নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি ঘটে, শাসনব্যবস্থা হিসেবে পতন ঘটে কমিউনিজমের। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে কমিউনিজমের ব্যর্থতা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি নিশ্চিত করে, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে তৈরি হওয়া রিপাবলিকগুলোতে শুরু হয় গণতন্ত্রায়নের প্রক্রিয়া। অর্থনৈতিক কাঠামোতেও শুরু হয় বিবর্তন; কমিউনিস্ট দেশগুলোতে প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করে ক্যাপিটালিজম (পুঁজিবাদ)। অধুনালুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় রিপাবলিক রাশিয়াতেও শুরু হয় পুঁজিবাদী বিবর্তন।
পুঁজিবাদী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সাথে কিছু মৌলিক পরিবর্তনের প্রশ্ন জড়িয়ে থাকে। সম্পদের ব্যক্তিগত মালিকানার স্বীকৃতি দিতে হয়, বাজারকে ছেড়ে দিতে হয় চাহিদা আর যোগানের মতো প্রভাবকগুলোর উপর। কমিউনিজম থেকে পুঁজিবাদে প্রবেশের দুটি প্রধান দিক রয়েছে: শক থেরাপি আর গ্রেডুয়ালিজম। শক থেরাপিতে দ্রুত অর্থনৈতিক উদারীকরণ হয়, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে দ্রুততম সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প-কারখানাগুলো বেসরকারি খাতে দিয়ে দিতে হয়। গ্রেডুয়ালিজমে ধীরে ধীরে মনিটরিং আর রেগুলেটরি ফ্রেইমওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে কমিউনিজম থেকে পুঁজিবাদে প্রবেশ করা হয়। বরিস ইয়েলৎসিনের অধীনে থাকা রাশিয়া অনুসরণ করে শক থেরাপি।
রাশিয়াতে পুঁজিবাদের প্রবেশ
প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিনের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলোর বেসরকারিকরণ। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইয়োকোস তেল কোম্পানি যায় মিখাইল খোদরোকোভস্কির মালিকানায়, সিবনেফট তেল কোম্পানির মালিকানা যায় বরিস বেরেযোভস্কির হাতে। নিকেল, অ্যালুমিনিয়ামের মতো খনিজ উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান নরিলস্ক নিকেল যায় ভ্লাদিমির পতানিনের মালিকানায়। রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থাকা কোম্পানিগুলোর বেসরকারি মালিকানায় যাওয়ার প্রক্রিয়া দুর্নীতিগ্রস্ত হলেও বেসরকারি মালিকানায় যাওয়ার পর থেকেই কোম্পানিগুলো অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করে।
নব্বইয়ের দশকে প্রথম কয়েক বছর উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যক্ষ করে রাশিয়া, মুদ্রাস্ফীতি ছুঁয়ে যায় ২,৫০০ শতাংশ পর্যন্ত। রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি ছিল অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতাও। কিন্তু, দ্রুতই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে মুদ্রাস্ফীতি ফিরে আসে এক অঙ্কের ঘরে। বেসরকারিকরণের সুফল রাশিয়া পুরোপুরি পেতে শুরু করে নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে, রাশিয়ান অর্থনীতি এশিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইসিসকে পার করে সফলভাবেই। ২০০০ সালের প্রথম সপ্তাহে পুতিন যখন ক্ষমতায় আসেন, রাশিয়ার অর্থনীতিতে ততদিনে সুবাতাস বইছে। পরের কয়েক বছর রাশিয়ার অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয় গড়ে ৭ শতাংশ করে। অর্থনীতি ভালো কাজ করায় রাশিয়ায় বাড়ে সাধারণ নাগরিকদের জীবনমান, জনপ্রিয়তা বাড়ে নেতৃত্বে থাকা পুতিনের, অ্যাপ্রুভাল রেটিং ওঠে ৮০ শতাংশের উপর। রাশিয়াতে আসতে শুরু করে বিদেশী বিনিয়োগ, রাশিয়া সদস্য হয় ব্রিকসের মতো বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্থার।
পুতিনের রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদ
নব্বইয়ের দশকে রাশিয়াতে কমিউনিজমের পতন ঘটলেও কমিউনিস্ট রেজিমের সময়ে নেওয়া অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোর লিগ্যাসি বহন করছিল রাশিয়ার অর্থনীতি। সোভিয়েত আমলে তৈরি হওয়া অধিকাংশ শিল্প-কারখানা ছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলে, স্বনির্ভরতার নামে তৈরি হয়েছিল এমন সব শিল্প যেখানে রাশিয়ার শ্রমিকদের দক্ষতা নেই। দুটো কারণেই রাশিয়ার শিল্প-কারখানাগুলোতে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছিল, রাশিয়ান শিল্পগুলো বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছিল। ফলে, পুতিনের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কর রাজস্বের অভাব শুরু থেকেই ছিল। পুতিন এই সমস্যার সমাধান করলেন নতুন এক অর্থনৈতিক মডেলে, যেটি পরিচিত রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদ নামে।
ক্ষমতা নিয়েই পুতিন তাই তেল আর গ্যাসের কোম্পানিগুলোকে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেন। রাশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল আর গ্যাসের প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের বোর্ডের প্রধান হিসেবে নিয়ে আসেন নিজের বিশ্বস্ত দিমিদ্রি মেদভেদেভকে, কোম্পানিটির সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন পুতিনের অনুগত আলিস্কি মিলার। নব্বইয়ের দশকে গ্যাজপ্রমের বেসরকারিকরণ হলেও পুতিনের অধীনে সেটি আবার পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে ফিরে আসে। পুতিন ক্ষমতায় আসার সময় তেলের ব্যবসায় রাষ্ট্রের স্বত্ব ছিল ১০ শতাংশ, ২০০৮ সালের মধ্যেই যেটি দাঁড়ায় ৪২ শতাংশে।
পুতিন শুরু থেকেই বিশ্বাস করেছেন, রাশিয়ার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন, প্রয়োজন নাগরিকদের জীবনমানের উন্নয়নের। রাশিয়ার মতো অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন শক্তিশালী রাষ্ট্র, প্রয়োজন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের উপস্থিতি। ফলে, পুতিন একদিকে যেমন শক্তিশালী রাষ্ট্র তৈরি করেছেন, অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাতগুলোতে বসিয়েছেন নিজের অনুগত আর বিশ্বস্ত লোকদের। তেল, গ্যাস, যোগাযোগ, সামরিক শিল্প, অর্থ আর মিডিয়ায় নিজের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন পুতিন; কৌশলগত সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাধ্যমে ক্রিয়াশীল স্বার্থগোষ্ঠীগুলোর উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। একদিকে যেমন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তুলেছেন, অন্যদিকে অর্থনৈতিক স্বার্থগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার অলিখিত নিয়মগুলোও পুতিনই তৈরি করেছেন।
পুতিন প্রেসিডেন্সির শুরুতে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর অধীনে শক্তিশালী বাজারভিত্তিক অর্থনীতিকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু, সময়ের সাথে রাজনৈতিক জটিলতা অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটাতে হয়, অভিজাত গোষ্ঠীকে নিয়ে আসতে হয় নিজের নিয়ন্ত্রণে। পুতিন যে অর্থনীতির উপর শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যাচ্ছেন, সেটি বোঝা যায় ২০০৩ সালের অক্টোবরেই। সেসময় বিলিয়নিয়ার মিখাইল খোদরকোভস্কিকে গ্রেপ্তার করেন পুতিন, বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে বাড়ান আনুগত্য আর নিয়ন্ত্রণ।
পুতিনের নিয়ন্ত্রণে থাকা রুশ পুঁজিপতিরা
রাশিয়াতে পুঁজিপতিরা কৌশলগত শিল্পগুলোর নিয়ন্ত্রণ করেন, তাদের মালিকানাতেই রয়েছে বড় বড় কর্পোরেশনগুলো। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের সময় রাশিয়াতে কোনো বিলিয়নিয়ার ছিল না। বর্তমানে বিলিনিয়র আছেন ১১০ জন, যারা রাশিয়ার সম্পদের ৩৫ শতাংশের মালিক। ক্ষমতা গ্রহণের পরে পুতিনের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পুঁজিপতিদের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করা, পুঁজিপতিদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ব্যবহার করা। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুতিনকে সহযোগিতা করে ফেডারেল সিকিউরিটি ব্যুরোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা, তার ছিল সেন্ট পিটার্সবার্গের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও। ফলে, পুঁজিপতিদের মধ্যে চলা প্রতিযোগিতা আর মিথস্ক্রিয়ার ব্যাপারে একটা ধারণা পুতিনের আগে থেকেই ছিল।
ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম ছয় মাসে পুতিন পুঁজিপতিদের ব্যাপারে দুটি পদক্ষেপ নেন। প্রথমত, প্রধান দুটি টিভি চ্যানেলের মালিকানা নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন, চ্যানেলগুলোর ব্যবস্থাপনার পদে বসান নিজের অনুগত লোকদের। দ্বিতীয়ত, রাশিয়ান কতিপয় ব্যবসায়ীর সাথে তিনি পিকনিক প্যাক্ট করেন। বিজনেস এলিটদের নিজেদের ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দেন, বিনিময়ে তাদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে বলেন।
অলিগার্কদের সাথে চুক্তিতে একটি ধোঁয়াশা অবশ্য ছিল। অলিগার্কদের অনেকেই অতীতে বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রীয় নিয়ম নীতি ভেঙেছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে প্রভাবিত করেছেন। পুতিন এর একটি নতুন জিরো পয়েন্ট ঠিক করেন। অর্থাৎ, অতীতের নিয়ম ভাঙার অপরাধ ক্ষমা করা হচ্ছে, কিন্তু ভবিষ্যতে করা হবে না। রাশিয়ায় পুতিনের অধীনে এমন একটি অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে উঠেছে, যেখানে অর্থনৈতিক মিথস্ক্রিয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়মের প্রয়োজন হয় না, বরং সেখানে ফিক্সারদের প্রয়োজন হয়।
রাশিয়াতে সম্পদের ব্যক্তিগত মালিকানা গড়ে উঠেছে পুতিনের রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদের অধীনে। কিন্তু, সেই মালিকানার ব্যপ্তি সম্পর্কে একটি রুশ প্রবাদ আছে। বলা হয়, রাশিয়াতে কোনো বিলিয়নিয়ার নেই, বিলিয়নিয়ার হিসেবে কাজ করা কিছু মানুষ আছে। তাদের সম্পদের বৃদ্ধি নির্ভর করে ক্রেমলিনের ইচ্ছার উপর, ক্রেমলিনের ইচ্ছার উপর নির্ভর করেই তাদের সম্পদের ব্যয় করতে হয়। রাশিয়ার সবচেয়ে ধনী অলিগ দেরিপাস্কা বলেছিলেন, “রাষ্ট্র চাইলে আমি সবকিছু দিয়ে দিতে প্রস্তুত। আমি নিজেকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করে দেখি না।” তেল কোম্পানি রসনেফটের সিইও ইগর সেচিন বলেছিলেন, “কোনো কিছু ব্যক্তিগত সম্পত্তি নাকি রাষ্ট্রের সম্পত্তি, এতে কি পার্থক্য তৈরি হয়?”
ফলে, রাশিয়ার অলিগার্কদের নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা টিকিয়ে রাখার উপর নির্ভর করে, প্রাসঙ্গিকতা টিকিয়ে রাখতে অলিগার্করা ক্রেমলিনের ইচ্ছামতো বিনিয়োগ করে। সোচি অলিম্পিককে সামনে রেখেও এভাবে বিনিয়োগ করতে হয়েছে অলিগার্কদের, নিতে হয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প। কোম্পানিগুলো ক্রেমলিনের নির্দেশনায় বিনিয়োগের পাশাপাশি স্থিতিশীলতা রক্ষায়ও কাজ করে। ফলে, রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিকর উদ্যোগও নিতে হয় অলিগার্কদের।
রাষ্ট্রীয় মালিকানায় রাশিয়ার তেলক্ষেত্র রয়েছে, রয়েছে রেলওয়ের মতো যোগাযোগক্ষেত্রগুলোও। এর বাইরে রাশিয়ার বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে এক বড় অংশ পুতিনের অনুগত কিংবা বাল্যবন্ধু। ফোবর্সের বিলিয়নিয়ার লিস্টে থাকা রটেনবার্গ ভাইয়েরা ছিলেন পুতিনের ছোটবেলার জুডো খেলার সঙ্গী, বিলিয়নিয়ার ইউরি কবালাহুক একময় পুতিনের সহকর্মী ছিলেন।
পুতিনের নিয়ন্ত্রণবিহীন ক্ষুদ্র আর মাঝারি শিল্প
পুতিন অপ্রাতিষ্ঠানিক নিয়মের উপর ভিত্তি করে অলিগার্কদের নিয়ন্ত্রণে যতটা সফল হয়েছেন, প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মের মধ্যে ক্ষুদ্র আর মাঝারি শিল্পগুলোকে রাখার চেষ্টা ততটাই ব্যর্থ হয়েছে। রাশিয়াতে দ্রুত শপিং মলের সংখ্যা বেড়েছে, বেড়েছে শপিং মলের পরিসরও। মস্কো আর সেন্ট পিটার্সবার্গের জীবন গত তিন দশকে বদলে গেলেও, এর বাইরে নাগরিক জীবনে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। ক্ষুদ্র আর মাঝারি শিল্প যেখানে ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোর ৬০-৮০ শতাংশ কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে, চীনে হচ্ছে ৫৫ শতাংশ কর্মসংস্থান, রাশিয়াতে সেটি মাত্র ২৭ শতাংশ। ক্ষুদ্র আর মাঝারি শিল্প যেখানে ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোতে জিডিপির ৫০-৭০ শতাংশ গঠন করে, রাশিয়াতে সেটি করে মাত্র ২৩ শতাংশ।
রাশিয়াতে ক্ষুদ্র আর মাঝারি শিল্পগুলোর সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইনি কাঠামো অত্যন্ত দুর্বল। সোভিয়েত আমলের মতো এখন হয়তো মাফিয়াদের আর চাঁদা দিতে হয় না, কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রায় সকলে। দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্র ক্ষুদ্র আর মাঝারি শিল্পগুলো থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে, কর্পোরেট কালচার গড়ে ওঠেনি রাশিয়াতে। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে ব্যবসাকেন্দ্রিক সুবিধার ইনডেক্সে সবচেয়ে পিছিয়ে রাশিয়া, পিছিয়ে আছে উদ্যোক্তাসহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও।
রাশিয়ার কর্তৃত্ববাদী অতীত রয়েছে, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্যই রাশিয়ার শাসকদের কর্তৃত্ববাদী শাসনে উৎসাহিত করেছে। রাশিয়ার অর্থনীতি এখনও প্রাকৃতিক সম্পদনির্ভর, বৈদেশিক আয়ের দুই-তৃতীয়াংশই আসে তেল-গ্যাস থেকে। একইভাবে, সরকারি ব্যয়ের অর্ধেক আসে তেল-গ্যাস থেকেই। আগামী দিনগুলোতেও অর্থনৈতিক কাঠামোতে এই ধারাবাহিকতা থাকবে।