মানুষে মানুষে সামাজিক চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে বহুবার রাষ্ট্রের বাহ্যিক কাঠামো পরিবর্তন হয়েছে, পরিবর্তন হয়েছে রাষ্ট্রব্যবস্থা। নগর রাষ্ট্রের যুগে কিংব মধ্যযুগের সাম্রাজ্যবাদের যুগে রাষ্ট্রব্যবস্থা ছিল এককেন্দ্রিক। রাষ্ট্র পরিচালিত হতো ব্যক্তি রাষ্ট্রপ্রধানকে কেন্দ্র করে। রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে মানুষের প্রতিনিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের যুগে উত্থান ঘটেছে বহুজনের শাসনব্যবস্থার, যেটা পরিচিত গণতন্ত্র নামে।
শাসনব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয় প্রাচীন গ্রিসে। আধুনিক পরোক্ষ গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু ব্রিটেন থেকে, ধীরে ধীরে যেটা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। গত শতাব্দীতেও রাষ্ট্রব্যবস্থায় তিনটি প্রধান মতবাদ ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্থানের সাথে উত্থান ঘটে কমিউনিজমের। জার্মানি আর ইতালির মতো রাষ্ট্রগুলোতে ছিল ফ্যাসিবাদ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই পতন ঘটে ফ্যাসিবাদের, কমিউনিজমের পতন ঘটে আরো অর্ধশতাব্দী পরে, গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে সোভিয়েতের পতনের সাথে। রাষ্ট্রব্যবস্থার একমাত্র মতাদর্শ হিসেবে টিকে যায় গণতন্ত্র। গত শতাব্দীতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশই রাষ্ট্রব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করে গণতন্ত্রকে।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো মতাদর্শ আর চিন্তার সম্মিলনে গড়ে উঠে। রাজনৈতিক দল সাধারণত সমষ্টিগত স্বার্থের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে। আবার কখনো গড়ে উঠে নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের উপর ভিত্তি করেও। আফ্রিকার দেশগুলোতে রাজনৈতিক দল গড়ে উঠে গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে। একই চর্চা আছে এশিয়ার দেশ আফগানিস্তানেও, যেখানে গোষ্ঠীপ্রধানেরাই রাজনীতির অন্যতম নিয়ামক। আবার, অনেকসময় ধর্মীয় পরিচয়ের উপরও ভিত্তি করে গড়ে উঠে রাজনৈতিক দল, সেটা সংখ্যালঘুর ধর্মকেন্দ্রিকও হতে পারে, হতে পারে সংখ্যাগুরুর ধর্মকে কেন্দ্র করেও।
গণতান্ত্রিক কাঠামোতে সাধারণত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর মূল উদ্দেশ্য থাকে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়া। নিজেদের আদর্শ রাষ্ট্রের আদর্শে রূপান্তর করা। আদর্শকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব না হলে অনেক দল বেছে নেয় বিপ্লবের পথ। ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করে অপ্রথাগত উপায়ে।
মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত দুটি প্রাধান্য বিস্তারকারী ধারা দেখা গেছে। সমাজের অভিজাত অংশের স্বার্থ আর প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধকে লালন করতে গড়ে উঠে রক্ষণশীল দলগুলো। সামাজিক সংস্কৃতি আর জনমতের ভিত্তিতে এই দলগুলো কট্টর ডানপন্থী হতে পারে, হতে পারে মৃদু ডানপন্থীও। আরেকটি ধারা রয়েছে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে। সমাজের মধ্যবিত্ত আর নিম্ন-মধ্যবিত্ত অংশের স্বার্থকে সামনে রেখে গড়ে উঠে লিবারেল দলগুলো। এরা সাধারণত মধ্যপন্থী কিংবা মৃদু বামপন্থী হয়ে থাকে। কট্টর বামপন্থা একটা সময় বিভিন্ন দেশে প্রাধান্য বিস্তারকারী ধারা ছিল, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে এদের প্রভাব ক্রমাগত কমেছে।
‘তৃতীয় বিশ্ব’ শব্দটি আসলে স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালে বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ। যেটি আসলে পুঁজিবাদী প্রথম বিশ্ব ও কমিউনিস্ট শাসিত দ্বিতীয় বিশ্বের বাইরে অনুন্নত দেশগুলোকে বুঝাতে ব্যবহৃত হতো। এই দেশগুলোর অধিকাংশই একটা দীর্ঘসময় ছিল প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উপনিবেশিক শাসনের অধীনে। এদের অর্থনীতি রয়ে গেছে কৃষিনির্ভর। ফলে, এসব দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে কম। জনগনের একটা বড় অংশ বসবাস করে দারিদ্রসীমার নিচে।
গড় মাথাপিছু আয় কম হওয়ায় নাগরিকদের ক্রয়ক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে কম। জীবনযাত্রার মানও নিম্ন। জনগণের একটা বড় অংশই শিকার হচ্ছে শিক্ষা বৈষম্যের। রয়েছে রাজনৈতিক বৈষম্য, বিকশিত হয়নি নাগরিক অধিকারের ধারণাটি। এরমধ্যে আরেকটি নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে, ব্যাপকভাবে বাড়ছে ধনী আর গরীবের মধ্যকার বৈষম্য। অধিকাংশ সম্পদ পুঞ্জীভূত হচ্ছে সমাজের অল্প কিছু মানুষের হাতে।
বর্তমান সময়ে অবশ্য একাডেমিক পরিসরে ‘তৃতীয় বিশ্ব’ টার্মের ব্যবহার কমছে। তার বদলে অনুন্নত, উন্নয়নশীল, স্বল্পোন্নত ইত্যাদি টার্মগুলো ব্যবহার করা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম
গণতান্ত্রিক কাঠামোতে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম সাধারণত ক্ষমতায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়, আবর্তিত হয় ক্ষমতায় গেলে টিকে থাকাকে কেন্দ্র করে।
প্রথমত, একক স্বার্থ বা আদর্শকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার মূল উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করতে জনগণের সাথে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করে। চেষ্টা করে দলের সমর্থক আর কর্মীসংখ্যা বৃদ্ধির। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিযোগিতামূলক দলীয় কাঠামো তৈরি করে এবং জনগণের সামনের সম্ভাবনার অবকাঠামো তৈরি করে।
দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলো রাষ্ট্রের নাগরিকদের বৈধ পথে ক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়। নাগরিকদের সুযোগ করে দেয় রাজনীতিকে ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণের। অর্থাৎ, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণ এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করে।
তৃতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলো অনেকসময় গোষ্ঠীকে কেন্দ্রে করে গড়ে উঠে, প্রতিনিধিত্ব করে গোষ্ঠীর স্বার্থকে। এ ধরনের রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে উঠে। রাষ্ট্রব্যবস্থায় প্রথাগত মতবাদের বাইরে অন্য কোনো মতাবাদের চর্চা করে না। এদের মূল লক্ষ্য থাকে দেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে ক্রিয়াশীল অনেকগুলো গোষ্ঠীকেন্দ্রিক দলের মধ্যে থেকে নিজের গোষ্ঠীর স্বার্থকে সুরক্ষিত করা ও নিজের গোষ্ঠীকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিনিধিত্ব করা। এসব দল প্রতিযোগিতামূলক দলীয় কাঠামোর চেয়ে যুগ যুগ ধরে বিরাজমান গোষ্ঠীর নেতৃত্ব নির্বাচনের ধারাকেই অনুসরণ করে।
চতুর্থত, রাজনৈতিক দলগুলোর লক্ষ্যই থাকে ক্ষমতায় গেলে নিজের দলীয় আদর্শের আলোকে কিংবা নিজের দলীয় স্বার্থের অনুকূলে পলিসি তৈরি করা। অনেকসময় ক্ষমতার বাইরে থেকেও রাজনৈতিক দলগুলো প্রভাব বিস্তার করে সরকারের ক্ষমতার কাঠামোতে।
এইভাবেই রাজনৈতিক দলগুলো তাদের রাজনৈতিক স্বার্থকে সামনে রেখে বিপুল সংখ্যক মানুষকে একীভূত করে তাদের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে। জাতিরাষ্ট্রের কাঠামোর সাথে যেহেতু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে গেছে, সেহেতু জাতিরাষ্ট্রের সাথে নাগরিকদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা তৈরিতেও রাজনৈতিক দলগুলোর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
দলীয় সংস্কৃতি
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো দীর্ঘ সময় ছিল ব্র্যান্ডিট লাইনের উত্তরের রাষ্ট্রগুলোর উপনিবেশিক শাসনের অধীনে। ফলে এই দেশগুলোতে রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ কম হয়েছে। গত শতাব্দীতে অধিকাংশ দেশ স্বাধীনতা পেলেও এদের মধ্যে অনেকগুলো দেশ ছিল স্বৈরশাসনের অধীনে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বব্যাপী সামরিক শাসকদের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। দক্ষিণ এশিয়া, সাব-সাহারান আফ্রিকান দেশগুলো সহ তৃতীয় বিশ্বের প্রায় সকল দেশই শাসনব্যবস্থা হিসেবে গৃহীত হয়েছে গণতন্ত্র। প্রথম আর দ্বিতীয় বিশ্বের মতো এসব দেশেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে রাজনৈতিক দলগুলো। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোতে তাদের কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে মোটাদাগে কিছু সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।
রাজনৈতিক অবতারবাদ
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে রাজনৈতিক নেতার সমর্থকেরা সাধারণত তাদের নেতার কথাকে অব্যর্থ মনে করেন। তারা নেতার আদর্শকে সবকিছুর উর্ধ্বে বিবেচনা করেন এবং বিশ্বাস করেন, তাদের নেতা কোনো ভুল করতে পারেন না। রাজনীতিবিদ্যায় এই অবস্থাকে বলা হয় রাজনৈতিক অবতারবাদ। এই অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান সীমাহীন ক্ষমতা উপভোগ করেন দলের মধ্যে। সীমাহীন ক্ষমতা উপভোগ করেন নির্বাচনে জিতে রাষ্ট্রক্ষমতা পেলেও। রাজনৈতিক নেতাদের এই অবতারবাদের সংস্কৃতির উত্থানের বীজ বপন করা হয়েছে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর সংবিধানে, যেখানে সরকারপ্রধানকে দেওয়া হয়েছে অসীম ক্ষমতা। এই ক্ষমতাকে ব্যালেন্স করার মতো, বিকেন্দ্রীকরণ করার মতো কোনো প্রতিষ্ঠান তৃতীয় বিশ্বে গড়ে না উঠায় অবতারবাদের উত্থান ঘটে।
পরিবারতন্ত্র
সত্যিকার অর্থে, গত শতাব্দীতে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে শাসনব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হলেও, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে এসব দেশে অধিকাংশতেই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিকশিত হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এসব দেশে সামন্তবাদ ও জমিদারতন্ত্রের যে প্রথা ছিল, সেটাই পরিবর্তিত রূপে জায়গা করে নিয়েছে গণতান্ত্রিক কাঠামোতে। রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ পর্যায় থেকে একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দেখা যায় পরিবারতন্ত্রকে লালন করতে। গোষ্ঠীভিত্তিক যেসব রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হয়, সেগুলোতেও থাকে এই পরিবারতন্ত্রের প্রভাব।
আন্তর্জাতিক মিত্র
জাতিরাষ্ট্রের এই যুগে এসে রাষ্ট্রের ধারণাটি একটি কাঠামোগত রূপ পেয়েছে। রাষ্ট্র গঠনের অত্যাবশকীয় চারটি উপাদানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সার্বভৌমত্ব। যে ধারণাটি অন্য রাষ্ট্রের প্রভাব আর হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার উপর কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো সাধারণত আকারে ছোট এবং এদের নিজেদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করার মতো উপযুক্ত সামরিক বাহিনী নেই। নেই সামরিক বাজেটও। ফলে, প্রতিরক্ষার জন্য এদেরকে নির্ভর করতে হয় পরাশক্তির উপর। ক্ষমতায় থাকলে কিংবা ক্ষমতার বাইরে থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলো আন্তর্জাতিক মিত্র তৈরি করে রাখে।
স্বার্থগোষ্ঠী
এরিস্টটল গণতন্ত্রকে ব্যাখা করেছেন চতুর দরিদ্রদের সম্পদ অর্জনের উপায় হিসেবে। এই উক্তির একটা ক্লাসিক উদাহরণ হতে পারে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো। এদের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে। রাজনৈতিক দলগুলোতে সমাবেশ ঘটছে চতুর দরিদ্রদের, যারা দূর্বল রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সুযোগ নিয়ে গড়ে তুলছে বিপুল সম্পত্তি। ব্যবসায়ী শ্রেণিও বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক দলগুলোকে ফান্ডিং করে সহায়তা করেন নির্বাচনকালীন সময়ে, যাতে ভবিষ্যতে সরকার গঠন করলে তাদের অনুকূলে নেওয়া হয় সরকারি পলিসি। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য একাডেমিক পরিসরে তৃতীয় বিশ্বের গণতন্ত্রকে কতিপয়তন্ত্রের সাথেও তুলনা করা হয়।
সামরিক বাহিনীর প্রভাব
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে সাংগঠনিক কাঠামো আর একতাবদ্ধ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া থাকায় সামরিক বাহিনীগুলো রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে থাকে গুরুত্বপূর্ণ পলিসি মেকার হিসেবে। ফলে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যাওয়ার জন্য এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে বিভিন্ন সময়ে সামরিক বাহিনীর সাথে আসতে হয় অদৃশ্য বোঝাপড়ায়।