ঢাবির গাজী সালাহউদ্দিন হারিয়ে দিলেন ববি ফিশারের প্রতিদ্বন্দ্বীকে!

ভাবুন তো, কেমন হবে যদি ভার্সিটি পড়ুয়া কোনো সাধারণ দাবাড়ু হারিয়ে দেয় এমন কাউকে, যার ব্যাপারে স্বয়ং ববি ফিশার তার বইয়ে লিখে গেছেন?

হ্যাঁ প্রিয় পাঠক, ঠিক এমনটাই ঘটেছে গত ১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী গাজী সালাহ উদ্দিন চৌষট্টি খোপের রঙ্গমঞ্চে হারিয়ে দিয়েছেন মার্কিন দাবাড়ু জেমস শেরউইনকে। ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার জেমস টেরি শেরউইন কিন্তু যেনতেন দাবাড়ু নন, ফিশার লড়েছেন তার সাথে। সর্বোচ্চ ২৪০০ ইলো রেটিং ছিল তার। 

ববি ফিশারের লেখা সুবিখ্যাত বই মাই ৬০ মেমরেবল গেমস যারা পড়েছেন, তাদের মনে থাকবে এক্কেবারে শুরুর গেমটাই কিন্তু ছিল ফিশার-শেরউইন সেই সুবিখ্যাত গেম। আজকে কথা হবে এই সবকিছু নিয়েই। শুরুটা করবো, টু লিটল, টু লেইট খ্যাত ১৯৫৭ সালের ফিশার-শেরউইন গেমটি দিয়ে। পরে কথা হবে ইতিহাস সৃষ্টিকারী সালাহউদ্দিন-শেরউইন গেম বিষয়ে। 

রবার্ট জেমস ফিশার

রবার্ট জেমস ফিশার ওরফে ববি ফিশারকে দাবাজগতে পরিচয় করিয়ে দেয়া বাতুলতা বৈ কিছু নয়। স্নায়ুযুদ্ধের চরম অবস্থায় সোভিয়েত দাবার দম্ভ চূর্ণ করে মার্কিন মুলুকে বিশ্ববিজেতার মুকুট নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন ববি। এখন পর্যন্ত একমাত্র মার্কিন দাবাড়ু হিসেবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নও তিনিই। তার বেশ পরের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভ্লাদিমির ক্রামনিক ফিশারের মূল্যায়নে বলেন

ফিশারের কথা আর কী বলব? কী-ই বা বলার আছে তাকে নিয়ে। বলা হয়, তার নিয়তিই নির্ধারিত হয়েছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া, কিছুই তাকে সেটি অর্জন থেকে থামাতে পারত না। এটা ছিল পূর্বনির্ধারিত। তার খেলার শুরুর দিক থেকেই এর আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। যে পাঁচ বছর তিনি ফর্মের চূড়ায় ছিলেন, সেসময়েই এটা সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, চ্যাম্পিয়ন তিনিই হতে যাচ্ছেন! … একটা সময় তিনি সবাইকে সবকিছুতে টেক্কা দিয়েছিলেন, এনার্জি, ফোর্স, প্রিপারেশন, প্লেইং স্ট্রেংথ সবকিছুতে। সব রশ্মি যেন এক বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত হয়েছিল!

একটা সময়ে ববি ফিশার সব দাবাড়ুকেই ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন সবকিছুতেই; Image Credit: Chess Unblocked

ফিশার-শেরউইন গেম – টু লিটল, টু লেইট

সালটা ১৯৫৭, ফিশার তখন সবে স্কুলপড়ুয়া ১৪ বছরের বালক। নিউ জার্সি ওপেনের শেষ রাউন্ডে জেমস শেরউইনের মুখোমুখি কিশোর ববি। মাসদুয়েক আগেই এই ছেলে ববি জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে ১২৫ ডলার পুরষ্কার পেয়েছে। এক ছোট্ট দাবা প্রতিভার কাছে তখনকার নিরিখে যেটুকু পরিমাণ ছিল যথেষ্টই অনুপ্রেরণাদায়ক। তো যথারীতি খেলা শুরু হয়, সাদা ঘুঁটিতে ফিশার, আর কালো নিয়ে শেরউইন। 

শেরউইন সিসিলিয়ান ডিফেন্স খেললেন, জবাবে ববি রিভার্স কিংস ইন্ডিয়ান অ্যাটাকে এগোলেন। শেরউইন বলতে গেলে তেমন ব্লান্ডার করেননি, অর্থাৎ বড়সড় ভুল চাল দেননি, তবে ববি ধীরে ধীরে গেমটাকে নিজের মুঠোয় নিয়ে আসতে লাগলেন, এবং শেষমেশ ৩৩তম চালে গিয়ে জিতেও গেলেন। ফিশার পরবর্তীতে গেমটার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন

যদিও শেরউইনের খেলায় তেমন খামতি ছিল না, কোনো সিরিয়াস এরর খেলেননি। তবে, সে কালো ঘুঁটিতে ইকুয়ালাইজেশন আনতে ব্যর্থ হচ্ছিল, ফলত একটা পর্যায়ে তার ডিফেন্স ভেঙে পড়ে। … গেমের একটা ধাপে এসে আমি অ্যালেখাইনের কম্বিনেশন খুঁজে পাই, যা প্রায় ধারণাতীত ছিল। শেষদিকে তার কিং মুহূর্মুহূ আক্রমণে নাকাল হয়ে রিজাইন করতে বাধ্য হয়! 

ফিশার তার মাই ৬০ মেমরেবল গেমস বইয়ে এই গেমকে নাম দিয়েছেন টু লিটল, টু লেইট; শেরউইন যেন প্রতিরোধটা শুরু করেছিলেন ঠিকই, তবে একটু বেশিই দেরি হয়ে গিয়েছিল ততক্ষণে। 

কলাম্বিয়া কলেজের দাবার টিম (সর্বডানে শেরউইন); Image Credit: Columbia University

জেমস টেরি শেরউইন 

গত শতকের ষাট এবং সত্তরের দশকে ইউএস চেস চ্যাম্পিয়নশিপের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের একজন হলেন জেমস টেরি শেরউইন। আটবার অংশ নিয়ে ছ’বারই তৃতীয় কিংবা চতুর্থ হয়েছেন জেমস। ১৯৫৩ ইউথ চেস চ্যাম্পিয়নশিপে মার্কিনীদের প্রতিনিধিত্বও করেছেন তিনি, ছিলেন মার্কিন দাবা ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টও (১৯৭৯-৯০)। 

শেরউইনের পেশাগত জীবন এবং শিক্ষাজীবন বেশ বহুমুখী। নিউ ইয়র্কে জন্ম নেওয়া শেরউইন পড়েছেন কলাম্বিয়া ফাই বেটা কাপ্পা কলেজ এবং কলাম্বিয়া ল কলেজে। ইউএস কোস্ট গার্ড অ্যাকাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার পদে যোগ দেন জেমস। নিউ ইয়র্ক ও সুপ্রিম কোর্ট বারে অ্যাটর্নি হিসেবেও কাজ করেছেন কিছুদিন। তবে পরে কর্পোরেট জগতে ইগজিকিউটিভ হিসেবে থিতু হন, জিএএফ কর্পোরেশনের চিফ ফাইনান্সিয়াল অফিসার থেকে একপর্যায়ে ভাইস চেয়ারম্যানও ছিলেন। এখনও র‍্যাপিড-ব্লিটজ দাবা খেলে চলেছেন বর্ষীয়ান এই দাবাড়ু। 

বর্ষীয়ান শেরউইন, ৮৬ বছর বয়সেও চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের রেকর্ড আছে যার ঝুলিতে; Image Source: British Chess News

গাজী সালাহউদ্দিন 

প্রাইমারিতে থাকতে ফুফাতো ভাইয়ের লজিং মাস্টারের কাছে দাবা শেখা ছেলেটা একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবা চ্যাম্পিয়ন হবে, কে কবে ভেবেছিল! উত্তরবঙ্গের রংপুরের ছেলে সালাহউদ্দিন পড়াশোনা করেছেন দর্শনা বিএন হাইস্কুল থেকে এবং পরে রংপুর কারমাইকেল কলেজে। সবশেষে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যায়নরত তিনি। আসা যাক তার দাবার কথায়; সেই লজিং মাস্টারের কাছে দাবা শেখার মাত্র দুই দিনের মাথায় স্বয়ং ওস্তাদকেই স্কলারমেটে হারিয়ে দেন গাজী, গ্রামের যে কাউকে হারানো ছিল তার কাছে ডালভাত। 

ইউনিভার্সিটিতে আসার পর দ্বিতীয় বর্ষে বন্ধু রাশেদের কল্যাণে আধুনিক দাবার সাথে পরিচয় ঘটে তার, বন্ধুর কাছে শুরুতে হারলেও কিছুদিন পর রাশেদও আর তার কাছে পাত্তা পেতেন না। ফিজিক্স-৯৩ ব্যাচের সালাহউদ্দিন ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। ২০১৯ সালে ড. মো. শহিদুল্লাহ স্মৃতি টুর্নামেন্টে দাবায় চ্যাম্পিয়ন হন। আবার তার প্রতিভা শুধু দাবাতেই সীমাবদ্ধ নয়, গাজী চারবার ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। ফলাফল শুনলে অবাক হবেন, দুইবারের চ্যাম্পিয়ন, একবার রানার্সআপ! 

চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে নিয়ে গাজী সালাহউদ্দিন (২০১৮); Image Credit: Gazi SalahUddin/FB

মাস্টার্সে অধ্যয়নরত সালাহউদ্দিন আগামীতে পেশাগত জীবনেও দাবা চালিয়ে যেতে চান, টুর্নামেন্ট খেলে যেতে চান, গ্র্যান্ডমাস্টারদের হারানো স্বপ্ন তার! ফিদে মাস্টার টাইটেল অর্জনের চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি, তবে তার বন্ধু-অনুজ-শুভানুধ্যায়ীরা দৃঢ় বিশ্বাস করেন একদিন না একদিন তিনি অবশ্যই গ্র্যান্ডমাস্টার হবেন, যত দিনই লাগুক না কেন। সালাহউদ্দিনের পছন্দের ওপেনিং লন্ডন ওপেনিং এবং সিসিলিয়ান কান ভ্যারিয়েশন আর প্রিয় দাবাড়ু বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেন। দেশের দাবার একজন নিয়ত শুভাকাঙ্ক্ষী তিনি, ক্যারিয়ার হিসেবে দাবা কেমন হবে এ ব্যাপারে তার মনোভাব, 

ক্যারিয়ার হিসেবে দাবাকে বেছে নিতে চাইলে অবশ্যই বিকল্প অপশন তৈরি রাখতে হবে। আর দাবাকে মন থেকে ভালবাসতে হবে, সামনের দিনে দাবা আরও ভালো অবস্থানে যাবে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।  

সালাহউদ্দিন-শেরউইন গেম 

সালাহউদ্দিন-শেরউইন গেম শুরুর আগে বলে নিতে চাই, শেরউইন কিন্তু মোটেই বয়সের প্রভাবে বুড়িয়ে যাননি। খেলায় বয়সের ছাপ যে পড়েনি, তার প্রভাব মেলে ২০১৯ সালে। ব্রিটিশ র‍্যাপিড চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম স্থান (টাই) অর্জন করেন তিনি ৮৬ বছর বয়সে এসে! শেরউইন এখনও অনলাইনে খেলেন হরহামেশাই। এই নিবন্ধ লেখার সময়ে লিচেস ডট কমে (ইউজারনেম jamestsherwin) তার র‍্যাপিড এবং ব্লিটজ রেটিং (যথাক্রমে ২৩৭১ ও ২৩২৭) উভয়ই ঈর্ষণীয়। 

সালাহউদ্দিনের সাথে তার গেমটাও হয়েছিল লিচেসেই, শেরউইন খেলছিলেন সাদা নিয়ে, আর সালাহউদ্দিন কালো। শেরউইন তার কুইন’স পন এগিয়ে দেন, জবাবে গাজী তার কিংস নাইট ডেভেলপ করেন। ধীরে ধীরে গেম এগোতে থাকে, তারা বোগো ইন্ডিয়ান ডিফেন্সের নিমজোভিচ ভ্যারিয়েশনে খেলতে থাকেন। খেলার মাঝ পর্যন্ত ২৮তম মুভে গিয়েও সাদাই এগিয়ে ছিল; কম্পিউটার অ্যানালাইসিসে দেখা যায়, শেরউইন প্রায় +২.৯-এ এগিয়ে ছিলেন। উল্লেখ্য, ধনাত্মক মান সাদার ভালো অবস্থা বুঝায়, আর ঋণাত্মক মান কালোর।

খেলার মাঝপর্যায়ে সাদার অ্যাডভান্টেজ +২.৯; Image Credit: Lichess

কিন্তু বিপত্তি বাঁধে তার পর থেকেই। স্লো-গ্রাইন্ডিং ম্যানিউভারে গাজী গেমটিকে তার আয়ত্বে নিয়ে আসতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি শেরউইনকে এক্সচেঞ্জ ডাউন করে দেন ফোর্সফুলি। [উল্লেখ্য, দাবায় কোনো পক্ষ যদি মাইনর ঘুঁটির পয়েন্টে এগিয়ে থাকে, তখন তাকে বলে এক্সচেঞ্জ আপ, আর পিছিয়ে থাকলে ডাউন। যেমন, বিপক্ষের রুক আর নিজের বিশপ থাকলে বিপক্ষ এক্সচেঞ্জ আপ। বিশপ এবং নাইটকে সাধারণত মাইনর পিস বলে, আর রুক, কুইন এদের মেজর পিস বলে।] 

শেষদিকে টাইম প্রেশারে ভুগছিলেন শেরউইন; শেষমেশ সাদার টাইমআউট হয়ে যায় এবং কালো ঘুঁটিতে বিজয় ছিনিয়ে আনেন গাজী সালাহউদ্দিন। তবে গেমপ্লেতেও শেষে গিয়ে গাজী এগিয়ে ছিলেন, চেসএঞ্জিন স্টকফিশ এর অ্যানালাইসিস বলে এই মান প্রায় -৬.৭, যা প্রায় নিশ্চিত জয়। অর্থাৎ সাদার সময় শেষ না হয়ে গেলেও খেলা চলতে থাকলেও গাজীই জয় পেতেন। 

খেলার শেষে বোর্ডের পজিশন; Image Credit: Lichess

মাই ৬০ মেমরেবল গেমস

ববি ফিশারের লেখা অন্যতম সেরা বই হল মাই ৬০ মেমরেবল গেমস, ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৭ সাল এই দশ বছর ব্যাপ্তিতে ব্যক্তি ববির সবথেকে পছন্দের গেমগুলো স্থান পেয়েছে এখানে। এমনকি এখানে ঠাঁই পাওয়া তিনটি গেমে ফিশার হেরেও গেছেন। ববি নিজে গেমগুলো পছন্দ করেছেন এবং অ্যানালাইজ করেছেন, ভক্তকূলে তাই বেশ সমাদৃত এই বই। এমনকি দাবাপাড়ায় এমনও কথা চাউর আছে যে, দাবা খেলে বা নিজেকে দাবাড়ু হিসেবে পরিচয় দেয় অথচ ববির লেখা এই বইটি পড়েনি, সে যেন এমন খ্রিষ্টানের মতো যে কখনও বাইবেল পড়েনি! সেখানের প্রথম গেমটিই বালক ববির শেরউইনের সাথের ঐতিহাসিক গেম। সেই জেমস টেরি শেরউইনকে হারিয়ে দিয়ে গাজী সালাহউদ্দিন দেখিয়ে দিলেন, প্রতিভা সর্বত্রই বিরাজমান – শুধু বের করে এনে পরিচর্যা করাটুকু বাকি।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দাবা ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন গাজী সালাহউদ্দিন;  Image Credit: Gazi SalahUddin/FB

শেষকথা

দুঃখ, পরিহাস বা পরিতাপ – যেটাই বলা হোক, উপমহাদেশের দাবার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ কিন্তু আমাদের দেশের। তবু দেশের দাবার অবস্থা আজ সঙ্গীন। নিয়াজের পর জিএম হওয়া বিশ্বনাথন আনন্দ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেন, আরও দিনে দিনে ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টার বেড়েই চলেছে। আর আমাদের অবস্থা তথৈবচ। গতকাল তাদের ৭০তম গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে টাইটেল নর্ম অর্জন করলেন রাজা ঋত্বিক নামে ১৭ বছরের এক বালক। আর আমাদের এ যাবৎ গ্র্যান্ডমাস্টার মাত্র ৫ জন – নিয়াজ মোর্শেদ, রিফাত বিন সাত্তার, মোল্লা আব্দুল্লাহ আল রাকিব, জিয়াউর রহমান এবং এনামুল হোসেন। শেষজন সেই ২০০৮ সালে নর্ম পেয়েছিলেন, তারপর দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে গেলেও কোনো জিএম-এর দেখা পায়নি বাংলাদেশ। 

ভারতে যে ভাবনার অতীত দ্রুত গতিতে জিএম উঠে আসছে, সেটাকে বিশিষ্ট দাবাবোদ্ধা এবং চেস ডট কমের টপ ব্লগার রাশা নোয়েলের ভাষায় মুড়ি মুড়কির মতো বললেও বোধহয় অত্যুক্তি হবে না। যা-ই হোক, কারো বিষোদ্গার করা কোনোক্রমেই এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য নয়। তবে বাংলাদেশের এহেন পরিস্থিতি থেকে আশু উন্নতি প্রয়োজন, প্রয়োজন আমাদের উঠতি প্রতিভাদের বিকশিত হবার সুযোগ। আজকে গাজী সালাহউদ্দিন যা করেছেন, তা কোনো অংশেই কম কোনো অর্জন নয়। এগুলো তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে এবং আরও হাজারও গাজী সালাহউদ্দিন ঘরে ঘরে গড়ে তুলতে হবে। দরকার পর্যাপ্ত স্বীকৃতি, পর্যাপ্ত সম্মান, যথোপযুক্ত বিনিয়োগ এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পুরষ্কার। সালাহউদ্দিনদের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলেই আগামীতে আর আমাদের দেশের দাবা-পরিস্থিতি নিয়ে হাহাকার করতে হবে না আশা করি! 

Related Articles

Exit mobile version