১৯১০ সালের জানুয়ারির এক ঝলমলে বিকেল। লস অ্যাঞ্জেলসে কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে এয়ার শো। দ্য ফাস্ট বিগ আমেরিকান এয়ার শো। অবশ্য বর্তমানের প্যারিস এয়ার শো-র মতো আয়োজনটা এতটা জমকালো ছিল না। ছিল না ড্রিমলাইনার বা এ-৩৮০ মতো সব আধুনিক বিমান।
বিমান বলতে তখন ছিল দুই ডানাওয়ালা বাইপ্লেন। বেসিক ইঞ্জিনবিশিষ্ট এই বিমানগুলো সাজানো রয়েছে সারিবদ্ধভাবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশে উড়বে আর মুগ্ধ করবে শো দেখতে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীকে। এই হাজারো লোকের মধ্যে ছিলেন উইলিয়াম এডওয়ার্ড বোয়িংও। সারিবদ্ধভাবে সাজানো বিমানগুলো দেখে তার মাথা নষ্ট হবার দশা। সবকিছু ভুলে ভিড় ঠেলে তিনি চলে গেলেন বিমানের খুব কাছে। পাইলট তখন আকাশে উড়াল দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বোয়িং পাইলটের কাছে গিয়ে অনুরোধ জানালেন তাকে যেন একটু হলেও বিমানে ওঠানো হয়। কিন্তু পাইলট তার কথায় কোনো পাত্তাই দিলেন না। বেচারা বোয়িংয়ের মনটাই খারাপ হয়ে গেল। এয়ার শো দেখে বুকভরা দুঃখ নিয়ে ফিরে গেলেন সিয়াটলে।
উইলিয়াম এডওয়ার্ড বোয়িংয়ের জন্ম ১৮৮১ সালের ১ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের ডেট্রয়েট শহর। তার বাবা ছিলেন জাতিতে জার্মান, অন্যদিকে মা অস্ট্রিয়ান। বোয়িংয়ের বয়স যখন মাত্র ৮ বছর তখন তার বাবা দুনিয়ার পাঠ চুকিয়ে পাড়ি জমান পরপারে। এরপর মা তাকে পাঠিয়ে দেন সুইজারল্যান্ডে। ১৯০৩ সালে সুইজারল্যান্ড থেকে আমেরিকায় ফেরত এসে তিনিও কাঠের ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তার বিমানের প্রতি ছিল দুর্বলতা। সেজন্য মাত্র ২৯ বছর বয়সে যখন শুনলেন লস অ্যাঞ্জেলসে এয়ার শো হবে, তখন তিনি কাজকর্ম ফেলে দিয়ে সাড়ে আঠারোশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেখানে চলে যান।
লস অ্যাঞ্জেলস থেকে ফেরত এসে তিনি ভর্তি হন সিয়াটল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিমান চালনাবিদ্যা বিভাগে। পড়াশোনা চলাকালেই তার পরিচয় ঘটে আরেক বিমান-পাগল কনরড ওয়েস্টারভেল্টের সাথে। সদ্য মার্কিন নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়া ওয়েস্টারভেল্টের সাথে খুব অল্প সময়েই বোয়িংয়ের খুব ভাল বন্ধুত্ব জমে গেল।
এরপর ১৯১৪ সালে দুজনে চলে গেলেন লেক ওয়াশিংটনে, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এয়ার শো দেখতে। এই এয়ার শো-তে অনেকের মতো যোগ দিয়েছিলেন টেরাহ মেরুনি নামক এক পাইলট। শো দেখতে এসেই বোয়িংয়ের মনে পড়ে গেল ১৯১০ সালের সেই দুঃখের কথা। বেচারা এবারও সংকোচ নিয়ে পাইলটকে বললেন, “আমাকে একটু প্লেনে ওঠার সুযোগ দেবেন?” ভাগ্যিস, এবারের পাইলট আগের মতো ছিলেন না! তিনি প্রথমে বোয়িংকে এবং এরপর তার বন্ধু ওয়েস্টারভেল্টকে নিয়েও উড়াল দিলেন। কিন্তু বোয়িংয়ের এই বিমানটি খুব বেশি পছন্দ হলো না। এরপর দুই বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নিল এর চেয়েও ভাল বিমান বানাবার।
শুরু হয়ে গেল দ্য গ্রেট বোয়িং অ্যাডভেঞ্চার। বিমান নির্মাণের জন্য দুই বন্ধু পুরোদমে কাজ চালিয়ে যেতে লাগলেন। বিমানটির নাম রাখলেন দুই বন্ধুর নামের প্রথম অক্ষর মিলিয়ে ‘বি অ্যান্ড ডব্লিউ’। আর কোম্পানির নাম রাখলেন ‘প্যাসিফিক অ্যারো প্রডাক্ট কো.’। কিন্তু কাজ শুরু করে দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই বড় ধরনের বাধা এলো। ১৯১৫ সালে ওয়েস্টারভেল্টকে মার্কিন নৌবাহিনী অন্য জায়গায় বদলি করে দেয়। একা হয়ে গেলেন বোয়িং, কিন্তু কাজ থামিয়ে দিলেন না। ১৯১৬ সালের জুনে অনেক পরিশ্রম করে ‘বি অ্যান্ড ডব্লিউ’ এর নির্মাণকাজ শেষ করলেন। অনেক চেষ্টা-তদবির করে হার্ব মুনটার নামক এক পাইলটকে খুঁজে বের করলেন, যিনি এই বিমানটি পরীক্ষা করে দেবেন। ঠিক হলো ১৯১৬ সালের ১৫ জুন বিমানটি আকাশে উড়িয়ে পরীক্ষা করা হবে।
১৫ জুন ১৯১৬; লেক ওয়াশিংটনে বিমান নিয়ে অপেক্ষা করছে বোয়িং। এদিকে পাইলটের কোনো দেখা নেই। অবশেষে তিনি নিজেই চড়ে বসলেন বিমানে, উড়াল দিলেন আকাশে। ইতিপূর্বে ১৯১৫ সালে ভালোমতোই বিমান চালানো শিখেছিলেন তিনি। বিঅ্যান্ডডব্লিউ সফলভাবে আকাশে উড়ল এবং নেমেও এলো। সফল হলো উইলিয়াম এডওয়ার্ড বোয়িংয়ের প্রথম প্রকল্প।
এরপর বোয়িং কাঠের ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে পুরোদমে লেগে গেলেন বিমানের পেছনে। কাজ শুরু করলেন একটি সি ফোর বিমান নিয়ে। কিছুদিনের মধ্যে সেটাও সফলভাবে নির্মাণ শেষ হলো। ১৯১৭ সালে এসে তিনি কোম্পানির নাম ঠিক করলেন ‘বোয়িং এয়ারপ্লেন কোম্পানি’। ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন থেকে সদ্য পাস করা দুই ইঞ্জিনিয়ারকে মাসিক ৯০ ডলারের বিনিময়ে নিয়োগ দিলেন তার কোম্পানিতে। ক্লেমন্ট এল ক্লেয়ার আর ফিলিপ জনসন নামের এই দুই প্রকৌশলী ছিলেন বোয়িং কোম্পানির পিলার। পরবর্তীতে এই দুই প্রকৌশলী বোয়িংয়ের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন!
দেখতে দেখতে চলে এলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ১৮ এপ্রিল, ১৯১৭ সালে যখন আমেরিকা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে, তখন বোয়িং এয়ারপ্লেন কোম্পানি সবেমাত্র প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে মার্কিন নৌবাহিনীর কাছ থেকে ৫০টি সি-প্লেন নির্মাণের জন্য অর্ডার পেয়ে গেলেন। সফলভাবে পঞ্চাশটি বিমান নির্মাণ শেষ করে তারা মার্কিন নৌবাহিনীর হাতে সেটা পৌঁছে দেন। যুদ্ধের পর সামরিক বিমান নির্মাণ থেকে সরে এসে পুনরায় বাণিজ্যিক বিমান নির্মাণের প্রতি মনোযোগ দেন তারা। এরপর এডওয়ার্ড বোয়িং প্রথমে এয়ার মেইল সার্ভিস চালু করেন। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সর্বপ্রথম এয়ারমেইল কোম্পানি। পরবর্তীতে এ সংস্থাটি যাত্রী পরিবহন কার্যক্রম শুরু করে।
১৯২৮ সালে ‘বোয়িং এয়ারপ্লেন কোম্পানি’ থেকে পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় ‘বোয়িং এয়ারপ্লেন এন্ড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন’। ১৯২৯ সালে এভিয়ন, চান্স ভুট, সিকরসকি এভিয়েশন, স্টিয়ারম্যান এয়ারক্রাফ্ট, প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি, এবং হ্যামিল্টন মেটাল প্লেন নামে একাধিক বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ শুরু করে। সেই বছর সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হয় ‘ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন’।
১৯৩১ সালে গ্রুপটি তাদের ছোট ছোট ৪টি এয়ারপ্লেনকে ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনে সংযুক্ত করে। ১৯৩৪ সালে বিমান পরিবহন এবং বিমান নির্মাণশিল্পকে পৃথক করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট এন্ড ট্রান্সপোর্ট বিলুপ্ত হওয়ার পর বিভক্ত তিনটি কোম্পানির মধ্যে বোয়িং এয়ারপ্লেন কোম্পানি ছিল একটি। বাকি দুটি ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স। এই ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সই আজকের যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স।
বোয়িং বাণিজ্যিকভাবে সবচেয়ে সফল বিমানটি আকাশে উড়ায় ২০ ডিসেম্বর ১৯৫৭ সালে। ততদিনে তারা বিশ্বব্যাপী ভালোভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। বোয়িং ৭০৭ মডেলের এই বিমানটি তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিমানে পরিণত হয়। এই বিমানের মাধ্যমে বোয়িং সর্বপ্রথম পৃথিবীর এক নম্বর বিমান নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় উঠে আসে। ১৯৬০ সালের পর থেকে একের পর এক নতুন বিমান আর প্রযুক্তির চমক দিয়ে সারা বিশ্বে হইচই ফেলে দেয় সংস্থাটি।
১৯৬০ সালে এসে তারা ভার্টল কর্পোরেশন নামক একটি কোম্পানিকে কিনে নেয়। তখন এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় হেলিকপ্টার কোম্পানি। ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে সংস্থাটি মহাকাশযান, নৌযান, এনার্জি কর্পোরেশন এবং ট্রানজিট সংক্রান্ত একাধিক বাণিজ্যিকীকরণের কাজে হাত দেয়।
১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৪ সালে বিমান শিল্পের এক নতুন চমক নিয়ে হাজির হয় বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেনস। বোয়িং ৭২৭ মডেলের বিমানটি তৎকালীন বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত বিক্রি হয় ১৮৩২ ইউনিট। ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের বিমানবহরে যোগদানের মাধ্যমে সর্বপ্রথমে এই বিমানের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হয়।
১৯৬৭ সালের ৯ এপ্রিল, উন্মোচিত হয় শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন। সেদিন মেঘের ওপর ডানা মেলে আকাশে উড়াল দেয় বোয়িং ৭৩৭। বিমানশিল্পের ইতিহাসে বোয়িং ৭৩৭-কে বাণিজ্যিকভাবে সবচেয়ে সফল বিমান বলে মনে করা হয়। ১৯৬৭ থেকে আজ অব্দি বিমানটি বিশ্বব্যাপী রাজত্ব করছে। এযাবৎ বিমানটির ১৪,৯৫৬ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বর্তমানেও বেশ অর্ডারে আছে। এর সবচেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইউরোপিয়ান আরেক জায়ান্ট এয়ারবাস এ-৩২০ বিক্রি হয়েছে ১৪,২৮১ ইউনিট। পরবর্তীতে বোয়িং ৭৩৭ এর একাধিক সংস্করণ বের হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায় ম্যাক্স ৭,৮ ও ৯ ভার্সনগুলো।
১৯৬৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আকাশে ওড়ে বোয়িং-৭৪৭। ওয়াইড বডি জেট এয়ারলাইনার এ বিমানটি সর্বমোট বিক্রি হয় ১,৫৬৮ ইউনিট। এটি বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক সফলতাকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়।
১৯৮২ সালে মেঘের উপর ভর করে আকাশে ওড়ে আরেক জায়ান্ট বোয়িং-৭৫৭। বিভিন্ন বিমান পরিবহণ সংস্থার কাছ থেকে একের পর এক অর্ডার আসতে থাকে। বিক্রি হয় সর্বমোট ১,০৫০ ইউনিট।
সেই বছরের শেষের দিকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বহরে যোগদানের মাধ্যমে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু করে বোয়িং-৭৬৭। বাণিজ্যিকভাবে বেশ সফলতাও পায়। বিক্রি হয় ১,২২৪ ইউনিট।
এরপর আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ। বোয়িং সিরিজের অন্যতম জনপ্রিয়, সফল এবং আধুনিক ‘বোয়িং-৭৭৭’ বিমানটি সর্বপ্রথম আকাশে ভাসে ১২ জুন ১৯৯৪ সালে। বর্তমানে বোয়িং-৭৭৭ এক্স ভার্সনগুলো সবচেয়ে জনপ্রিয়। বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ১,৯৮৯ ইউনিট বিক্রির মাধ্যমে বোয়িংকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার এক অনন্য উচ্চতায়।
১৯৯৫ সালের বোয়িং, রাশিয়া-ইউক্রেন এবং নরওয়ের মহাকাশ সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করে। ভাসমান প্ল্যাটফর্ম থেকে মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রেরণের জন্য তারা একটি সি-লঞ্চ তৈরি করে। এরপর ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হিউজ ইলেকট্রনিক্সের মহাকাশ শাখাটিও তারা কিনে নেয়। এর মধ্য দিয়েই তারা কাজ শুরু করে মহাকাশ নিয়ে।
বোয়িংয়ের সর্বশেষ সফল মডেলটি বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করে ২৬ মার্চ, ২০১১ সালে। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক বিমান বলে মনে করা হয়। উন্নত ডিজাইন, প্রযুক্তিগত সুবিধা, নিরাপদ যাত্রা এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানীর ব্যবহার- সব মিলিয়ে একে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় বিমানে পরিণত করেছে।
২০১৯ সালে এসে বোয়িং তার ১০৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। পরপর দুবার মুখ থুবড়ে পড়ে বোয়িংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংস্করণ ‘বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮’। ভয়াবহ এ ঘটনা দুটিতে প্রাণ হারায় কয়েক’শ মানুষ। এ ঘটনায় বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেনস স্বীকার করে নেয়, যে তাদের এই ভার্সনে ত্রুটি রয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী সমস্ত বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ মডেলের বিমানগুলো আকাশ থেকে নামিয়ে নেয়া হয়। বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয় সংস্থাটি। ভাটা পড়ে জনপ্রিয়তা ও সুনামেও। বোয়িংয়ের ইতিহাসে এ বছর ছিল সবচেয়ে মহাসংকট কাল।
২০২০ সালে এসে এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টুইন ইঞ্জিনবিশিষ্ট বোয়িং-৭৭৭ এক্স বাজারে নিয়ে আসে সংস্থাটি। এমিরেটস এয়ারলাইন্সে যোগদানের মাধ্যমে বিমানটির যাত্রা শুরু হয়।
একসময়ের কাঠ ব্যবসায়ী উইলিয়াম এডওয়ার্ড বোয়িংয়ের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের আজ মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪৩.০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বজুড়ে সংস্থাটির কর্মী রয়েছে প্রায় ১,৬১,১০০ জন।
বাণিজ্যিক বিমান নির্মাণের পাশাপাশি বোয়িং এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামরিক বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের প্রতিরক্ষা শাখার নাম ‘বোয়িং ডিফেন্স, স্পেস অ্যান্ড সিকিউরিটি’। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে বর্তমানে সংস্থাটির সদর দপ্তর অবস্থিত।