রাষ্ট্র নামক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পর থেকে মানুষের রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, মতবিরোধ হয়েছে, অনেক সময় আদর্শিক ভিন্নতা ঠেলে দিয়েছে রাজনৈতিক সংঘাত আর চিরস্থায়ী রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের দিকে। আদর্শকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব মানবসভ্যতার সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে থাকা এক বিষয়। গত শতাব্দীর আন্তর্জাতিক রাজনীতির চিত্রের দিকে তাকালেও আমরা এই বিষয়টি প্রত্যক্ষ করতে পারব। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আদর্শিক সংঘাত হয়েছে গণতন্ত্র, কমিউনিজম এবং ফ্যাসিবাদের মধ্যে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে একইরকম আদর্শিক সংঘাত চলেছে গণতান্ত্রিক বিশ্ব আর কমিউনিস্ট দেশগুলোর মধ্যে। অর্ধ-শতাব্দীব্যাপী এই আদর্শিক লড়াইয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কমিউনিস্ট বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন। অর্ধশতাব্দীব্যাপী চলা এই রাজনৈতিক বিরোধ বিভিন্ন সময় স্তিমিত হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে আবার তুঙ্গে উঠেছে, দুই পক্ষেরই করদাতাদের বিশাল অর্থ খরচ করতে হয়েছে এই সংঘাতে।
নব্বইয়ের দশকে কমিউনিজমের পতন ঘটার পর, ফ্রান্সিস ফুকুয়ামো আদর্শকেন্দ্রিক সংঘাতের সমাপ্তি ঘোষণা করলেও, রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ বলছে, মানুষের রাজনৈতিক আদর্শকেন্দ্রিক মতপার্থক্য, মতবিরোধ এখনো চলছে। আবার, যেহেতু মানুষের রাজনৈতিক আদর্শ অনেক সময়ই যেহেতু অর্থনৈতিক স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হয়, সেজন্য অর্থনৈতিক কাঠামোকে কেন্দ্র করেও চলে আদর্শিক বিতর্ক, মতবাদকেন্দ্রিক মতবিরোধ। এ রকমই একটি রাজনৈতিক অর্থনৈতিক মতবাদ হচ্ছে সোশ্যাল ডেমোক্রেসি।
সোশ্যাল ডেমোক্রেসি কী?
সোশ্যাল ডেমোক্রসি একটি রাজনৈতিক পরিচয়ের অংশ। সাধারণত, মার্ক্সবাদের বাইরে বামপন্থী এবং অর্থনৈতিক সংস্কারপন্থী রাজনৈতিক গ্রুপকে সোশ্যাল ডেমোক্রেট বলা হয়। আদর্শিকভাবে সোশ্যাল ডেমোক্রেসি মডারেট কনজারভেটিজমের চেয়ে খুব বেশি আলাদা হয়, বরং এই দুই রাজনৈতিক মতবাদের মধ্যে আদর্শিক পার্থক্য সামান্যই।
বেশকিছু মৌলিক ভিত্তির উপর রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে ডেমোক্রেটিক সোশালিজম দাঁড়িয়ে আছে। এটি মূলত অর্থনৈতিক কাঠামোর উপর একটি রাজনৈতিক মতবাদ। এই আর্টিকেলে সোশ্যাল ডেমোক্রেসির মৌলিক ভিত্তিগুলোর পাশাপাশি সোশ্যাল ডেমোক্রেসির সাথে প্রথাগত সোসালিজমের পার্থক্যগুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
সোশ্যাল ডেমোক্রেসির মৌলিক ভিত্তি
প্রথমত, সোশ্যাল ডেমোক্রেসি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সাম্য নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রের অতিধনীদের উপর উচ্চহারে কর আরোপ করে, তুলনামূলকভাবে কম হারে কর আদায় করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছ থেকে। পুঁজিবাদী কাঠামোতে যেভাবে অতিধনীদের বিভিন্নভাবে কর ছাড় দেওয়া হয়, সোশ্যাল ডেমোক্রেসিতে সেটি করা হয় না। বরং, অতিধনী, বহুদেশীয় কোম্পানি ও বিলাসদ্রব্যের উপর উচ্চহারে কর আরোপ করেই রাষ্ট্রগুলো প্রয়োজনীয় রাজস্বের সিংহভাগ সংগ্রহ করে থাকে।
দ্বিতীয়ত, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দেশগুলোতে সাধারণত স্বাস্থ্যখাত সরকারের অধীনে থাকে, নাগরিকদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। সকল ধরনের চিকিৎসা, ঔষধ ও পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যয়ভার রাষ্ট্র বহন করে থাকে। অতিধনী কিংবা অতিগরিব, রাষ্ট্রের সকলকে একই অবকাঠামো থেকে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে হয়।
তৃতীয়ত, সোশ্যাল ডেমোক্রেসিতে সাধারণত সামাজিক সুরক্ষা বলয় রাষ্ট্রের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়, রাষ্ট্র সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের উপর বিপুল বিনিয়োগ করে, রাজস্বের একটি সিংহভাগ বরাদ্দ দেয় এই খাতে। ফলে, যেকোনো নাগরিক অসুস্থতা বা অন্য সামাজিক প্রয়োজনে, রাষ্ট্রের কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারে, সুরক্ষা বলয়ের মাধ্যমে কঠিন সময়টি কাঁটিয়ে ফিরতে পারে অর্থনীতির মূল স্রোতে। অতিধনী ব্যবসায়ী বা জমির মালিকদের কাছ থেকে কর হিসেবে আদায় করা অর্থ এই সামাজিক সুরক্ষা বলয় নির্মাণের কাজে ব্যয় করে সোশ্যাল ডেমোক্রেট দেশগুলো।
চতুর্থত, সোশ্যাল ডেমোক্রেসিতে সাধারণত প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকে, সরকারি অর্থায়নের মাধ্যমে চলে। রাষ্ট্রের সকলের সেই অবকাঠামো থেকে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা বিনামূল্যে গ্রহণ করার সুযোগ থাকে। মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা বলতে কলেজ পর্যন্ত শিক্ষাকে বুঝানো হয়ে থাকে। শিক্ষার বাণিজ্যকরণ রুখে দিয়ে, একই ধরনের অবকাঠামো এবং একই সুবিধার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সকলের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ হয়, সেটি কার্যকরভাবে প্রত্যেক নাগরিককে তার স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়, অর্থনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের সুযোগ করে দেয়, প্রতিষ্ঠা করে সকলের মধ্যে সাম্যের ধারণা।
সমাজতন্ত্র ও সোশ্যাল ডেমোক্রেসির মধ্যে পার্থক্য
রাজনৈতিক অর্থনৈতিক মতবাদ হিসেবে সোশ্যাল ডেমোক্রেসির শেকড় অবশ্যই সমাজতন্ত্রের মধ্যেই। কিন্তু, বর্তমান সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সোশ্যাল ডেমোক্রেসি ঘরানার রাজনৈতিকদের উত্থান সত্ত্বেও, অনেকেই সমাজতন্ত্র এবং সোশ্যাল ডেমোক্রেসিকে একই রাজনৈতিক আদর্শ মনে করেন। এ কারণেই, অনেক সোশ্যাল ডেমোক্রেটদের সমাজতন্ত্রী হিসেবে রাজনৈতিকভাবে আক্রমণ করা হয়।
তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক কাঠামো, দুই জায়গাতেই সমাজতন্ত্র ও সোশ্যাল ডেমোক্রেসির মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। এগুলোর ব্যাপারে আলোচনা করা হলো।
প্রথমত, সমাজতন্ত্রে সাধারণত সামাজিক বা সামষ্টিক মালিকানার মাধ্যমে সম্পদের বণ্টন হয়, উৎপাদিত পণ্য আর উৎপাদনের পরিমাণ রাষ্ট্র নির্ধারণ করে দেয়। এই সীমাহীন ক্ষমতা চর্চার সুযোগ থাকায়, সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে সাধারণত কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসকের উত্থান ঘটে। সোশ্যাল ডেমোক্রেসির অনুসারীরা যেকোনো ধরনের কর্তৃত্ববাদী এদবং স্বৈরাচারী শাসনের বিরোধিতা করেন।
দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষপাতিও তারা সোশ্যাল ডেমোক্রেটরা। বরং, সোশ্যাল ডেমোক্রেটরা উৎপাদনের স্বাধীনতা এবং কর্ম পছন্দের স্বাধীনতার পক্ষে রাজনৈতিকভাবে সোচ্চার। সমাজতন্ত্রে সাধারণত এই সুযোগগুলো থাকে না।
তৃতীয়ত, পরিপূর্ণ সমাজতান্ত্রিক কাঠামোতে সাধারণত বড় বড় এবং প্রধান প্রধান শিল্পগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীনে থাকে, ব্যাংক ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণও থাকে রাষ্ট্রের হাতে। এই জায়গাতেও সোশ্যাল ডেমোক্রেটরা ব্যতিক্রম। সোশ্যাল ডেমোক্রেসিতে সাধারণত শিল্পের জাতীয়করণ করা হয়, প্রধান প্রধান শিল্পগুলোকে রাষ্ট্রীয় মালিকানার অধীনে নেওয়া হয় না। বরং সেগুলো থাকে ব্যক্তিমালিকানার অধীনে, ব্যক্তি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুযোগও তৈরি হয় এই কাঠামোর মাধ্যমেই, সেটি সমাজতন্ত্রে সম্ভব নয়।
চতুর্থত, সোশ্যাল ডেমোক্রেসিতে শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা বলয়ে তৈরি করা হয়, যেটি সমাজতন্ত্রে সম্ভব হয় না। বরং, সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের যে ক্ষুদ্র কার্যক্রম সমাজতন্ত্রী দেশগুলোতে নেওয়া হয়েছে অতীতে, অধিকাংশ কার্যক্রমই দূর্নীতির কারণে ব্যর্থ হয়েছে।
সোশ্যাল ডেমোক্রেসির বিকাশ
প্রকৃতির রাজ্যের অনাচার থেকে বের হয়ে এসে মানুষ রাষ্ট্র নামক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিল নিরাপত্তার ধারণাকে কেন্দ্র করে। সময়ের সাথে রাষ্ট্রের আকার আর কার্যাবলিতে পরিবর্তন এসেছে, আধুনিক সময়ে এসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কল্যাণরাষ্ট্রের ধারণা। কল্যাণরাষ্ট্রে রাষ্ট্র সকল নীতি নেয় নাগরিকদের কল্যাণকে কেন্দ্র করে, নাগরিকদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ধারণাকে কেন্দ্র করে। কল্যাণরাষ্ট্রের ধারণারই একটি অংশ হচ্ছে সোশ্যাল ডেমোক্রেসি।
বর্তমান সময়ে নরডিক দেশগুলোতে সোশ্যাল ডেমোক্রেসির চর্চা রয়েছে, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেন তাই হয়ে উঠেছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের শীর্ষ পছন্দের অঞ্চলে। নরডিক দেশগুলোর বাইরে কানাডা, অস্ট্রিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্সের মত দেশগুলোতে সোশ্যাল ডেমোক্রেসির চর্চা রয়েছে। এসব দেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সকলের জন্য উন্মুক্ত, শিক্ষাব্যবস্থায় সকলের প্রবেশাধিকার রয়েছে, রয়েছে শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা কাঠামো।
এই দেশগুলোর মধ্যে সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্রসি বিশ্লেষকদের মিশ্র তথ্য দিচ্ছে। ডানপন্থী রক্ষণশীলদের ভাষায় সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্রসি ব্যর্থ হয়েছে, বাম ঘরানার উদারপন্থীদের দৃষ্টিতে সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্রসি কল্যাণরাষ্ট্রের নূন্যতম ধারণাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারছে। সুইডেনে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা রয়েছে, সকলের জন্য রয়েছে বিনামূল্যের শিক্ষা, রয়েছে বিস্তৃত সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম। ফলে, সোশ্যাল ডেমোক্রেটদের দৃষ্টিতে, সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্রেসি ন্যূনতম লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
কানাডা বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। এর কারণ, কানাডা নিজেকে সোশ্যাল ডেমোক্রসির মাধ্যমে কল্যাণরাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। কানাডাতেও অন্যান্য সোশ্যাল ডেমোক্রেট দেশের মতো সার্বজনীন শিক্ষা, স্বাস্থ্যের সুযোগ রয়েছে, রয়েছে শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা কাঠামো।
বর্তমান সময়ে সোশ্যাল ডেমোক্রেসিকেন্দ্রিক আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত কয়েক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের একটা বিরাট অংশের মধ্যে আদর্শিক পরিবর্তন হয়েছে, এই গ্রুপটির রাজনৈতিক চাপে যুক্তরাষ্ট্রও হাঁটছে সোশ্যাল ডেমোক্রেসির পথে। বার্নি স্যান্ডার্সের পর যুক্তরাষ্ট্রে সোশ্যাল ডেমোক্রেসির সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন আলেকজান্দ্রো ওকাজিও কর্তেজ, সংক্ষেপে যিনি পরিচিতি পেয়েছেন এ.ও.সি হিসেবে। এরইমধ্যে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে সর্বকনিষ্ঠ আইনপ্রণেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কর্তেজ, তাকে দেখা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট হিসেবে। স্যান্ডার্স আর কর্তেজের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এলিজাবেথ ওয়ারেনের মতো বেশকিছু বড় নাম আছে সোশ্যাল ডেমোক্রেট হিসেবে, ধীরে ধীরে তারা চলে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির মূলধারায়।
গতবারের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল সোশ্যাল ডেমোক্রেসির ধারণা, এরজন্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রত্যাশী জো বাইডেনকেও নির্বাচনকালে দিতে হয়েছে বেশকিছু সোশ্যাল ডেমোক্রেসি ঘরানার প্রতিশ্রুতি। এর ফলে, যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে, হচ্ছে দ্বিগুণ। স্বাস্থ্যসেবা সরকারিকরণের দাবি এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জোরালো হচ্ছে, বাড়ছে এই ইস্যুতে নাগরিক সমর্থন। কলেজ পর্যন্ত শিক্ষাকেও সকলের জন্য উন্মুক্ত এবং বিনামূল্যে করে দেওয়ার আলোচনা চলছে।