ক্রিকেটের সে এক কাল ছিল। ক্যারিবিয়ান কাল। যাকে অনেকে ‘ক্যারিবিয়ান ক্ল্যাসিকস’ও বলে থাকেন। তবে ক্রিকেট দেবতা কি এখনকার ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটাকে দেখে কিছুটা অনুতপ্ত হন? হয়তো হন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গত এক দশকে দু’টি টি-টোয়েন্টি শিরোপা ছাড়া বলার মতো কোনো অর্জন নেই দলটার। চোখে পড়ার মতো একটি ব্যাপার অবশ্য আছে, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ফেরি করে ক্রিকেটের বিনোদন বিক্রি করা দলটার নাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আমাদের আজকের আলোচনা তেমনি এক ক্রিকেট বিনোদনের ফেরিওয়ালা কাইরন পোলার্ডকে নিয়ে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাটসম্যান পোলার্ডের উন্নতির গ্রাফ এবং এই খেলাটার প্রতি তার নিয়ন্ত্রণ ঠিক কতখানি, খুব গভীরে গিয়ে সেটিই তুলে আনার চেষ্টা করবো এ লেখায়।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের একটা ম্যাচের উদাহরণ টেনেই শুরু করা যাক। দু’মাস আগে শেষ হওয়া সর্বশেষ আসরের কথা। টুর্নামেন্টের ১৭তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টস আর ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স। এই ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক ছিলেন কাইরন পোলার্ড। আগে ব্যাট করা বার্বাডোস ট্রাইডেন্টসের ১৪৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১২ ওভার চার বলের মাথায় ৬২ রানেই পাঁচ উইকেট নেই পোলার্ডের দলের। এমন অবস্থায় উইকেটে এসে প্রথম বলেই হেইডেন ওয়ালশকে স্লগ সুইপে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান পোলার্ড। ম্যাচ জিততে হলে শেষ চার ওভারে ত্রিনবাগোর প্রয়োজন ছিল ৬৬ রান। পোলার্ডের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতেছিল ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স।
ডট বল না খেলা, দৌড়ে এক রানকে দুই রান বানানো, এবং বাজে বলকে সীমানাছাড়া করা — ক্রিকেটের ছোট ফরম্যাটের সবচেয়ে কমন সূত্র এই তিনটি। বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে দাপিয়ে খেলে বেড়ানো পোলার্ডের নিশ্চয়ই এই সূত্রগুলো অজানা নয়। পোর্ট অব স্পেনে সেদিন বার্বাডোসের বিপক্ষে ম্যাচেও পোলার্ড জানতেন, তার দলের জয় নির্ভর করছে তার ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের ওপর। বারবার হাওয়ায় ভাসিয়ে বলকে সীমানাদড়ি পার করাটাই এখন জয়ের একমাত্র পথ। এজন্যই ওয়ালশের বলে শুরুতেই দু’টি ছক্কা হাঁকানোর পর আরো বেশি মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি, একই সাথে বল ডট না দিয়ে বরং সেগুলোকে এক রান-দুই রানে রূপ দিতে থাকেন। পরিস্থিতির দাবি মেটাতে গিয়ে ১৭তম ওভারে একটি নিশ্চিত সিঙ্গেল নেওয়া থেকেও বিরত থাকেন তিনি, ওয়ালশের সে ওভারটায় শেষ দুই বল নিজেই মোকাবিলা করবেন বলে। ওভারের পঞ্চম বলটিকে স্কয়ার লেগের উপর দিয়ে এবং শেষ বলকে লং-অফের উপর দিয়ে গ্যালারিতে আছড়ে ফেললেন। শেষ ৪৪ বলে দরকার ছিল ৮৭ রান। এমন পরিস্থিতিতে ২৮ বলে ৭২ রানের ম্যাজিক্যাল এক ইনিংস খেলেন, যার ৫৪ রানই এসেছিল ওভারবাউন্ডারি থেকে।
সে ম্যাচে মারা ৯টি ছয় থেকে পোলার্ডের আসুরিক শক্তির প্রমাণ পাওয়া গেলেও তার খেলার অন্যসব গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের ছিটেফোঁটাও বোঝা যায় না। তা বুঝতে গেলে আমাদের ওই ইনিংসকে আরেকটু ভেঙেচুরে দেখা প্রয়োজন।
সে ম্যাচে পোলার্ড যখন নেমেছিলেন, তাকে করা ওয়ালশের প্রথম বলটিই ছিল গুগলি। কিন্তু ভীষণ অবলীলায় সেটিকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে সীমানা ছাড়া করেছিলেন পোলার্ড। স্ট্রাইক ধরে রাখার জন্য শেষ বলে নিয়েছিলেন এক রান। কিন্তু পরের ওভারে যখন রশীদ খান বোলিংয়ে আসলেন, তখন কিন্তু আর শুরু থেকেই আক্রমণ শাণালেন না, বরং প্রতিপক্ষের সেরা বোলারকে মর্যাদা দিলেন যথোপযুক্ত। জয়ের জন্য যখন প্রতি ওভারে ১৬ রানেরও বেশি লাগে, পোলার্ড সে সময় রশীদের করা ওভারের প্রথম ৫ বলে নিয়েছিলেন ৭ রান। সেই ম্যাচে রশীদের ৯টি ডেলিভারি মোকাবিলা করে পোলার্ড তুলেছিলেন ১০ রান৷ রশীদের করা শেষ ওভারের শেষ দু’টি বলেও স্ট্রাইকে ছিলেন পোলার্ড। কোনো প্রকার ঝুঁকি না নিয়ে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলেছিলেন দু’টি বল।
পোলার্ডের ম্যাচ পড়তে পারার ক্ষমতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় এ মুহূর্তকেই। এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্য অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষের নাম রশীদ খান, তার সঙ্গে টক্কর লড়তে গিয়ে উই কেট হারাবার তো কোনো মানে হয় না। টি-টোয়েন্টি এমন একটা খেলা, যেখানে একজন ক্রিকেটারকে ঝুঁকি নিতেই হবে। তবে তার চেয়েও বড় কথা, এই ঝুঁকি কখন নিতে হবে, তা জানতে হবে। রশিদ খানের ওভারটি কাটিয়ে দিয়ে পোলার্ড ভালো করেই বুঝিয়েছিলেন, গায়ে প্রচণ্ড শক্তির সঙ্গে মগজে এই জ্ঞানটিও বিধাতা বেশ ভালোভাবেই দিয়েছেন তাকে।
সেদিন রশীদকে সমীহ করে খেলে ওয়ালশের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন পোলার্ড। হেইডেন ওয়ালশকে পরের ওভারে মেরেছিলেন চারটি ছক্কা, পরের ওভারে জেসন হোল্ডারকেও পরপর দুই বলে হাঁকিয়েছিলেন দু’টি ছক্কা। ওভারে ভালো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার হবার জন্যে গায়ে যে কেবল দানবীয় শক্তি থাকলেই হয় না, বরং চাই ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝতে পারবার দক্ষতাও, পোলার্ড সেদিন ২৮ বলে ৭২ রানের মাস্টারক্লাসে ঠিক তা-ই বুঝিয়েছিলেন। একটা লম্বা সময়ের অভিজ্ঞতা এবং ম্যাচের পর ম্যাচ খেলার কারণে এই ফরম্যাটের উপর তার নিয়ন্ত্রণ অবিশ্বাস্য। এই বছর ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের অধিনায়কত্ব করার সময় এই জিনিসটিতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি। তাই তো টুর্নামেন্টে খেলা ম্যাচগুলোর একটিতেও হারের মুখ দেখেনি ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স।
২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নস লিগে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ১৮ বলে ৫৪ রানের এক বিস্ফোরক ইনিংস খেলে টি-টোয়েন্টিতে সর্বপ্রথম লাইম লাইটে এসেছিলেন পোলার্ড। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর তরুণ উদীয়মান ব্যাটসম্যান পোলার্ড সে ম্যাচেও তার গেম-রিডিং অ্যাবিলিটির স্বাক্ষর রেখেছিলেন।
টসে জিতে আগে ব্যাট করে ১৭০ রান তোলে নিউ সাউথ ওয়েলস। তাড়া করতে নেমে শুরুতেই কিছুটা ধাক্কা খায় ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো। দলীয় ৯১ রানের সময় উইকেটে আসেন পোলার্ড। উইকেটে এসে বড় শট খেলার দিকে না ঝুঁকলেন না কিছুটা সময় নিলেন শুরুতে। শেষ চার ওভারে দলের জয়ের জন্য দরকার ৫১ রান। সুযোগ বুঝে ১৭তম ওভারে খোলস থেকে বের হলেন। শুরুটা করলেন লং অফ আর ডিপ এক্সট্রা কাভারের মাঝ দিয়ে চার মেরে। এরপর আর পোলার্ডকে থামায় কে! ওই ওভারে আরো তিন ছয় এক চারে তোলেন ২৬ রান। ৭ বলে ৭ রান থেকে ১৩ বলে ৩৩। মূলত ওই ওভারেই ম্যাচ ত্রিনিদাদের দিকে হেলে পড়ে।
১৯তম ওভারে আবারও আক্রমণে আসেন ১৭তম ওভারে ২৬ রান দেওয়া মোজেইজ হেনরিকস। স্ট্রাইকে কাইরন পোলার্ড। এবার বুঝি আর তর সইল না, ১২ বলে ১৬ রানের সমীকরণ মিলালেন ওভারের প্রথম তিন বলেই। নয় বল আর চার উইকেট হাতে নিয়ে ম্যাচ জিতে নিলো ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো, ম্যাচসেরা কাইরন পোলার্ড। এই ম্যাচ দিয়েই সেদিন আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন।
টেলিগ্রাফে দেওয়া এক সাক্ষাকারে পোলার্ড বলেছিলেন,
“একদম ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আমি প্রচুর মেরে খেলতাম। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে খেলাটার প্রতি চিন্তাধারায় কিছু পরিবর্তন এসেছে। বিভিন্ন ম্যাচের বিভিন্ন পরিস্থিতি এবং সেই পরিস্থিতিতে প্রতিপক্ষের সেরা বোলারদের মোকাবিলা করতে হবে। চাপের মুখে পাল্টা আক্রমণ করার জন্য তোমাকে যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। তবেই তুমি সফল হবে।”
এবারের আইপিএলে শুরুটা করেছিলেন দারুণ। ৪১*, ১৮, ১৩*, ৬০*, ৪৭*, ২৫*, ১১*, ৩৪* – এবারের আইপিএলে পোলার্ডের প্রথম আট ইনিংসে মাত্র একবার আউট হয়েছিলেন, বাকি সব ইনিংসে ছিলেন অপরাজিত। আর এই ৭ ম্যাচের ৫টিতেই জয় পেয়েছে তার দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিপক্ষে ২৪ বলে অপরাজিত ৬০ রানের ইনিংস খেলে এই ফরম্যাটে তার বুদ্ধিদীপ্ত সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন আরো একবার। ম্যাচে ব্যাঙ্গালোরের দেওয়া ২০২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৭৮ রানেই চার উইকেট হারায় মুম্বাই। এরপর উইকেটে আসেন পোলার্ড, শুরুটা করেন খুব দেখেশুনে। ম্যাচের এক পর্যায়ে জেতার জন্যে শেষ চার ওভারে মুম্বাইয়ের দরকার ছিল ৮০ রান। ১৭তম ওভারে অ্যাডাম জাম্পাকে টার্গেট করে পোলার্ড। জাম্পার সেই ওভার থেকে নেন ২৭ রান। যুজবেন্দ্র চাহালের করা পরের ওভারে চার বল খেলে তোলেন ১৫ রান। যে রানকে তাড়া করে ম্যাচ জেতা প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছিল, দুই ওভারের ব্যবধানে সেই ম্যাচ হাতের নাগালে নিয়ে আসেন পোলার্ড। পোলার্ডের সেই অতিমানবীয় ইনিংসের সৌজন্যে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত সুপার ওভার পর্যন্ত গড়িয়েছিল, যদিও শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে হেরে যায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
সীমিত ফরম্যাটে একজন ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি দিক হলো ব্যাটিং গড় এবং স্ট্রাইকরেট। ২০০৬-১১ এই সময়টায় পোলার্ডের গড় ছিল মাত্র ২৫। পরের পাঁচ বছর ম্যাচপ্রতি রান তুলেছেন গড়ে ৩৩ করে। ২০১৫-১৮ সময়কালে গড় কিছুটা নিম্নমুখী হলেও স্ট্রাইকরেটে কোনো ভাটা পড়েনি; সেই সময়টাতেও অবশ্য গড় ছিল ৩১ ছুঁইছুঁই। ২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত গড় এবং স্ট্রাইকরেট দু’টিই সমীহজাগানিয়া। এই সময়টায় ১৫৮ স্ট্রাইকরেটে ৪০ গড়ে রান তোলেন পোলার্ড, টি-টোয়েন্টিতে যেটি অসাধারণই বটে।
৩৩ বছর বয়সী পোলার্ড একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ৫০০ ম্যাচের মাইলফলক পার করেছেন গত মার্চে। সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল স্পিনের বিপক্ষে তার পারদর্শিতা। ২০১৫ থেকে ২০১৮ – মাঝের এই তিন বছরে লেগ স্পিনের বিপক্ষে তার গড় ছিল ২৮, তখন ওভারপ্রতি রান তুলতেন ৭.৮ করে। ২০১৯-য়ের পর থেকে সে সংখ্যাগুলোই এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ আর ৯.৯-এ।
জনপ্রিয় ক্রিকেট পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকভিজের তথ্যমতে, সব মিলিয়ে ২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত ওভারপ্রতি ১৩.৮ করে রান নিয়েছেন তিনি। তার আগের তিন বছর, অর্থাৎ ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ওভারপ্রতি রান তোলার গড় ছিল ১২.৪।
বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে একটা বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়, সময়ের সাথে সাথে ব্যাটসম্যান পোলার্ডের উন্নতির গ্রাফ ঊর্ধমুখী। এখন পর্যন্ত স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে খেলা ৫১৮ ম্যাচের ৪৬২ ইনিংসে ১০,৩৭০ রান করেছেন পোলার্ড। বলা বাহুল্য, ম্যাচ এবং রান দু’টিতেই তালিকার উপরের দিকেই আছেন পোলার্ড। ঠিক কতটা উপরে? ক্রিস গেইলের পর তার রানসংখ্যাই সবচেয়ে বেশি, আর ম্যাচসংখ্যায় তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে।
অসাধারণ স্ট্রোক খেলার সক্ষমতা আর টি-টোয়েন্টিতে সুতীক্ষ্ণ ক্রিকেটীয় মস্তিষ্ক – এই দুইয়ের মিশেলে খেলাটায় নতুন মাত্রা যোগ করে চলেছেন পোলার্ড। বিশ্বজুড়ে তিনি যে টি-টোয়েন্টির হটকেক, তার আরেকটি কারণ তার অবদানে তার দল শিরোপাও জিতছে প্রচুর। ২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে চারবার আইপিএল, সঙ্গে দু’বার চ্যাম্পিয়নস লিগ… ক্যারিয়ারের এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে পোলার্ডের জেতা শিরোপা সংখ্যা ১৫টি।
দশ বছর আগে পোলার্ড একটা বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। উপমহাদেশের ক্রিকেটার হলে হয়তো তার সিদ্ধান্তকে ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যাও দিয়ে ফেলতেন অনেকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেন্দ্রীয় চুক্তি উপেক্ষা করে তিনি বেছে নিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে। জনৈক ক্যারিবীয় ক্রিকেটকর্তা পোলার্ডকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন,
“আপনি কোনটা চান? মানুষ আপনাকে একজন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি হিসেবে মনে রাখুক, নাকি একজন পেশাদার বিপ্লবী?”
উত্তরটা পোলার্ড দিয়েছেন, তিনি দু’ভাবেই মানুষের মনে থাকতে চান। এই দশ বছরে পোলার্ড যা করে দেখিয়েছেন, খেলা ছাড়ার পরও সেটা দর্শক হিসেবে আপনি মনে রাখবেন কি না, প্রশ্নটা রাখলাম আপনার কাছেই।