ইতিহাসের সেরা ৫ আততায়ী সংগঠন

আততায়ী শুনলেই মনের কোনায় ভেসে আসে কোনো একাকী পথচারী যার পোশাকের ফাঁকে লুকিয়ে আছে সাইলেন্সার লাগানো রিভলবার কিংবা ছুরি; যার উদ্দেশ্যই হলো নিজের কিংবা মক্কেলের পথের কাঁটাকে চিরতরে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া। কিন্তু আততায়ী মানেই একাকী নয়; এদের মধ্যে অনেকেই গড়ে তুলেছিল আততায়ীদের সংগঠন; কারও গোপন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে এর চেয়ে ভালো উপায় আর হতে পারে না। চলুন শুনে নেওয়া যাক ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম আততায়ীদের গোপন সংগঠনগুলো সম্পর্কে।

বিষকন্যা

একইসাথে অপূর্ব সুন্দরী আর প্রাণঘাতী এই প্রাচীন ভারতীয় নারীদের উৎপত্তি হয়েছিল রাজাদের বিরোধিতা তাদের মধ্যেই মিটিয়ে দেওয়ার জন্য। রাজাদের পারস্পরিক বিরোধিতার জন্য সাধারণ জনগণ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে যেন অকারণ প্রাণনাশ না ঘটে তার দায়িত্ব নিয়েছিল বিষকন্যারা

বিষকন্যাদের পৃষ্ঠপোষকতার পিছনে ছিল বিভিন্ন রাজার আর্থিক সহায়তা, অর্থাৎ রাজারা নিজেরাই নিজেদের শত্রুকে শেষ করতে আগে থেকেই এদের তৈরি করে রাখত। বিষকন্যাদের বাছাই করা হতো সাধারণত ৬-৮ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে থেকে। তারপর তাদের খাবারের সাথে অল্প অল্প করে বিষ মেশানো শুরু হতো। এভাবে অল্প অল্প করে বিষ খাওয়ার ফলে তাদের শরীরে বিষের প্রতিষেধক তৈরি হয়ে যেত এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিষ খাওয়ার ফলে পরে আর কোনো বিষই তাদের উপর কাজ করতো না।

‘বিষকন্য’ ধারাবাহিকে একজন বিষকন্যা; ছবিসূত্র: Ancient Origins

সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলার মতো বিষ প্রতিরোধ করার মতো ক্ষমতা তৈরি হলে তাদেরকে পাঠিয়ে দেওয়া হতো অন্যান্য রাজার দরবারে। তার প্রথম কাজ ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজার বিশ্বাসভাজন হিসেবে নিজেকে তৈরি করা। তারপর রাজার খাবারে বিষ মিশিয়ে সেই একই খাবার নিজেও খেত সন্দেহ এড়ানোর জন্য। তারপর যা হবার তাই হতো, রাজা বিষাক্ত খাবার খেয়ে মারা যেত অন্যদিকে বিষকন্যারা বেঁচে ফিরে আসত কোনো ধরণের আঁচড় ছাড়াই। এছাড়াও বিষকন্যাদেরকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে পাঠানোর আগে তার শরীরে বিষ ঢুকিয়ে দেওয়া হতো যাতে বিষকন্যার দেহের সংস্পর্শে আসলে বিষের আক্রমণে মারা যায়।

বিষকন্যাদের ব্যাপারে প্রথম উল্লেখ করেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধানমন্ত্রী চাণক্য। ইতিহাসে একেবারে নিখুঁত প্রমাণ না পাওয়া গেলেও গুজব রটেছিল যে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট মারা গিয়েছিলেন এক বিষকন্যার সংস্পর্শে এসে! রাজা পোরাস তার হেরে যাওয়ার প্রতিশোধ নিতেই আলেকজান্ডারকে একজন বিষকন্যা উপহার দিয়েছিলেন। তবে বেশিরভাগ ইতিহাসবিদই একে গালগল্প বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ওয়্যারওলফ

১৯৪৪ সালের শেষ দিকে জার্মান প্যারা মিলিটারি ফোর্স ‘সুৎস্টাফেই’-এর কর্ণধার হাইনরিখ হিমলার উদ্যোগ নেন ‘ওয়্যারওলফ’-দের নিয়ে কাজ শুরু করার। সুৎসটাফেই আর হিটলার ইয়ুথ থেকে নেওয়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবকদেরকে নিয়েই গঠন করা হয়েছিল ওয়্যারওলফ। নাৎসি বাহিনীর কোনো এলাকা দখল করে রেখে পরবর্তী এলাকায় চলে যাওয়ার পর আত্মগোপন করে থাকা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আবার সশরীরে উদয় হওয়া ঠেকানোই ছিলো ওয়্যারওলফদের কাজ।

মিত্রশক্তি অধ্যুষিত এলাকা দখলের পর বেশিরভাগ শহরের মেয়র সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক লোকজনকে খুন করা, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা স্যাবোটেজ করা ছিল ওয়্যারওলফদের মিশন। বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে জার্মানির ব্রেমেন শহরে যুক্তরাষ্ট্রের অস্থায়ী ঘাঁটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পিছনে দায়ী করা হয় ওয়্যারওলফদেরকে; এছাড়াও প্লেন থেকে গুলি করে আখেন শহরের মেয়র ফ্রাঞ্জ ওপেনহফকে খুন করাও ছিল ওয়্যারওলফদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

‘ওয়্যারওলফ’-দের কাছে কাগজ বিতরণ করা হচ্ছে; ছবিসূত্র: DW

বাছাই হওয়া স্বেচ্ছাসেবক ওয়্যারওলফদেরকে পাঠানো হতো হালক্রাশ দুর্গের গোপন ট্রেনিং সেন্টারে; যেখানে শেখানো হতো গেরিলা যুদ্ধের সব ধরণের কলাকৌশল- শত্রুর ঘাঁটিতে অনুপ্রবেশ করা, স্যাবোটেজ করা, বিস্ফোরক পেতে রেখে শত্রু ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়া, নিখুঁতভাবে নিঃশব্দে কাজ সমাধা করে ধরা না পড়েই পালিয়ে যাওয়া, সাধারণ গৃহস্থালি জিনিস ব্যবহার করে বোমার কার্যকারিতা বাড়ানোসহ অন্যান্য জিনিস। জার্মানি আত্মসমর্পণ করার দুই সপ্তাহ আগে ওয়্যারওলফদের হেডকোয়ার্টার আবিষ্কার করে ফেলে মিত্রবাহিনীর সৈন্যরা; পরে কাগজপত্র অনুসন্ধান করে দেখা যায় যে ওয়্যারওলফরা মিত্রবাহিনী প্রধান আইজেনহাওয়ারকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আঁটছিল!

‘হিটলার ইয়ুথ’-এর কর্মীদের সাথে হাত মিলাচ্ছেন অ্যাডলফ হিটলার; ছবিসূত্রঃ: War Album

ব্ল্যাক হ্যান্ড

১৯০১ সালের অগাস্ট মাসে যখন সার্বিয়ার ১০ জন উচ্চপদস্থ সেনা সদস্য একসাথে হয়ে ‘ব্ল্যাক হ্যান্ড’ গঠন করলেন, তখন তাদের অন্তিম লক্ষ্যই ছিল সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আর হিংস্রতার মধ্য দিয়ে সমগ্র সার্বিয়াকে একত্র করা। অস্ট্রিয়ার তৎকালীন সম্রাট প্রথম ফ্রানৎজ জোসেফ এবং বসনিয়া-হার্জেগোভিনার গভর্নর জেনারেল অস্কারকে খুন করার চেষ্টা ব্যর্থ হলেও যুবরাজ আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্ডিন্যান্ডকে হত্যা পুরো বিশ্বে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বারুদে আগুন ঢেলে দেয়।

ব্ল্যাক হ্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ‘কর্নেল আপিস’; ছবিসূত্র: Pinterest

আর্চডিউককে হত্যার জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেন ক্যাবরিনোভিচ। ক্যাবরিনোভিচ যুবরাজের গাড়ির দিকে বোমা ছুড়ে মারেন, কিন্তু গাড়ির ড্রাইভার বোমা ছুঁড়ে মারতে দেখে গাড়ির গতি দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এবং বোমাটি গাড়ির পিছনের বাম্পারে ধাক্কা খেয়ে দর্শকসারির মধ্যে পড়ে। বোমা ছোঁড়ার ফলাফল না দেখেই নিজের মুখে সায়ানাইড পিল পুরে দেয় ব্ল্যাক হ্যান্ড নেতা। কিন্তু সায়ানাইড পিল কাজ না করায় সে দ্রুত সেতু থেকে পার্শ্ববর্তী নদীতে ঝাঁপ দেয়; কিন্তু নদীতে পানি কম থাকায় ক্যাবরিনোভিচকে ধরে ফেলে পুলিশ।

এদিকে ক্যাবরিনোভিচ ব্যর্থ হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ে ব্ল্যাক হ্যান্ডের অন্যান্য সদস্যরা। কিন্তু আর্চডিউককে মেরে ফেলতে দৃঢ় সংকল্প করা আততায়ীরা চুপচাপ বসে থাকার পাত্র নয়। এদিকে আর্চডিউকের নিরাপত্তার জন্য সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী অন্য পথে যাওয়ার নির্দেশ দেন। দুর্ভাগ্যক্রমে ড্রাইভারের রাস্তা পাল্টানোর খবরটা জানা না থাকায় খুন করার দ্বিতীয় সুযোগটা পেয়ে যায় ব্ল্যাক হ্যান্ডের আরেক সদস্য গ্যাভরিলো প্রিন্সিপ। যুবরাজের গাড়ি সামনে দিয়ে যেতেই দশ ফুট থেকে পরপর দুইবার গুলি ছোঁড়ে প্রিন্সিপ; একটি গুলি গিয়ে লাগে যুবরাজের ঘাড়ের শিরায়, বাকিটি গিয়ে লাগে যুবরাজের গর্ভবতী স্ত্রীর পেটে। ক্যাবরিনোভিচের মতো প্রিন্সিপের সায়ানাইড পিলও কোনো কাজ না করায় প্রিন্সিপ নিজের মাথায় গুলি করতে চেষ্টা করেন, কিন্তু তার আগেই তাকে ধরে ফেলা হয়।

বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ের দিকে সার্বিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নেন ব্ল্যাক হ্যান্ডের অপতৎপরতা বন্ধের জন্য। তারপর ব্ল্যাক হ্যান্ডের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের পর সালোনিকা ট্রায়ালে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর অবশেষে থেমে যায় কালো হাতের উত্থান।

ধরা পড়ার পর গ্যাভরিলো প্রিন্সিপ; ছবিসূত্র: BBC UK

দ্য নকমিম

নাৎসিদের হলোকাস্ট প্রোগ্রামে মারা গিয়েছিল প্রায় ৬০ লক্ষ ইহুদী, নির্যাতিত-নিষ্পেষিতদের সংখ্যা আর না-ই বা উল্লেখ করলাম। কিন্তু এর বিপরীতে শাস্তি পেয়েছিল কয়জন? নুরেমবার্গ ট্রায়ালে শেষ হয়েছিল মাত্র ২৪ জনের জীবনের গল্প, কিন্তু ৬০ লক্ষ মানুষের বিপরীতে মাত্র ২৪ জনের মৃত্যু অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প আর ডেথ ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফিরে আসা ইহুদীরা তাই গঠন করলেন আততায়ী সংগঠন ‘দ্য নকমিম (הנוקמים)’; যাদের কাজ হলো হলোকাস্টের শাস্তি থেকে পালিয়ে যাওয়া নাৎসিদের খুঁজে বের করে হত্যা করা।

দ্য নকমিম; ছবিসূত্র: All Day

হিব্রু ভাষায় নকমিম বা הנוקמים-এর মানে হলো ‘প্রতিশোধ’; ১৯৪৫ সালে হাঙ্গেরির রাজধানী বুখারেস্টে আব্বা কোভনারের হাত ধরে সংগঠিত হওয়া নকমিমরা নিজেদের কাজকে বেশ গুরুত্ব সহকারেই নিয়েছিল। ওল্ড টেস্টামেন্টের ভাষ্যমতে ‘চোখের বদলে চোখ’-এর মতো নির্দেশ বাস্তবে ফলাতেই প্রায় ৬০ লক্ষ জার্মান হত্যার পরিকল্পনা করেছিল নকমিমরা!

নকমিমদের ‘প্ল্যান এ’ ছিল নুরেমবার্গ, বার্লিন, মিউনিখ, হামবুর্গসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরের পানি সাপ্লাইয়ে বিষ মিশিয়ে দিয়ে হলোকাস্টের প্রতিশোধ নেওয়া। কিন্তু কোভনার ধরা পড়ে যাওয়ায় সেটা আর হয়ে ওঠেনি। এদিকে নকমিম সদস্য জোসেফ হারমাটজের মতে, জায়োনিস্টরা এটি হতে দেয়নি, কারণ এর ফলে পুরো বিশ্বে নাৎসিদের মতো ইহুদীদের উপরও গণহত্যার কালিমা লেগে থাকত।

কোভনারকে মিশরের জেলে পুরে দেওয়ার পর নকমিমরা ‘প্ল্যান বি’ ধরে অগ্রসর হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত নুরেমবার্গের জেলে আটক ৩০০০ ‘সুৎসটাফেই’ অফিসারের পাউরুটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয় আর্সেনিক। তিন হাজারের মধ্যে ২২৮৩ জন আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে, শেষ পর্যন্ত মারা যায় ৩০০-৪০০ জন যুদ্ধাপরাধী। এদিকে অসুস্থ হওয়া অফিসারদের অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করার পর নকমিম সেনারা তাদের দেহে কেরোসিন ঢুকিয়ে মেরে ফেলে

নকমিমের প্রতিষ্ঠাতা ‘আব্বা কোভনার’ ভাষণ দেওয়ার সময়; ছবিসূত্র: Wikipedia

হাশাশিন                                                                   

মানব ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ আততায়ীদের তালিকায় নির্দ্বিধায় সবার উপরে থাকবে হাশাশিনদের (حشاشين) নাম। আততায়ীদের ইংরেজী শব্দ ‘Assassins’ শব্দটাই তো এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের একসময়ের এই আতঙ্কদের কাছ থেকে।

একাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে হাসান-ই-সাবাহর নেতৃত্বে পারস্য আর সিরিয়ার পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় হাশাশিনরা গড়ে তোলে দুর্ভেদ্য সব দুর্গ; এগুলোর মধ্যে আলামুত পাহাড়ের দুর্গ ছিল হাশাশিনদের হেডকোয়ার্টার। হাশাশিনদের নেতা হাসান-ই-সাবাহ একইসাথে ছিলেন দার্শনিক এবং ইসমাইলিজম ধর্মপ্রচারক যা ছিল মূলত শিয়াদের একটি ভাগ। ‘পাহাড়ের বৃদ্ধ লোক’ হিসেবে পরিচিত হাশাশিনদের এই নেতা বিশ্বাস করতেন পৃথিবীতে সেই সব রাজাদের বেঁচে থাকার কোনো অধিকারই নেই যারা নিজেরা বিলাসে মত্ত রয়েছেন অথচ তার প্রজারা অনাহারে মারা যাচ্ছে। হাশাশিনদের মধ্যে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিদেরকে দেওয়া হতো ফেদাইনের মর্যাদা যাদের কাজ ছিল রাতের আঁধারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে হিসাবের খাতা থেকে নিকেশ করে দেওয়া।

হাশাশিনদের নেতা ‘পাহাড়ের বৃদ্ধ লোক’ হাসান-ই-সাবাহ; ছবিসূত্র: Assassins Creed Wikia

হাশাশিনদের হাতে প্রথম খুন হওয়ার রেকর্ড পাওয়া যায় ১০৯২ সালে; পার্সিয়ান দার্শনিক নিজাম আল মূলক হন ফেদাইনের ছুরির প্রথম শিকার। হাশাশিনদের কাছে যাদেরকে পৃথিবীতে অপ্রয়োজনীয় মনে হতো তাদেরকে সরিয়ে দিতে দ্বিধাবোধ করতো না; ক্রুসেডাররাও এর বাইরে ছিল না। হাশাশিনরা নিজেদেরকে মোটেই খুনী হিসেবে ভাবতো না, বরং নিজেদেরকে বিচারক হিসেবে মনে করে গর্ববোধ করতো! কিছুদিনের মধ্যেই হাশাশিনদের বিশ্বাস এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে তারা প্রায় ৭০টি এলাকা থেকে নিজেদের গতিবিধি পরিচালনা করতো এবং সম্পূর্ণ নিজেদের গোপন ভাষায় কথা বলতো।

মোঙ্গল খাগান মোংকে খানকে খুন করতে চেষ্টা করার আগ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ বছর ধরে হাশাশিনদের শিকার হয়েছে ২ জন খলিফা সহ অগণিত সুলতান, উজির আর ক্রুসেডার। মোংকে খানকে খুন করার চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়ার পর অদম্য মোঙ্গল বাহিনীর শিকার হয় হাশাশিনরা। হাশাশিনদের আলামুত দুর্গসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ধুলোয় মিশিয়ে দেয় চেঙ্গিস খানের উত্তরসূরীরা এবং এভাবেই শেষ হয় হাশাশিনদের রক্তলাল ইতিহাস। বিখ্যাত ভিডিও গেম সিরিজ ‘Assassins Creed’ এর প্রতিটি ঘটনাই বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা।

‘Assassins Creed’ ভিডিও গেমের একটি দৃশ্য; ছবিসূত্র: Windows Central

তো এই হলো ইতিহাসের সেরা ৫ আততায়ী গুপ্ত সংগঠনের ইতিহাস। এগুলো ছাড়াও ’৩০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গ্রুপের মাফিয়ারা মিলে তৈরি করেছিল Murder Inc. নামের গুপ্ত সংগঠন; রোমানদের খুন করার জন্য ইহুদীরা দাড় করিয়েছিল ‘সিকারি’ যারা সবসময় ‘সিকা’ নামক বিশেষ ধরণের বাঁকানো ছুরি ঢুকিয়ে দিত শিকারের বুকে।

ফিচারড ইমেজ: Ancient Origins

Related Articles

Exit mobile version