ফিফা: আয় ও ব্যয়ের হিসেবে পৃথিবীর সবচেয়ে সফল সংস্থা

ফুটবল নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। শত বছর ধরে ক্রীড়া জগতে ফুটবলকে সর্বাধিক জনপ্রিয় করার পেছনে কাজ করে যাচ্ছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ফিফা। যার সূচনা হয়েছিল সেই ১৯০৪ সালে। মূলত ফুটবলের উন্নয়ন, অখণ্ডতা রক্ষা  এবং একে পৃথিবীর সবার নিকট পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে এই অলাভজনক সংস্থাটি নিয়োজিত। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ২০০টি দেশে নিয়মিত ফুটবল চর্চা ও বিভিন্ন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। আর ফিফার কল্যাণে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সমর্থকগোষ্ঠী এখন এই ফুটবলের। এমন কোনো দেশ নেই, যেখান থেকে পৃথিবীর জনপ্রিয় ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলাগুলো উপভোগ করা যায় না। শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সবার নিকটই ফুটবল পেয়েছে সমান গ্রহণযোগ্যতা। পরিসংখ্যান বলে, পৃথিবীতে দ্বিতীয় কোনো সংস্থা নেই, যারা একটি নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুকে সামনে রেখে সকল শ্রেণীর মানুষের নিকট সমান গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

ফুটবলে রিফিউজিদের নিয়ে একটি রূপক চিত্রের সিলিয়েট; Image Credit: Business Maverick

ফিফা ইতোমধ্যেই তার অগ্রযাত্রার শত বছর পার করেছে। লাতিন আমেরিকা, ইউরোপ ছাড়িয়ে এখন দুর্গম আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলোতেও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন ধরনের ফুটবল টুর্নামেন্ট। সংস্থাটির নিরপেক্ষ চিন্তা এবং দূরদৃষ্টি আজ ফুটবলকে ‘দ্য বিউটিফুল গেম’ হিসেবে বিখ্যাত করেছে।

রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালের আগমুহূর্ত: Image source: FIFA

অলাভজনক সংস্থা হিসেবে ফিফার আয় নেহাত কম নয়। গত বছরের প্রকাশিত এক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮ সালে ফিফার মোট আয় ছিলো ৪.৬ বিলিয়ন ইউরো। আর এত এত অর্থ বিভিন্ন খাত থেকে আয় করেছে সংস্থাটি। মূলত গতবছর অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের কারণে ফিফার বাৎসরিক আয় বেড়ে গিয়েছে। এছাড়াও আফ্রিকান নেশনস কাপ, কোপা আমেরিকা, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, নারী বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট থেকেও বড় অঙ্কের অর্থ আয় করে সংস্থাটি। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি দর্শক ফুটবল বিশ্বকাপ উপভোগ করেন। নামীদামী টেলিভিশন সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান সেগুলোকে পুরো পৃথিবীতে প্রচার করে। এছাড়াও বিশ্বকাপসহ অন্য সব টুর্নামেন্টেই পৃথিবীর ধনী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্পনসরশিপ লক্ষ্য করা যায়।

কাতার বিশ্বকাপের লোগো; Image Source: FIFA

ফিফা তাদের বাৎসরিক আয়ের পুরোটা পুনরায় ফুটবলের পেছনেই ব্যয় করে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বয়সভিত্তিক ফুটবলের বিকাশে বড় একটি অংশ ব্যয় করে সংস্থাটি। এছাড়াও বিভিন্ন দেশে ফুটবলকেন্দ্রিক বহুসংখ্যক দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে তারা। আর এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিতদের উপকারের পাশাপাশি ফুটবলের প্রচার চালাচ্ছে ফিফা। এতে করে পৃথিবীর প্রায় সকল দুর্গম অঞ্চলেও পৌঁছে গেছে ফুটবল। আর সবখানেই সমান গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে এটি। ফুটবলের এমন যুগান্তকারী উন্নয়নে সকল ভূমিকা পালন করা ফিফার বিজনেস মডেল সম্পর্কে জানার আছে অনেক কিছু। আজ আমরা সেসব নিয়েই আলোচনা করবো।

বিশ্বকাপের অর্থনীতি

‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপের মূল নিয়ন্ত্রণ ফিফার নিকট। এছাড়াও নারী বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টও আয়োজন করে সংস্থাটি। সে হিসেবে খুব সহজে অনুধাবন করা যায় তারা কত বড় মাপের টুর্নামেন্ট নিয়ন্ত্রণ করছে। বর্তমান সময়ে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য উন্নত দেশগুলোর মাঝে মারাত্মক প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। মূলত ফুটবলের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে থাকার কারণে উন্নত দেশের কর্তারা সেখানে বিশ্বকাপ আয়োজন করে নিজ দেশকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করতে চান। কিন্তু এতকিছুর মাঝেও ফিফা কখনোই বিশ্বকাপের জন্য নির্মিত কোনো অবকাঠামোতে ব্যয় করে না।

ব্রাজিল প্রমীলা ফুটবল দল; Image Source: FIFA

তবে তারা যে মোটেও বিনিয়োগ করে না তা কিন্তু সঠিক নয়। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফিফা যথেষ্ট বিনিয়োগ করছে। সেগুলো হলো মাঠের সংস্কার, টুর্নামেন্টের প্রাইজমানি, ম্যাচ পরিচালনার সকল কর্মকর্তার আবাসন খরচ এবং খেলোয়াড়দের আবাসন খরচ। আর এই অর্থ ফিফা আয়োজক দেশের ফুটবল ফেডারেশন এবং আয়োজক কমিটিকে বুঝিয়ে দেয়। তবে ফিফার এই ব্যয় বিশ্বকাপ থেকে প্রাপ্ত আয়ের তুলনায় কিছুই না। কারণ গত কয়েকটি বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান মতে, বিলিয়ন বিলিয়ন আয়ের বিপরীতে তাদের ব্যয় অতি সামান্য। তবে ফিফা আয়োজক দেশগুলোতে একটি স্থায়ী তহবিল গঠন করে দেয় যাতে সে টাকাগুলো ভবিষ্যতে সেখানকার ফুটবলের উন্নয়নে ব্যয় করা যায়।

রাশিয়ার বিপক্ষে ইয়াগো আসপাসের পেনাল্টি; Image Source: FIFA

কম বিনিয়োগ করার পরেও ফিফার অধীনে বিশ্বকাপ আয়োজন বরাবরই প্রশংসিত। আয়োজক দেশ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবার প্রায় অর্ধশত দেশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আগামী ২০২২ সালের বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের আয়োজক দেশ কাতার। আর এই খাতে প্রায় ৮৮০ মিলিয়ন ডলার খরচ করতে যাচ্ছে দেশটি। এরপর বিশ্বকাপের ২৩তম আসরটি আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো। কাতারের বিনিয়োগ দেখেই বোঝা যাচ্ছে পরবর্তী দিনগুলোতে বিশ্বকাপের পেছনে অর্থব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। যদিও সেখানে ফিফার কখনোই লোকসান গুনতে হবে না। তবে লাভের পরিমাণ যে বেড়ে যাবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

২০১৮ বিশ্বকাপের ওপেনিং ম্যাচ; Image Source::FIFA

একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধুমাত্র বিশ্বকাপের প্রভাবে প্রতি বছর ফিফার আয় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ঐ পরিসংখ্যান অনুসারে সংস্থাটি শত বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আয় করে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে। সে সময়ে তাদের আয় ছিলো ৬.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এই আয়ের সিংহভাগ এসেছিলো লাইসেন্সিং, বোর্ড লাইসেন্সিং এবং আরো কয়েকটি খাত থেকে। এতে করে বোঝাই যাচ্ছে ফিফার আয় কীভাবে বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে এর পরিমাণ কোথায় গিয়ে ঠেকবে। 

ফিফার প্রচার স্বত্ব

আরো ১০ বছর আগের পৃথিবী এবং বর্তমান সময়ের পৃথিবী এক নয়। সবকিছুর মতো ফুটবলও দারুণভাবে বদলে গিয়েছে এই সময়ের মাঝে। ইতিহাস বলে ফিফা এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে কখনোই নিজেদের প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে হয়নি। উল্টো দুনিয়ার বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপনের জন্য বেছে নিয়েছে ফিফা নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টকে। ফুটবলের বিভিন্ন টুর্নামেন্টের বিজ্ঞাপন স্বত্ব পেতে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফিফা আয় করে নিয়েছে কয়েক বিলিয়ন ডলার। গত ৪ বছরে শুধুমাত্র প্রচার স্বত্ব থেকে সংস্থাটি আয় করেছে ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

টেলিভিশন সম্প্রচার থেকে আয়

বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপন পদ্ধতি মার্কেটিংয়ের জগতকে অনেকটা পাল্টে দিয়েছে। টেলিভিশন সম্প্রচার পদ্ধতিও এর হাত থেকে রেহাই পায়নি। বিজ্ঞাপন থেকে অর্থ আয়ের হার যেভাবে বেড়েছে তেমনি বেড়েছে টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা। আর এই সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানগুলো সবথেকে বেশি ব্যয় করছে ফুটবলের পেছনে। বছরের প্রায় ১২ মাসই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও ফিফার অধীনে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়। আর সে সব টুর্নামেন্টের ম্যাচ থেকে শুরু করে ট্রেনিং সেশনের সরাসরি সম্প্রচারের জন্য টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ব্যয় করতে হচ্ছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। যদিও তারা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে লাভবানও হচ্ছে।

টেলিভিশনের জন্য ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে একটি ম্যাচ: Image Source: TELEGRAPH

তবে সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সবথেকে বেশি লাভবান হচ্ছে ফিফা। কারণ সারা বিশ্বের মানুষের নিকট ফুটবল গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ায় তারাও হাজার কোটি ডলারের বিনিময়ে চুক্তি করতে পারছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৪ বছরে ফিফার মোট আয়ের ৫৫ শতাংশই এসেছে সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান থেকে। ভবিষ্যতে এই খাত থেকে সংস্থাটির আরো বেশি অর্থ আয় করার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও সে সুযোগটি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোই করে দিয়েছে।

ইতোমধ্যেই নিশ্চিত হওয়া গেছে, ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের সম্প্রচারের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির নাম। ইএসপিএনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফিফার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই ফিফাকে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অগ্রিম পরিশোধ করেছে। আর ফক্সের সঙ্গে ম্যাচের হাইলাইটস প্রচারের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে ফেসবুক, টুইটার, স্ন্যাপেচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। বিশ্বকাপ নিয়ে ৩ বছর আগেই প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন দৌড়ঝাঁপ দেখে অনুধাবন করা যায়, ভবিষ্যতে ফিফার আয় কী পরিমাণে বাড়তে চলেছে।

ফিফার লাইসেন্সিং রাইটস

নতুন আয়ের খাত হিসেবে লাইসেন্সিং স্বত্ব ফিফাকে বেশ লাভবান করেছে। অথচ আরও ১ যুগ আগেও এই খাতে কোনোপ্রকার আয় করেনি সংস্থাটি। বর্তমান সময়ে এসে এটি ফিফাকে বছর শেষে শত শত মিলিয়ন মার্কিন ডলার লাভের মুখ দেখাচ্ছে। শুধুমাত্র ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে ফিফা লাইসেন্সিংয়ের স্বত্ত্বে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে যা অতীতের থেকেও ১১৮ শতাংশ বেশি। মূলত ফিফার অনুমোদিত বিভিন্ন পণ্য বিক্রি, রয়্যালটি পেমেন্ট এবং এই ধরনের আরো একাধিক খাত থেকে এই অর্থ আয় করে সংস্থাটি।

আতিথেয়তা এবং টিকিট বিক্রি

অতীতে, সকল ক্রীড়া খাতের প্রথম এবং প্রধান আয়ের উৎস ছিলো টিকিট বিক্রি। যদিও বর্তমানে বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টের টিকিট বিক্রি করে ফিফা যে অর্থ আয় করে তা অন্য সব খাতের তুলনায় কিছুই নয়। বর্তমানে টিকিট বিক্রি, দর্শকদের আতিথেয়তা এবং আবাসন খাত হচ্ছে ফিফার সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস। এছাড়াও নিজস্ব মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সকল টুর্নামেন্টের টিকিট বিক্রি করে সংস্থাটি।

রাশিয়া বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের টিকেট; Image source: MIRROR

এতে করে তৃতীয় পক্ষকে লভ্যাংশের ভাগ দিতে হয় না। এছাড়াও বিশ্বকাপের সময় টিকিটের চাহিদা কয়েকশত গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় টিকিটের দামও বাড়িয়ে দেয় তারা। শুধুমাত্র গত বছর রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে প্রায় ১০ মিলিয়ন লোক টিকিটের জন্য আবেদন করেছিলেন। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টিকিট বিক্রি এবং আবাসন খাত থেকে ফিফা আয় করেছিলো প্রায় ৭১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

শত বছর ধরে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া সংস্থা ফিফা প্রতিবারই তাদের কাজে নতুনত্ব এনেছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে তারা যেমনিভাবে সেগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত করেছে তেমনিভাবে গ্রহণ করেছে নানারকম পরিকল্পনা। বর্তমানে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করলেও দ্রুত এগিয়ে যাওয়া বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে না পারলে হয়তো ভবিষ্যতে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে। আর এই আয়ের পথকে গতিশীল রেখে নিজেদের সম্মানকে আরও উপরে নিতে ফিফার নতুন পরিকল্পনাগুলো সকল মহলে সমানভাবে সুনাম কুড়িয়েছে।

ফিফা কাউন্সিল মিটিং; Image source: FIFA

এর আগে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বড়সড় দুর্নীতিতে সমালোচিত হয়েছিলো ফিফা। সেই কারণে সুনাম ফিরিয়ে আনতে নানারকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তারা। দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়নে সাবেক প্রেসিডেন্ট ব্লাটারকে পর্যন্ত জেল খাটতে হয়েছিলো। এছাড়াও সংস্থাটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাদের নিয়ন্ত্রিত স্থাপনাগুলোতে পুনরায় বিনিয়োগ করে আধুনিকায়ন করা শুরু করেছে। তবে ফিফার বর্তমান কাজগুলোর মধ্যে লিঙ্গ সমতার বিষয়টি সবথেকে বেশি প্রশংসিত হয়েছে। চলতি বছর ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপের প্রাইজমানি বৃদ্ধি করে লিঙ্গ সমতার পথে প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিলো তারা।

ফুটবল হাতে আফ্রিকান শিশু; Image Source: GEOGRAPHY

যুগের সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য এই সংস্থার সবরকম স্পনসরশিপ মডেলের পূর্ণাঙ্গ পরিবর্তন এনেছেন নীতিনির্ধারকেরা। বর্তমানে ফুটবল বিশ্বকাপে চার প্রকার স্পন্সর ধাপ রয়েছে। ফিফা পার্টনার্স হচ্ছে এই মডেলের প্রথম ধাপ। এই ফিফা পার্টনার্সরা ফিফার সবরকম প্রচার প্রচারণা পরিচালনা করে। ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ স্পন্সর ধাপে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করার অনুমতি পায়। সর্বশেষ আঞ্চলিক এবং জাতীয় সমর্থকদের সদর দপ্তরের মাধ্যমে ফিফা স্বল্প পরিসরে প্রচার এবং অধিকার আদায়ে কাজ করে থাকে।

ফিফার বড়সড় ব্যয়

ফিফা বিগত বছরগুলোতে যেমনভাবে রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছে তেমনিভাবে ব্যয়ও করেছে। কারণ সংস্থাটির মূলনীতিই হলো আয় করে সেটি আবার ফুটবলের পেছনে ব্যয় করা। ফিফা নিয়ন্ত্রিত সকল খাতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ৫.৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে শুধুমাত্র ২.৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়, ১.৭৫ বিলিয়ন ব্যয় করা হয় উন্নয়ন ও শিক্ষা খাতে এবং ৭৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয় প্রশাসনিক খাতে।

তবে এসব ছাড়াও ফিফা আরো কয়েকটি খাতে উল্লেখযোগ্য হারে বিনিয়োগ করেছে। সেগুলোর মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ, প্রশাসনিক ভবন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মতো খাতগুলো ছিলো উল্লেখযোগ্য। সবমিলিয়ে এই খাতগুলোতে ১২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে সংস্থাটি। পরবর্তীতে ২১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্প্রচারের পেছনে ব্যয় করতে হয়েছিলো। যদিও সেখান থেকে কয়েকগুণ বেশি অর্থ ইতোমধ্যেই আয় করে নিয়েছে ফিফা।

বিশ্বকাপ ফুটবল সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুন এই বইটি

১) বিশ্বকাপ ফুটবল এ টু জেড

FIFA (Fédération Internationale de Football Association or International Federation of Association Football) was formed in 1904 to oversee, organize, and promote a growing number of international football (soccer) competitions. Because the sport is played in more than 200 countries, it has arguably the largest fan following of any sport around the globe. According to the official website, FIFA aims to "promote the game of football, protect its integrity, and bring the game to all." Although it is a nonprofit organization that invests most of its earnings back into the development of the game, FIFA also has tremendous earning power. Most of these earnings come from organizing and marketing major international competitions, with the most popular being the Men's and Women's World Cup, each of which happens every four years. Other competitions like the continental championships and the FIFA Confederations Cup are also quite popular. In 2018, largely on the strength of that year's World Cup events, FIFA generated more than $4.6 billion in revenue, per the organization's annual financial report.

References:

Featured Image: Insider Sport

Related Articles

Exit mobile version