জলদস্যু শব্দটি শুনলেই আমাদের চোখে ভাসে হাতে ফ্লিন্টলক পিস্তল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল ত্রিকোণাকার হ্যাট পরা কাউকে, যার কোমরে ঝুলানো ছোটখাট এক কাটলাস (বাঁকানো তলোয়ার)। কারও চোখে হয়ত কালো ঠুলি আঁটা, জ্যাকেটের নিচে কারও হাতের বদলে সেখানে শুধুই রুপালী আংটা, আবার কারও কাধের উপর রংবেরং-এর তোতাপাখি।
অভ্যাসও হয়ত খানিকটা বলে দেয়া যাবে। “ইয়ো হো হো” বলে হুঙ্কার ছাড়তে ছাড়তে এক ঢোক রাম গিলেই আবারও অভিশপ্ত গুপ্তধনের চিন্তায় বুঁদ হয়ে থাকাটাই তো জলদস্যুতার প্রমাণ! জলদস্যুরা বেশ স্বাধীনচেতা, আত্মত্যাগী আর অসাধারণ শৌর্যবীর্যের অধিকারী, অন্তত হলিউড আর ‘ট্রেজার আইল্যান্ড’-এর মতো বিভিন্ন জলদগম্ভীর উপন্যাস আমাদের কাছে জলদস্যুদেরকে এভাবেই উপস্থাপন করেছে। কিন্তু আসলেই কি তাই? বাস্তবের জলদস্যুরা কেমন ছিল সেটাই দেখে নেওয়া যাক।
স্যার ফ্রান্সিস ড্রেক – দ্য রয়্যাল পাইরেট (১৫৪০-১৫৯৬)
কথিত আছে, যেদিন থেকে মানুষ জলে বিচরণ করা শুরু করেছে, সেদিনই জন্ম হয়েছে জলদস্যুতার। আর ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের জলদস্যুতা তো অনেক পরের ঘটনা। কলম্বাস আমেরিকায় পা রাখার বহু বছর পর স্প্যানিশরা যখন অ্যাজটেকদের লুট করা বিশাল রত্নভান্ডার দিয়ে নিজেদের প্রাচুর্য বৃদ্ধি করতে থাকল, ডাচ আর ব্রিটিশরা তা মেনে নিতে পারল না। এর ফলেই জন্ম নিল প্রাইভেটিয়ার্সদের।
প্রাইভেটিয়ার্সদের কাজ ছিল রাণীর গোপন আদেশে সোনাবোঝাই স্প্যানিশ জাহাজ লুট করে নিজেদের দখলে নিয়ে আসা। আর এদের মধ্যে সবচেয়ে সেরা ও কুখ্যাত ছিলেন ফ্রান্সিস ড্রেক। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি পুরো বিশ্ব ঘুরে এসেছেন। আর এই অভিযানের ফাঁকেই লুটপাট চালিয়েছেন স্প্যানিশ তরীতে, ধ্বসিয়ে দিয়েছিলেন বেশ কয়েকটি স্প্যানিশ বন্দর। তিনি এতটাই ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন যে, স্প্যানিশরা তাকে নামই দিয়ে দিয়েছিল ‘এল ড্রাকো’ বা ‘ড্রাগন’। রাণী এলিজাবেথও এর প্রতিদান দিতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি। প্লাইমাউথে ড্রেকের জাহাজ ‘গোল্ডেন হাইন্ড’ ভিড়তেই তাকে নাইটহুড উপাধি দিয়েছিলেন।
আট বছরের মাথায়, স্প্যানিশরা তাদের ১৫০টি রণতরীর বিশাল বহর নিয়ে ইংল্যান্ড আক্রমণ করতে এলে ফ্রান্সিস ড্রেকের নেতৃত্বেই স্প্যানিশ আর্মাডা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। অবশেষে ১৫৯৬ সালে রক্ত আমাশয়ে ভুগে মারা যান এই স্প্যানিশ বিভীষিকা।
ফ্রাসোঁয়া লোলোনেই (১৬৩৫-১৬৬৮)
সোনার লোভের চেয়ে বড় লোভ খুব কম জিনিসই আছে। পেরু আর মেক্সিকোতে সোনা আবিষ্কার হওয়ার পর হিস্প্যানিওলার লোকজন বাড়িঘর সব ছেড়েছুড়ে ভাগ্য খুঁজতে বেরিয়ে পড়ল, আর এদিকে তাদের ফেলে আসা পোষা গরু-ছাগলের বংশবৃদ্ধি এত হুহু করে বাড়তে থাকল যে দ্বীপে ঠাই নেই ঠাই নেই অবস্থা। আবার এদিকে জাহাজের চেয়ে মাল্লার পরিমাণও কম নয়।
অর্থের অভাবে জর্জরিত বেকার নাবিকরা এত বুনো পশু দেখে যেন হাতে চাঁদ পেল। ব্যস, জন্ম হলো বুকাঁনিয়ারদের। গরু মেরে মাংস শুকিয়ে নাবিকদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করে দুহাত ভরে টাকা আয় করতে শুরু করল তারা। শুকনো গরুর মাংসকে ফ্রেঞ্চ ভাষায় বলা হয় “boucane-(বুকাঁ)”, সেখান থেকেই উৎপত্তি বুকাঁনিয়ারের। শান্তিপ্রিয় বুকানিয়াররা আরামেই দিন কাটাচ্ছিল, কিন্তু মাঝখান থেকে বাগড়া বাধাল স্প্যানিশরা।
তাদের উপনিবেশ এলাকায় উড়ে এসে জুড়ে বসা বিদেশীদের এরকম রমরমা ব্যবসা সহ্য করতে বেশ কষ্টই হচ্ছিল। মারমার কাটকাট অবস্থায় বুকাঁনিয়াররাও নিজেদের মাথা ঠান্ডা রাখতে পারল না। হিস্প্যানিওলা থেকে কোনোরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে টরটুগায় আশ্রয় নিল। তারপর ছোটখাট নৌকা বানিয়ে তাতে বোঝাই হয়ে স্প্যানিশ গ্যালিয়ন আক্রমণ করা শুরু করল। প্রতিশোধের আগুনের যন্ত্রণা বড়ই কঠিন, একজনকেও ছাড় দিলো না বুকাঁনিয়াররা। স্প্যানিশ ডাবলুনের লোভে বুকাঁনিয়ারদের দলে ভিড়ল ফ্রেঞ্চ, ব্রিটিশ আর ডাচ জলদস্যুরা। এদের মধ্যে ছিল ফ্রান্স থেকে অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় ক্যারিবীয় অঞ্চলে আসা ফ্রাসোঁয়া লোলোনেই।
ফ্রাসোঁয়া লোলোনেই কিছুদিনের মধ্যেই হয়ে উঠলেন জলদস্যুদের নেতা। তবে লোলোনেই নৃশংসতার দিক থেকে সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। জ্যান্ত অবস্থায় শরীর থেকে মাংস কেটে নেওয়া বা গলায় ফাঁস দিয়ে চোখ বের করে ফেলা ছিল তার কাছে সাধারণ ঘটনা। এমনকি হন্ডুরাসে স্প্যানিশ সৈন্যদের তাড়া খেয়ে পালানোর সময় একজনের শরীর টুকরো টুকরো করে হৃৎপিণ্ড বের করে তা কামড়িয়েও খেয়েছিলেন! তবে শেষমেশ তার পরিণতিও এর ব্যতিক্রম কিছু ছিল না। নরখাদক কুনা আদিবাসীদের পেট ছিল তার শেষ আশ্রয়, তার আগে জ্যান্ত টুকরো টুকরো হয়ে আগুনে কিছুটা ঝলসিয়েও গিয়েছিলেন!
ড্যানিয়েল ‘দ্য এক্সটারমিনেটর’ মন্টবারস (১৬৪৫ – ?)
১৬৬৮ সালে লোলোনেই নরখাদকদের পেটে হারিয়ে যাওয়ার পর বুকাঁনিয়ারদের নেতার আসনের হাল ধরলেন ড্যানিয়েল মন্টবারস। নিপাট ভদ্রলোক, উচ্চশিক্ষিত আর উচ্চবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া মন্টবারসের স্প্যানিশদের প্রতি ঘৃণা ছিল আকাশচুম্বী। আমেরিকার প্রাচীন অধিবাসীদের প্রতি স্প্যানিশদের নিষ্ঠুর অত্যাচারের ঘটনা তাকেও পাশবিক বানিয়ে ফেলে। রয়্যাল ফ্রেঞ্চ নেভিতে থাকার সময় তার চাচাকে স্প্যানিশরা মেরে ফেলায় মন্টবার প্রায় উন্মাদ হয়ে যান। চলে যান টরটুগায়, জলদস্যু বুকাঁনিয়ারদের আড্ডায়।
বুকাঁনিয়ারদের নেতা হওয়ার সাথে সাথেই স্প্যানিশদের উপর ভয়াবহ অত্যাচার শুরু করেন মন্টবার। আক্রমণ চালান কিউবা, পুয়ের্তো রিকো আর মেক্সিকোর উপকূলে, ধ্বসিয়ে দেন স্যান পেদ্রো, পোর্তো কাবায়ো আর জিব্রাল্টারের স্প্যানিশ দুর্গ। স্প্যানিশ কোনো নাবিককে পেলেই তার পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলে তা দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে আক্রান্ত নাবিককে নাচার আদেশ দিতেন, সাথে নিতম্বের উপর জ্বলন্ত কাঠের আঘাত তো রয়েছেই!
তবে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যান এই ফ্রেঞ্চ, শেষ পর্যন্ত ‘মন্টবারস দ্য এক্সটারমিনেটর’-এর ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা জানা যায়নি। গুজব শোনা যায় গ্র্যান্ড স্যালাইনের কাছেপিঠেই কোথাও তার সঙ্গীসাথীদের নিয়ে পানিতে তলিয়ে যান জীবদ্দশায় লুটপাট চালিয়ে ধনসম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা এই জলদস্যু।
হেনরি মরগান – বুকাঁনিয়ার সম্রাট (১৬৩৫-১৬৮৮)
বুকাঁনিয়ারদের দৌরাত্ম্য দিনদিন এতটাই বেড়ে চলছিল যে স্প্যানিশদের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। তাদের নেতা হেনরি মরগান রীতিমত উঠেপড়ে লাগলেন, এমনকি বিশাল বহর নিয়ে স্প্যানিশদেরকে পানামা উপকূল পর্যন্ত ধাওয়া করে ফিরে আসলেন। প্রায় পুরো ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দখল নিয়ে রাজত্ব করছিলেন মরগান।
বুকাঁনিয়ারদের অত্যাচারে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ব্রিটিশ জাহাজেরও চলাচলে অসুবিধা হচ্ছিল। ভুল বোঝাবুঝির কারণে ব্রিটিশ রাজা দ্বিতীয় চার্লস মরগানকে প্রথম গ্রেফতার করার নির্দেশ দিলেও পরে নাইটহুড খেতাবপ্রাপ্ত করে জ্যামাইকার গভর্নর বানিয়ে দেন। একই সাথে সব বুকাঁনিয়ারকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। মরগান গভর্নর হওয়ার পর বেশিরভাগ বুকাঁনিয়াররা ব্রিটিশ নেভিতে যোগ দেয়। আর যারা এরপরেও জলদস্যু থেকে যায়, তাদের বিরুদ্ধে মরগান স্বয়ং অভিযান পরিচালনা করেন!
কিন্তু যতই গভর্নর বানানো হোক, রক্ত থেকে জলদস্যুতার ছাপ সহজে কি মোছা যায়? জলদস্যু থাকা অবস্থায় ৫টা বিশাল বন্দরশহরে লুটপাট চালিয়ে বিশাল ঐশ্বর্য্যের মালিক হওয়া সত্ত্বেও আরও রত্নভান্ডারের সন্ধান পাওয়ার জন্য জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মেরেছেন অনেককে, এমনকি মুখের উপর বিশাল পাথরের চাই রেখে সূত্র পাওয়ার শেষ চেষ্টা করেছেন।
ব্ল্যাকবিয়ার্ড (১৬৮০-১৭১৮)
জলদস্যুর নাম শুনেছে অথচ ব্ল্যাকবিয়ার্ডের নাম শোনেনি, এরকম কাউকে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু অবাক করা হলেও সত্যি, আঠারো শতকের সবচেয়ে কুখ্যাত জলদস্যু তার জলদস্যুতা চালিয়েছিলেন মাত্র দুই বছর! ১৬৮০ সালে জন্ম নেওয়া এই ব্রিটিশ, ১৭১৪ সালে স্প্যানিশ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর অন্যন্য অনেক প্রাইভেটিয়ার্সের মতোই ভিড়ে যান জলদস্যুদের দলে। যে দলের হয়ে কাজ করতেন, তার ক্যাপ্টেন মারা যাওয়ার পর তিনিই হয়ে যান সর্বেসর্বা। এরপর ১৭১৭ সালে এক ফ্রেঞ্চ জাহাজ দখল করে তার নাম দেন ‘কুইন অ্যান’স রিভেঞ্জ’, তাতে যুক্ত করেন নানা দেশের বিশাল ৪০টি কামান! সেখান থেকেই শুরু নতুন এক অধ্যায়ের।
অন্যান্য জলদস্যুদের সহযোগীতায় পুরো ক্যারিবীয় অঞ্চলে ত্রাসের সঞ্চার করেছিলেন ব্ল্যাকবিয়ার্ড। ১৭১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে পুরো চারদিন ধরে চার্লস্টন বন্দর দখল রেখে লুটপাট চালান প্রত্যেকটা জাহাজে। এর কিছুদিন পরেই নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নরকে ভয় দেখিয়ে সাধারণ ক্ষমা আদায় করে নিয়ে অবসরের ঘোষণা দেন।
এডওয়ার্ড টিচ ওরফে ব্ল্যাকবিয়ার্ডের সবচেয়ে বড় অস্ত্রের নাম ছিল আতঙ্ক। আঠার শতকের শেষভাগেও তার নাম শুনলে কেঁপে উঠত জাহাজের নাবিকরা। তার কাপড়ের ভাঁজে সবসময় লুকিয়ে থাকত ৬টি লোড করা পিস্তল, কোমরের কাটলাস আর হাতের মাস্কেট রাইফেল তো রয়েছেই। লোকজনের মনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য দাড়িগুলো এক জায়গায় করে বেঁধে তাতে আগুন জ্বালিয়ে রাখতেন! বিশাল তিনকোণা টুপির নিচে তার জ্বলন্ত দাড়ি আর মাথার উপর তার কালো ধোয়া দেখে সবারই মনে হবে যেন স্বয়ং শয়তান দাঁড়িয়ে আছে!
অবসরে যাওয়া সত্ত্বেও আবারও সাগরের নীল আতঙ্ক হয়ে ফিরে আসেন তিনি। ১৭১৮ সালের নভেম্বর মাসে উত্তর ক্যারোলিনার ওক্রাকোক দ্বীপে ব্ল্যাকবিয়ার্ড এবং তার ১৯ সহযোগীকে অ্যামবুশ করে মেরে ফেলা হয়। ৫টা বুলেটের ক্ষত এবং ২০টারও বেশি তলোয়ারের আঘাত নিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ব্ল্যাকবিয়ার্ড। শেষমেশ জাহাজের সামনে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ব্ল্যাকবিয়ার্ডের কর্তনকৃত মস্তকটিকে।
ক্যালিসো জ্যাক র্যাকহ্যাম (১৬৮২-১৭২০)
১৭১৮ সালে জলদস্যু ক্যাপ্টেন চার্লস ভেইনকে কাপুরুষতার অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নিজেকে ক্যাপ্টেনের পদে বসান জ্যাক র্যাকহ্যাম। ক্যারিবিয়ানে বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাট বাণিজ্যিক জাহাজ লুটপাট করার পর ‘কিংস্টোন’ নামক ১২ কামানবিশিষ্ট এক জাহাজকে নিজের প্রধান জাহাজ হিসেবে ঘোষণা দেন। ১৭১৯ সালে ধরা পড়ার পর নাসাউয়ের গভর্নরের কাছে দাবি করেন যে, ভেইনের চাপে পড়ে জলদস্যু হয়েছেন এবং সাধারণ ক্ষমা করার অনুরোধ করেন। ঐ সময়েই জেমস বনি নামক এক নাবিকের স্ত্রী অ্যান বনির সাথে প্রেম করতে শুরু করেন এবং কিছুদিন পরেই তার লোকজন এবং অ্যান বনিকে সাথে নিয়ে জাহাজ চুরি করে পালিয়ে যান ক্যারিবিয়ানের অথৈ সাগরে।
জ্যামাইকার উপকূলে ছোটখাট জাহাজ আর মাছধরা নৌকায় লুটপাট চালানোর সময় পুরুষের ছদ্মবেশে থাকা মেরি রিড আটকা পড়েন ক্যালিসো জ্যাকের জাহাজে। মেরি রিড জলদস্যু অ্যানকে দেখে তার নারী পরিচয় ফাঁস করেন এবং যোগ দেন জ্যাকের দলে। ক্যালিসো জ্যাক, অ্যান বোনি আর মেরি রিডের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাহামার গভর্নর তাদের গ্রেফতার করার আদেশ দেন। ১৭২০-এর শেষের দিকে জলদস্যু ঘাতক জোনাথন বারনেটের কাছে ধরা পড়ে যায় পুরো দল। ক্যালিসো জ্যাক ফাঁসির দড়িতে ঝুললেও অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে বেঁচে যান মেরি রিড এবং অ্যান বোনি দুজনেই! ম্যারি রিড পরে জেলে পচে মরলেও অ্যান বোনি হারিয়ে যান কালের অন্তরালে।