বরিস জনসনের আগে আরো মোট ৭৬ জন নেতা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বরিস জনসনকে নিয়ে মোট ৭৭ জন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ২১ জনেরই একটি সাধারণ মিল রয়েছে। তা হলো ইটন কলেজের পাঠ!
ব্রিটেনের একমাত্র কলেজ হিসেবে রেকর্ড ২১ জন প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষাদান করেছে ইটন কলেজ। এই কলেজের ধারে-কাছেও নেই ব্রিটেনের অন্য কোনো কলেজ। ইটন কলেজের পরে যে নামটি, সেই হ্যারো স্কুলে পড়েছেন মাত্র সাতজন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী!
ব্রিটেনের প্রথম প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ওয়ালপোল থেকে সর্বশেষ বরিস জনসন, উভয়েই পড়াশোনা করেছেন ইটন কলেজে। এছাড়া অসংখ্য সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীও পড়াশোনা করেছেন এই কলেজে। বরিস জনসনই যে শেষ তা কিন্তু নয়। ভবিষ্যতে আরো অনেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আসতে পারেন ইটন কলেজ থেকে। কেননা বরিস জনসনের পূর্বের আরেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও ছিলেন ইটনের ছাত্র।
অর্থাৎ নিয়মিতভাবেই এই কলেজের ছাত্ররা ব্রিটেনকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কিন্তু এর পেছনের কারণ কী? ইটন কলেজের বিশেষত্বই বা কী? চলুন এসব প্রশ্নের উত্তরের পাশাপাশি ইটন কলেজের ইতিহাস সম্পর্কেও জেনে নেওয়া যাক।
ইতিহাস
লন্ডনের বাইরে বার্কশায়ারের উইন্ডসর শহরে ইটন কলেজের অবস্থান। টেমস নদীর তীরে প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো এই কলেজটি ইংল্যান্ডের অন্যতম বৃহৎ স্বায়ত্ত্বশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৪৪০ সালে রাজা ষষ্ঠ হেনরি ইটন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
এই কলেজটি মূলত ৭০ জন গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পড়াশোনার সুবিধা করে দেওয়ার জন্য রাজা ষষ্ঠ হেনরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই কলেজে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে তারা কেমব্রিজে কিংস কলেজে পড়াশোনার সুযোগ পেতেন। কিংস কলেজও রাজা ষষ্ঠ হেনরির হাতেই প্রতিষ্ঠিত।
প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘদিন ইটন কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রত্যেক দিন ঘুম থেকে উঠতে হতো ভোর পাঁচটায়। এরপর সকালের প্রার্থনা ও নাস্তা করে ছয়টার মধ্যে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হতো। দিনভর ক্লাস চলার ফাঁকে মাত্র এক ঘণ্টা খেলাধুলার সুযোগ দিয়ে রাত আটটায় স্কুল ছুটি হতো।
সেই সময় ইটন কলেজে বাৎসরিক ছুটি ছিল দু’বার। বড়দিন ও গ্রীষ্মের সময় তিন সপ্তাহ করে মোট ছয় সপ্তাহ ছুটি দেওয়া হতো। এছাড়া বছরের অন্য কোনো সময় ছুটি ছিল না।
বর্তমান সময়ের ইটন কলেজ
ইটন কলেজে শুধুমাত্র ছেলেরা পড়াশোনা করতে পারেন এবং এই নিয়ম প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বলবৎ রয়েছে। বর্তমানে ইটন কলেজে প্রায় ১,৩০০ শিক্ষার্থী রয়েছে, যার মধ্যে প্রতি বছর প্রত্যেক ক্লাসে ১৪ জন করে মোট ৭০ জনকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
যারা এই শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন তাদের বলা হয় কিংস স্কলারস বা কলেজার্স। যারা কিংস স্কলারস লাভ করেন তাদের ১০ থেকে ১০০ শতাংশ টিউশন ফি ছাড় দেওয়া হয়। সেই সাথে তারা কলেজের বিশেষ ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ পান।
এর বাইরে যে সকল ছাত্র ইটনে পড়াশোনা করেন তাদের বলা হয় ‘অপিড্যান্স’। এদের সংখ্যা প্রায় ১২ শতকের অধিক। অপিড্যান্সদের অধিকাংশই ইংল্যান্ডের সম্পদশালী ও বনেদি পরিবারের সন্তান।
ইটন কলেজে মূলত ১৩ বছর বয়সী ছেলেদের ভর্তি করা হয়। ১৮ বছর বয়সে কলেজ ছেড়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৩ বছর বয়সে ইটন কলেজে পাঠ শুরু করলেও তার ৩ বছর আগে থেকেই ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়।
যারা এই কলেজে ভর্তি হতে ইচ্ছুক তাদের প্রথমে আবেদন করে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে হয়। এরপর যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তাদের কলেজে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হন, তাদের বাৎসরিক ৪০ হাজার পাউন্ড বা ৫০ হাজার ডলার ফি প্রদান করতে হয়। বাংলাদেশের টাকায় যা ৪০ লাখের বেশি!
ইটন কলেজে মোট ২৫টি ছাত্রাবাস রয়েছে। প্রতিটি ছাত্রবাসে ৫০ জন করে ছাত্র থাকেন। তাদের পড়াশোনার দেখভাল করার জন্য একজন করে পেশাদার গৃহশিক্ষক রয়েছেন। এছাড়া ছাত্রাবাসে বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কাজ পর্যবেক্ষণ করেন একজন চুক্তিভিত্তিক সুপারভাইজার।
ছাত্রাবাসে থাকা প্রত্যেক ছাত্রের জন্য ব্যক্তিগত রুম রয়েছে। এছাড়া কিছু ছাত্রাবাসে খাবার রান্না করার জন্য নিজস্ব বাবুর্চি নিয়োগ দেওয়া হয়। বাকি ছাত্রাবাসে থাকা ছাত্ররা কলেজের ডাইনিংয়ে গিয়ে খাবার খেয়ে থাকেন।
ইটন কলেজের প্রত্যেক ছাত্রকে সকাল সাড়ে সাতটায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে ২০ মিনিটের মধ্যে ক্লাসের জন্য প্রস্তুত হতে হয়। এরপর রাত পৌনে আটটায় রাতের খাবার খাওয়ার আগে তারা মোট পাঁচটি ক্লাস করেন। তাতেই শেষ নয়। ৯:২০-এ প্রাকশয্যা প্রার্থনা করতে হয়। সবশেষে রাত সাড়ে নয়টায় সকল ছাত্র ঘুমানোর জন্য নিজ নিজ বিছানায় চলে যান।
রাজনৈতিক সাফল্যের রহস্য
২০১৬ সালে ইটন কলেজের ১১ জন ছাত্রের একটি দল রাশিয়া সফর করে। সেই সফরে তারা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সাক্ষাতও করেন। কিন্তু তাদের এই সফরে কলেজ কিংবা ব্রিটেন সরকার, কারো কোনো সাহায্য ছিল না। বরং তারা নিজেদের প্রচেষ্টায় প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে সাক্ষাত করে আসেন।
এ থেকে ধারণা করা যায়, ইটন কলেজের ছাত্ররা নিজেদের কতটুকু দক্ষ করে গড়ে তোলেন। যেখানে বিশ্বের অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাক্ষাত পাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়, সেখানে কলেজ পড়ুয়া এই ছাত্রদের রুশ নেতার সাথে সাক্ষাত করা চাট্টিখানি বিষয় নয়।
কিন্তু যারা ব্রিটেনের মতো রাষ্ট্রকে পরিচালনার লক্ষ্য নিয়ে ইটন কলেজে পড়তে আসেন, তাদের এমন যোগ্যতা থাকাই আবশ্যক। ইটন কলেজ থেকে যুক্তরাজ্যের সর্বাধিক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। চলুন সেই বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
রাজপরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক
ব্রিটেনের অভিজাত পরিবারের সন্তানদের পড়ার জন্য ইটন কলেজই যে প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল, তা নয়। ইটনের চেয়ে ৫২ বছর আগে উইনচেস্টার কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সেসময় ব্রিটিশ রাজপরিবার এবং অধিকাংশ অভিজাত পরিবারের সন্তানরা বাড়িতে অথবা ছোট কোনো আশ্রমে পড়াশোনা করত।
তবে উইনচেস্টার ও ইটন কলেজের মধ্যে মূল পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন প্রতিষ্ঠাতারা। উইনচেস্টার কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন একজন বিশপ। বিপরীতে ইটন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হলেন রাজা ষষ্ঠ হেনরি।
রাজা হেনরি ভবিষ্যতের শাসকদের কথা বিবেচনা করে ইটন কলেজসহ আরো কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের দিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তবে উইন্ডসর প্রাসাদের একেবারেই নিকটে ইটন কলেজ। ফলে রাজপরিবারের অনেক সদস্য এই কলেজে পড়াশোনা করেছেন।
বিবিসির তথ্য বলছে, ব্রিটিশ রাজপরিবারের কমপক্ষে ১৫ জন সদস্য এই কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এদের মধ্যে বর্তমান সময়ের প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারিও রয়েছেন। এছাড়া বেলজিয়াম, রোমানিয়া, ইথিওপিয়া, থাইল্যান্ড ও নেপালের রাজপরিবারের সদস্যরাও ইটনে পড়াশোনা করেছেন।
রাজপরিবারের সাথে ইটন কলেজের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে এখানকার পড়ুয়ারা স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতিতে বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি ইটন কলেজ ব্রিটেনে শিক্ষিত ও ভদ্র সমাজ সৃষ্টিতেও ভূমিকা রেখেছে। এ কারণেই ইটন কলেজকে বলা হয় ‘দ্য নার্সারি অব ইংল্যান্ড’স জেন্টলম্যান’।
উচ্চাকাঙ্ক্ষা
ব্রিটেনের অভিজাত পরিবারগুলো সবসময়ই আর্থিকভাবে ইটন কলেজকে পৃষ্ঠপোষকতা করে গিয়েছে। যাতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হলেও উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিবারের সন্তানরা যেন এই কলেজে পড়াশোনা করতে পারেন।
এক্ষেত্রে ইটন কলেজ সফলও হয়েছে। উনিশ শতকের শুরুর দিকে স্কটল্যান্ডের মধ্যবিত্ত পরিবারের জন গ্লাডস্টোন চেয়েছিলেন তার অন্তত একজন সন্তান যেন রাজনীতিতে সফল হতে পারে। নিজের স্বপ্নকে পূরণ করার জন্য অনেকের কাছে পরামর্শ চান জন। পরবর্তীতে অক্সফোর্ডের ক্রাইস্ট চার্চ তাকে ইটন কলেজের কথা বলেন। নিজের বড় সন্তান তাকে অনেক আগেই হতাশ করেছেন। ফলে তিনি তার আরেক সন্তান উইলিয়াম গ্লাডস্টোনকে ইটন কলেজে ভর্তি করে দেন, যিনি ব্রিটেনের চারবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার জন্ম নিউ ইয়র্কে। তার মা শার্লোট জনসনের বয়স যখন ২২ বছর, তখন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির উপর ডিগ্রি নেওয়া ছেড়ে দিয়ে স্বামীর সাথে মার্কিন মুলুকে চলে যান। তখন তার স্বামী স্ট্যানলি জনসন, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির ছাত্র।
পরবর্তীকালে বরিস জনসনের বাবা বিশ্বব্যাংকে চাকরি করলেও, তার মা চিত্রশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়েন। সেই হিসেবে তিনি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। কিন্তু লক্ষ্য ছিল রাজনীতি করার। যেকারণে তিনি ইটন কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন।
রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ
উইলিয়াম গ্লাডস্টোনের বাবা রাজনীতি শেখার জন্য ইটন কলেজের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি অনুধাবন করেছিলেন, অভিজাত পরিবারের সন্তানদের সাথে মেলামেশার ফলে তার সন্তান অনেক বেশি জ্ঞান আহরণ করতে সক্ষম হবে। সেই সাথে ইটন কলেজের রাজনৈতিক শিক্ষা সম্পর্কেও তার ধারণা ছিল।
ইটন কলেজে ‘পপ’ নামে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার সংগঠন রয়েছে। এই সংগঠনের মাধ্যমে গ্লাডস্টোন নিজেকে বাগ্মী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। বরিস জনসনদের সময় থেকে ‘পপ’ অবশ্য বিতর্ক প্রতিযোগিতার সংগঠন থেকে কিছুটা দূরে সরে গেছে। তার পরিবর্তে কলেজে সফল ছাত্রদের সংগঠনে রূপ নিয়েছে।
ইটন কলেজে পড়ার সময় গ্লাডস্টোন এক আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। যার নাম ছিল ‘ক্যানিংইটস’। তাদের নেতা জর্জ ক্যানিংয়ের নামানুসারে এই নামকরণ হয়েছিল। ক্যানিং বয়সে গ্লাডস্টোনের বড় ছিলেন এবং তিনিও ইটন কলেজেই পড়াশোনা করেছেন। গ্লাডস্টোনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ক্যানিংয়ের বড় অবদান ছিল।
ক্যানিংয়ের বাবা ছিলেন একজন ব্যর্থ ওয়াইন ব্যবসায়ী এবং মা অভিনেত্রী। তাদের ছেড়ে অনেক দূরে চাচার তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছিলেন।
ইটন কলেজে পড়ার সময় ক্যানিং বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করেন। জনসম্মুখে দুর্দান্ত ভাষণ দেওয়ার গুণই তাকে পরবর্তীতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছিল।
অর্থ অথবা মেধা
ইটন কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে মানদণ্ড হলো দুটি। হয় পরিবারের অর্থ থাকতে হবে, অথবা পড়ুয়ার মেধা থাকতে হবে।
১৬৫৭ সালে ইটন থেকে পাশ করে উইলিয়াম শার্লক প্রথমে দ্বিতীয় জেমস ও পরে তৃতীয় উইলিয়ামের শাসনকালে রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ পাদ্রী ছিলেন; যিনি ইটনে পড়াকালে তেমন কোনো ফি পরিশোধ করেননি। কেননা বৃত্তি পেয়েছিলেন তিনি।
আবার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং প্রথম প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ওয়ালপোল বৃত্তি লাভের পরও ফি প্রদান করেছেন। কারণ তাদের পরিবারের সামর্থ্য ছিল।
বর্তমান সময়ের প্রায় ১৩ শতাধিক ছাত্রদের মধ্যে যারা বিত্তবান পরিবারের, তাদের পুরো টিউশন ফি প্রদান করতে হয়। যারা বিত্তবান পরিবারের সন্তান হয়েও বৃত্তি পেয়েছেন তাদের অনেকেই ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ফি প্রদান করেন।
তবে কোনো ছাত্রের পরিবারের পক্ষে ব্যয় বহন করা সম্ভব না হয়, তাহলে তাদের জন্য ইটন কলেজ ছাড় দিয়ে থাকে। সফল হওয়ার জন্য পরিশ্রমের পাশাপাশি অর্থ ও মেধার যেকোনো একটি হলেই যথেষ্ট। ইটন কলেজ তাদের ছাত্রদের পরিশ্রমী হিসেবে গড়ে তোলে। সেই সাথে মেধা অথবা অর্থের জোর থাকার কারণে খুব সহজেই এই কলেজের ছাত্ররা সফলতা লাভ করেন।
পূর্বের রাজনৈতিক সাফল্য
ব্রিটেনের রাজনীতিতে ইটন কলেজের পূর্বের সাফল্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে বিশেষ প্রত্যাশা সৃষ্টি করেছেন। ইটনের শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রী তৈরি করার জন্য সবসময় সচেষ্ট। তারা তাদের শিক্ষার্থীদের পূর্বের প্রধানমন্ত্রীদের উদাহরণ টেনে উজ্জীবিত করে থাকেন।
বরিস জনসন তার আত্মজীবনী ‘জাস্ট বরিস’-এ তার সময়কার প্রভোস্টের বিখ্যাত একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেছেন,
তিনি আমাদের প্রায়ই বলতেন, আমরা ভবিষ্যতের নেতা। আমাদের কিছু দায়িত্ব ও লক্ষ্য রয়েছে, যা কখনোই হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। তোমাদের পিট দ্য এল্ডারের মতো ভাবতে হবে এবং নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে, আমি কী সেই মহান নেতাদের মতো করে নিজেকে গড়ে তুলছি?
ব্রিটিশ রাজনীতিতে ইটন কলেজের এই আভিজাত্য সেখানকার ছাত্রদের বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। তারা প্রায়ই সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পান এবং খুব কাছে থেকে তাদের বক্তব্য ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পারেন, যা পরবর্তীতে তাদের সাফল্য পেতে সাহায্য করে।