কৃষ্ণাঙ্গ চিত্রকার, গায়ক এবং শিল্পীদের নিত্যনৈমিত্তিক আনাগোনার কারণে নিউ ইয়র্কের হারলেম এলাকাটি কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের নিকট সুপরিচিত। তবে এই এলাকা সম্পর্কে শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের ধারণা পুরোপুরি ভিন্ন। হারলেমকে তারা চেনে দাঙ্গা ও কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে। যদিও এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে নিউ ইয়র্ক শহরে কারফিউ জারি করে শহর কর্তৃপক্ষ। জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর দাঙ্গা থামানোর জন্যই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে তারা। গত ৭৭ বছরে এটি নিউ ইয়র্কের প্রথম কারফিউ। এর আগে ১৯৪৩ জারি করা সর্বশেষ কারফিউটি ছিল হারলেম দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, শ্বেতাঙ্গদের দ্বারা কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক হত্যার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা রাজপথে নেমেছেন বহুবার। বরাবরই বড়সড় দাম দিয়ে যাচ্ছে মার্কিন সরকার। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে কৃষ্ণাঙ্গরা বহুবার নিজেদের পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকারের দাবি জানিয়েও কোনো সমাধান খুঁজে পাননি। শত বছর ধরে সঠিক নাগরিক অধিকার না পাওয়ায় শ্বেতাঙ্গদের প্রতি কৃষ্ণাঙ্গদের যে অবিশ্বাস এবং অনাস্থা তৈরি হয়েছিল এটিই মূলত ১৯৪৩ সালের হারলেম দাঙ্গার জন্য দায়ী। ফ্যাসিবাদী এবং নাৎসিবাদীদের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল তখন। প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের সম্মতিতে যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অথচ তখনও গৃহযুদ্ধের শত বছর পার করে ফেলেছে দেশটি। সুরাহা হয়নি কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের সমস্যাগুলো।
গোথাম গ্যাজেটের তথ্যমতে, ১৯১০ সালে হারলেমের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক। অথচ ১৯৪৩ সালে এসে কৃষ্ণাঙ্গদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ শতাংশে। এমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের কারণ উন্নত জীবনযাপনের প্রতি কৃষ্ণাঙ্গদের আগ্রহ। এর আগে দীর্ঘদিন যাবত কৃষ্ণাঙ্গরা দক্ষিণাঞ্চলে বসবাস করলেও ১৯৪০ সালের দিকে তারা উত্তরাঞ্চলে বসতি স্থাপন শুরু করে। নিউ ইয়র্কে যারা এসেছিলেন তাদের বেশিরভাগই বসবাসের জন্য হারলেম এলাকাটি বেছে নেন। কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা স্বত্ত্বেও সেখানকার বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ভবনের মালিকানা ছিল শ্বেতাঙ্গদের দখলে। যার ফলে শ্বেতাঙ্গদের উপর ক্রেতা এবং চাকুরে শ্রেণীর কৃষ্ণাঙ্গদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল একেবারেই ভিন্ন এবং বিপরীত। আর এটিই হারলেম দাঙ্গার অন্যতম প্রধান একটি কারণ। আজ আমরা ঐতিহাসিক এই দাঙ্গার কারণ এবং পরিণতি কী হয়েছিল সে সম্পর্কে জানব।
দাঙ্গার পটভূমি
১৯৪৩ সালের পহেলা আগস্ট তারিখে বহু বছরের পুরোনো বর্ণবৈষম্যের উত্থান হয়। হারলেমের ১২৬ নম্বর ওয়েস্ট স্ট্রিটে অবস্থিত ব্র্যাডক হোটেলে ঘটেছিল ঘটনাটি। ১৯২০ এর দশকে ব্র্যাডক হোটেলটি কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীদের নিয়মিত আড্ডার স্থান হিসেবে পরিচিত ছিল। যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে সেখানে পতিতাবৃত্তিও চলতো। যা-ই হোক, সেদিন সন্ধ্যায় মার্জুরি পোলাইট নামক এক নারী অতিথি হোটেলে ওঠেন। তিনি থাকার জন্য যে রুমটি নিয়েছিলেন সেটি তার পছন্দ হয়নি। ম্যানেজারকে তিনি নতুন আরেকটি রুম দেখানোর অনুরোধ করেন। ঘুরে ফিরে একাধিক কক্ষ দেখার পর কোনোটাই তার মনমতো না হওয়ায় চেক আউট করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
অতঃপর চেক আউটের সময় ম্যানেজারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হোটেল বয়কে যে ১ ডলার বকশিশ দিয়েছিলেন সেটিও ফেরত চেয়ে বসেন তিনি। হোটেলবয় সেটি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তার সঙ্গেও তর্কে জড়িয়ে পড়েন মার্জুরি পোলাইট। অভ্যর্থনা কক্ষে ধ্বস্তাধস্তি দেখে হোটেলে প্রবেশ করেন টহলরত শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য জেমস কলিন্স। তিনি সেখানে পৌঁছে বিশৃঙ্খলার দায়ে পোলাইটকে গ্রেফতার করেন। আর এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন হোটেলের আরেক অতিথি ফ্লোরিন রবার্টস। মূলত কৃষ্ণাঙ্গ এই নারী ছিলেন কানেক্টিকাটের বাসিন্দা। হারলেমে বসবাসরত ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসে ব্র্যাডক হোটেলে উঠেছিলেন ফ্লোরিন।
তিনি পোলাইটকে সাহায্য করতে গিয়ে ধ্বস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ফ্লোরিন রবার্টসের ছেলে রবার্ট ব্যান্ডি। তিনি ছিলেন ৭০৩ মিলিটারি পুলিশের একজন সেনাসদস্য। মূলত মায়ের সঙ্গে রাতের খাবার খেতে হোটেলে আসেন ব্যান্ডি। মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডোমিনিক ক্যাপেসি ১৯৪৩ সালের এই জাতিগত দাঙ্গা নিয়ে একটি বই লেখেন। বইয়ের একটি অংশে তিনি ঐ সন্ধ্যার পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন। তিনি বইয়ে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য কলিন্স এবং কৃষ্ণাঙ্গ সেনা সদস্য রবার্ট ব্যান্ডির মতামত উল্লেখ করেন।
পুলিশের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যান্ডি হুমকি দিয়ে কলিন্সের উপর আক্রমণ করে। একপর্যায়ে ব্যান্ডি পালানোর চেষ্টা করায় তার হাতে গুলি করেন কলিন্স। যদিও পুলিশের এই বিবৃতির সঙ্গে মেলেনি রবার্ট ব্যান্ডির বিবৃতি। তার ভাষ্যমতে, তিনি হোটেলে পৌঁছে দেখেন কলিন্স জোরপূর্বক মার্জুরি পোলাইটের দু’হাত চেপে গ্রেফতার করার চেষ্টা করছিলেন। এমন সময় তার হাতের নাইট-স্টিকটিও ছুঁড়ে মারেন পুলিশ সদস্য কলিন্স। ছুঁড়ে ফেলা নাইট-স্টিকটি ধরে ফেলেন ব্যান্ডি এবং তিনি এটি পোলাইটকে ফেরত দিতে এগিয়ে যান। এমন পরিস্থিতে কলিন্স তাকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ সেখানে পৌঁছে কলিন্স এবং ব্যান্ডিকে হসপিটালে নিয়ে যায়।
হারলেমে ছড়িয়ে পড়া গুজব
সেদিন রাতের মধ্যেই হারলেমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। কিছু লোক প্রচার করতে থাকে একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য একজন কৃষ্ণাঙ্গ সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। বাস্তবিক যিনি গুলি করেছেন এবং যিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন উভয়েই ছিলেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হারলেমের রাস্তাঘাটে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের সমাগম দ্রুত বাড়তে থাকে। ১২ ঘন্টার ব্যবধানে হাজার হাজার মানুষ এই দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ে। অথচ তখনও ঘটনার সত্যতা জানতে পারেনি কেউই। এখানে প্রশাসনিক অসহযোগিতা যেমন ছিল, তেমনই কৃষ্ণাঙ্গ নেতাদের তীব্র শ্বেতাঙ্গবিদ্বেষী মনোভাব কাজ করছিল।
ইতোমধ্যেই বলা হয়েছে, ১৯৪৩ সালে হারলেমের ৮৯ শতাংশ নাগরিকই ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ। সে অনুযায়ী তারা ছিলেন সেখানকার দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। আর এটি তারা খুব ভালভাবেই জানত। কিন্তু শত বছর পূর্বে তাদের পূর্বপুরুষরা আমেরিকার স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছিলেন। অথচ শত বছর পরে তারা তাদের পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার বুঝে পায়নি, বরঞ্চ ছোটখাট ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্বেতাঙ্গদের হাতে নিয়মিত নির্যাতিত হচ্ছিলেন। আর রবার্ট ব্যান্ডি একজন সাদা পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে নিহত হয়েছেন এটি শোনার পর হারলেমের মানুষের মাঝে এর প্রতিক্রিয়া অগ্নিশিখার মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অসত্য খুনের এই ঘটনায় কৃষ্ণাঙ্গদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্য আর্থ-সামাজিক অবস্থাকেই দায়ী করা যায়। শ্বেতাঙ্গদের প্রতি কৃষ্ণাঙ্গদের অবিশ্বাসের জায়গাটি শুধুমাত্র সেদিনের ঘটনা থেকেই তৈরি হয়নি। আর সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে চলমান এই বৈষম্যের মাঝে বসবাসরত কৃষ্ণাঙ্গ মানুষগুলোর মধ্যে এমন গুজব কেমন প্রভাব ফেলবে তা জানা কথা। কারণ শ্বেতাঙ্গ কর্তৃক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার অনেক সত্য ঘটনা অতীতেও ঘটেছিল যুক্তরাষ্ট্রের এই স্বাধীন ভূখণ্ডে। এই সম্পর্কে ওহাইও ওয়েসলিয়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিষয়ক অধ্যাপক মিশেল ফ্ল্যাম বলেন,
গুজবটি হারলেমের নাগরিকদের মাঝে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এই অর্থে কৃষ্ণাঙ্গদের মাঝে হতাশা কাজ করছিল কারণ একই সময় আমেরিকার মর্যাদা রক্ষার্থে তাদের ভাই, বন্ধুরা ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। অথচ তখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বর্ণবৈষম্যের সমাধান করতে পারেনি নীতিনির্ধারক গণ।
বিস্তৃত হতাশা এবং লুটপাট
ব্র্যাডক হোটেলের ঐ ঘটনার পরদিন সকালে লেকজন রাস্তায় নেমে জড়ো হতে থাকে। অতঃপর তারা দোকানপাট এবং খালি প্লটগুলো লুটপাট শুরু করে। সেখানে জাতিগত দাঙ্গায় আন্দোলনকারীদের লুটপাটের ঘটনা এটিই প্রথমবার ছিল না। এর আগে ১৯৩৫ সালের দাঙ্গায় এমন লুটপাট করেছিল কৃষ্ণাঙ্গদের একাংশ। মূলত বৈষম্যের শিকার কৃষ্ণাঙ্গদের ক্ষোভ প্রকাশের পন্থা ছিল এটি। পরবর্তীতে অবশ্য লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য তদন্তে নামে স্থানীয় প্রশাসন। তদন্ত প্রতিহত করতে কৃষ্ণাঙ্গ নেতারা বরাবরই সম্পত্তির শ্বেতাঙ্গ মালিকদের বিভিন্ন ধরনের অপরাধকে দায়ী করতেন।
অধ্যাপক ক্যাপেসির তথ্যমতে, কোনো কোনো জায়গায় শ্বেতাঙ্গ মালিকদের দোকানে কৃষ্ণাঙ্গদের চাকুরি দেয়া হতো না। এমন লুটপাটকে শ্বেতাঙ্গ নাগরিকেরা কোন চোখে দেখেন সেটা ভিন্ন বিষয়, কিন্তু কৃষ্ণাঙ্গদের চোখে এটি ছিল পক্ষপাতিত্ব এবং সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাদের একমাত্র করণীয়। এখন হয়তো অনেকে আইনের কথা বলবে! কিন্তু রাষ্ট্রই যখন তাদের পূর্ণাঙ্গ নাগরিক সুবিধা না দিয়ে বৈষম্যের রাস্তা খোলা রেখেছে তখন রাস্তায় নেমে দাঙ্গা সৃষ্টি করা ব্যতীত তাদের জন্য দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা থাকে না। এই ব্যাপারে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আফ্রিকান-আমেরিকান বিষয়ের অধ্যাপক নিকি জোনস বলেন,
শ্বেতাঙ্গদের ব্যবসায়ের অর্থ কী ছিল? একে মূলত অর্থনৈতিক এবং সামাজিক শোষণ হিসেবেই দেখা যেতে পারে। অন্যথায় কালো মানুষদের বিচ্ছিন্নকরণ কিংবা নিপীড়নের কথাও বলা যায়।
নিউ ইয়র্কের তৎকালীন মেয়র ফিয়োরেলো লা গার্ডিয়া সঙ্গে সঙ্গে কারফিউ জারি করেন। এর কয়েক বছর পূর্বে তিনি নিউ ইয়র্ক পুলিশের জন্য দাঙ্গা মোকাবেলায় স্পেশাল ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও করেছিলেন। তৎক্ষণাৎ ৮,০০০ জাতীয় প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবক হারলেমের সবক’টা রাস্তায় মোতায়েন করার নির্দেশনা দেন তিনি। এর কয়েক মাস আগে ডেট্রয়েটে যে বিধ্বংসী দাঙ্গা হয়েছিল, সেসময়েও হারলেমে ৬,৬০০ পুলিশ মোতায়েন করেন মেয়র লা গার্ডিয়া। মূলত ডেট্রয়েটের দাঙ্গা যাতে মিশিগান থেকে নিউ ইয়র্কের কৃষ্ণাঙ্গ কমিউনিটিতে ছড়াতে না পারে সে কারণেই এমন ব্যবস্থা নেন তিনি।
কৃষ্ণাঙ্গ সমাজে বিশেষভাবে পরিচিত স্যাম ব্যাটলকে হারলেমে পাঠান তিনি। তিনি ছিলেন নিউ ইয়র্ক পুলিশের প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ কর্মকর্তা। তিনি তাদের নানাভাবে বোঝাতে সক্ষম হন যে রবার্ট ব্যান্ডি মৃত্যুবরণ করেননি। তিনি বেঁচে আছেন। অতঃপর নিউ ইয়র্ক পুলিশ হারলেমের সকলপ্রকার তথ্য সরবরাহের পথ বন্ধ করে দেয়। মূলত এটি ছিল দাঙ্গা মোকাবেলার অন্যতম প্রধান উপায়। গুজব রটানো বন্ধ করার পরও দেখা যায় অবরোধকারীদের কেউ ইতিবাচক আবার কেউ নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করছেন। অতঃপর ২ আগস্ট পুরো দিন দাঙ্গা অব্যাহত ছিল। শেষমেশ ৬০০ জন কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিহত হন সর্বমোট ৬ জন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ এবং আহত হন আরও ২০০ জন।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ঐ এলাকা থেকে কারফিউ তুলে নেয় কর্তৃপক্ষ। হারলেমের জাতিগত দাঙ্গায় লুটপাটের ফলে ক্ষতির পরিমাণ ছিল বর্তমান অঙ্কে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। লুটপাটের পর বেশিরভাগ শ্বেতাঙ্গ নাগরিক হারলেমে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাট চুকিয়ে অন্যত্র চলে যায়। সেবার হয়তো মিথ্যার উপর ভিত্তি করে দাঙ্গা সৃষ্টি হয়েছিল সেখানে। কিন্তু শ্বেতাঙ্গ তথা মার্কিন সরকার শত বছর ধরে কৃষ্ণাঙ্গদের পূর্ণ নাগরিক সুবিধা না দিয়ে অবিশ্বাসের যে প্রাচীর গড়ে রেখেছে, সেটি আজও ধ্বংস করেনি।