বাগান তৈরি মানুষের অতি প্রিয় এক শখ। নিজের বাড়ির এক টুকরো খালি জায়গায় নিজের পছন্দের ফুল, ফল কিংবা নানা বাহারি গাছে মানুষ সাজিয়ে তোলে তার স্বপ্নের বাগান। বাড়ির সামনে বা পেছনের এক খণ্ড ফাঁকা জমিতে বাগান করার শখ থাকে বেশিরভাগ মানুষেরই।
প্রাচীনকাল থেকেই এই বাগান করার প্রচলন শুরু হয়। প্রথমদিকে রাজাদের উদ্যোগে এই বাগান গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে সরকারি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় অনেক বাগান গড়ে ওঠে। কীভাবে এবং কবে থেকে মানুষ বাগান তৈরি করতে শিখলো, সেই ইতিহাস আজ এই লেখার মাধ্যমে আমরা জানতে চেষ্টা করবো।
পরিবারে খাদ্যের চাহিদা মেটানোর তাগিদ থেকে শুরু হয় বাগান তৈরি
কবে থেকে মানুষ বাগান তৈরি করতে শুরু করলো, তা নিয়ে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। প্রথম বাগান এবং উদ্যানবিদ্যার সাথে জড়িয়ে আছে কৃষকদের অবদানের কথা। তারাই প্রথম নিজেদের খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য বাড়ির আঙিনায় এবং আশেপাশের খালি জায়গায় প্রয়োজন মতো শাকসবজি এবং ফসলের চাষ শুরু করেন। নিজেরাই সেসব গাছপালার যত্ন নিতেন। উৎপাদিত ফসলের বেশিরভাগই পরিবার এবং তাদের গৃহপালিত পশুপাখির খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতেন। পরে ধীরে ধীরে চাষের জমির পরিসর বাড়তে থাকে। কিন্তু মানুষের রুচি, সৌন্দর্য আর চাহিদার বাগান রূপ পায় আরো পরে।
প্রাচীন সভ্যতাগুলোয় পাওয়া যায় বাগানের নিদর্শন
প্রাচীন সাহিত্য, শিল্প ও পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে জানা যায়, প্রাচীন মিশর, মেসোপটেমিয়া, গ্রিস, রোম ও বাইজান্টাইন সভ্যতায়ও বাগান করার প্রচলন ছিল। শুধু তা-ই নয়, ইসলামিক শাসনের শুরুর সময় থেকে মধ্যযুগের অনেক রাজার ব্যক্তিগত উদ্যোগেও বাগান করার চল ছিল। সে সময়ের বাগানের অনেক নিদর্শনই পরবর্তীকালে পুরাতাত্ত্বিকগণ আবিষ্কার করেন।
প্রাচীন মিশরে বাগানের প্রচলন
প্রাচীন মিশরে বাগান করার প্রচলন ছিল। সেখানে বাগানগুলো করার পেছনে ধর্মীয় তাৎপর্যও ছিল। প্রাচীন মিশরে বিভিন্ন দেবতার নামে বিভিন্ন গাছ উৎসর্গীকৃত ছিল। মিশরের অধিবাসীরা বিশ্বাস করতেন, দেবতারা বাগান ভালবাসেন। মন্দিরের দেবতাদের জন্য তারা বাগান করতেন। প্রাচীন মিশরের অধিবাসীরা ফুলের চাষ করতেন। উৎপাদিত ফুল দিয়ে তৈরি ফুলের তোড়া শুধু বাগান মালিকের জন্যই নয়, দেবতার উদ্দেশ্যেও নিবেদন করা হতো। রাজপ্রাসাদের সাজসজ্জায়, ফুলের মালা দিয়ে সম্মানিত কাউকে বরণ করে নিতে, এমনকি রাজমুকুটেও শোভা পেতো ফুল- যা আসতো বাগান থেকে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা তুতেনখামেনের কফিনে বিভিন্ন ফুলের নকশা দেখতে পান, যা থেকে ধারণা করা হয়, প্রাচীন মিশরে বাগান করার প্রচলন ছিল।
প্রাচীন চীনা শাসকেরাও বাগান ভালবাসতেন
অনেক গবেষক চীনকে পৃথিবীতে বাগান তৈরির পথিকৃৎ হিসেবে মনে করেন। কারণ ২৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সম্রাট শেন নুঙ বিভিন্ন জায়গায় লোক পাঠিয়ে নানারকম গাছ সংগ্রহ করতেন। তারপর সেই গাছগুলো বিশাল জায়গায় লাগিয়ে সযত্নে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করতেন। হান সম্রাট ইউ তি তার প্রাসাদের বাগানে ছোট-বড় অনেক গাছ লাগিয়েছিলেন। এর মধ্যে মিষ্টি কমলালেবুর গাছও ছিল।
রোমানদের তৈরি বাগান
৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমানরা যখন মিশর জয় করেন, তখন বাগান সংক্রান্ত মিশরীয় ধারণাগুলো রোমানরা আয়ত্ত করতে সক্ষম হন। ধনী রোমানরা তাদের প্রাসাদ ও বাসভবনের সামনে বাগান শুরু করেন। বাগানের গাছের রক্ষণাবেক্ষণে রোমানরা বেশ দক্ষতা দেখান। তারা বাগানকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে বাগানে নানারকম ভাস্কর্য, ফোয়ারা স্থাপন করেন।
ফুলের বাগানগুলোতে তারা অ্যাকান্থাস, ক্রোকাস, সাইক্ল্যামেন, হাকিন্থ, আইরিস এবং আইভি, ল্যাভেন্ডার, লিলিস, মরিল, নারিকিসাস, পপি, রোজামারি প্রভৃতি বিভিন্ন রঙের ফুলের গাছে বাগানকে সাজিয়ে তোলেন। রোমানরা ব্রিটেন জয় করার পর সেখান থেকে গোলাপ, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, শালগম সহ নানা শাকসবজি ও ফুলের চারা নিয়ে আসেন এবং তা দিয়ে নিজেদের বাগান গড়ে তোলেন। অনেকে আবার ফুলের বাগানের সাথে আঙুরের বাগানও গড়ে তোলেন।
গ্রিক সভ্যতায় বাগান
গ্রিকরা বাগান তৈরিতে তেমন দক্ষ ছিলেন না। মন্দিরের চারপাশে ছায়া দেবার জন্য মন্দিরের চারধারে বড় বড় গাছ লাগাতে পছন্দ করতেন তারা। কিন্তু অন্যান্য জায়গায় কিংবা আনন্দের জন্য কেউ বাগান করতেন না। গ্রিকরা ফুলের গাছ বাড়ির আঙিনার খোলা পরিবেশে লাগানোর চেয়ে পাত্রে লাগাতে বেশি পছন্দ করতেন। ফুলের বাগানের পরিবর্তে গ্রিসের পূর্বাঞ্চলে গড়ে ওঠে ফলের বিশাল সব বাগান। ফলের বাগানের রক্ষণাবেক্ষণে তারা মনোযোগও বেশি দিতেন। পরবর্তী সময়ে এসব অঞ্চলে ফলের বাগানের সাথে নানা শাকসবজির বাগান গড়ে তুলেছিলেন গ্রিসের অধিবাসীরা।
প্রাচীন ইরাকে বাগানের গোড়াপত্তন
ধারণা করা হয়, প্রাচীন বিশ্বের সুন্দর বাগানগুলো তৈরি হয়েছিল ইরাকে। ৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৬১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ইরাক থেকে এসে আসিরিয়ানরা মধ্যপ্রাচ্যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। মিসরীয় উচ্চবিত্তদের মতো আসিরিয়ান উচ্চবিত্তরাও বাগান করা উপভোগ করতেন। তারা মৃগয়ার জন্য বিশাল সব উদ্যান তৈরি করতেন।
বাগানের পরিচর্যা এবং নিয়মিত পানি সরবরাহের জন্য বাগানের মধ্যে ছোট ছোট খাল কাটা এবং পানি সংরক্ষণের জন্য জলাশয়েরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। মিশরীয়দের মতো তারাও সারিবদ্ধভাবে বৃক্ষ রোপণ করতেন। বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত নতুন প্রজাতির ফুলের গাছ এবং আঙুরসহ নানা ধরনের ফল গাছের চারা রোপণ করা হতো। এসব বাগান দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনেক লোক নিয়োগ করা হতো।
৬১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আসিরিয়ান সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়, তারপর গড়ে ওঠে ব্যাবিলনের সাম্রাজ্য। অনেকের মতে, ইরাকের ইউফ্রেটিস নদীর তীরে গড়ে ওঠা ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যানই প্রথম প্রতিষ্ঠিত বাগান হিসেবে স্বীকৃত। সম্রাট নেবুচাদনেজার তার সম্রাজ্ঞীর প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে এই বাগানটি গড়ে তোলেন। তবে এই বাগানের অস্তিত্ব নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।
মধ্যযুগে ইসলামী শাসকদের উদ্যোগে বাগান নির্মাণ
সপ্তম শতকে আরবরা এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। তারা যখন পারস্য জয় করেন, তখন পার্সিয়ানদের বাগান সম্পর্কিত অনেক ধারণাই আরবরা গ্রহণ করেন। এদের বাগানগুলো প্রাচীরবেষ্টিত ছিল এবং বাগানের চারদিকে পানির ব্যবস্থা রাখা ছিল। বাগানের মাঝখানে তৈরি হয়েছিল পানি সংরক্ষণের বিশাল জলাশয়। বাগানে পানির ফোয়ারার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। বাগানের চত্বর মোজাইক, টাইলস দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছিল। বাগানের সাইপ্রাস গাছগুলো বাগানের ছায়ার কাজ করতো। আরবরা বাগানে ফল গাছের চারাও রোপণ করতেন। অষ্টম শতকে স্পেন জয় করার পর আরবরা সেসব দেশ থেকে নানা রকম ফুল, ফল এবং বিশেষ প্রজাতির উদ্ভিদ নিয়ে এসে তাদের বাগানকে সমৃদ্ধ করেন।
মধ্যযুগে ইউরোপে বাগান চর্চা
ত্রয়োদশ শতকে ইউরোপীয়রা বাগান তৈরিতে এবং বাগান পরিচর্যায় বিবর্তন নিয়ে আসেন। ধনীরা আনন্দের জন্য বাগানে ফুলের গাছের সাথে সাথে নানা রকম ঔষধি গাছ ও সবজির চাষ করতেন। মধ্যযুগের অধিকাংশ বাগানে বন্যপ্রাণীদের থেকে বাগানের গাছগুলোকে রক্ষার জন্য এবং বাগানের নির্জনতার উপভোগ করার জন্য প্রাচীর দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
চতুর্দশ এবং পঞ্চদশ শতকে ইউরোপের বাগানগুলো শুধু ফুলের গাছে সীমাবদ্ধ ছিল না। আলাদা ফলের বাগান কিংবা ঔষধি গাছের বাগানও গড়ে ওঠে এই সময়। নানা রকম ফুল ও ফলের সমারোহে বাগান হয়ে উঠতো বৈচিত্র্যময়। বাগানের এই অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে প্রকৃতির শোভা এবং তার সান্নিধ্য উপভোগ করার জন্য বাগান মালিকরা তার পরিবার বা সভাসদ নিয়ে দিনের বিশেষ সময়ে এখানে অবস্থান করতেন।
ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকের বাগান
ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে গ্রিস ও রোমে বাগান শিল্প আবার পুনরুজ্জীবন লাভ করে। এই সময় বাগান তৈরিতে সমতা, অনুপাত এবং ভারসাম্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই সময় বাগানের বেডগুলো তৈরিতে বেশ স্বকীয়তা দেখা যায়। বাগানের গাছগুলো বর্গাকৃতির বা গোলাকার সাজে সজ্জিত করা হয়। গাছগুলোর মাঝখানে নুড়ি বিছানো পথ তৈরি করা হয়। ষোড়শ শতকের বাগানে রোমের সেই পুরনো ঐতিহ্যকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়। ভাস্কর্য, ঝর্ণা এবং পোড়ামাটির নানা কারুকার্য সম্বলিত নান্দনিক সৃষ্টিকর্মে বাগানগুলোকে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। এই সময়ে ইউরোপের বাগানগুলোতে অনেক নতুন উদ্ভিদের চারা রোপণ করা হয়, যার মধ্যে ছিল টিউলিপ, ম্যারিগোল্ড, সূর্যমুখী প্রভৃতি। এ সময় আলু ও টমেটোর চাষ শুরু হয় ইউরোপে।
অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকের বাগান
অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের গবেষণার জন্য খুব লোভনীয় জায়গা হয়ে ওঠে বাগান। বাগানগুলোকে আরও প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে আসার ভাবনা এই সময়ে শুরু হয়। এই সময়ের দুটি বিখ্যাত বাগান নির্মাণ করেন উইলিয়াম কেন্ট এবং চার্লস ব্রিজম্যান। উইলিয়াম কেন্ট রুশাম এবং চিসউকে দুটি বাগান নির্মাণ করেন। এই দুজন বাগান তৈরিতে নতুনত্ব নিয়ে আসেন।
১৭২৫ সালে ইংল্যান্ডে সোসাইটি অফ গার্ডেনার প্রতিষ্ঠিত হয়। অষ্টাদশ শতকে এসে বাগান তৈরিতে উচ্চবিত্তদের সাথে মধ্যবিত্তরাও যুক্ত হতে থাকে। এই সময়ে বিনোদন এবং সামাজিক প্রতিপত্তি বোঝাতে এই বাগানগুলো নির্মিত হতে থাকে। আমেরিকার প্রথম ‘বোটানিক্যাল গার্ডেন’ তৈরি হয় ১৭২৮ সালে। সেটি হলো ফিলাডেলফিয়া গার্ডেন। তারপর তৈরি হলো ১৮৯৬ সালে ‘নিউ ইয়র্ক বোটানিক্যাল গার্ডেন’।
সারা পৃথিবীতে জাভার বোটানিক্যাল গার্ডেনগুলো আয়তনে সবচেয়ে বিশাল। এগুলো প্রথম তৈরি হয় ১৮১৭ সালে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত এসব বাগানে ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে গবেষণা।
উনবিংশ ও বিংশ শতকের বাগান
১৮০৪ সালে হর্টিকালচারাল সোসাইটি গঠিত হয়। ১৮২২ সালে ডা. নাথানিয়াল বাগশাও হঠাৎই আবিষ্কার করেন যে, কিছু উদ্ভিদকে বদ্ধ কাঁচের ঘরে রাখা হলে নিজেদের বেঁচে থাকার জন্য এসব উদ্ভিদ সেখানেই নিজেদের উপযোগী জলবায়ু গড়ে তোলে। এই গ্রিন হাউস প্রযুক্তি বাগান শিল্পে নব বিপ্লব নিয়ে আসে। আধুনিক এই হর্টিকালচারাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ভিদ এনে অনাবাদী জমিতে রোপণ করা সহজসাধ্য হয়েছে। এ সময় অনেক নতুন ধরনের গাছের বীজ এবং চারা তৈরিতে সক্ষম হয় ইউরোপীয়রা। ফলে বাগানগুলোতে নতুন ধরনের গাছের সমাবেশ ঘটতে থাকে।
উনবিংশ শতকের মাঝামঝি সময়ে গ্রিন হাউজ প্রযুক্তি বাগান শিল্পে বড় ধরনের সাফল্য নিয়ে আসে। এর ফলে প্রচন্ড গরম ও শীতে গাছকে সহজে বাঁচিয়ে রাখা যায়। এই সময় গাছের চারার জন্য আলাদা বেডিং তৈরির চল শুরু হয়। গাছকে একটি নির্দিষ্ট সাইজে রাখার জন্য কাটিং করা, গাছের নির্দিষ্ট আকার দেয়ায় বাগান আরও দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে। এ সময় পাহাড়ের ওপর বাগান তৈরিতে সফল হয় ইউরোপীয়রা। উনবিংশ শতকের একজন বিখ্যাত গার্ডেনারের নাম জন ক্লডিয়াস লাউডন। বাগান তৈরিতে স্যার চার্লস ব্যারি, উইলিয়াম রবিনসন মতো ব্যক্তিরা এ সময় বাগান তৈরিতে নতুন নতুন ধারণার প্রবর্তন করেন। এ সময়ে ধনী এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা সমাজে নিজেদের প্রতিপত্তি বোঝাতে দৃষ্টিনন্দন বাগান বাড়ি বা ফার্ম হাউজ গড়ে তোলেন।
উনবিংশ শতকে বাগান তৈরিতে জাপানিরাও দারুণ কৃতিত্ব দেখায়। তাদের রুচি ও সৌন্দর্যবোধও প্রবাদতুল্য। তারা যেসব বাগান তৈরি করেন, তাতে থাকে শৈল্পিক ছোঁয়া। গাছকে বাড়তে না দিয়ে তাকে ছোটখাট চেহারায় ‘ট্রে’ কিংবা ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখতো তারা। ট্রের মধ্যে আঁকা হয় সুন্দর সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, যাতে ওই ছোট গাছটি মানানসই হয়ে ওঠে। এভাবে তারা বাড়ির মধ্যে গড়ে তোলেন অসাধারণ ‘ইন্ডোর গার্ডেন’। এই রকম গাছকে বলে ‘বনসাই’।
রাশিয়া বাগান করার উৎসাহ প্রথম পায় ‘পিটার দ্য গ্রেট’ এর কাছ থেকে। তখন থেকে ‘হর্টিকালচার’ বা ‘উদ্যানবিদ্যা’ বিশেষ উৎকর্ষ লাভ করে। পোল্যান্ডে অবশ্য বাগান করা শুরু হয়েছিল রাশিয়ারও আগে। ওয়ারশ’য় আছে অসাধারণ এক বাগান। নাম ‘ল্যাজেঙ্কি’।
এভাবে বিভিন্ন সময়ে সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বাগান শিল্প ধারাবাহিকভাবে উৎকর্ষ লাভ করে।
ফিচার ইমেজ- travelandleisure.com