সংস্থা সিটিজেন ল্যাব জানায়, মেক্সিকো কর্তৃপক্ষ মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দমনমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে পেগাসাস সফটওয়্যার ব্যবহার করেছে। ২০১৪ সালে ইগুয়ালাতে ৪৩ জন ছাত্রের হত্যাকাণ্ড নিয়ে মামলা লড়ে যাওয়া আইনজীবীদের নজরদারিতে রাখার জন্যও সরকারের উচ্চপর্যায়ের কোনো ব্যক্তি পেগাসাস ব্যবহার করেছেন।

এফবিআইয়ের মেক্সিকান সংস্করণের প্রধান টমাস জেরন দে লুসিও ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেন। এতে বলা হয় ছাত্ররা স্থানীয় এক সন্ত্রাস বাহিনীর দ্বারা খুনের শিকার হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সালে তিনি নিজেই অভিযুক্ত হন সে হত্যাকাণ্ডে সরকারের জড়িত থাকার প্রমাণ লুকানোর অভিযোগে। বর্তমানে ধারণা করা হয় তিনি হয়তো ওই হত্যাকাণ্ডে পেগাসাস ব্যবহার করেছিলেন। কারণ তার আনুষ্ঠানিক দায়িত্বগুলোর একটা ছিল সাইবার অস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া।

টমাস জেরন দে লুসিও; Image Source: La Razón de México

২০১৯ সালের মে মাসে আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদোর বিপুল ব্যাবধানে নির্বাচনে জয় লাভ করে পেনা নিয়েতোর স্থলাভিষিক্ত হন। তার ক্ষমতায় আসার পর খুব দ্রুতই জেরনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় নির্যাতন, অপহরণ ও ইগুয়ালা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকা আলামতগুলোতে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে। জেরন প্রথমে কানাডায় পালিয়ে যান। এরপর ইসরায়েলে প্রবেশ করেন পর্যটক ভিসায়। মেক্সিকো তার বিরুদ্ধে বর্তমানে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও যুক্ত করেছে। মেক্সিকো ইসরায়েলের কাছে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও জেরন এখনো সেখানেই আছেন। 

(পরবর্তী অংশ পর্ব ৪-এ) 

Related Articles

Exit mobile version