প্যানিক অ্যাটাক কমাতে কী করবেন?

প্যানিক অ্যাটাক হলো এমন একধরনের আচরণ, যখন কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই মানসিক চাপ, উদ্বেগ, ভয়ের সৃষ্টি হতে পারে। কেউ ভাবে তার বোধহয় স্ট্রোক হচ্ছে, কারো মনে হয় সে দিন-দুনিয়ার বাইরে, কেউ দর দর করে ঘামে, কারো শ্বাস নিতে বেশ সমস্যা হয়। এটা যেকোনো সময় হতে পারে, যে কেউ প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হতে পারেন। সত্যি বলতে- প্রতিটি মানুষের কম-বেশি প্যানিক অ্যাটাক হররোজ  হতে পারে। এ থেকে মুক্তির উপায় তবে কী?

কেন হয় প্যানিক অ্যাটাক?

প্যানিক অ্যাটাকের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। যেকোনো ট্রমাটিক ঘটনা বা অতিরিক্ত চাপে এটা হতে পারে। পরিবারের কারো সিভিয়ার অ্যাটাক থাকলেও হতে পারে। এছাড়া হরমোনের ভারসাম্যহীনতার ফলেও এই ঘটনা ঘটতে পারে।

Image Source: Pixabay

প্যানিক অ্যাটাক কমাতে কী করবেন?

মেডিকেশন আর মেডিটেশন তো রয়েছেই প্যানিক অ্যাটাক থেকে মুক্তি পেতে। এছাড়া টকিং থেরপিও বেশ কার্যকর। এটা থেরাপিস্টের সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে আপনার স্ট্রেস আর প্যানিক অ্যাটাক কমাতে সাহায্য করে। তারা আপনাকে সহায়তা করবে কীভাবে অ্যাটাকের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবেন। 

এরপর আসে মেডিসিন বা ওষুধের কথা। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে এন্টিডিপ্রেশেন্ট মেডিসিন গ্রহণ করা যায়। তবে এই ধরনের ওষুধ কাজ করতে বেশ সময় লাগতে পারে। সর্বোচ্চ ২ মাস পর্যন্ত লাগতে পারে। যদি কাজ না করে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ বদল করা লাগতে পারে। 

জটিল পরিস্থিতিতে গেলে কিংবা আনুষঙ্গিক কোনো কারণে এগুলোতে কাজ না করলে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া যায়।

এগুলো তো গেল বাইরের সাহায্য। কিন্তু কেবল বাইরের সাহায্যেই কাজ হবে না। নিজে চেষ্টা করতে হবে। নিজে যা যা করা যায় সেটা হলো- যখন বুঝতে পারছেন আপনার অস্থির লাগছে, মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ বাড়ছে, চিন্তা বাড়ছে, তখন নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করতে হবে। জোরে জোরে শ্বাস নিন, আর ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। নিজেকে বার বার বলতে থাকুন, মনে করতে থাকুন- এই অ্যাটাক ক্ষণস্থায়ী। মাথায় রাখবেন, এটা জীবন নিয়ে নেবে না। শক্ত থাকুন, নেতিবাচক মনোভাব থেকে দূরে সরে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন।

Image source: Inomics

নিজের মনের সাথে নিজে যুদ্ধ করবেন না, এতে করে হিতে বিপরীত হতে পারে। শান্ত থাকার চেষ্টা  করতে হবে। 

ভবিষ্যতে আর যাতে না হয় সেজন্য নিয়মিত শরীরচর্চা চালিয়ে যেতে হবে। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার, অ্যালকোহল আর অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাবার পরিহার করুন, ধূমপান ত্যাগ করুন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন, নিজেকে শান্ত রাখতে ইয়োগা বা মেডিটেশন করতে থাকুন। আত্মোন্নয়নমূলক ও অনুপ্রেরণামূলক বই পড়ুন। পুষ্টিকর খাবার খান। ঘুমের অনিয়ম করবেন না। যেসব কাজে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়, সেসব থেকে দূরে থাকুন। 

প্রত্যেক মানুষের কম-বেশি প্যানিক অ্যাটাক যেকোনো সময় হতে পারে। এর কারণও নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু, যদি বুঝতে পারেন যে অ্যাটাক হতে চলেছে, তাহলে সাবধান হয়ে যেতে হবে। নিজেকে শান্ত করুন, আর যেসব বিষয়ে আলোচনা করা হলো সেগুলো মেনে চলুন।

Language: Bangla
Topic: Introduction to panic attack and what you should do if you get attacked by this
References: Hyperlinked inside

Related Articles

Exit mobile version