পৃথিবীর অভ্যন্তরে অত্যন্ত উত্তপ্ত অর্ধতরল পদার্থ বিদ্যমান। হাড়িতে পানি বসিয়ে তাপ দিলে পানি যেমন নীচে থেকে উপরের দিকে একটি টগবগে প্রবাহ তৈরি করে, তেমনই পৃথিবীর অভ্যন্তরের উত্তপ্ত তরল পদার্থগুলোও নীচ থেকে উপরে প্রবাহ চক্র তৈরি করে। ভয়ানক উত্তপ্ত এসব পদার্থকে ঢেকে রেখেছে উপরের ভূমিস্তর। ভূমিস্তরের কিছু কিছু এলাকায় দৃঢ়তা ও পুরুত্ব কম। এরকম এলাকায় জন্ম নেয় আগ্নেয়গিরি। এরকম অপেক্ষাকৃত দুর্বল এলাকাগুলো দিয়ে মাঝে মাঝে অভ্যন্তরের উত্তপ্ত তরল বেরিয়ে আসে। আগ্নেয়গিরির ভেতর দিয়ে এধরনের তরল বেরিয়ে আসার ঘটনাকে বলে অগ্ন্যুৎপাত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা শান্তশিষ্টই থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝে এরা এত ভয়াবহ মাত্রায় ক্ষতিকর হয় যে এদের কারণে মারা যায় মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ। ইতিহাসের এরকম কিছু ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত সম্পর্কে তুলে ধরছি এখানে।
১০. মাউন্ট গালুঙ্গো, ইন্দোনেশিয়া
(মৃতের সংখ্যা: ৪ হাজার ১১; সংঘটন কাল: ১৮৮২)
এটি ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভায় অবস্থিত। শ্রেণীবিভাগের দিক থেকে এটি স্ট্র্যাটোভলকানো ধরনের। লাভা, আগ্নেয় ছাই ইত্যাদি একসাথে স্তরিভূত হয়ে এ ধরনের আগ্নেয়গিরি তৈরি করে। ১৮৮২ সালের অক্টোবরে এটি বিশাল গর্জনে লাভা, ছাই ও ধোঁয়া উদগিরন শুরু করে। এই তাণ্ডবে ঢাকা পড়ে যায় সেখানকার ১১৪টি গ্রাম। এর ফলে মারা যায় প্রায় ৪ হাজার ১১ জন মানুষ। মৃত্যুর কারণ ভূমি প্লাবিত কাদা এবং বাতাসে ভাসমান ধোঁয়া।
এরপর দীর্ঘদিন ধরে এটি শান্তশিষ্টই ছিল। একশো বছর পর ১৯৮২ সালে আবার এটি বড় মাত্রার অগ্ন্যুৎপাত শুরু করে এবং এতে পরোক্ষভাবে ১৮ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। কোনো কোনো সূত্র মতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৬৮-তে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে একে কিছুটা বিপদজনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পরে ঐ বছরেরই মে মাসে এটিকে আবার শান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
৯. মাউন্ট কালুত, ইন্দোনেশিয়া
(মৃতের সংখ্যা: ৫ হাজার ১১০; সংঘটন কাল: ১৯১৯)
ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এটি। শান্ত অবস্থায় এর জ্বালামুখে এত চমৎকার একটি হ্রদ তৈরি হয়েছে যে মানুষ এখানে প্রতি সপ্তাহে বেড়াতে আসে। এটিই ১৯১৯ সালে এমন মাত্রার অগ্ন্যুৎপাত ঘটায় যে এর ফলে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে। আশেপাশে প্রায় ১০০টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আশেপাশে প্রায় ৪০ কিলোমিটারব্যাপী ছিল এর প্রভাব। এই সময়ে জ্বালামুখের হ্রদ থেকে প্রায় ৩৮ মিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি উত্তপ্ত অবস্থায় চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং আচমকা বন্যার সৃষ্টি করে। এমন পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচানোর জন্য মানুষেরা যথেষ্ট সময় পাবে না এটাই স্বাভাবিক। সেজন্যই এত পরিমাণ মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল।
এটি বেশ সক্রিয় একটি আগ্নেয়গিরি। এর আগে এবং এর পরেও অনেক অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল এটি থেকে। তবে সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ ছিল ১৯১৯ সালেরটিই। এই ভয়াবহতায় চিন্তিত হয়ে সেখানকার প্রকৌশলীরা জ্বালামুখ থেকে টানেল তৈরি করার পরিকল্পনা করলেন। টানেলের মাধ্যমে হ্রদের পানি সরিয়ে নেয়া হবে বাইরে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কম হবে। এই উদ্যোগের ফলে হ্রদের উচ্চতা কমে প্রায় ৫০ মিটার। তখনকার অবস্থার প্রেক্ষিতে এই প্রকল্প বেশ উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিল। কিন্তু এত বেশি মৃত্যুর বিপরীতে এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ নেয়া ছিল সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবী।
১৯৫১ সালে এখানে আবার অগ্ন্যুৎপাত সংঘটিত হয় এবং এর ফলে হ্রদের গভীরতা ৭০ মিটার পরিমাণ বেড়ে যায়। সেখানে পানির ধারণক্ষমতা এসে দাঁড়ায় ৫০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার। ১৯৬৬ সালে এটি আবার উদগিরিত হয় এবং এর ফলে ২০০ মানুষের মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনায় ব্যথিত হয়ে আরো গভীর টানেল তৈরি করার উদ্যোগ নেন। এই টানেল এতই গভীর থেকে করা যে সেখানে পানির ধারণক্ষমতা ৫০ মিলিয়ন থেকে নেমে এসে দাঁড়িয়েছিল ১ মিলিয়ন কিউবিক মিটার।
৮. মাউন্ট ভিসুভিয়াস, ইতালি
(মৃতের সংখ্যা: ৬ হাজার; সংঘটন কাল: ১৬৩১)
ইতালির নেপলস থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় এর অবস্থান। এই আগ্নেয়গিরি ইতিহাসে অনেক বিখ্যাত। এর অগ্ন্যুৎপাতের ফলেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল পুরো পম্পেই ও হারকিউলানিয়াম নগরী। ৭৯ খ্রিস্টাব্দে এর বিখ্যাত অগ্নুৎপাতের ঘটনাটি ঘটে। ৭৯ খ্রিস্টাব্দের পরে এক ডজনেরও বেশি বার এখানে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। তবে একদম অপ্রত্যাশিতভাবেই ১৬৩১ সালের ডিসেম্বরে এটি কেঁপে উঠে। এই সময়ে আশেপাশের এলাকায় কয়েকবার করে প্রবল ভূমিকম্প বয়ে যায়। ১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ৪ দিনব্যাপী ছিল এর উদগিরণ। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তখন। ৭৯ এবং ১৬৩১ সালের দুই দুর্ঘটনায় প্রায় ৬ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল।
৭. মাউন্ট উনজেন, জাপান
(মৃতের সংখ্যা: ১৫ হাজার; সংঘটন কাল: ১৭৯২)
জাপানের শিমাবারা শহরের পাশে এটি অবস্থিত। এটি মূলত দ্বীপ প্রধান এলাকা। জাপানের ইতিহাসে অন্যতম ভয়ঙ্কর দুর্যোগ সঙ্ঘটিত হয় এখানেই। ১৭৯২ সালে এখানের আগ্নেয়গিরি প্রচণ্ডভাবে গর্জে উঠে। সমুদ্রের পাশে অবস্থিত হওয়াতে এটি একই সাথে ভূমিকম্প ও সুনামির সৃষ্টি করে। বিশেষ করে সুনামির মাত্রা হয় অত্যন্ত ভয়াবহ। একে শুধু সুনামি বললে কম হয়ে যাবে, বলতে হবে ‘মেগাসুনামি’। ভূমিকম্প ও সুনামির সম্মিলিত আঘাতে সেখানে মারা যায় ১৪ হাজার ৫২৪ জন মানুষ। এই ঘটনার আগে ও পরে এখানে কয়েকবার অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এত ভয়াবহ হয়নি কোনোটিই।
৬. নেভাদো দেল রুইজ, কলম্বিয়া
(মৃতের সংখ্যা: ২৩ হাজার; সংঘটন কাল: ১৯৮৫)
কলম্বিয়ার রাজধানী থেকে ৮০ মাইল পশ্চিমে এটি অবস্থিত। হাজার হাজার বছর ধরে এটিতে অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছে। তেমনই অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল ১৯৮৫ সালের নভেম্বরে। তীব্রতার দিক থেকে এটি বেশ দুর্বলই ছিল। কিন্তু এর ফলে প্রচুর লাভা ও উত্তপ্ত গ্যাস নির্গত হয় যা আশেপাশের গ্রাম ছেয়ে যায়। পাশাপাশি উত্তপ্ত পানিও যোগ হয় এদের সাথে। পানির ব্যাপারটিও আরেক ট্রাজেডি। নেভাদো দেল রুইজের উপরিভাগে তুষারের আচ্ছাদন ছিল। উত্তপ্ত গ্যাস ও লাভার প্রভাবে সেই তুষার গলে পানিতে রূপান্তরিত হয় এবং চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। উত্তপ্ত পানি গ্যাস এবং লাভার মাঝে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় সেখানে। মারা যায় প্রায় ২৩ থেকে ২৫ হাজার মানুষ।
এই দুর্যোগের অন্যতম দুঃখময় অধ্যায় হচ্ছে উপরের ছবির মেয়েটি। পৃথিবীর বিবেককে নাড়িয়ে দেয়া কয়েকটি ছবির মাঝে এটি একটি। ওমায়রা সেনশেজ নামে ১৩ বছরের এই মেয়েটি একটি বিদ্ধস্ত ভবনের নীচে আটকা পড়ে। প্রায় তিন দিন সংগ্রাম করে মেয়েটি মারা যায়। উল্লেখ্য অনেক বিশেষজ্ঞই বলেন উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে মৃতের পরিমাণ এত বেশি কখনোই হতো না। কর্তৃপক্ষের অবহেলাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল টানা ৬০ ঘণ্টা ধরে আটকে থেকে সংগ্রাম করা এই মেয়েটি।
৫. মাউন্ট পিলি, ফ্রান্স
(মৃতের সংখ্যা: ৩০ হাজার; সংঘটন কাল: ১৯০২)
বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত এটি। এর ভয়াবহতার মাত্রা এতই বেশি ছিল যে ঐ অঞ্চলে জান নিয়ে বেঁচে ফিরতে পেরেছে মাত্র দুই বা তিন জন। এদের মাঝে একজন বেচেছিল দুর্ভেদ্য এক জেলখানায় থাকার ফলে। জেলখানা এতই দুর্ভেদ্য যে সেখানে ভালো করে আলো বাতাসও প্রবেশ করতে পারে না। বড়ই অদ্ভুত, শাস্তির জন্য একজনকে রাখা হয়েছে কবর সদৃশ জেলখানাতে, কিন্তু ভাগ্যের কী লীলা, সকল স্বাধীন মানুষ মরে গেলেও শাস্তির জন্য রাখা মানুষ রইলো বেঁচে।
আরেকজন লোক বাস করতো শহরের একেবারে শেষ মাথায়। অনেক দূরে হওয়াতে কোনোরকমে জান নিয়ে পালিয়ে আসতে পেরেছিল। তারপরেও শরীরের বেশ কয়েকটি স্থানে পুড়ে গিয়েছিল তার। কোনো কোনো সূত্রে বলা হয়ে থাকে ঐ ঘটনায় একটি ছোট মেয়েও শরীরে আঘাত নিয়ে পালিয়ে আসতে পেরেছিল। একটি নৌকার মধ্যে করে ভেসে এসেছিল সে। তাকে পরে সেখান থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মানুষেরা।
৪. ক্রাকাতোয়া, ইন্দোনেশিয়া
(মৃতের সংখ্যা: ৩৬ হাজার; সংঘটন কাল: ১৮৮৩)
প্রায় ২০০ মেগাটন টিএনটি বিস্ফোরকের সমতুল্য শক্তিতে এটি বিস্ফোরিত হয়। ১৮৮৩ সালে সংঘটিত এই বিস্ফোরণের শব্দের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকেও তা শুনা গিয়েছিল। এই ঘটনায় প্রায় ১০ ফুট উচ্চতার সুনামির জন্ম হয়েছিল, যা উপকূলে আঘাত হেনে প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়। ১৬৫টি গ্রাম ভেসে যায় এই সুনামির ফলে। এটি থেকে নির্গত ধোঁয়া-গ্যাস বায়ুমণ্ডলে প্রায় ১৫ মাইল উচ্চতা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ফলে সূর্যের আলো প্রবেশে বাধা পড়ে এবং এর বিরূপ প্রভাব পড়ে পৃথিবীর জীবমণ্ডলের উপর। বিশ্বের সামগ্রিক তাপমাত্রা কমে গিয়েছিল। পরে এই তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে ৫ বছর লেগেছিল।
৩. মাউন্ট তামবরা, ইন্দোনেশিয়া
(মৃতের সংখ্যা: ৭১ হাজার থেকে ৯০ হাজার; সংঘটন কাল: ১৮১৫)
এতটা শক্তি নিয়ে এটি বিস্ফোরিত হয়েছিল যে এর উপরিভাগের পুরোটাই ছিটকে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৩ হাজার ফুটের আগ্নেয়গিরির উচ্চতা কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার ফুটে। ক্রাকাতোয়ার বিস্ফোরণের চেয়ে এটি ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী ছিল। বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া বায়ুমণ্ডলের ২৫ মাইল উচ্চতা পর্যন্ত উঠেছিল। ক্রাকাতোয়ার চেয়েও ১০ মাইল বেশি। পরিবেশে এর প্রভাব এতই বেশি ছিল যে প্রচণ্ড গরমের কাল জুন মাসেই তুষারপাত হয়েছিল। গ্রীষ্মকাল ছিল না বলে ১৮১৬ সাল ইতিহাসে বিখ্যাত। শুধু ইন্দোনেশিয়াতে না, সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছিল এর প্রভাব।
বিরূপ প্রভাবে কৃষকদের সকল ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। খাদ্য সংকট ও রোগ শোকে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিল।
২. হুয়াইনাপুতিনা, পেরু
(মৃতের সংখ্যা: ২ মিলিয়ন; সংঘটন কাল: ১৬০০)
এই অগ্নুৎপাতে নির্গত ছাই আশেপাশের ১০টি গ্রামকে তলিয়ে ফেলেছিল। সেখানে যতটা না ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯ হাজার মাইল দূরে রাশিয়ায়। এর বিরূপ প্রভাবে সেখানে ফসল উৎপাদন বন্ধ হয়ে দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। সেই দুর্ভিক্ষে মারা যায় প্রায় ২ মিলিয়ন মানুষ। রাশিয়ার ইতিহাসে অন্যতম দুঃখজনক অধ্যায় হচ্ছে এই দুর্ভিক্ষ। এই দুর্ভিক্ষের পেছনে যে হাজার হাজার মাইল দূরের আগ্নেয়গিরির শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে এটা অনেকদিন ধরে কেউ আঁচ করতে পারেনি। ২০০৮ সালে ভূতত্ত্ববিদদের করা এক গবেষণায় উঠে আসে যে এই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনার পেছনের মূল কারণ এই আগ্নেয়গিরি।
১. লাকি আগ্নেয়গিরি প্রণালী, আইসল্যান্ড
(মৃতের সংখ্যা: কয়েক মিলিয়ন; সংঘটন কাল: ১৭৮৩ থেকে ১৭৮৪)
আইসল্যান্ডের দক্ষিণ ভাগে অবস্থিত অনেকগুলো আগ্নেয়গিরির সমাহার এখানে। ১৭৮৩ সাল থেকে শুরু করে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত টানা ৮ মাস ব্যাপী ছিল এদের অগ্ন্যুৎপাত, যা একদমই অস্বাভাবিক। নির্গত গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল বায়ুমণ্ডলের ১০ মাইল পর্যন্ত। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে বিশাল এলাকা ঘিরে হাইড্রোজেন ফ্লোরাইড, হাইড্রোজেন ক্লোরাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড ও সালফার ডাই অক্সাইডের আস্তরণ তৈরি হয়। নিঃশ্বাস গ্রহণের বায়ু তো দূষিত হয়েছেই, পাশাপাশি এসব উপাদান বায়ুমণ্ডলে প্রক্রিয়াজাত হয়ে এসিড বৃষ্টি ঘটায়। ফলে খাদ্য শস্য নষ্ট হয়ে যায়। মাটিও দূষিত হয়ে যায়, যার কারণে নতুন ফসল ফলানো সম্ভব হয়নি। ফলশ্রুতিতে প্রচণ্ড মাত্রার দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। খেতে না পেয়ে মারা যায় কয়েক মিলিয়ন মানুষ।
তথ্যসূত্র
১. prezi.com/gozvu5hdlqj7/mt-galunggung/ ২. volcanodiscovery.com/kelud.html ৩. indonvolcano.blogspot.com/2015/04/kelud-eruption-history-kelut.html ৪. পৃথিবীর পথে পথে, তারেক অণু, ছায়াবীথি প্রকাশনী, ২০১৪ ৫. volcano.oregonstate.edu/oldroot/volcanoes/volc_images/img_unzen2.html ৬. rompedas.blogspot.com/2011/05/they-would-forget-armero-but-they-would.html ৭. volcanodiscovery.com/nevado_del_ruiz.html ৮. geology.sdsu.edu/how_volcanoes_work/Pelee.html ৯. history.com/this-day-in-history/krakatoa-erupts ১০. doi.org/10.1002%2Fscin.2008.5591740519 ১১. volcano.oregonstate.edu/laki-iceland-1783 ১২. economist.com/node/10311405 ১৩. Wikipedia: List of volcanic eruptions by death toll (May 16, 2017) ১৪. businessinsider.com/5-deadliest-volcanic-eruptions-human-history-2017-5 ১৫. heritagedaily.com/2014/08/top-10-deadliest-volcanic-eruptions/104313