এরপর ধোনি কী করবেন?
ক্রিকেটটা তিনি এরপরও খেলবেন, তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটবিহীন জীবনে তা তো একরকম না থাকার মতোই। বছরের নির্দিষ্ট এক মৌসুমে আইপিএল খেলবেন, হয়তো বা লুফে নেবেন আরও দুয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলবার সুযোগও। তবে বছরের মস্ত বড় এক অংশ তো ফাঁকা পড়ে থাকবে তারপরও। প্রশ্নটা তাই জাগছেই, ক্রিকেটারদের বাঁধাধরা জীবন পেরোনো অধ্যায়ে ধোনি কোন কাজে আশ্রয় খুঁজে নেবেন?
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা পেয়েছেন বছর দুয়েক আগেই, নিজেকে জড়িয়েছেন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও। শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকেও নিশ্চয়ই পরামর্শ পেয়েছেন ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্ধারণে। সে শুভাকাঙ্ক্ষীদের তালিকায় যদি ক্লিন্ট ম্যাকাই কিংবা ইরফান পাঠানদের কেউ থেকে থাকেন, তারা নিশ্চিত করেই ধোনিকে বলেছেন হোমিসাইড স্পেশালিস্ট হওয়ার জন্য। ক্যারিয়ারজুড়ে সেটাই তো সবচেয়ে ভালো করে এসেছেন তিনি!
আপাতনির্দোষ এই রসিকতার আড়ালে যে রূঢ় সত্য লুকিয়ে আছে, তা ধোনির অনুসারী মাত্রই জানেন। শেষ ওভারের ব্যাটিংয়ে যে কাণ্ড করেছেন জীবনভর, সেটা যে কতটা ভয়ঙ্কর, তা প্রতিপক্ষদের কাছে জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে। এই রচনা ধারণ করেছে তারই কিছু নমুনামাত্র:
১. প্রতিপক্ষ: কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, ২০১০
শেষ ওভারের লক্ষ্যমাত্রা: ১৬ রান
এই সেই ম্যাচ, যে ম্যাচের পরে ধোনির উপমাভাণ্ডারে যুক্ত হয়েছিলো নতুন এক বিশেষণ, ‘থালা’। তামিল শব্দটির বাংলাটিও বলে দিচ্ছি, নেতা।
নিজের, একইসাথে ম্যাচ শেষ ওভার করতে সেদিন বোলিংয়ে এসেছিলেন ইরফান পাঠান। দায় ছিল, চেন্নাইকে ১৬ রান তোলা থেকে আটকাতে হবে। আগের তিন ওভারে ২৬ রান দেয়া কারও কাছে যা অন্যায় আবদার নয় মোটেই।
শেষ ওভারের শুরুটা করলেন চারের মার খেয়ে। পাঠান প্রশ্ন তুলতে পারেন, তার এছাড়া কী-ই বা করার ছিল! ব্যাটসম্যান ক্রিজের গভীরে গিয়ে ইয়র্কার বলকে ওয়াইড লং-অফ দিয়ে সীমানাছাড়া করলে বোলারের কি আদৌ কিছু করার থাকে!
থার্ডম্যান আর ফাইন লেগকে বৃত্তের ভেতরে এনে পরের বলটা ছিল স্লোয়ার। ব্যাটে-বলে ধোনির সংযোগটাও যুতসই হয়নি। তবে দ্রুত দৌড়ে আর ফিল্ডারের মিসফিল্ডিংয়ের ফাঁকে স্ট্রাইকটা নিজের কাছে রাখার কাজটা করেছিলেন ঠিকঠাকই।
৬ বলে ১৬ রানের সমীকরণ তখন নেমে এসেছে ৪ বলে দশ রানে। ভুল করে কিংবা একটু ভিন্ন কিছুর প্রচেষ্টায় ইরফান পরের দুটো বল করেছিলেন লেংথে। ফলাফল, দুই ছয়ে ম্যাচ শেষ!
চিরকালীন শান্তমেজাজী ধোনির চরিত্রের বুনো দিকটাও ধরা পড়েছিল সেদিন। ম্যাচ শেষ করতেই নিজ চোয়ালে ঘুষি ঠুকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এই জয়টা তার কাছেও ছিল বিশেষ কিছু।
২. প্রতিপক্ষ: অস্ট্রেলিয়া, ২০১২
শেষ ওভারের লক্ষ্যমাত্রা: ১৩
২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের স্মৃতি যেন ফিরে এসেছিল সেদিনের অ্যাডিলেডে। গৌতম গম্ভীর আবারও সাজঘরে ফিরেছিলেন নড়বড়ে নব্বইয়ে কাটা পড়ে, এবং ধোনি ফিরেছিলেন জয়ীর বেশে।
ম্যাচের শেষ ওভারে বলে এসেছিলেন ক্লিন্ট ম্যাকাই, রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে প্রথম বল মিস করিয়ে উদ্দেশ্য হাসিলে এগিয়েও গিয়েছিলেন কিছুটা। কিন্তু নন-স্ট্রাইকে প্রান্তে ধোনি ছিলেন, পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে তিনি স্ট্রাইকে যেতেই ম্যাকাই সব ভজকট পাকালেন।
শেষ চার বলে যখন দরকার ১২ রান, ধোনি যেন ৩য় বলেই ম্যাচ শেষ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ‘ধোনি পাওয়ারে’ হাঁকিয়েছিলেন ১১২ মিটার ছক্কা, এমন বিশাল ছয়ের পর ছয় রানের বদলে বারো তো দেয়াই যায়!
পরের বলে ধোনি ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন ডিপ স্কয়ার লেগে, কিন্তু এর আগেই যে ম্যাকাই যে কোমরের ওপরে বল তুলে বসে ছিলেন! আউটের বদলে কপালে জুটেছিল নো-বল, সাথে দু’বার দৌড়ে আরও দুই। পরের বলে দৌড়ে ধোনি-অশ্বিন নিয়েছিলে আরও তিন। ব্যস, খেলা শেষ।
৩. প্রতিপক্ষ: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, ২০১৩
শেষ ওভারের লক্ষ্যমাত্রা: ১৫
ব্লক, ব্লক, ব্লক, ব্লক, প্লে অ্যান্ড মিস, ব্যাটের কানা, ক্যাচ ড্রপ। ইনিংসের শুরুটা এর চেয়ে বাজে হওয়া সম্ভব ছিল না। অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা বিশেষত ডোয়াইন ব্রাভো আর রবীন্দ্র জাদেজা পরিস্থিতি জটিল করে তুলছিলেন আরও। প্রথমজন ১৬ বল খেলে করেছিলেন ৭, পরেরজন ৪ বলে ১। তাই তো অমন শুরু সামলে ড্যারেন স্যামি, ইশান্ত শর্মা আর ডেল স্টেইনকে বারেবারে সীমানাছাড়া করলেও শেষ ওভারের জন্যে ১৫ রান রাখতেই হয়েছিল ধোনিকে।
ডেল স্টেইন-ইশান্ত শর্মার ওভার আগেই শেষ হয়ে যাওয়ায় শেষ ওভারে ক্যামেরন হোয়াইট বল তুলে দিয়েছিলেন আনকোরা মিডিয়াম পেসার আশীষ রেড্ডির হাতে। প্রথম বলেই ওয়াইড দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এই মঞ্চের ভার নিতে তিনি উপযুক্ত নন এখনো। মঞ্চের সবটুকু আলো ওই ধোনিকে ঘিরে থাকলেই ভালো।
সেদিন এক ছয় আর দুই চার মেরে ধোনি ম্যাচ শেষ করেছিলেন দুই বল বাকি থাকতেই। মাঝে ভীষণ স্লো এক বল ধোনি ব্যাটে-বলে করতে পারেননি, রেড্ডির ছোট্ট আইপিএল ক্যারিয়ারে অর্জন হয়ে আছে এতটুকুনই।
৪. প্রতিপক্ষ: শ্রীলংকা, ২০১৩
শেষ ওভারের লক্ষ্যমাত্রা: ১৫
লো-স্কোরিং ক্রিকেট ম্যাচের দারুণ এক বিজ্ঞাপন হয়ে রয়েছে এই ম্যাচ। সুইং, সিম, স্পিন, সঙ্গে অসমান বাউন্স, বোলারদের দিকে সেদিন দু’হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল পোর্ট অব স্পেনের উইকেট। ভারতীয় পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে হাঁসফাঁস করে আর অশ্বিন-জাদেজার স্পিনে উইকেট বিলিয়ে শুরুতে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কা তুলতে পারেনি ২০১-য়ের বেশি। এই রানকেই অবশ্য ভারতের জন্যে ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু‘ বানিয়ে ফেলেছিলেন লঙ্কান বোলাররা। ভারতের টপ-অর্ডারকে এলোমেলো হয়েছিল শামিন্দা ইরাঙ্গার বলে, মধ্য ওভারে লঙ্কার রাবণ হয়েছিলেন রঙ্গনা হেরাথ। কিন্তু, ভারতের যে রামরূপী ধোনি ছিলেন!
রোহিত শর্মা চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হবার পরে তিনি যখন ক্রিজে এসেছিলেন, ভারতের প্রয়োজন ছিল ১১৩ বলে ৬৩ রান। তবে ধোনিকে দর্শক বানিয়ে একে একে বাকি ব্যাটসম্যানরাও ফেরত আসছিলেন বলে রান-বলের ব্যবধান কমছিল ক্রমশ। এক পর্যায়ে তো প্রয়োজনীয় রানরেট ছাড়িয়ে গিয়েছিল ৬-য়ের ঘরও। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে ধোনি দৌঁড়াতেও পারছিলেন না তেমন একটা। শেষতক তাই শেষ ওভারের সমীকরণটা দাঁড়িয়েছিল এমন: ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিততে ভারতের চাই ১৫ রান, হাতে মাত্র এক উইকেট।
শেষ ওভার হাতে নিয়েছিলেন ইনিংসের শুরুতে আলো ছড়ানো ইরাঙ্গাই। প্রথম বলটি ডট দিয়ে আশাও ছড়িয়েছিলেন শ্রীলঙ্কানদের মনে। পরের বলটি ইরাঙ্গা করতে চেয়েছিলেন একইরকম ওয়াইড লাইন ঘেঁষে, ধোনির ব্যাট থেকে বল দূরে রাখার মন্ত্র ছিল পরের বলেও, এবং এর পরের বলেও। তবে ইরাঙ্গা তিনবারই গড়বড় করে ফেলেছিলেন লাইনে। ফলাফল? ছয়, চার এবং ছয়। ভারত জিতেছিল দুই বল বাকি থাকতে।
৫. প্রতিপক্ষ: দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, ২০১৪
শেষ ওভারের লক্ষ্যমাত্রা: ১১
১৭৯ রান তাড়া করতে নেমে যেরকম গোড়াপত্তনের প্রত্যাশা থাকে, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম আর ডোয়াইন স্মিথ মিলে এনে দিয়েছিলেন তেমনই। প্রথম পাঁচ ওভারেই দুয়ে মিলে তুলেছিলেন ৪৭। ইনিংসের সুতো কেটে যেতে শুরু করেছিল এরপরেই, জয়দেব উনাদকাট আর ওয়াইন পারনেল মিলে টেনে ধরেছিলেন রানের লাগাম। মাত্র দুই উইকেট খোয়ালেও শেষ ওভারে চেন্নাইয়ের জয়ের জন্যে তাই দরকার ছিল ১১ রান।
ধোনি স্ট্রাইক প্রান্তে এসেছিলেন দ্বিতীয় বলে। উনাদকাটের ইয়র্কার মিসের সুযোগ নিয়ে ধোনি লং-অনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সে বলেই। চার বলে তখন চাই চার রান, ধোনি এমন ম্যাচ কখনো হেরেছেন নাকি!
৬. প্রতিপক্ষ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, ২০১৪
শেষ ওভারের লক্ষ্যমাত্রা: ১১
একই মৌসুমের ম্যাচ, শেষ ওভারের লক্ষ্যও একই। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স সেদিন মাঠে নেমেছিল ঘরের মাঠে টানা ১১ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড সঙ্গী করে। তাদের জয়রথ থামাতে প্রয়োজন পড়েছিল ধোনি-স্পেশালের।
১৫৭ রান তাড়া করতে নেমে অর্ধশতক তুলেছিলেন ডোয়াইন স্মিথ। তবে আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বলি হয়েছিলেন আরেক ওপেনার ম্যাককালাম, সঙ্গে সুরেশ রায়নাও। ১৮তম ওভার শেষে চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ১৭ রান, ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বশেষ ওভারে মাত্র ৬ রান খরচায় দুই উইকেট তুলে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন মালিঙ্গা। তবে তখন অব্দি ৯ বলে ১০ তুলে শেষ ওভারের জন্যে ধোনি তূণে শাণ দিয়ে তৈরিই ছিলেন।
ধোনিকে স্ট্রাইক প্রান্তে দেখেই বোধহয় বোলার কাইরন পোলার্ড ঘাবড়ে গিয়েছিলেন চূড়ান্তরকমে। ব্যাটের নাগালে বল পেলে ধোনি কী করতে পারেন, সেটা জানা ছিল বলেই তার পরিকল্পনা ছিল ব্যাট থেকে বল দূরে রাখার। তবে প্রথম বলেই স্নায়ুক্ষয়ের পরিচয় দিয়েছিলেন লাইনের বহু বাইরে দিয়ে করা এক ওয়াইড বলে। পরের বলে পরিকল্পনা মেনে আবারও বল করেছিলেন ব্যাট হতে দূরে, এবারে অবশ্য লাইনের ভেতরে। কোরি অ্যান্ডারসন কাভার থেকে বল ফেরত পাঠানোর আগেই অবশ্য ধোনি ক্রিজে এপাশ-ওপাশ করে ফেলেছিলেন। বৈচিত্র্য আনতে পোলার্ড গতি কমিয়ে পরের বল করেছিলেন লেংথে, কিন্তু ধোনিও তৈরিই ছিলেন। ডিপ মিড উইকেটের ফিল্ডার বল উড়ে যেতে দেখেছিলেন মাথার ওপর দিয়ে। অবস্থা তথৈবচ বুঝে পোলার্ড ফিরেছিলেন প্রাথমিক পরিকল্পনায়। লাভ হয়েছিল সামান্যই, এবারে ছয়ের বদলে এসেছিল চার রান।
চেন্নাইয়ের জয়ের জন্যে অবশ্য দুই হলেই চলতো।
৭. প্রতিপক্ষ কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, ২০১৬
শেষ ওভারের লক্ষ্যমাত্রা: ২৩
আইপিএলের সে মৌসুম সর্বশেষ অবস্থানে থেকে শেষ করতে না চাইলে ধোনির রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টকে ওই ম্যাচ জিততেই হতো।
শেষ ওভারের পূর্ব অব্দি অক্ষর প্যাটেল বেশ ভালোই বল করেছিলেন, ৬.৬৭ ইকোনমিতে ২০ রান খরচায় তুলে নিয়েছিলেন জর্জ বেইলির উইকেট। তবে গুণীজনদের বলা ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো যার’ আপ্তবাক্যটি যে ফাঁপা বুলি নয়, সেদিন অক্ষর তা বুঝেছিলেন অক্ষরে-অক্ষরে। তার করা ম্যাচের সর্বশেষ ওভারে ধোনি সিঙ্গেল ফিরিয়ে দিয়েছিলেন প্রথম বলে, এমনকি নিশ্চিত দুই রানও নেননি বৈধ তৃতীয় বলে। তবুও ম্যাচটি ধোনির পুনেই জিতেছিল।
বাকি বলগুলোর পরিণতি যদি হয় ওয়াইড, ৬, ৪, ৬ এবং ৬, তবে তো তেমনটাই তো হওয়ার কথা, তাই না?
৮. প্রতিপক্ষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, ২০১৮
শেষ ওভারের লক্ষ্যমাত্রা: ১৬
ততদিনে বয়স হয়ে গিয়েছে ৩৭। প্রশ্নটা তাই সামনে হাজির হচ্ছিল বারেবারে, সেই ধোনির দেখা কি আর মিলবে? এর কয়েক ম্যাচ আগেই তিনি যখন কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ব্যর্থ হয়েছিলেন (চার রানের জন্য) শেষ ওভারে ১৭ রানের পাহাড় টপকাতে, নিন্দুকেরাও পেয়েছিল পাড়া বেড়ানোর সুযোগ, ধোনির দিন ফুরোনোর খবর জানাতে হবে যে!
ধোনি অবশ্য সে সুযোগ খুব বেশিদিনের জন্যে দেননি। একই মৌসুমে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে গিয়ে মাথায় চেপেছিল ১৬ রান তোলার বোঝা। সেদিন ধোনি ফেরত পেয়েছিলেন তার ছক্কা মারার মেশিন, বল উড়িয়ে সীমানাছাড়া করেছিলেন গুণে গুণে সাতবার। মোহাম্মদ সিরাজের বলে পয়েন্ট দিয়ে মারা অসম্ভব এক ছক্কা দেখে তার কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং বলতে বাধ্য পর্যন্ত হয়েছিলেন:
“That one shot over point towards the end of the innings was one of the top three shots I have ever seen.”
শেষ ওভারে ১৬ রান লাগলেও ধোনির ভূমিকা ইনিংসের এ অংশে গৌণই ছিল। প্রথম তিন বলে ১১ রান তুলে ডোয়াইন ব্রাভোই যে কর্তব্য এগিয়ে রেখেছিলেন অনেকটা। ধোনির ব্যাটে চাওয়া ছিল তুলির শেষ আঁচড়ের, ওয়াইড লং-অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারা ছক্কায় ধোনি সে চাওয়া পূরণও করেছিলেন। ক্রিকেট রোমান্টিকেরা ওই শটে যেন ফেরত পেয়েছিলেন ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে উপসংহার টানার ক্ষণ। খুব সম্ভবত যা হয়ে রয়েছে ধোনির বর্ণালী জীবনের সবচেয়ে রঙিন মুহূর্ত।
চাইলে ধোনি অবসরজীবন কাটাতে পারেন এই মুহূর্তগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করেও। মন্দ লাগবে না নিশ্চয়ই।