যুদ্ধের হাত থেকে মানবসভ্যতা কখনোই মুক্তি পায়নি। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ভয়াবহতা আর কোনো যুদ্ধে ছিল না। যে যুদ্ধে লড়াই করেছে বিশ্বের অধিকাংশ পরাশক্তি। যুদ্ধরত প্রত্যেক দেশ নিজ স্বার্থে নতুন নতুন যুদ্ধকৌশল রচনা করেছে।
তবে যুদ্ধ যে সবসময় সম্মুখে হয়েছে, তা কিন্তু নয়। কিছু কিছু যুদ্ধ হয়েছে শত্রুর অগোচরে। যাকে গোয়েন্দাগিরি বা গোপন অভিযান হিসেবেও অভিহিত করা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তি ও অক্ষশক্তি উভয়েই সক্রিয় গোয়েন্দা বাহিনী পরিচালনা করেছে। তবে সবশেষে যুদ্ধে জয়লাভ করেছে মিত্রপক্ষ।
মিত্রপক্ষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিল ব্রিটেন, জার্মানির সাথে যাদের সবচেয়ে বেশি লড়াই করতে হয়েছে। আর এই লড়াইয়ের প্রয়োজনে তারা কিছু গোপন অভিযান পরিচালনা করেছিল, যা আজও প্রশংসনীয়। আজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনের সিক্রেট এজেন্টদের এমনই তিনটি সেরা অভিযান তুলে ধরা হবে আজকের লেখায়।
সেন্ট নাজের অভিযান
১৯৪২ সাল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন পুরোদমে চলমান। সেই সময় বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তির যুদ্ধজাহাজ টারপিজের আত্মপ্রকাশ ঘটে। কিন্তু তা ছিল ব্রিটিশদের জন্য এক দুঃসংবাদ। কারণ এই যুদ্ধজাহাজটি ছিল হিটলারের নৌবাহিনীর সর্বশেষ সংস্করণ।
তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ভালোভাবেই জানতেন, এই জাহাজ তাদের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। যদি টারপিজ একবার আটলান্টিকের বুকে ভাসতে পারে, তাহলে তা হবে ব্রিটিশদের ধারণাতীত ক্ষতির কারণ। সে কারণে তখন চার্চিলের সকল যুদ্ধভাবনা ছিল টারপিজকে ঘিরে।
টারপিজ একদিকে যেমন ছিল দৈত্যাকার, তেমনি তার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ছিল খুবই সুদৃঢ়। বাইরে থেকে আসা যেকোনো আঘাত প্রতিহত করার সক্ষমতা যুদ্ধজাহাজটির ছিল। ফলে সরাসরি এই জাহাজে আক্রমণ করা প্রায় অসম্ভব ছিল।
এ কারণে ব্রিটিশ স্পেশাল অপারেশন এক্সিকিউটিভরা ভিন্ন উপায়ে আক্রমণের কথা ভাবেন। তারা তখন সিদ্ধান্ত নেন, যদি টারপিজে হামলা চালানো সম্ভব না হয়, তাহলে যে ডকের উপর নির্ভরশীল- সেই ডক ধ্বংস করা হবে।
পরবর্তীতে ব্রিটিশ স্পেশাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ দলের সদস্যরা জানতে পারেন, টারপিজের মতো দৈত্যাকার জাহাজ একটি মাত্র ডকইয়ার্ডে নোঙর করে মেরামত করা সম্ভব। আর তা ছিল হিটলারের নাৎসি বাহিনী নিয়ন্ত্রিত সেন্ট নাজেরের নরম্যান্ডি ডক। যদি ব্রিটিশ সেনারা এই ডকইয়ার্ড কোনোভাবে ধ্বংস করতে পারে, তাহলে টারপিজ বাধ্য হবে ইংলিশ চ্যানেল হয়ে জার্মানিতে ফিরতে।
কিন্তু এই কাজ খুব সহজ ছিল না। সেন্ট নাজের ছিল কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও ছিল বেশ শক্তিশালী। বৃহদাকার এই ডকের কাছাকাছি প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক থাকার সম্ভাবনা ছিল। ফলে এই ডকে হামলা চালানোর পরিকল্পনা বেশ ভয়ঙ্কর ছিল। কিন্তু ব্রিটিশদের সামনে অন্য কোনো উপায় ছিল না।
ব্রিটিশ সেনারা এইচএমএস ক্যাম্পবেল্টটাউন’ নামে একটি পুরোনো ডেস্ট্রয়ার বিস্ফোরক দিয়ে কানায়-কানায় পূর্ণ করেন। যে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল, তা ছিল ধীরগতির; অর্থাৎ বিস্ফোরিত হতে বেশ সময় লাগবে। একদল কমান্ডো ডকের প্রধান প্রবেশমুখে প্রবেশের আগে বিস্ফোরকগুলো সচল করে দেবেন।
এই অভিযানে যাদের বাছাই করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশই ছিল বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। এই অভিযান থেকে তাদের বেঁচে ফিরে আসার সম্ভাবনা ছিল একেবারেই ক্ষীণ। আর এই অভিযানের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিলে বিস্ফোরণের সময়ের ওপর। যদি বিস্ফোরকগুলো আগেই বিস্ফোরিত হয়, তাহলে ক্যাম্পবেলটাউন টুকরো টুকরো হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুবরণ করতে হবে প্রত্যেক সেনাসদস্যকে।
রাতের আঁধারে একটি ক্ষতিগ্রস্ত জার্মান ডেস্ট্রয়ারের ছদ্মবেশ ধরে ডকের অনুমতি চাওয়া হয়। সহজেই সেই অনুমতি মিলেও যায়। শুরুতে জার্মান সেনারা বুঝতে না পারলেও, কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তারা বুঝতে পারে। তখন চতুর্দিক থেকে গুলিবর্ষণ শুরু হয়।
খবর রটে যায়, সকাল হওয়ার আগেই ৭৫ ভাগ ব্রিটিশ কমান্ডো আহত অথবা নিহত। এরপর সকাল যখন ৭টা, তখন ক্যাম্পবেলটাউন বিস্ফোরিত হতে শুরু করে। তখন বেঁচে যাওয়া কমান্ডোদের জার্মান সেনারা এক জায়গায় জড়ো করে। তারা প্রত্যেকেই কয়েক মিনিটের প্রহর গুনছিলেন।
কিন্তু বেলা যখন ১১টা বেজে যায় তখন তারা হতাশ হয়ে ধরে নেন এই অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। জার্মান সেনারা তাদের পেটাতে থাকেন আর অপমান করতে থাকেন। ঠিক সেই মুহূর্তে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট কম্পনে স্থানীয়রা মনে করেছিল শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে।
সবশেষে ব্রিটিশদের অভিযান সেন্ট নাজের সফল হলেও এর মূল্য ছিল অনেক বেশি। তাদের প্রায় ১৫০ জনের বেশি সেনা হারাতে হয়। তবে নরম্যান্ডি ডক পরবর্তী এক দশক আর ব্যবহার করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। যে কারণে যুদ্ধের বাকি সময়ে টারপিজের আটলান্টিকে ভাসা সম্ভব হয়নি।
অপারেশন পোস্টমাস্টার
১৯৪২ সালের জানুয়ারি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিজেদের প্রথমবারের মতো প্রমাণ করার সুযোগ পায় ব্রিটিশ স্পেশাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ দল। ব্রিটিশ নৌবাহিনীর কাছে খবর আসে ‘ডাচেসা ডি’অস্তা‘ নামে একটি ইতালিয়ান ওশান লাইনার স্পেনের ফার্নান্দো পো বন্দরে আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে জাহাজটি মিত্রপক্ষের জাহাজগুলোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। আর সেই খবর চলে যাচ্ছে জার্মানির কাছে।
এর কিছুদিনের মধ্যে ডাচেসার সাথে লিকোমবা ও বুরুন্দি নামে দুটি জার্মান জাহাজ যোগ দেয়। বিষয়টি ব্রিটিশদের ভাবিয়ে তোলে। কিন্তু তারা সরাসরি হামলা করার মতো পদক্ষেপ নেবে, সেই সুযোগ ছিল না। কারণ স্পেন তখন নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। তাদের কোনো বন্দরে হামলা করা হলে ক্ষেপে গিয়ে জার্মানির সাথে যোগ দিতে পারে।
এই কারণে ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা কলিন গাবিন্সকে ভিন্ন উপায়ে ভাবতে হয়। তখন তিনি বিশেষ একটি অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেন। যে অভিযানের নাম ছিল ‘অপারেশন পোস্টমাস্টার’।
তিনি পরিকল্পনা করেন বেশ কয়েকজন এজেন্ট, স্থানীয় কারো সহায়তা আর কিছু মাইনর এক্সপ্লোসিভ দিয়ে পোতাশ্রয় থেকে জাহাজ তিনটি উধাও করে দেবেন। এতে স্পেন মিত্রপক্ষের উপর কোনো দায় চাপাতে পারবে না।
স্পেন তখন নিরপেক্ষ হলেও ফার্নান্দো পোর গভর্নর ক্যাপ্টেন ভিক্টর সানচেজ-ডিয়েজ নাৎসিদের সমর্থক ছিলেন। তার মন জোগানোর জন্য সেখানে থাকা ব্রিটিশ চরদের সহায়তায় ভিক্টর সানচেজ ও তার স্ত্রীর নজরকাড়া কিছু চিত্র সংগ্রহ করেন। যেগুলো ব্রিটিশ এজেন্টরা অপারেশনের সময় তাদের ওপর নজরদারি শিথিল করার কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছিল। এর সাথে কিছু নথিপত্র আসে, যেখান থেকে বোঝা যায়, সেই তিন জাহাজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুব বেশি কঠোর নয়।
একরাতে দুটি টাগবোটে করে ব্রিটিশ এজেন্টরা পোতাশ্রয়ে প্রবেশ করেন। সেই রাতে জাহাজ তিনটির নাবিকদের দাওয়াত করেন আবেলিনো জোরিল্লা নামের এক স্থানীয় ব্যক্তি। জোরিল্লা তিন অতিথিকে বেশ সমাদর করেন। তাদের প্রচুর পরিমাণ মদ্যপান করান।
সেই তিন নাবিকই বেশ মাতাল হয়ে যান। জোরিল্লা এই মূলত উদ্দেশ্যেই তাদের দাওয়াত করেছিলেন। কেননা তিনি ছিলেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী। ব্রিটিশ গোয়েন্দারা তাকে অভিযানে যুক্ত করেছিল।
এদিকে তিন নাবিক যখন মদ্যপানে ব্যস্ত, তখন ব্রিটিশ এজেন্টরা জাহাজের ভেতরে উঠে পড়েন। এরপর সবগুলো জাহাজের ভেতরে এবং ডকের সাথে আটকে রাখার শিকলে বিস্ফোরক দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটান। বিস্ফোরণের ফলে জাহাজগুলো ডক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাতের আঁধারে তলিয়ে যায়।
কিন্তু মদ্যপ নাবিকরা বুঝতেই পারেননি কী হচ্ছে। তারা ভেবেছিলেন আকাশ থেকে হামলা হচ্ছে। তারা আকাশে কয়েকবার গুলিবর্ষণ করেন। কিন্তু যখন বুঝতে পারেন, আকাশ থেকে কোনো হামলা হয়নি। তখন তারা জাহাজের দিকে যান। গিয়ে দেখেন তাদের জাহাজ কোথাও নেই।
এই অভিযানে ব্রিটিশ কোনো সেনা আহত বা নিহত হননি। বরং তারা সফলতার সাথে শত্রুপক্ষের তিনটি জাহাজ উধাও করে দেন স্পেনের নাকের ডগায় বসে। এই অভিযানে স্পেনের নিরপেক্ষতা ভঙ্গ হয়নি। মিত্রপক্ষও স্বীকার করেনি। কারণ সেই রাতে কোনো জাহাজ ফার্নান্দো পো বন্দরে নোঙর করেনি।
অপারেশন ব্রিডফোর্ড
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বল বিয়ারিং হয়ে উঠেছিল অন্যতম আকাঙ্ক্ষিত বস্তু। কেননা যেকোনো ধরনের ইঞ্জিন চালানোর কাজে এই ছোট ধাতব গোলাকার বলগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এই ছোট ছোট বল দিয়ে তৈরি বিয়ারিং নিয়ে ব্রিটেনের গোয়েন্দাদের রচনা করতে হয়েছিল এক দুঃসাহসিক গোপন অভিযান, যার নাম ছিল অপারেশন ব্রিডফোর্ড।
১৯৪১ সালের দিকে ব্রিটেনে বল বিয়ারিংয়ের উৎপাদন একেবারে তলানিতে চলে আসে। কারণ জার্মানি ব্রিটেনের অধিকাংশ বিয়ারিং তৈরির কারখানায় বিমান হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। জবাবে জার্মানিরও একই ধরনের ক্ষতি করেছিল ব্রিটিশ বিমান বাহিনী। ফলে ছোট বল বিয়ারিং হয়ে ওঠে যুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম।
পুরো ইউরোপে তখন একমাত্র সুইডেন সফলভাবে বল বিয়ারিং উৎপাদন করছিল। স্পেনের মতো সুইডেনও ছিল নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। তবে স্পেন যেমন জার্মানিকে সহায়তা করতে অস্বস্তিবোধ করেছে, সুইডেন তেমন বোধ করেনি। সেই কারণে তারা ব্রিটিশদের বল বিয়ারিং সরবরাহ করতে ইচ্ছুক ছিল।
তখন বাধ্য হয়েই ব্রিটিশ স্পেশাল অপারেশন এক্সিকিউটিভদের গোপন অভিযানের পরিকল্পনা করতে হয়। আজকালকার একদল গুণ্ডা এবং ভাইকিং প্রকৃতির লোক এই অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে বেশ প্রশংসা কুড়ায়।
সুইডেনে স্যার জর্জ বিনি তখন যুক্তরাজ্যের মিনিস্ট্রি অব সাপ্লাইয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার কাজ ছিল সুইডেন থেকে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম ক্রয়ের ব্যবস্থা করে সেসব দেশে পাঠানো। কিন্তু যুদ্ধে পুরোদমে শুরু হয়ে গেলে তাকে যে ভিন্ন পথে কাজ করতে হবে- তা তিনি ভালোভাবেই জানতেন। মেরু অভিযাত্রী হিসেবে বলকান অঞ্চলে বরফ শীতল পরিবেশে অভিযান পরিচালনা করার মতো যথেষ্ট সাহস জর্জ বিনির ছিল।
‘৩০-এর দশকে তুরস্ক ব্রিটেনের কাছে থেকে ৮টি মোটর গানবোট নিয়ে নিজেদের সীমান্তে মোতায়েন করেছিল। এই বোটগুলো সাধারণ মোটরবোটের চেয়ে আকারে অনেক বড় হলেও চলতে পারে বেশ দ্রুতগতিতে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রয়্যাল নেভি বোটগুলো তুর্কিদের কাছে থেকে নিয়ে আরো বেশি অস্ত্রে সজ্জিত করে।
১৯৪৩ সালের সেপ্টেম্বরে অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ এই সময় বলকান অঞ্চলে রাতের দৈর্ঘ্য অনেক বেশি। ব্রিটিশ এজেন্টরা এই সুযোগকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করে। তাদের কাছে যে মোটরবোট ছিল- তা দিয়ে সুইডেন পৌঁছাতে দুদিন সময় লাগবে। মালামাল আবার ফিরতে দুদিন। আর এই সব কাজই করতে হবে জার্মানির বলকান নেভির চোখ ফাঁকি দিয়ে।
কূটনৈতিক কারণে এসব মোটরযানে রয়্যাল নেভির কোনো সদস্য থাকা যাবে না। কারণ একবার যদি তারা জার্মানদের হাতে ধরা পড়ে, তাহলে তা হবে সুইডেনের নিরপেক্ষতাকে ভঙ্গ করা। তবে এ নিয়ে ব্রিটিশ এজেন্টদের চিন্তার কোনো কারণ ছিল না। কারণ বলকান অঞ্চলের অসংখ্য মাঝি ও জেলে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও ব্রিটেনকে সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিল।
এর মধ্যে নরওয়ের নাবিকরা নাৎসি-বিরোধী ছিল। কারণ জার্মান সেনারা তাদের দেশ দখল করার পর তাদের জীবনে দুর্গতি নেমে আসে। এই কারণে তারা যেকোনো উপায়ে নাৎসিদের জবাব দিতে প্রস্তুত ছিল। নরওয়ের একদল মাঝি নিজেদের বোট নিয়ে জার্মান আর সুইডিশ সেনাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মোট ১০ বার হানা দিয়ে মোট ৩৫০ টন বল বিয়ারিংসহ অন্যান্য ছোট সরঞ্জাম ব্রিটেনকে সরবরাহ করে। যার ফলে সুইডেনের নিরপেক্ষতা ভঙ্গের দায় যেমন ব্রিটেনের ওপর পড়েনি, তেমনি তাদের সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রয়োজন হয়নি।