ক্রাইসিস অফ দ্য থার্ড সেঞ্চুরি (২৩৫-২৮৪ খ্রিস্টাব্দ)
সেভেরাসের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ম্যাক্সিমিন তিন বছর শাসন করেন। ২৩৮ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহী সেনাদের হাতে নিহত হবার পর গর্ডিয়ান ২৪৪ খ্রিস্টাব্দ অবধি ক্ষমতা ধরে রাখলেন। কিন্তু তাকেও হত্যা করা হলে ফিলিপ (২৪৪-২৪৯) এবং ডেসিয়াস আরো দুই বছর রাজত্ব করেন। ডেসিয়াসের সময় খ্রিস্টানদের উপর পূর্বের যেকোনো সময়ের থেকে অধিক অত্যাচার চলে। ফিলিপ ও ডেসিয়াস দুজনেই যুদ্ধের ময়দানে নিহত হন। এরপর ২৬৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা বিরাজ করে। প্রায়ই দেখা যেত বিভিন্ন এলাকার রোমান জেনারেল নিজেকে সম্রাট দাবী করছে, ফলে একই সময় কয়েকজন দাবিদার বিভিন্ন এলাকা শাসন করত। এই পুরো সময় পরিচিত ত্রিশ স্বেচ্ছাচারের যুগ বলে (AGE OF THE THIRTY TYRANTS)। সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে যায় এবং ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। এর মধ্যেও দুই একজন শক্তিশালী শাসক ছিলেন, যেমন ভ্যালেরিয়ান (২৫৩-২৬০) এবং তার ছেলে গ্যালেনিয়াস।
একই সময়ে রোম বিভিন্ন দিক থেকে বহিঃশত্রুর ঝুঁকিতে ছিল। রাইন আর দানিয়ুবের ওপারে বিভিন্ন জার্মান গোত্র একত্রিত হয়ে তিনটি প্রধান গোত্রে পরিণত হয়েছিল- ফ্রাঙ্ক, অ্যালামান্নি আর ম্যাক্রামান্নি। ২৫৩ খ্রিস্টাব্দে ফ্রাঙ্করা গল ও হিস্পানিয়াতে ঢুকে প্রায় পাঁচ বছর পর্যন্ত ব্যাপক লুটপাট চালায়। পশ্চিম দিক থেকে ধেয়ে আসছিল দুর্বার হূন জাতি। গথ জাতিও পোল্যান্ড থেকে রোমের সীমান্তে আনাগোনা শুরু করে। ২৬৫ খ্রিস্টাব্দে তারা সাগরপথে এশিয়া মাইনর আর গ্রিসে আক্রমণ চালায়।
এদিকে পূর্বে রোমের বহুদিনের শত্রু পার্থিয়ান সাম্রাজ্য ২৩০ খ্রিস্টাব্দে পার্সিয়ান সাসানিদ সাম্রাজ্যের সামনে খড়কুটোর মত উড়ে গেল। সাসানিদ রাজা প্রথম শাপুর ২৬০ খ্রিস্টাব্দে প্রাচ্যে রোমের রাজধানী অ্যান্টিওখ দখল করে নেন। তৎকালীন রোমান সম্রাট ভ্যালেরিয়ান তার কাছে পরাজিত ও বন্দি হন। সাসানিদদের কারাগারেই তার মৃত্যু ঘটে।
জেনারেল পস্টুমাস গল থেকে ২৫৮ সালে ফ্রাঙ্কদের তাড়িয়ে দেন। রোমের পশ্চিমে হিস্পানিয়া, ব্রিটেন আর গল নিয়ে তিনি স্বাধীন রাজ্য (Imperium Galliarum) গঠন করে নিজে সম্রাট হয়ে বসলেন। পূর্বদিকে পালমেইরার রাজা অডেন্থাস ও তার রানি যেনোবিয়া সাসানিদদের সাথে সীমান্ত সুরক্ষিত করে পার্শ্ববর্তী আরো কিছু এলাকা দখল করে নেয়। এরপর তারা স্বাধীনভাবে শাসন চালাতে থাকে। ফলে রোম মূলত তিন ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
সাম্রাজ্যের একত্রীকরণ
দ্বিতীয় ক্লডিয়াস শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন। ২৬৮-৭০ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত শাসনামলে তিনি গথদের দানিয়ুবের ওপারে তাড়িয়ে দেন।
এরপর দায়িত্ব নিলেন অরেলিয়াস। তিনি যেনোবিয়াকে পরাজিত করে পালমেইরা আবার রোমের অধীনে নিয়ে আসেন। ২৭৫ সালে তার অফিসাররা তাকে হত্যা করেন। এরপর সিনেটর ট্যাসিটাস ছয় মাস সিংহাসনে ছিলেন, এরপরে প্রবাস তার স্থান নেন। তিনি সাম্রাজ্যের সীমান্ত সুরক্ষিত এবং রোমের অভ্যন্তরে জার্মান গোত্রের অনুপ্রবেশ বন্ধ করেন। কিন্তু তার কঠোর নিয়মানুবর্তিতার কারণে ২৮২ সালে তিনি সেনাদের হাতে নিহত হন। এরপর ক্ষমতা দখলের সংক্ষিপ্ত লড়াইতে ইলাইরিয়ান অফিসার ডায়োক্লেটিয়ান বিজয়ী হিসেবে আবির্ভূত হলেন।
ডায়োক্লেটিয়ান (২৮৪-৩০৫ খ্রিস্টাব্দ)
রোমান প্রিন্সিপেট পরিবর্তিত হলো ডমিনেটে, যেখানে সমস্ত ক্ষমতা পুরোপুরি সম্রাটের হাতে কেন্দ্রীভূত হলো। প্রজাতান্ত্রিক রোমের শেষ নিদর্শন, সিনেট তার অধীনে এক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হলো। ডায়োক্লেটিয়ান একনায়কভিত্তিক কাঠামো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবর্তন করলেন। তিনি সেনাদলে অশ্বারোহী বাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি করেন এবং রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা সংস্কার করেন।
প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে ডায়োক্লেটিয়ান তার প্রধান জেনারেল ম্যাক্সিমিয়ানকে সহ-সম্রাট নিযুক্ত করলেন। ডায়োক্লটিয়ান নিলেন সাম্রাজ্যের পূর্বদিক, আর ম্যাক্সিমিয়ান পশ্চিমের দায়িত্ব। এই ব্যবস্থার সাফল্য দেখে ২৯০ সালে একে আরেকটু সংস্কার করে ডায়োক্লেটিয়ানের অধীনে গ্যালেরিয়াস আর ম্যাক্সিমিয়ানের অধীনে কনস্ট্যানশিয়াস নামে আরো দুজন নিযুক্ত হলো, এদের পদ হলো সিজারি। ডায়োক্লেটিয়ান আর ম্যাক্সিমিয়ানের পদ হল অগাস্টি।এই ব্যবস্থার নাম ছিল টেট্রার্কি। সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বার্থে ডায়োক্লটিয়ান নিয়ম করলেন যে নির্দিষ্ট সময়ে অগাস্টিরা অবসর নিলে সিজারিরা তাদের পদে উন্নীত হবেন এবং তারা নতুন দুজন সিজারি নিযুক্ত করবেন।
৩০৫ সালে ডায়োক্লেটিয়ান অবসর নেন। তিনি ম্যাক্সিমিয়ানকেও বাধ্য করেন ক্ষমতা ছেড়ে দিতে। ফলে গ্যালেরিয়াস এবং কনস্ট্যানশিয়াস অগাস্টি হলেন। ম্যাক্সিমিয়ানের ছেলে ম্যাক্সেনশিয়াস বাবার প্রত্যক্ষ মদদে ৩০৬ সালে রোম দখল করেন। একই বছর ব্রিটেনে কনস্ট্যানশিয়াসের মৃত্যু হলে তার ছেলে কনস্ট্যান্টাইনকে সেনারা অগাস্টি ঘোষণা করল। এদিকে গ্যালেরিয়াস আর আরেক রোমান অফিসার সেভেরাসও ক্ষমতার দাবী করলেন। কনস্ট্যান্টাইন ক্ষমতা নিতে সক্ষম হলেন।
কনস্ট্যান্টাইন দ্য গ্রেট (৩০৬-৩৩৭ খ্রিস্টাব্দ)
ব্যাটল অফ মিল্ভিয়ান ব্রিজে কনস্ট্যান্টাইন ম্যাক্সেনশিয়াসকে পরাজিত করার মাধ্যমে রোমের পূর্ব আর পশ্চিম অংশকে পুনরায় একক সম্রাটের অধীনে নিয়ে এলেন। তার সময় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছিল। তিনি অনুধাবন করলেন যে এদের সাথে শত্রুতার থেকে বরং তাদের কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা সুসংহত করা হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
৩১৩ সালে মিলানের ঘোষণাপত্রের মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যে স্বাধীনভাবে সকল ধর্ম পালনের সুযোগ দেয়া হয়। ফলে যুগ যুগ ধরে খ্রিস্টানদের উপর চলে আসা দমন নির্যাতনের অবসান ঘটে। সম্রাট খ্রিস্টধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন, তবে একে তিনি রাষ্ট্রধর্ম বানাননি। ৩২৫ সালে কাউন্সিল অফ নিসায়াতে (Council of Nicea) তার উদ্যোগে খ্রিস্টধর্মের মূল বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হয়। এই অনুযায়ী খ্রিস্টধর্ম পালনের বাধ্যবাধকতা জারি হয়, এবং কেউ এর থেকে ভিন্ন কিছু বললে বা করলে তার উপর শাস্তির খড়গ নেমে আসে। এত কিছুর পরেও সম্রাট নিজে পূর্বের মতো পৌত্তলিক আচার-অনুষ্ঠানও পালন করতেন। এবং মনে করা হয় কেবল মৃত্যুকালে তিনি ব্যাপ্টাইজড হন।
কনস্ট্যান্টাইনের আরো একটি উল্লেখযোগ্য কাজ হলো ৩২৪-৩৩০ সালের মধ্যে বাইজেন্টিয়ামে দ্বিতীয় একটি রাজধানী নির্মাণ করা, এর নাম কনস্ট্যান্টিনোপোল।
ক্ষমতার কোন্দল
কনস্ট্যান্টাইনের তিন ছেলে- দ্বিতীয় কনস্ট্যান্টাইন, কনস্ট্যানশিয়াস আর কনস্ট্যান্স। বাবার মৃত্যুর পর তারা সাম্রাজ্য তিনভাগ করে শাসন করতে থাকে। কনস্ট্যানশিয়াস পূর্বে পার্সিয়ার সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ইত্যবসরে দ্বিতীয় কনস্ট্যান্টাইন আর কনস্ট্যান্স একে অপরের উপর চড়াও হলেন। দ্বিতীয় কনস্ট্যান্টাইন নিহত হলে কনস্ট্যান্স রাজত্ব করতে থাকলেন। ৩৫০ সালে কনস্ট্যান্স হত্যার শিকার হলে সব ক্ষমতা চলে আসে কনস্ট্যানশিয়াসের হাতে। ৩৬০ সালে তার মৃত্যু হলে জুলিয়ান রাজা হলেন।
জুলিয়ান ছিলেন রোমের শেষ পৌত্তলিক সম্রাট। তিনি খ্রিস্টানদের উপর পুনরায় অত্যাচার শুরু করেন এবং পুরোনো রোমান ধর্মকে প্রাধান্য দিতে থাকেন। কিন্তু তিন বছর পর পার্সিয়ানদের সাথে সংঘর্ষে তিনি নিহত হলে খ্রিস্টধর্ম আবার ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। জুলিয়ানের উত্তরসূরি, জোভিয়ান সাত মাস রাজত্ব করে মারা যান।
ভ্যালেন্টিনিয়ান আর ভ্যালেন্স (৩৬৪-৩৭৫ খ্রিস্টাব্দ)
এরা ছিলেন দুই ভাই। তারা সাম্রাজ্য ভাগ করে চালাতে থাকেন। ভ্যালেন্টিনিয়ান নিলেন পশ্চিমাঞ্চল, যার রাজধানী হলো মিলান। ভ্যালেন্স কনস্ট্যান্টিনোপোলকে রাজধানী করে পূর্বাংশ শাসন করতে থাকলেন। দানিয়ুবের তীরে অভিযান চালানোর সময় ভ্যালেন্টিনিয়ানের মৃত্যু হলে তার ছেলে গ্রেটিয়ান হাল ধরলেন। তিনি শাসন করেন ৩৮৩ সাল অবধি। এর মধ্যে ভ্যালেন্সও ব্যাটল অফ অ্যাড্রিয়ানোপোলে গথদের হাতে নিহত হলে থিওডোসিয়াস তার স্থান পূরণ করলেন। তার পর ৩৯৪ সাল পর্যন্ত তিনজন সম্রাট পশ্চিম রোম শাসন করেন- ম্যাক্সিমাস, দ্বিতীয় ভ্যালেন্টিনিয়ান আর ইউজেনিয়াস। এদের পর অল্পকালের জন্য পূর্ব আর পশ্চিম রোম থিওডোসিয়াসের হাতে একীভূত হয়। ৩৯৫ সালে থিওডোসিয়াস মারা গেলে তার ছেলে হনোরিয়াস পশ্চিম আর আর্কাডিয়াস পূর্ব রোমের ভার নিলেন।
হনোরিয়াস আর স্টিলিচো
ছয় বছর বয়সে হনোরিয়াস রাজা হন। তার প্রধান জেনারেল স্টিলিচো রাজকার্য পরিচালনা করতে থাকেন। ৩৯৬/৯৭ সালের দিকে গথরা তাদের নেতা অ্যালারিকের অধীনে বিদ্রোহ করে। গ্রিসের অনেক নগরী তারা তছনছ করে দেয়। স্টিলিচো তাদের ঘিরে ফেললেও অ্যালারিক পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেন। তিনি পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের সাথে শান্তিচুক্তি করেন। কিন্তু ৪০০ খ্রিস্টাব্দে গথরা আবার ইতালিতে অনুপ্রবেশ করল। হনোরিয়াস রোম থেকে পালিয়ে যাবার সময় অ্যাস্টা শহরে শত্রুবাহিনী দ্বারা বেষ্টিত হয়ে পড়েন। স্টিলিচো আক্রমণ করে অ্যালারিককে পরাস্ত করলেন।
কাছাকাছি সময়ে হান জাতির হামলা থেকে বাঁচতে বেশ কিছু জার্মান গোত্র রোমে ঢুকে পড়ে। তারা ইতালিতে আক্রমণ করে বসলে ফ্লোরেন্সের কাছে স্টিলিচো তাদের দমন করেন এবং তাদের রাজাকে হত্যা করেন।
হনোরিয়াস স্টিলিচোর সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে মেরে ফেলার আদেশ দেন। স্টিলিচোর মৃত্যুর দুই মাসের মাথায় অ্যালারিক আবার রোমের সামনে এসে উপস্থিত হলেন। এবার তাকে ঠেকানোর কেউ ছিল না। অ্যালারিক হনোরিয়াসের থেকে শান্তির নাম করে প্রচুর অর্থ হাসিল করলেন, এরপর তিনি রোমে ঢুকে পড়েন। আট শতাব্দী পরে রোমে শত্রুদের পা পড়ল। পাঁচ দিন লুটপাট করে গথরা বিদায় নিল।
এদিকে ৪২৩ সালে হনোরিয়াস মারা গেলে তৃতীয় ভ্যালেন্টিনিয়ান তার স্থলাভিষিক্ত হলেন। তার শাসনামলে অ্যাটিলার নেতৃত্বে হূনরা রোমের দিকে ধেয়ে আসে।পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য তাদের নিয়মিত অর্থ প্রদান করে আক্রমন করা থেকে বিরত রাখত। এদিকে পশ্চিম রোমে ভ্যালেন্টিনিয়ানের সেনাপতি এটিয়াস আর ভিসিগথ নেতা থিওডোরিক অ্যাটিলাকে বাধা দিলেন। ৪৫১ সালে চ্যালনসের লড়াইতে (ব্যাটল অফ ক্যাটালুনিয়ান প্লেইন্স/ব্যাটল অফ চ্যালনস) তারা অ্যাটিলাকে থামাতে সমর্থ হলেও তাকে পরাজিত করতে পারেননি। পরের বছর আবার অ্যাটিলা হামলা করেন। এবার পো নদী পর্যন্ত এসে তিনি থেমে যান। সম্ভবত তার সেনাদলে রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছিল। ভ্যালেন্টিনিয়ান পোপ লিওকে পাঠান অ্যাটিলার সাথে আলোচনার জন্য। অ্যাটিলা ফিরে যান। ৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারা গেলে হানদের উৎপাত কমে যায়।
পশ্চিম রোমের পতন-বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের জন্ম
হানদের সাথে যুদ্ধের কিছুদিন পরেই ভ্যালেন্টিনিয়ান এটিয়াসকে হত্যা করেন। তিনি নিজে ৪৫৫ খ্রিস্টাব্দে ম্যাক্সিমাসের হাতে নিহত হন। তিন মাসের জন্য ম্যাক্সিমাস রাজা ছিলেন। তিনি ভ্যালেন্টিনিয়ানের বিধবা ইউডোক্সিয়াকে জোরপূর্বক বিয়ে করেছিলেন। এই সময় কার্থেজকে কেন্দ্র করে জেন্সেরিক নামে এক রাজা আফ্রিকাতে শাসন করছিলেন। ইউডোক্সিয়া তার কাছে সহায়তা চেয়ে চিঠি লিখলেন। জেন্সেরিক রোমে এলে চার্চের সম্পদের ক্ষতি করবেন না এই প্রতিশ্রুতিতে শহরের দরজা তার জন্য খুলে দেয়া হলো। পনের দিন লুটতরাজ চালিয়ে ইউডোক্সিয়াকে সাথে নিয়ে জেন্সেরিক আফ্রিকা ফিরে গেলেন।
এরপর অ্যাভিটাস ৪৫৬ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করলেন। রিসিমার নামে এক জেনারেল তাকে হটিয়ে দেন। তিনি তার বশংবদ ব্যক্তিদের রাজা নিযুক্ত করেন- মেজোরিয়ান (৪৫৭-৬১) ও সেভেরাস। সেভেরাসের মৃত্যু হলে রিসিমার কিছুদিন প্যাট্রিশিয়ান উপাধি নিয়ে শাসনকাজ চালালেন। ৪৬৭ সালে তিনি অ্যান্থিমাস নামে একজনকে রাজা হিসেবে বসান। অ্যান্থিমাস ক্ষমতা দখলের চক্রান্ত করলে রিসিমারের সাথে তার সংঘর্ষ হয় এবং তিনি নিহত হন। এরপর ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কয়েকজন শাসক পশ্চিম রোম সাম্রাজ্য শাসন করে। অবশেষে ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব রোমের সম্রাট জেনো পশ্চিমে রোম সাম্রাজ্য বিলুপ্ত করেন। অডোকার নামে এক যোদ্ধাকে ইতালির রাজা করা হলো। পূর্ব রোম টিকে থাকে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য হিসেবে আরো প্রায় ১,০০০ বছর। শেষ পর্যন্ত মুসলমানদের হাতে এর পতন হয়।