বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমের বদৌলতে অনেক অপরিচিত মানুষের সাথেও বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের সাথে যখন সামনাসামনি দেখা হয়, তখন একটা অনেকেই বলেন। ছবির তুলনায় বাস্তবে তুমি দেখতে একদম অন্যরকম।
নামকরা কিছু ক্রিকেটারদের ভিন্ন ভিন্ন সময়ের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে এই ফটো ফিচার। যেসব ছবি ক্রিকেট ভক্তদের প্রথম দেখাতে শনাক্ত করতে দোটানায় পড়তে হবে।
ড্যামিয়েন মার্টিন
অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ড্যামিয়েন মার্টিন ৬৭টি টেস্ট ম্যাচ এবং ২০৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে ৪৬.৩৭ ব্যাটিং গড়ে ৪,৪০৬ রান এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪০.৮০ ব্যাটিং গড়ে ৫,৩৪৬ রান করেছেন। শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি।
মাত্র ২১ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ড্যামিয়েন মার্টিনের। তখন তাকে দেখে মনে হতো স্কুল পড়ুয়া কোনো বালক।
অ্যালিস্টার কুক
৩৩ বছর বয়সী অ্যালিস্টার কুক এখনও ইংল্যান্ড টেস্ট দলের নিয়মিত মুখ। টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বাধিক রান এবং শতকের মালিক তিনি।
এখন পর্যন্ত ১৫৪ টেস্টে ৪৫.৭৩ ব্যাটিং গড়ে ১২,০২৮ রান করেছেন।
ছবিতে ১৫ বছর বয়সী অ্যালিস্টার কুক। ২০০০ সালে অনুর্ধ্ব-১৫ ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট চ্যালেঞ্জে খেলার সময়। এর আগে তিনি গায়কদলের সাথে ছিলেন।
আজহার আলী, দিনেশ রামদিন এবং জেভিয়ার মার্শাল
লর্ডসে ওয়ার্ল্ড চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টের ফাইনালে ১৫ বছর বয়সী পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান আজহার আলীর ক্যাচ লুফে নিচ্ছেন ১৪ বছর বয়সী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলার জেভিয়ার মার্শাল। উইকেটের পেছন থেকে সেদিকেই লক্ষ্য রাখছেন ১৫ বছর বয়সী উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান দীনেশ রামদিন। ম্যাচে পাকিস্তানকে দুই উইকেটে পরাজিত করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আজহার আলী এবং দীনেশ রামদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার বেশ দীর্ঘায়িত হলেও জেভিয়ার মার্শালের আশাজাগানিয়া ক্যারিয়ারের ২০০৯ সালেই সমাপ্তি ঘটে। বর্তমানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
বিরাট কোহলি
ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য বিরাট কোহলি তার প্রিয় খাবার বাটার চিকেন, মাটন রোল এবং ফাস্টফুড একেবারেই ছেড়ে দিয়েছেন। সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি রানিং বিটউইন দ্য উইকেটে দ্রুততা বাড়ানোর জন্য নিয়মানুযায়ী খাওয়াদাওয়া করেন।
অনুর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলার সময় বিরাট কোহলি এখনের চেয়ে একটু স্বাস্থ্যবান ছিলেন। তবে কঠোর পরিশ্রম করে ফিটনেসের দিক দিয়ে বর্তমানে তিনি বিশ্বের অন্যান্য ক্রিকেটারদের কাছে রোল মডেল।
ডেনিস লিলি
ডেনিস লিলি তার সময়কার অন্যতম সেরা পেস বোলার ছিলেন। বেশ দূর থেকে দৌড়ে এসে ব্যাটসম্যানদের দিকে ক্ষিপ্রগতিতে বল ছুড়তেন তিনি। তার ভারী গোঁফও বেশ প্রসিদ্ধ ছিলো। প্রায় পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে গোঁফ নিয়েই খেলেছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি পেসার ডেনিস লিলি ৭০টি টেস্টে ৩৫৫ উইকেট এবং মাত্র ৬৩টি ওয়ানডেতে ১০৩ উইকেট শিকার করেছেন।
অবশ্য ক্যারিয়ারের শুরু থেকে ডেনিস লিলির গোঁফ ছিলো না। ১৯৭২ সালের অ্যাশেজ সিরিজের আগে ডেনিস লিলি, রড মার্শ, পল শিহান, গ্রেগ চ্যাপেল এবং রস এডওয়ার্ডস গোঁফ বড় করার সিদ্ধান্ত নেন।
সিরিজের পর ডেনিস লিলি এবং রড মার্শ ছাড়া বাকি সবাই গোঁফ কেটে ফেলেন।
রিচার্ড হ্যাডলি
নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার স্যার রিচার্ড হ্যাডলি ৮৬টি টেস্ট ম্যাচে ৩,১২৪ রান সংগ্রহ করার পাশাপাশি ৪৩১ উইকেট শিকার করেছেন। এছাড়া ১১৫টি ওয়ানডেতে ১,৭৫১ রান এবং ১৫৮ উইকেট শিকার করেছেন। ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের তালিকায় উপরের দিকেই আছেন তিনি।
গ্রাহাম গুচ
ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান গ্রাহাম গুচের টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ১৯৭৫ সালে। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে গুচের লম্বা চুল ছিলো, কিন্তু গোঁফ ছিলো না। ইংল্যান্ডের হয়ে ১১৮টি টেস্ট ম্যাচে ৮,৯০০ রান এবং ১২৫টি ওয়ানডেতে ৪,২৯০ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি।
রিচি বেনো
অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার রিচি বেনো সেসময়কার সেরা লেগস্পিন বোলার ছিলেন। সেইসাথে লেখক, সাংবাদিক এবং ধারাভাষ্যকার হিসেবেও বেশ নাম করেছেন। ২২ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে রিচি বেনোর। প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে ৬৩ ম্যাচে ২৪৮ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ২,২০১ রান করেছেন।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম অলরাউন্ডার হিসেবে দুই হাজার রান এবং দুইশ উইকেট শিকার করা ক্রিকেটার তিনি।
ড্যারেন লেহমান
অস্ট্রেলিয়ার সদ্য সাবেক হওয়া কোচ ড্যারেন লেহমান ক্রিকেটার হিসাবেও বেশ প্রসিদ্ধ ছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায় প্রতি মৌসুমে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখালেও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে খুব বেশি সুযোগ পাননি। সেসময়ে অস্ট্রেলিয়া দলে দুর্দান্ত সব ব্যাটসম্যানদের কারণেই উপেক্ষিত হয়েছেন তিনি।
২৮৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৮২টি শতক এবং ১১১টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৫৭.৮৩ ব্যাটিং গড়ে ২৫,৭৯৫ রান করা লেহমান অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৭টি টেস্ট ম্যাচে ৪৪.৯৫ ব্যাটিং গড়ে ১,৭৯৮ রান করেছেন।
সৈয়দ কিরমানি
স্টুয়ার্ট ব্রড
ফিচার ইমেজ: Getty Images