পেগাসাস স্পাইওয়্যার এবং মোদি হত্যা ষড়যন্ত্র মামলায় ১৬ জনকে ফাঁসানোর আখ্যান (পর্ব-২)

২০১৮ সালে ভারতীয় পুলিশ দাবি করে, তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হত্যা ও সরকার পতনের এক বিস্ময়কর ষড়যন্ত্র উদঘাটন করেছে। কিন্তু তিন বছর বাদে, ক্রমশই তথ্য-প্রমাণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে সেই কথিত ষড়যন্ত্র ছিল নিছকই কাল্পনিক, এবং সেই কল্পকাহিনী রচনায় মুখ্য ভূমিকা ছিল ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের। দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত, সিদ্ধার্থ দেবের শ্বাসরুদ্ধকর লং-রিডের বাংলা অনুবাদ তুলে ধরা হচ্ছে রোর বাংলার পাঠকদের সামনে। আজ থাকছে তিন পর্বের ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্ব। 

(প্রথম পর্বের পর)

৮.

আর্সেনালের বিশ্লেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই পুরোটা সময় ধরেই অ্যাটাকাররা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিল উইলসনের ল্যাপটপ। তারা সেখানে বিভিন্ন জাল ডকুমেন্ট তো প্ল্যান্ট করেছিলই, সেই সঙ্গে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছিল উইলসনের ব্রাউজিং ওয়েবসাইট, সাবমিটিং পাসওয়ার্ড, ইমেইল ও অন্যান্য ডকুমেন্টের উপর।

তবে আর্সেনালের প্রতিবেদন প্রকাশেরও আগেই, অন্যান্য কয়েকটি সংগঠন উদঘাটন করতে পেরেছিল যে বিকে ১৬-এর পরিচিত সহকর্মী বা বন্ধুবান্ধবদেরও টার্গেট করা হয়েছে।

যেমন সিটিজেন ল্যাব কানাডার এক তদন্ত থেকে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে তেলতুম্বদে (যিনি তখনও গ্রেপ্তার হননি) এবং আরো ২০-এর অধিক ব্যক্তিকে (যাদের কোনো না কোনোভাবে বিকে ১৬-এর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল) টার্গেট করা হয়েছিল মিলিটারি-গ্রেড পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে। ভারত সরকারের কাছে এই স্পাইওয়্যার বিক্রি করেছে ইসরায়েলি ফার্ম এনএসও।

ওই বছরেরই সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ডিজিটাল ডিভিশনের পক্ষ থেকে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, এই একই ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকের কাছেই মালওয়্যার বহনকারী ধারাবাহিক ইমেইল পাঠানো হয়েছিল।

সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস; Image Source: CloudSEK

৯.

২০২১ সালের জুলাইয়ে দ্য গার্ডিয়ান এবং তাদের সহযোগী আরো কয়েকটি সংবাদ সংস্থা সংবাদ প্রকাশ করেছে যে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের উৎপীড়ক সরকার পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করছে সক্রিয় কর্মী ও সাংবাদিকদের উপর নজরদারি করার জন্য। ওই সংবাদ অনুযায়ী, মোদি সরকারও পেগাসাস ব্যবহারকারীদের মধ্যে অন্যতম, এবং তারা এটি প্রয়োগ করেছে ভারতের প্রতিপক্ষ রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও সক্রিয় কর্মীদের উপর। বর্ণিত সংবাদের দাবি অনুযায়ী, সম্ভাব্য টার্গেটদের মধ্যে ছিলেন বিকে ১৬-এর আটজন সদস্যও– রণা উইলসন যাদের একজন।

এনআইএ অবশ্য আর্সেনালের প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, এই কোম্পানিটির কোনো লোকাস স্ট্যান্ডি (আদালতে শ্রুত হবার অধিকার) নেই মতামত দেবার, এবং ভারতীয় সরকারের নিজস্ব ফরেনসিকস ল্যাব ইতোমধ্যেই জানিয়েছে যে উইলসনের ডিভাইসে কোনো ধরনের মালওয়্যার পাওয়া যায়নি।

এনআইএ-র এই বিবৃতির প্রত্যুত্তরে আর্সেনালের প্রেসিডেন্ট মার্ক স্পেন্সার বলেছেন :

“আর্সেনাল ডিজিটাল ফরেনসিকসের প্রতিবেদনগুলো খুবই বিস্তারিত, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও পরিষ্কার– তারা নিজেরাই নিজেদের হয়ে কথা বলতে সক্ষম।”

ওয়াশিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে যখন আর্সেনালের প্রথম প্রতিবেদনের ব্যাপারে তিনজন পৃথক ডিজিটাল ফরেনসিকস বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা তিনজনই আর্সেনালের উদঘাটনকে বিশ্বাসযোগ্য দাবি করেছে। আর্সেনালের উদঘাটিত তথ্য আরো সমর্থন পেয়েছে দিল্লি ভিত্তিক ম্যাগাজিন দ্য ক্যারাভানের, যারা ২০২০ সালের মার্চে উইলসনের হার্ড ড্রাইভের একটি কপি পরীক্ষা করেছে, এবং মালওয়্যার আবিষ্কার করেছে, যা বিকে ১৬-এর বিরুদ্ধে মামলার ক্ষেত্রে ‘এভিডেন্স ম্যানিপুলেশন’-এর দিকেই ইঙ্গিত করছে।

গ্রেপ্তারের পর রণা উইলসন; Image Source: PTI

১০.

আর্সেনাল এমন একধরনের ফরেনসিক কৌশল ব্যবহার করে, যার মাধ্যমে কোনো ডকুমেন্ট কবে আপলোড করা হয়েছে তা নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা সম্ভব। তারা নিশ্চিত যে উইলসনের ডিভাইসে মালওয়্যার প্ল্যান্টিং এবং তার ডিভাইস থেকে অপরাধমূলক ডকুমেন্ট উদ্ধার করা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। তাদের মতে, যে অ্যাটাকার উইলসনের ডিভাইসকে সংক্রমিত করেছে অপরাধমূলক নথির মাধ্যমে, সেই একই অ্যাটাকারই চার বছরেরও বেশি সময় ধরে টার্গেট করে গেছে বিকে ১৬-এ উইলসনের অন্যান্য সহ-অভিযুক্তদেরও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিশেষজ্ঞ, যিনি আর্সেনালের তদন্তের (যা তিনটি প্রতিবেদনে সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে, এবং সর্বশেষ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে ২০২১ এর জুলাই মাসে) ধরনের সঙ্গে সুপরিচিত, বলেছেন যে উইলসন ও তার সহ-অভিযুক্তদের ডিভাইসে হওয়া অ্যাটাকের মাধ্যমে এক বিশাল অবকাঠামো প্রকাশ্যে চলে এসেছে, যেখানে রয়েছে অ্যাটাকারদের ব্যবহৃত কয়েক স্তরের ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও বিভিন্ন ধরনের মালওয়্যার। এছাড়াও উন্মোচিত হয়েছে বিভিন্ন ক্রিপ্টার, অ্যাটাকের ঠিক আগে কম্পাইল করা সোর্স কোড, মালওয়্যার ডিপ্লয়ের জন্য ব্যবহৃত ইমেইল অ্যাকাউন্ট ও বিভিন্ন ইমেইল ফোর্জারি সার্ভিস।

এই সকল তথ্যকে একত্র করলে অনুমান করা যায় যে কথিত ভীমা কোরেগাঁও ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছে আরেক ষড়যন্ত্র – যে ষড়যন্ত্রের উদ্ভব এমন উৎস থেকে, যাদের উদ্দেশ্যের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায় মোদি ও তার ডানপন্থী হিন্দু সরকারের উদ্দেশ্য।

১১.

এই ঘটনাক্রমের সূচনা ঘটেছিল একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে, অথচ শেষ হয়েছে জঙ্গীবাদ-বিরোধী আইনে বিকে ১৬-এর অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলবন্দি হওয়ার মাধ্যমে। গোটা ঘটনাক্রম আমাদের সামনে তুলে ধরে এক শিহরণজাগানিয়া, অতি পরিচিত দৃশ্য। সে দৃশ্য অবদমনের, যার অবতারণা ঘটছে গোটা ভারতজুড়ে; মোদির ভারতে। এ দৃশ্যের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত প্যাটার্নও এতদিনে দাঁড়িয়ে গেছে, যেখানে আইনি ব্যবস্থাকে এমনভাবে ম্যানিপুলেট করা হয় যে বাস্তবের ভুক্তভোগীরাই একসময় প্রতিভাত হয় অপরাধী হিসেবে।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে একটি নতুন আইন কার্যকর হয়। সে আইনের নাম নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)। এই নতুন আইন মুসলিমদের জন্য হুমকিস্বরূপ। এর ফলে মুসলিমরা বৈষম্যের শিকার হতে পারে, এবং ভারতীয় নাগরিক হিসেবে তাদের অধিকারও কেড়ে নেয়া হতে পারে। তাই হাজারো বিক্ষোভকারী নেমে আসে দিল্লির পথে। শুধু মুসলিমরাই নয়, সেই বিক্ষোভে সামিল হয় নানা ধর্ম-বর্ণ-পেশার মানুষ। একতাবদ্ধ হয় তারা, সংহতি জানায় অভিন্ন উদ্দেশ্যে। তারপর, ২৩ ফেব্রুয়ারি, শহরে বাধে এক নতুন দাঙ্গা। বিক্ষোভকারীরা হামলার শিকার হয় ডানপন্থী হিন্দু গুণ্ডাবাহিনী ও দিল্লি পুলিশের। যতক্ষণে দাঙ্গা-হাঙ্গামা শেষ হয়, ততক্ষণে ঝরে গেছে ৫৩টি তাজা প্রাণ। তাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই মুসলিম।

সিএএ-বিরোধী আন্দোলন; Image Source: PTI

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে দ্য ক্যারাভান ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশদভাবে তুলে ধরা হয় ওই সহিংসতায় রাষ্ট্রের বিস্ময়কর সহায়তার চিত্র। ঠিক যেভাবে বছর দুয়েক আগে ভীমা কোরেগাঁওয়ে করা হয়েছিল দলিতদের স্মৃতি উদযাপনের আয়োজন, তেমনই এবারও ঘটনাক্রম শুরু হয় নিছকই একটি শান্তিপূর্ণ জমায়েতের মাধ্যমে। তারপরও, ডানপন্থী হিন্দু নেতারা বিক্ষোভকারীদের চিত্রায়িত করে আক্রমণাত্মক, বিধ্বংসী হিসেবে। মুসলিমদেরকে চিহ্নিত করা হয় হিন্দু অধিকার বিরোধী হিসেবে। আর এভাবেই উসকে দেয়া হয় সহিংসতার, যা শেষ অবধি রূপ নেয় বর্বরোচিত রায়টে।

সহিংসতা তো একপর্যায়ে থামে, কিন্তু তার পায়ে পায়েই এসে হাজির হয় নানা কন্সপিরেসি থিওরি। ২০২০ সালের ১১ মার্চ, নিজেদেরকে ‘গ্রুপ অভ ইন্টেলেকচুয়ালস অ্যান্ড অ্যাকাডেমিশিয়ান্স’ বলে পরিচয় দেয় একটি গোষ্ঠী, যদিও বুদ্ধিজীবী বা শিক্ষাবিদ হিসেবে তাদের কৃতিত্বের কোনো নাম-নিশানাই ছিল না। বরং তাদের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল ডানপন্থী হিন্দুদের। এই গোষ্ঠীটি সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়, যেখানে দাবি করা হয় যে দিল্লির সহিংসতার পেছনে দায়ী হলো ‘ডানের বুগিম্যান’, তথা শহুরে নকশাল-জিহাদি নেটওয়ার্ক। এর কিছুকাল পরেই ধারাবাহিকভাবে ধরপাকড় শুরু হয়। তবে সেই ধরপাকড়ে যারা আদতেই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদেরকে টার্গেট করার বদলে, বেছে বেছে ধরা হতে থাকে সেসব শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের, যারা বরং সহিংসতা থামাতে সচেষ্ট হয়েছিল।

বিকে ১৬-এর মতোই, এই বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারেও ব্যবহৃত হয়েছে একই অস্ত্র: জঙ্গীবাদ-বিরোধী আইন। যদিও ইউএপিএ আইনটি প্রথম পাশ করা হয় ১৯৬৭ সালে এবং সেটি ২০০৮ সালে হালনাগাদ করে কংগ্রেস সরকার, মোদি সেটিকেই কাজে লাগাচ্ছেন তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বিরোধিতাকারীদের দমনের জন্য।

১২.

মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে চার বছরে, এই আইনের আওতায় করা মামলার সংখ্যা ছিল ৫,১০২টি, যা আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে, মোদি পুনর্নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পর, এই আইন আরো একদফা সংশোধন করা হয়, যা সরকারকে দেয় যেকোনো ব্যক্তিবিশেষকে কোনো ধরনের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য বা যোগাযোগ ছাড়াই জঙ্গী হিসেবে আখ্যায়িত করার ক্ষমতা।

২০২০ সালের ১৬ মে, সিএএ-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সামনের সারিতে থাকা আসিফ ইকবাল তানহাকে (২৫) আটক করা হয় তার দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির জামিয়া নগরের ফ্ল্যাট থেকে। জুনে তিনি জামিনে মুক্তি পেলে, আমি তার সঙ্গে কথা বলি একই ঘরানার অন্য এক সক্রিয় কর্মীর অ্যাপার্টমেন্টে বসে। যে রুমে বসে তার সঙ্গে কথা বলছিলাম, সেখানকার টেবিলে ছড়ানো-ছিটানো ছিল অন্তত ৫০টি ফোল্ডার – বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে জঙ্গীবাদ-বিরোধী আইনে করা মামলার কপি। তানহা আমাকে জানান, কীভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় ভুয়া পরিচয়পত্র দেখিয়ে সিম কার্ড কেনা এবং সেই সিম কার্ড আরেকজন বিক্ষোভকারীর কাছে পৌঁছে দেয়ার।

“আমার বিরুদ্ধে যে মোবাইল ফোনের দোকানে যাওয়ার অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেখানে আমি কখনোই যাইনি। এমনকি যে লোকের কাছ থেকে আমি সিম কার্ড কিনেছি বলা হচ্ছে, সেই লোককেও জীবনে দেখিনি। আমার নিজের ফোনে যে সিম কার্ডটি রয়েছে, ওটি বাদে আর কোনো সিম কার্ড কখনোই আমার কাছে ছিল না। এবং ওই মোবাইলটিও আমাকে গ্রেপ্তারের এক মাস আগেই পুলিশ জব্দ করে নিয়ে যায়।”

জুন মাসে তিহার জেল থেকে জামিনে মুক্তির পর তানহা; Image Source: Xavier Galiana/AFP/Getty Images

এরপর তানহা ধাপে ধাপে বর্ণনা করেন, তার বিরুদ্ধে আরো কী সব বিদঘুটে, অবিশ্বাস্য অভিযোগ আনা হয়, কীভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আদালতে হাজির করা হয়। তিহার জেলে বন্দি করার আগে তাকে এক রাত রাখা হয় দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলে। জঙ্গীবাদ-বিরোধী ওই ডিভিশনের দুর্নাম রয়েছে অকথ্য অত্যাচার ও বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের।

স্পেশাল সেল কর্মকর্তারা তাকে কীভাবে মারধোর করেছে স্মরণ করতে গিয়ে তানহা জানান :

“সাত থেকে আটজন মানুষ মিলে আমাকে ঘুষি ও লাথি মারে। অবশেষে তারা আমাকে একা ছেড়ে দেয়, কিন্তু সারারাত ধরে আমার চোখের উপর উজ্জ্বল হ্যালোজেন লাইট তাক করে রাখা হয়। এরপর আমাকে যখন তিহারে নেয়া হলো, তখন আমাকে আরেক দফা মারধোর করে সেখানকার কর্মকর্তারা। এছাড়া আমি নাকি জিহাদি, সেজন্য জেলের অন্যান্য কয়েদিদের হাতেও পিটুনি খাই আমি।”

১৩.

নাগরিক অধিকারের প্রচারক নাদিম খান সিএএ-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের উপর অত্যাচার প্রসঙ্গে বলেন,

“প্রায় ৪০০-এর মতো মানুষকে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র মুসলিম শিক্ষার্থী, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, এবং তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয় যেন তারা ষড়যন্ত্র মামলায় সরকারের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। আমাকেও তারা দুবার ডেকে নিয়ে যায়। আসলে, যারাই তাদেরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, তাদের সকলকে তারা একটি মেসেজ দিতে চেয়েছে। আর এজন্য তারা ব্যবহার করেছে জঙ্গীবাদ-বিরোধী আইন, কেননা এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী মেসেজ, এটিই আপনাকে সোজাসুজি জানিয়ে দেয় যে যাবতীয় নিপীড়নের মুখে আপনাকে মুখে কুলুপ এঁটে রাখতে হবে।”

ঠিক এই একই মেসেজই, পরিষ্কার ও যথেষ্ট পরিমাণে, দেয়া হয়েছে বিকে ১৬-কে।

This article is in Bengali language. It is a Bengali translation of the article titled "The unravelling of a conspiracy: were the 16 charged with plotting to kill India’s prime minister framed?" by Siddhartha Deb. Necessary references have been hyperlinked inside. 

Featured Image © AFP/Getty; Guardian Design (From left: Rona Wilson, Stan Swamy, Sudha Bhardwaj, Varavara Rao and Anand Teltumbde.)

Related Articles

Exit mobile version