আবারও মির্জা কামরানের বিদ্রোহ: সম্রাট হুমায়ুনের ব্যর্থ বলখ অভিযান ও আসকারি মির্জার পতন

তালিকানের যুদ্ধে কামরান মির্জাকে পরাজিত করেই সম্রাট হুমায়ুন উজবেকদের বিরুদ্ধে বলখে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

সম্রাটের এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ ছিলো। মূল কারণ ছিলো উজবেকদের শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব। ঐতিহাসিকভাবেই তাইমুরের বংশধরদের সাথে উজবেকদের সাপে-নেউলে সম্পর্ক চলছিলো।

আর এই ঐতিহাসিক শত্রুতার রেশ ধরে উজবেকরা সম্রাট হুমায়ুনের বিরুদ্ধে কামরান মির্জাকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছিলো। তারা চাইছিলো মুঘলরা নিজেরা নিজেরাই মারামারিতে ব্যস্ত থাকুক। সময় সুযোগ হলে পরে নিজেরা আক্রমণ করে মুঘল অধিকারে থাকা ভূখণ্ডগুলো অধিকার করে নিবে।

কাজেই সম্রাট হুমায়ুনের সাথে উজবেকদের সংঘাত একপ্রকার অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠলো।

বলখে অভিযান চালানোর পেছনে সম্রাটের আরেকটি উদ্দেশ্যও ছিলো। কামরানকে ক্ষমা করে দেয়ার পর তার অধীনে শুধুমাত্র কুলাব দেয়া হয়েছিলো। তবে সম্রাট জানতেন, কামরানের মতো অবাধ্য, বিদ্রোহী মনোভাবাপন্ন আর উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষকে শুধুমাত্র কুলাব দিয়ে বেশিদিন সন্তুষ্ট রাখা যাবে না। তাই সম্রাট দ্রুত বলখ বিজয় করে বলখ কামরানকে দিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

বলখের বন্দ-ই আমির লেকের একাংশ; Image Source: Flickr, Photographer: Dave Crago

বলখ বিজয়ের প্রস্তুতি বেশ জোরেশোরেই নেয়া হলো। হিন্দাল মির্জা, সুলেমান মির্জা, হাজী মুহাম্মদ কোকা, তরদী বেগ, মোনায়েম বেগসহ সম্রাটের বিশ্বস্ত জেনারেলদের কাবুলে ডেকে পাঠানো হলো। কামরান মির্জাকেও অভিযানে অংশ নেয়ার জন্য রাজকীয় ফরমান পাঠানো হলো। তবে তিনি এলেন না। তার মাথায় তখন চলছিলো অন্য খেলা। এই খবর যদি সম্রাট জানতেন, তাহলে সম্ভবত তিনি বলখ অভিযানে বের হতেন না।

১৫৪৯ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে সম্রাট বলখের উদ্দেশ্যে কাবুল ত্যাগ করলেন। কাবুল থেকে উত্তর-পশ্চিমে কয়েক কিলোমিটার গিয়ে সম্রাট রাজকীয় শিবির ফেললেন। এখানে সম্রাটের সাথে বাদাখশান থেকে এসে মির্জা ইব্রাহীম আর গজনী থেকে মুহাম্মদ খান এসে যোগ দিলেন ।

মির্জা কামরান সম্রাটের রাজকীয় আদেশ পেয়েও সেনাবাহিনীর সাথে যোগ না দেয়ায় সম্রাট কিছুটা বিচলিত বোধ করছিলেন। তিনি নিশ্চিত মির্জা কামরান আবারও মনে মনে কিছু পাকাচ্ছে। সম্ভবত কামরান মির্জা আবারও বিদ্রোহ করার চেষ্টা করছে। মির্জা কামরানের অবস্থান থেকে বাদাখশান হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। স্বভাবতই বিদ্রোহ করলে মির্জা কামরান প্রথমে বাদাখশান দখলের চেষ্টাই করবেন।

সম্রাট হুমায়ুন তাই মির্জা ইব্রাহীমকে বাদাখশানে ফেরত পাঠিয়ে দিলেন। কামরান যদি কিছু করার চেষ্টা করে, তাহলে মির্জা ইব্রাহীম তাকে বাঁধা দিবেন।

বাদাখশান রক্ষার ব্যবস্থা করে চারদিক থেকে কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়ে সম্রাট বলখের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন। মাঝখানে যাত্রা বিরতি করলেন আইবেক নামক স্থানে। জায়গাটি বলখের আওতাধীন ছিলো।

১৮৮৫ সালে অঙ্কিত একটি ছবিতে বলখ; Image Source: mapandmaps.com

সম্রাট আইবেক দুর্গ অবরোধ করলেন। দুর্গের অধিপতি খাজা আতালিক বেগ তেমন কোনো বাঁধা প্রদর্শন না করেই আত্মসমর্পণ করলেন। আইবেক দুর্গের দখল বুঝে নিয়ে সম্রাট তার সেনাবাহিনীসহ খুলম আর বাবা শামু হয়ে বলখের আরো কাছাকাছি পৌঁছে গেলেন।

বলখের কাছাকাছি পৌঁছালে উজবেকদের পক্ষ থেকে একটি ঝটিকা আক্রমণ পরিচালনা করা হলো। শাহ মুহাম্মদ সুলতান হিসারি আর বক্কাস সুলতানের নেতৃত্বে একটি ছোট উজবেক বাহিনী হঠাৎ করেই মুঘল সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আচমকা আক্রমণ হওয়ায় ঐ ইউনিটের মুঘল যোদ্ধারা কোনো বাঁধাই দিতে পারেনি। পরাজিত হয়ে তারা ফিরে আসে।

মূল লড়াই শুরু হয় এর পরের দিন। বলখ নদীর তীরে উজবেক সেনাবাহিনী আর মুঘল সেনাবাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি হয়। দুই পক্ষেরই অপর পক্ষকে পরাজিত করার ব্যাপারে তুমুল আত্মবিশ্বাস দেখা গেলো।

বলখ নদীর একাংশ; Image Source: trip-suggest.com

যুদ্ধ শুরু হলো। যুদ্ধে উজবেকরা আক্ষরিক অর্থেই মুঘলদের সামনে দাঁড়াতেই পারলো না। মুঘলদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করে উজবেকরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।

এদিকে সম্রাট একটি ভুল করে ফেললেন। তিনি যদি উজবেকদের পলায়নের পর তৎক্ষণাত তাদের পিছু নিয়ে আবারও আক্রমণ করতেন, তাহলে হয়তো খুব সহজেই বলখ দখল করা যেতো। কিন্তু সম্রাট তা করলেন না। এবং এই ভুলের মাশুল তাকে পরবর্তীতে কড়ায় গণ্ডায় আদায় করতে হয়েছিলো।

বলখ অভিযান মোটামুটি ঠিকঠাকভাবেই চলছিলো। ইতোমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ একটি যুদ্ধে উজবেকরা পরাজিত হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছে। মুঘল সেনাবাহিনীর যোদ্ধাদের আত্মবিশ্বাস এককথায় তখন তুঙ্গে অবস্থান করছিলো। কিন্তু বিপদ বলে কয়ে আসে না।

সেনাবাহিনীতে হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই গুজব ছড়িয়ে গেলো যে, কামরান মির্জা আবারও কাবুল দখল করে নিয়েছেন!

এই সংবাদে সেনাবাহিনীর প্রতিটি যোদ্ধা নিজেদের পরিবারের জন্য চিন্তিত হয়ে উঠলো। গতবারে কামরান মির্জার কাবুল দখলের অভিজ্ঞতা এককথায় ছিলো ভয়াবহ। কামরান মির্জা সম্রাটের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে না পেরে সম্রাটের আমির আর যোদ্ধাদের পরিবারকে জিম্মি হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। সম্রাটের যোদ্ধারা এই যুদ্ধাবস্থায় পরিবার থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে আরেকবার সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে অনিচ্ছুক ছিলেন। কাজেই তারা বলখ অভিযান পরিত্যাক্ত করে দ্রুত কাবুল পৌঁছানোর ব্যাপারে সম্রাটকে চাপ দিতে থাকলো।

বলখের ‘মসজিদ সাব্জ’ বা সবুজ মসজিদ। ধারণা করা হয়, মসজিদটি তাইমুরের পুত্র শাহ রুখ নির্মাণ করিয়েছিলেন; Image Source: trendsmap.com

এদিকে উজবেকদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে যা ভুল করার তা সম্রাট আগেই করে ফেলেছেন। এখন চারদিক থেকে তাদের সংগঠিত হওয়ার খবর আসছে। অন্যদিকে বুখারা থেকে আবদুল আজীজ পীর মুহাম্মদের জন্য সামরিক সাহায্য নিয়ে আসছিলেন। এই সংবাদে মুঘল সেনাবাহিনীতে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো।

সম্রাট হুমায়ুন পড়লেন বিপদে। একদিকে শত্রু বেশ শক্ত অবস্থান নিয়ে সামনে এগোচ্ছে। অন্যদিকে সম্রাটের বাহিনীর যোদ্ধারা যুদ্ধ করার চেয়ে কাবুলে নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরে যেতেই বেশি উদগ্রীব। নিরুপায় সম্রাট বাধ্য হলেন পিছু হটতে। সেনাবাহিনী নিয়ে তিনি আইবেক হয়ে দ্রুত দররেগজে পিছু হটলেন।

দররেগজকে নতুন ঘাটি হিসেবে বাছাই করার কারণ হলো, এ জায়গা থেকে তিনি একই সাথে কাবুলের উপর নজর রাখতে পারবেন, আবার বলখে উজবেকদের উপরও নজর রাখতে পারবেন।

কৌশলগত কারণে সম্রাট হুমায়ুন পিছু হটলেন। কিন্তু এই পিছু হটা থেকে ভুল বার্তা পেলো উজবেকরা। তারা ধরে নিলো সম্রাট হুমায়ুন পালিয়ে যাচ্ছেন। কাজেই তারা মুঘল সেনাবাহিনীকে পেছন থেকে ধাওয়া শুরু করলো।

উজবেকদের এই ধাওয়ার মুখে পরে মুঘল সেনাবাহিনীর যোদ্ধারা তীব্র আতঙ্কিত হয়ে পড়লো। মুঘল সেনাবাহিনীর সামরিক শৃঙ্খলা মুহূর্তেই ভেঙে পড়লো। সম্রাট আর তার জেনারেলরা বহু চেষ্টা করেও শৃঙ্খলা আর ফিরিয়ে আনতে পারলেন না। উজবেকদের ধাওয়ায় মুঘল সেনাবাহিনীর বেশ কিছু যোদ্ধা মারা গেলেন। সম্রাট হুমায়ুনের উপরেও সরাসরি আক্রমণ করা হলো। ভাগ্যগুণে তিনি অক্ষত রইলেন। তবে মারা গেলো সম্রাটের প্রিয় ঘোড়া তসররুন্না জেরিন। মির্জা হিন্দালও উজবেক আক্রমণের মুখে পড়ে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন।

নিজের সেনাবাহিনীর উপর একরকম ক্ষুব্ধ হয়েই ১৫৪৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রথমে কাহমর্দ, তারপর কাহমর্দ থেকে গুরুবন্দ হয়ে সম্রাট হুমায়ুন কাবুলে পৌঁছালেন। সম্রাট কাবুলে পৌঁছানোর পর কামরানের কাবুল দখলের গুজব মিথ্যা প্রমাণিত হলো। কিন্তু তখন তো যা অঘটন ঘটার, তা ঘটেই গেছে।

বলখ অভিযানের এই অনাকাঙ্খিত ঘটনায় একটি নিশ্চিত বিজয় সম্রাটের হাত ফসকে বেড়িয়ে গেলো। সম্রাটের সেনাবাহিনীর যোদ্ধাদের কিছুটা নির্বুদ্ধিতা, পূর্বে করা কামরান মির্জার অত্যাচারের আতঙ্ক আর সম্রাটের বলখ অভিযানে বের হওয়ার পর কামরান মির্জার সন্দেহজনক গতিবিধিকেই এই পরাজয়ের কারণ হিসেবে দাঁড়া করানো যায়।

তবে সম্রাট হুমায়ুন বলখ অভিযানে তার সেনাবাহিনী এই আচরণে বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন। বলখ থেকে ফিরে তিনি মন্তব্য করেছিলেন,

‘বিশ্বস্ততা আমার লোকদের থেকে বিদায় নিয়েছে। আজ যা কিছু ঘটছে, তাদের স্বার্থপরতার জন্যই তা সম্ভব হয়েছে।’

কামরান মির্জা অবশ্য সত্যিই তখন বিচিত্র আর সন্দেহজনক আচরণ প্রদর্শন করছিলেন।

সম্রাট হুমায়ুন কামরান মির্জাকে কুলাবের শাসনভার দেয়ার সময় চাকর বেগকে কামরানের আমিরুল ওমরাহ পদে নিযুক্ত করে দিয়েছিলেন। এর মানে চাকর বেগ কামরানের প্রধান আমির ও পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করবেন। কিন্তু কামরান কুলাবে যাওয়ার পর উদ্ধত আচরণ প্রদর্শন করতে থাকলেন। এতে চাকর বেগের সাথে তার মনোমালিন্য বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে কামরান চাকর বেগকে শারিরীকভাবে আঘাত করে কুলাব ছেড়ে চলে যান। মূলত তিনি কুলাবের মতো ছোট এলাকা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না।

কামরান মির্জা যখন আসকারি মির্জাকে কুলাবে রেখে কুলাব ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, তখন সম্রাট বলখ অভিযানে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন। এই সুযোগে তিনি এসে সোজা বাদাখশান আক্রমণ করে বসেন। তালিকান খুব সহজেই কামরান মির্জার হস্তগত হলো। কিন্তু জাফর দুর্গকে দখল করা সম্ভব হলো না।

এরপর মির্জা কামরান কুন্দুজে আক্রমণ চালালেন।

বলখ অভিযানের ব্যর্থতার পর হিন্দাল মির্জা ইতোমধ্যেই নিজ এলাকায় ফিরে এসেছিলেন। হিন্দাল মির্জার বিচক্ষণতায় কামরান কুন্দুজ দখল করতে না পেরে হিন্দাল মির্জাকে কৌশলের ফাঁদে ফেলে কুন্দুজ দখল করতে চাইলেন। সেটাও সম্ভব হলো না।

কুন্দুজ অবরোধ ব্যর্থ হলে কামরান মির্জা তালিকান দুর্গে গিয়ে ঘাটি করলেন। এদিকে ততদিনে বাদাখশানের সুলেমান মির্জা আর হিন্দাল মির্জা নিজেদের বাহিনীকে একত্রিত করে তালিকানের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন। বাধ্য হয়ে কামরান মির্জা তালিকান থেকে পালিয়ে সোজা হাজারায় গিয়ে আশ্রয় নিলেন।

এদিকে করাচা খান আবারও সম্রাট হুমায়ুনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন। তিনি হাজারায় কামরানের কাছে কাবুল দখল করে নিতে একটি পত্র লিখলেন। কামরান এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইলেন না। তিনি কাবুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন। তবে সম্রাটকে বিভ্রান্ত করতে ক্ষমা চেয়ে সম্রাটের নিকট একটি পত্র লিখলেন।

কিন্তু সম্রাট তার এই পত্রে আগের মতো গলে গেলেন না। তার কাছে স্পষ্ট গোয়েন্দা তথ্য আছে যে, যেকোনো সময়েই কাবুলের আশেপাশে কামরান মির্জা চলে আসতে পারেন। তাই এবার সম্রাট সতর্কতা অবলম্বন করলেন।

কাসিম বারলাস আর পুত্র আকবরের নিকট কাবুলের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব অর্পণ করে সম্রাট কাবুলের আশেপাশের গিরিপথগুলো সুরক্ষিত করতে নিজেই সেনাবাহিনী নিয়ে বেড়িয়ে পরলেন।

প্রথমে কারাবাগ, তারপর কারাবাগ থেকে চারিকারান হয়ে বারানের মধ্য দিয়ে কিবচাক গিরিপথের দিকে অগ্রসর হলেন সম্রাট হুমায়ুন।

কামরানকে ঠেকাতে মরিয়া সম্রাট অবশ্য আশেপাশের সবগুলো গিরিপিথই দখল করতে চাইলেন। তাই আলা কুলী বাহাদুর, আলা কুলী আন্দারাবী, মুসাহিব বেগসহ দক্ষ একটি সেনা ইউনিট দিয়ে সম্রাট হাজি মুহাম্মদ কোকাকে কোতেল-সারতুন গিরপথ দখল করতে পাঠিয়ে দিলেন। আর নিজে  নিজে অবস্থান নিলেন কিবচাক গিরিপথে। গোয়েন্দা তথ্যে কামরান মির্জা কিবচাক গিরিপথ হয়ে কাবুলে প্রবেশ করতে পারেন বলে বলা হয়েছে।

হলোও তা-ই। কামরান মির্জা কিবচাক গিরিপিথ ধরে এগিয়ে আসছিলেন। কামরান মির্জার সেনাবাহিনীকে দেখা মাত্র গুপ্তচররা ছুটলো সম্রাটকে তা জানাতে। গুপ্তচরদের সংবাদ পাওয়া মাত্র সম্রাট গিরিপিথের দিকে এগিয়ে গেলেন। আবারও সম্রাট বাবরের দুই পুত্র যুদ্ধক্ষেত্রে একে অপরের বিপরীতে মুখোমুখি হলেন।

মূল যুদ্ধ শুরু হলো জোহরের নামাজের পরে। আসরের মাঝেই যুদ্ধ শেষ হলো। যুদ্ধের ফলাফল সম্রাটের পক্ষে গেলো না। কামরান মির্জা সম্রাটের বাহিনীকে এই যাত্রায় এককথায় বিপর্যস্ত করে তুললেন।

এই যুদ্ধে মুঘল সেনাবাহিনীর বেশ কিছু যোদ্ধা নিহত হলেন। আহতের তালিকায় ছিলো বিপুল সংখ্যক যোদ্ধা। যুদ্ধের একপর্যায়ে সম্রাট নিজেও মাথায় আঘাত পেলেন।

প্রচন্ড রক্তপাতে সেদিন সম্রাটের গায়ের জোব্বাটি লাল হয়ে গিয়েছিলো। সম্রাট জোব্বাটি খুলে সাইদুর রহমান খান নামক এক কর্মচারীর কাছেদিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিশৃঙ্খলার মাঝে তিনি জোব্বাটি হারিয়ে ফেললেন। জোব্বাটি পেলো মির্জা কামরানের বাহিনীর কোনো এক যোদ্ধা। কামরান যখন রক্তমাখা জোব্বাটি দেখলেন, তখন তিনি ধরে নিলেন সম্রাট হুমায়ুন হয়তো যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়েছেন।

কিবচাকের এই অভাবনীয় বিজয়ের পর কামরান মির্জা চারিকারানে গিয়ে রাতটুকু অবস্থান করে পরের দিন খুব ভোরে কাবুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলেন। কাবুলে উপস্থিত হয়েই তিনি বালা হিসার দুর্গ অবরোধ করলেন। কাসিম বারলাস বালা হিসার রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি দুর্গ সমর্পণে অস্বীকৃতি জানালেন। মির্জা কামরান তাকে সম্রাটের রক্তাক্ত জোব্বাটি দেখালেন।

কাসিম বারলাস বিধ্বস্তের মতো সম্রাটের রক্তমাখা জোব্বাটি দেখলেন। তিনিও ধরে নিলেন সম্রাট হুমায়ুন আর এই পৃথিবীতে নেই। কাজেই দুর্গ আগলে ধরে রাখাও আর সম্ভব হবে না। কাসিম বারলাস কামরান মির্জার কাছে দুর্গ সমর্পণ করলেন। দুর্গের সাথে সাথে আরো একবার আকবর কামরান মির্জার হাতে গিয়ে পড়লেন।

১৮৭৯ সালে তোলা বালা হিসার দুর্গের একটি ছবি; Image Source: Wikimedia Commons

এদিকে কাবুল দখল করে কামরান মির্জা প্রথমেই সম্রাট হুমায়ুনের রাজ কোষাগার দখল করলেন। এরপর কাবুলে থাকা সম্রাটের আমির আর বিশ্বস্ত লোকদের গ্রেফতার করা শুরু করলেন। চোখের পলকেই কাবুল আরও একবার ভয়াবহ সংকটে পতিত হলো।

এদিকে কিবচাকের যুদ্ধে পরাজয়ের পর আহত সম্রাট হুমায়ুনকে দ্রুত যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বের করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হলো। মাগরিবের সালাত আদায় করে দ্রুত সম্রাট তার বাকি যোদ্ধাদের নিয়ে কোতেল-সারতুন গিরিপথে হাজী মুহাম্মদ কোকার সেনা অবস্থান বরাবর যাত্রা শুরু করলেন।

কোতেল সারতুনে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ভোর হয়ে গেলো। সম্রাট দ্রুত কাবুলের দিকে যাত্রা করতে চাইলেন। কারণ সম্রাট আশঙ্কা করছিলেন, ইতোমধ্যেই হয়তো কাবুল আবারও কামরানের হস্তগত হয়ে গিয়েছে!

দুপুরের মাঝেই সম্রাট জাহাক রান নামক স্থানে পৌছে শিবির স্থাপন করলেন। এই স্থান থেকে এরপর তিনি বেশ কয়েকটি পত্র লিখলেন। একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি কাবুলের উদ্দ্যশ্যে প্রেরণ করা হলো। যেখানে সম্রাট লিখলেন তিনি সুস্থ আছেন এবং বাহিনীসহ কাবুলে প্রত্যাবর্তন করছেন। বাহিনীর অন্যান্য যোদ্ধাদেরও নিজ নিজ পরিবারের নিকট চিঠি লিখতে নির্দেশ দেয়া হলো। সম্রাট এমনটা করলেন, যেন আগেরবারের মতো কাবুলে সম্রাটের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে না যায়।

এরপর সম্রাট দ্রুত শাহ মুহাম্মদকে গজনীর দিকে যাত্রা করতে বললেন। তার উপর নির্দেশ দেয়া হলো সম্রাট স্বয়ং গজনীতে উপস্থিত হওয়ার আগপর্যন্ত কামরানের হাত থেকে গজনীকে নিরাপদ রাখতে হবে। শাহ মুহাম্মদ গজনীর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লেন।

সম্রাট এরপর দ্রুত বামিয়ান হয়ে খামরুদ নামক স্থানে পৌঁছে শিবির স্থাপন করলেন। এখানে সম্রাটের মূল বাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বেশ কিছু যোদ্ধা সম্রাটের সাথে যোগ দিতে সমর্থ হলেন।

এরপর সম্রাট আলনাজেক আর বাঙ্গী হয়ে আওলিয়া খঞ্চা নামক স্থানে পৌছালেন। মির্জা হিন্দাল এই স্থানে সম্রাটের মূল বাহিনীর সাথে যোগ দিলেন। মির্জা হিন্দাল যোগ দেয়ার পর সম্রাট দ্রুত আন্দরাবে এসে পৌঁছালেন।

টানা তৃতীয়বারের মতো কাবুল পতনের সংবাদ সম্রাট আন্দরাবে বসে পেলেন! সম্রাট হুমায়ুনকে সম্ভবত কাবুল ছাড়া অন্য কোনো স্থান এত বেশি হতাশ করেনি। তিনি বার বার কাবুল বিজয় করতেন আর পেছন থেকে মির্জা কামরান এসে তা দখল করে নিতেন।

আন্দরাব লেক; Image Source: reddit.com

কাবুল পতনের সংবাদ পাওয়ার পর সম্রাট আন্দরাব ছেড়ে আর সামনে অগ্রসর হননি। পরবর্তী প্রায় দুই মাস তিনি আন্দরাবেই কাটালেন। এর ভেতরে খবর পাওয়া গেলো সম্রাট হুমায়ুন যেন কাবুল অভিমুখে কোন অভিযান চালাতে না পারেন, সেজন্য কামরান মির্জা হিন্দুকুশ পর্বতের পথটি বন্ধ করে দেয়ার জন্য সৈন্য প্রেরণ করতে যাচ্ছেন। তাই সম্রাট দ্রুত হিন্দুকুশ অধিকার করে হিন্দুকুশ পাড়ি দিতে চাইলেন।

হিন্দুকুশ পর্বতমালা; Image Source: Wikimedia Commons

তবে যাওয়ার আগে একটি কাজ করলেন তিনি। পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে সম্রাট লক্ষ্য করেছেন, সামান্য স্বার্থের লোভে তার আমিররা তাকে ছেড়ে কামরানের দলে গিয়ে বারবার ভীড় করেছে। আবার যুদ্ধক্ষেত্রে সামান্য প্রতিকূল অবস্থা দেখলেও তারা রণক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখাচ্ছিলো।

হিন্দুস্তানের মসনদ হারানোর পর বেশিরভাগ সময়ই সম্রাট হুমায়ুনকে তারই সৎ ভাই কামরান মির্জার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হচ্ছিলো। এক্ষেত্রে সম্রাটের হাতে গোনা বিশ্বস্ত কিছু আমির ছাড়া বাকিদের অবস্থান ছিলো খুবই বিচিত্র। তারা একেক সময় একেক পক্ষে চলে যেতো। আজ কোনো আমির সম্রাটের পক্ষে, তো কাল দেখা যেতো সেই আমির কামরান মির্জার পক্ষে। আবার যখন কামরান মির্জা পরাজিত হয়ে ক্ষমা চাইতেন, সম্রাট সাথে সাথেই তাকে ক্ষমা করে দিতেন। সেই সাথে ক্ষমা পেয়ে যেতেন সেসব বিশ্বাসঘাতক আমিরের দল। কিছুদিন পর আবারও কামরান বিদ্রোহ করতেন, প্রায় সাথে সাথে এসব বিশ্বাসঘাতক আমিররা কামরানের সাথে হাত মেলাতেন। এভাবেই বেশ কয়েকবছর চলছিলো।

১৮৭৯ সালে অঙ্কিত হিন্দুকুশের মানচিত্র; Image Source: Wikimedia Commons

কাজেই গুরুত্বপূর্ণ এই অভিযানের পূর্বে সম্রাট এবার তার আমিরদের পবিত্র কুরআন শরীফ স্পর্শ করিয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিলেন যে, যেকোনো প্রতিকূল অবস্থা কিংবা স্বার্থের মুখোমুখি হলেও তারা সম্রাটকে ত্যাগ করে চলে যাবে না।

সম্রাটের আমিররা লজ্জিত হয়ে পবিত্র কুরআন ছুঁয়ে সম্রাটকে না ছেড়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করলেন।

কামরানের করাল গ্রাস থেকে কাবুলকে উদ্ধারের জন্য আন্দরাবের সম্রাট দ্রুত প্রস্তুতি নিলেন। মোটামুটি যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় গেলে সম্রাট এরপর উশতুর করামে যেয়ে ঘাটি গাড়লেন। যদিও সম্রাটের উদ্দ্যেশ্য কাবুল পুনরুদ্ধার করা। কিন্তু তারপরও তিনি যুদ্ধ এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। উশতুর করাম থেকে তাই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি কামরানের দরবারে দূত প্রেরণ করলেন।

মির্জা কামরানও শান্তির ব্যাপারে আগ্রহ দেখালেন। তিনি সম্রাটকে জানালেন কাবুল কামরানের নিজের আর কান্দাহার সম্রাটের, এই ব্যাপারে একমত হলে তিনি চুক্তি করতে রাজি আছেন।

সম্রাট এই প্রস্তাব নাকচ করে আরেকটি প্রস্তাব দিলেন। তিনি বললেন, আকবর আর কামরানের মেয়ের বিয়ে দিয়ে কাবুল তাদেরকে উপহার হিসেবে দিয়ে দেয়ার জন্য। কামরান এই প্রস্তাবে রাজি ছিলেন। কিন্তু বাঁধ সাধলেন কামরানের আমিররা। এই আমিরদের দলে ছিলেন সেই বিশ্বাসঘাতক করাচা খান। মূলত এই বিশ্বাসঘাতক করাচা খানের চাপাচাপিতেই শান্তিচুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলো না।

শান্তিচুক্তি ব্যর্থ হওয়ায় যুদ্ধ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা রইলো না। উশতুর করামেই সম্রাট আর কামরান মির্জা মুখোমুখি হলেন।

যুদ্ধ বেশ ভয়াবহ ছিলো। কামরান মির্জা যুদ্ধে শোচনীয় পরাজয় বরণ করলেন। তার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক যোদ্ধা নিহত হলো। বাকিরা চারদিকে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে গেলো। যুদ্ধের একপর্যায়ে বিশ্বাসঘাতক করাচা খান আহত হয়েছিলেন। পরে তাকে বন্দী করে সেখানেই হত্যা করা হয়।

উশতুর করামের এই যুদ্ধে আসকারি মির্জা বন্দী হলেন। আর নিজের পরাজয় দেখে কামরান মির্জা হাতে গোনা কয়েকজন সৈন্য নিয়ে পালিয়ে গেলেন।

কাবুল বিজয়ের পর সম্রাট দ্রুত কাবুলে প্রবেশ করলেন। আকবরের জন্য তিনি বেশ চিন্তিত ছিলেন। কারন বেশ কয়েকদিন ধরে আকবরের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। তবে দুর্গে আকবরকে সম্রাট অক্ষত আর নিরাপদ অবস্থাতেই দেখতে পেলেন। আকবরকে দেখা মাত্র সম্রাটের সমস্ত দুশ্চিন্তার অবসান ঘটলো।

১০

কাবুল অধিকার করার পর সম্রাট তার রাজকোষ তো ফিরে পেলেনই, সেই সাথে কিবচাকের যুদ্ধে পরাজয়ের পর হারিয়ে যাওয়া বই ভর্তি কয়েকটি সিন্দুকও খুঁজে পেলেন। বইপ্রেমী এই মুঘল সম্রাট রাজকোষ পেয়ে যতটা না খুশি হয়েছিলেন, বইভর্তি সিন্দুকগুলো ফিরে পেয়ে তারচেয়ে অনেক বেশি খুশি হলেন।

সম্রাট হুমায়ুন; Artist: Kailash Raj

কাবুল বিজয় খুশি হয়ে সম্রাট অকাতরে গরীব-দুঃখীদের দান করলেন। এরপর পুনরায় বিশ্বস্তদের মাঝে জায়গীর বিতরণ করলেন। সুলেমান মির্জাকে বাদাখশান যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলো। তবে তার পুত্র ইব্রাহীম মির্জাকে কাবুলে রেখে দেয়া হলো। আকবরের সৎ বোন বকশী বানুর সাথে পরে ইব্রাহীম মির্জার বাগদান সম্পন্ন করা হয়েছিলো।

উশতুর করামের যুদ্ধক্ষেত্রে কামরান মির্জা পরাজিত হয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও আসকারি মির্জা পালাতে পারেননি, তা আগেই বলা হয়েছে। তিনি সম্রাটের বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিলেন।

ব্যক্তিজীবনে আসকারি মির্জা বেশ নম্র, ভদ্র আর ব্যক্তিত্ববান ছিলেন। তিনি তার জীবনের বিভিন্ন সময়ে সম্রাটের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু আবার কিছুদিন পরেই নিজের আপন ভাই কামরান মির্জার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহও করেছিলেন।

যা-ই হোক, আসকারি মির্জাকে নিয়ে কী করা হবে তা নিয়ে সম্রাট বেশ দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। কারণ মির্জা কামরানের মতো তিনিও বারবার সম্রাটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সম্রাটকে বিব্রত করছিলেন।

তবে সমস্যার সমাধান আসকারি মির্জা নিজেই দিলেন। তিনি জানালেন রাজনীতির এই খেলা তার আর ভালো লাগছে না। তিনি মক্কায় হজ্জ্ব করতে চলে যেতে চান। সম্রাট আসকারি মির্জার সিদ্ধান্তকেই ভালো মনে করলেন।

আসকারি মির্জাকে প্রথমে বাদাখশানে পাঠিয়ে দেয়া হলো। সুলেমান মির্জাকে নির্দেশ দেয়া হলো আসকারি মির্জার মক্কা যাত্রার সব ব্যবস্থা করে দিতে। সুলেমান মির্জা সব ব্যাবস্থা করে ১৫৫১ সালে আসকারি মির্জাকে মক্কা পাঠিয়ে দিলেন।

সম্রাট বাবরের এই পুত্র আর কোনোদিন নিজের পিতার রেখে যাওয়া সাম্রাজ্যে ফিরে আসতে পারেননি। তিনি তার বাকি জীবন মক্কাতেই কাটিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ১৫৫৭ কিংবা ১৫৫৮ সালে তিনি মারা গিয়েছিলেন। আর এভাবেই ইতিহাসের পাতা থেকে অনেকটা নীরবে-নিভৃতে আড়াল হয়ে গেলেন সম্রাট বাবর ও গুলরুখ বেগমের পুত্র মুহাম্মদ আসকারি মির্জা।

[এই সিরিজের পূর্বের প্রকাশিত পর্বটি পড়ুন এখানে। সিরিজের সবগুলো লেখা পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এখানে।]

এই সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুন এই বইগুলো

১) অ্যাম্পেয়ার অব দ্য মোঘল রাইডারস ফ্রম দ্য নর্থ
২) আকবর (এক মোঘল সম্রাটের রোমাঞ্চকর জীবনকাহিনী)
৩) দ্য হিস্ট্রি অব রয়্যাল লেডিস ইন মোঘল এমপায়ার

Description: This article is in Bangla language. It's about the mutiny of Mirja Kamran and failed Balkh campaign of Emperor Humayun.

References:

1. মোগল সম্রাট হুমায়ুন, মূল (হিন্দি): ড হরিশংকর শ্রীবাস্তব, অনুবাদ: মুহম্মদ জালালউদ্দিন বিশ্বাস, ঐতিহ্য প্রকাশনী, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি, ২০০৫

2. তাজকিরাতুল ওয়াকিয়াত, মূল: জওহর আবতাবচি, অনুবাদ: চৌধুরী শামসুর রহমান, দিব্য প্রকাশ, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ (চতুর্থ মুদ্রণ)

3. হুমায়ুননামা, মূল: গুলবদন বেগম, অনুবাদ: এ কে এম শাহনাওয়াজ, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, প্রকাশকাল: জানুয়ারি, ২০১৬

4. আইন-ই-আকবরী ও আকবরের জীবনী, মূল গ্রন্থ: আকবরনামা, মূল গ্রন্থের লেখক: আবুল ফজল, অনুবাদ: পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়, দিব্য প্রকাশ, জানুয়ারি ২০১২ (২য় মুদ্রণ)

5. History Of India Under Humayun, William Erskine

Featured Image: flickr.com

Related Articles

Exit mobile version