অনেক বছর ধরেই ‘দেশসেরা’ ব্যাটসম্যান ডাকা হয় মুশফিকুর রহিমকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাটেই তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানকে ছাপিয়ে যেতে পারছিলেন না এই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান। অবশেষে এই স্বীকৃতিটার একটা যথার্থতা প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন তিনি। এই প্রথম কোনো ফরম্যাটে দেশের শীর্ষ ব্যাটসম্যানের আসনে আসীন হতে পেরেছেন তিনি।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টেস্টের তৃতীয় দিনের (২৪ ফেব্রুয়ারি) খেলাশেষে তামিমকে টপকে টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের মালিক হন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। মুশফিকের ঝুলিতে শোভা পাচ্ছিল ৪,৪১৩ রান, তামিমের নামের পাশে ছিল ৪,৪০৫ রান।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পাওয়া ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরিটাই মুশফিককে এই সম্মান এনে দেয়। ম্যাচে অপরাজিত ২০৩ রান করেই এই রেকর্ড নিজের দখলে নিতে পেরেছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের সাত সেঞ্চুরির তিনটিই ডাবল! ব্যাটসম্যান মুশফিক যেন ক্রমেই নিজেকে ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় ধাবিত হচ্ছেন।
তিন ইনিংসের দু’টিতে পাঁচে ও একটিতে ছয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তিনি। গলে ছয়ে এবং মিরপুরে দু’টি ইনিংসেই পাঁচ নম্বরে উইকেটে আসেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
মজার বিষয়, তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির ম্যাচেই অন্য কোনো ব্যাটসম্যানের সঙ্গী হিসেবে এগিয়েছেন মুশফিক। গলে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল, মিরপুরে ২০১৮ সালে ও ২০২০ সালে দু’বারই মুমিনুল ছিলেন লম্বা সময় ২২ গজে তার সঙ্গী। ডাবলের পথে আশরাফুল-মুমিনুলরাও এগিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ মনঃসংযোগে চিড় ধরায় মঞ্চ থেকে ছিটকে পড়েন তারা। আর সেই মঞ্চেই ডাবল সেঞ্চুরির ইতিহাসে ভাস্বর হয়েছেন মুশফিক।
প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা: ২০১৩ সাল, গল টেস্ট
কুমার সাঙ্গাকারা, লাহিরু থিরিমান্নে ও দীনেশ চান্দিমালের তিন সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৫৭০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ৪৩৮ রান নিয়ে। মোহাম্মদ আশরাফুল ১৮৯ ও মুশফিকুর রহিম ১৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন। দেশের হয়ে টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির কৃতিত্ব গড়ার দুয়ারে তখন আশরাফুল, যার পিছু পিছু হাঁটছিলেন মুশফিক। হা হতোস্মি! চতুর্থ দিনের সকালে ১ রান যোগ করেই ফিরলেন আশরাফুল।
অগ্রজের ছেড়ে যাওয়া মঞ্চেই লাঞ্চের পর ইতিহাস গড়েন মুশফিক। দেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ানের গৌরব অর্জন করেন তিনি। দেশের ক্রিকেটে যুক্ত হয় নতুন মাত্রা। ২০০ রান (৩২১ বল, ২২ চার, ১ ছয়) করে আউট হয়েছিলেন। ম্যাচটা ড্র হয়েছিল।
প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে: ২০১৮ সাল, মিরপুর টেস্ট
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ শুরুতেই কাইল জার্ভিসের তোপে পড়ে। ২৬ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে পথ দেখায় মুমিনুল হক ও মুশফিকের যুগলবন্দী। দিনভর মুমিনুলের পেছনে পেছনে পথ দেখে এগিয়েছেন মুশফিক। লাঞ্চের পর হাফ সেঞ্চুরি এবং চা বিরতির আগেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন মুমিনুল। চা বিরতির পর সেঞ্চুরি পান মুশফিক। দিন শেষের চার ওভার আগে মুমিনুল যখন আউট হন, তখন তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছিল ১৬১ রান। মুশফিক দিন শেষ করেন ১১১ রানে অপরাজিত থেকে।
মুমিনুলের বিদায় নেয়া মঞ্চেই আরেকবার ইতিহাস গড়েন মুশফিক। লাঞ্চের পর দেড়শ এবং চা বিরতির পর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি পেয়ে যান তিনি। ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিয়ে দেশের ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দু’টি ডাবলের মালিক হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারসেরা ২১৯ রান (৪২১ বল, ১৮ চার, ১ ছয়) করে অপরাজিত ছিলেন। বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ৫২২ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল। শেষ অব্দি বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছিল ২১৮ রানে।
প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে: ২০২০ সাল, মিরপুর টেস্ট
জিম্বাবুয়ের ২৬৫ রানের পর প্রথম ইনিংসে বড় স্কোরের ভিত পেয়েছিল বাংলাদেশও। ১৭২ রানে নাজমুল হোসেন শান্ত’র বিদায়ের পর অধিনায়ক মুমিনুলের সঙ্গে জুটি গড়েন মুশফিক। দ্বিতীয় দিন শেষে মুমিনুল ৭১ ও মুশফিক ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন। তৃতীয় দিন লাঞ্চের আগেই মুশফিক হাফ সেঞ্চুরি ও মুমিনুল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
সেঞ্চুরির পর কিছুটা রয়েসয়ে খেলা শুরু করেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। কিন্তু অপর প্রান্তে জিম্বাবুয়ের নির্বিষ বোলিংয়ের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে রানের চাকা সচল রাখেন মুশফিক, লাঞ্চের পরই তুলে নেন সেঞ্চুরি। এবারও চা বিরতির আগে মুমিনুল বিদায় নেন, ১৩২ রানে কাটা পড়েন এই বাঁহাতি।
অনুজের পিছু পিছু ধেয়ে চলা মুশফিক সফলতার বন্দরে তরী ভেড়াতে সক্ষম হয়েছেন। পরে লিটনকে নিয়ে সুস্থির ব্যাটিংয়ে এগিয়েছেন। দিন শেষের কয়েক ওভার বাকি থাকতেই ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরির গৌরব অর্জন করেন মুশফিক। দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনটি ডাবলের অনন্য অর্জন এখন তার দখলে। অপরাজিত ২০৩ রানের (৩১৮ বল, ২৮ চার) ইনিংসে তামিমকে টপকে টেস্টে দেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের আসনেও বসেছিলেন। ৬ উইকেটে ৫৬০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রায় ২২ মিনিট কথা বলেন মুশফিক। যার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো রোর বাংলার পাঠকদের জন্য।
ডাবল সেঞ্চুরির পর উদযাপনে কী করতে চেয়েছিলেন?
এইটা (উদযাপন) আমি আগে থেকে চিন্তা করি নাই। ডাবল হান্ড্রেড করার পরে… আমার ছেলে আসলে ডাইনাসরের খুব বড় ফ্যান। ও সবসময় ডাইনাসর দেখলে অন্যরকম সেলিব্রেশন করে। সেইটাই জাস্ট করার চেষ্টা করছিলাম। তো আমার ডাবল সেঞ্চুরিটা ওর জন্য।
সেঞ্চুরির পরও ব্যাট দিয়ে কী যেন কেটে দেখালেন? ওই উদযাপনের মানে কি ছিল?
সেঞ্চুরির পরের উদযাপনটা কারো উদ্দেশ্যে ছিল না। আমি আসলে এরকম করে, আমার যতটুকু ক্যারিয়ারই হয়েছে, প্রতিশোধ বা প্রতিবাদের জন্য সেলিব্রেশন করি নাই। আমি সবসময় মনে করি যে, আমি আমার নিজের সঙ্গে ফাইট করি। যতটুকু খেলি, বা যত ম্যাচই খেলি। সত্যি কথা বলতে, প্রি-প্ল্যান ছিল না। ইনশাআল্লাহ্ ডাবল সেঞ্চুরিটা যদি করতে পারি, আমার ছেলের জন্য করব। ইন্সপায়ার ছিল, যেইটা আমাকে পুশ করেছে।
তিন ডাবল সেঞ্চুরির তুলনা করতে বললে কী বলবেন?
কম্পারিজন যদি বলেন, আমি মনে করি যে, সবচেয়ে সহজ উইকেট এইটাই ছিল। ব্যাটিংয়ের উইকেটটা অনেক আদর্শ। ওদের খুব বেশি আহামরি থ্রেট ব্রোলার ছিল না। সুইং, রিভার্স সুইং বা স্পিন করছিল, এমন বোলার নেই। তাই একটু ইজি আমার কাছে মনে হয়েছে।
আরও পরে ডিক্লেয়ার করলে কি আপনার ৩০০ হয়ে যেত?
তা তো অবশ্যই, ইনশাআল্লাহ্ হতো। আমি আসলে এক্সপেক্ট করি নাই, এরকম ডিক্লেয়ার দিবে। আমার নিজের কাছে মনে হয়েছিল যে, আমাদের যতটুকু সময় ছিল, অলমোস্ট ২ দিন। আর তার থেকে বড় ব্যাপার যে, উইকেটে আমরা যত বেশি ব্যাটিং করব, আরও কঠিন হবে।
আমাদের চা বিরতির সময় ওরকম কোনো আলোচনা হয়নি। লাস্ট হাফ ঘন্টার আগে জানতে পেরেছি যে লাস্ট ৬ থেকে ৮ ওভারের মতো ওদেরকে দিব। তার আগে তো প্ল্যান ছিল, লিটন যদি থাকে, একটা ব্যাটসম্যান থাকলে আমার জন্য একটু সহজ হয়। আমার প্ল্যান ছিল, ও যদি একটা ১০০ করে ফেলে, তাহলে আমারও ৩০০ রানের কাছে হবে। সেটা আজকে তো না, কালকে প্রথম সেশনে হয়ে যেত। কিন্তু আমি মনে করি যে, ভবিষ্যতে যদি এরকম সুযোগ আসে, চেষ্টা করবো সেটা কাজে লাগানোর। এখন পর্যন্ত যেটা হয়েছে, দল ভালো একটা পজিশনে আছে।
দেশের হয়ে প্রথম ৩০০ করার স্বপ্ন দেখেন কি?
দেখেন, আমি যখন সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের সঙ্গে করেছিলাম, তারপর কেউ একজন প্রশ্ন করেছিল, ৩০০ রান সম্ভব কি না? আমি মনে করি যে, অবশ্যই সম্ভব। টপ অর্ডারে যারা ব্যাটিং করে, সবার জন্যেই পসিবল। শান্ত যদি কালকের সব সেশন, আজকের টি পর্যন্ত খেলত, ওর কিন্তু ২০০ হয়ে যেত। ও ঘরোয়া ক্রিকেটেও ২০০ মেরেছে। এইটা যেকোনো টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের জন্য একটা ভালো সুযোগ। সবাই চেষ্টা করে। আল্লাহ্র রহমতে আমার আজকে হয়ে গেছে, কপালে ছিল। ভবিষ্যতে যদি আরও সুযোগ থাকে, অবশ্যই হবে। আর শুধু একটা না, বিশ্ব ক্রিকেটে দেখেন, একটা-দুইটা না, অনেক ট্রিপল সেঞ্চুরি আছে। তারা যদি করতে পারে, আমাদের বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা কেন করতে পারবে না!
কিপিং ছেড়ে দেয়ায় কি ব্যাটিংয়ে রিল্যাক্সড থাকতে পারছেন?
এইটা তো আরও প্রেসার (শুধু ব্যাটিং)। আগে তো দুইটা ছিল, একটু হেল্প করা যেত। এটা তো একটা মাত্র সাইড (ব্যাটিং)। আমি তো বোলিংও পারি না। আমার মনে হয় যে, এইটা আমার কাছে সহজ। বাস্তবতা অবশ্যই মানতে হবে, আমার যে বয়স হচ্ছে, এইটাও মানতে হবে। আমার কাছে এখন সঠিক সময় যে, একটু মনোযোগী হতে হবে। ফিল্ডিংয়ে থাকলে আমি রিল্যাক্সড থাকতে পারি, এর জন্য ফোকাসটা আমি ব্যাটিংয়ে আরও বেশি দিতে পারি। তবে আল্লাহর রহমতে ভালো যাচ্ছে, আশা করছি এইটা কন্টিনিউ করার।
ম্যাচের আগে অধিনায়ক বলেছিল, এই ম্যাচে সেঞ্চুরি শুধু নয়, ২০০-৩০০ হবে। এটা কি ড্রেসিংরুমে আলোচনা হয়েছিল?
দেখেন, এইটা কিন্তু আমাদের এই টেস্টের আগে না, আমি জানি না শেষ টেস্টে কী হয়েছিল। আমাদের সবসময় একটা টিম প্ল্যান থাকে, আমরা টপ-অর্ডারে যে-ই থাকব, অবশ্যই যেন ভালো কিছু করি। ৫০, ৬০ বা ১০০, ১২০ এগুলো হয়তো বা আসলে অনেক ম্যাজিক স্কোর, কিন্তু গেইম চেঞ্জিং ইনিংস না। আমার কাছে মনে হয় যে, এরকম উইকেটে ১০০ অথবা ১৫০ ম্যাচ উইনিং ইনিংস। এই প্ল্যানগুলো আমরা করেছি। একটা লক্ষ্য সেট করেছি, সেটা করতেও পেরেছি। আর ৩০০ করার তো সুযোগ দিল না। সুযোগ দিলে হয়তো চেষ্টা করতাম আর কি।
এখন তো তিনটা ডাবল। সামনে নিশ্চয়ই আরও অনেকগুলো ডাবল পেতে চাইবেন?
পাইতেই পারি। এরকম সংখ্যা দেখে কেউ কখনো করতে পারে না। তবে হ্যাঁ, যতটুকু আমার ভালো, ততটুকু আমি যেন আরও বাড়াতে পারি। আরও ভালো করলে ভবিষ্যতে আরও একটা-দুইটা বা ভাগ্যে থাকলে পাঁচটাও অসম্ভব কিছু না। শুধু আমার ক্ষেত্রে না, সবাই ক্ষেত্রেই এমন লক্ষ্য থাকা উচিত টেস্টে।
তামিমকে টপকে আপনি এখন টেস্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। এটা কি জানতেন?
এটা এখনও আমি জানি না। ও জানে, ও আসলে সবকিছুই জানে। ও হয়তো কিছু একটা বলতে পারে। বাংলাদেশে আমার সবচেয়ে প্রিয় ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। ওর সাথে সবসময় একটা প্রতিযোগিতা থাকে আমার। হেলদি কম্পিটিশন। ও আমাকে অনেক ইন্সপায়ার করে, আমিও করি। যেকোনো দলে এমন একটা প্রতিযোগিতা থাকলে সেটা দলের জন্যই ভালো। আমি মনে-প্রাণে চাই, ও যেন হাই স্কোরার হয়। এটাও চাই যে, ওর চাইতে এক রানও বেশি যেন করতে পারি।
আপনার চোখে টেস্টে দেশের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান কে? আপনাকে রাখবেন কি না এই তালিকায়?
এটা উত্তর দেওয়া কঠিন। কিন্তু আপনি যেটা বললেন, সেটার জন্য ধন্যবাদ। আমি কখনো নিজেকে সর্বকালের সেরা মনে করি না। আপনারা অনেক সময়ই বলেছেন যে, আমার টেকনিক, ধৈর্য্য বা অন্য কিছু সেরা। এটা হতে পারে, কিন্তু আমার কাছে কখনো মনে হয় না। আমি যখন আমার ব্যাটিংয়ের রিপ্লে দেখি, বা আমি হাইলাইটসগুলো দেখি, টু বি অনেস্ট, আমার কাছে সেরকম ভালো লাগে না। ফ্র্যাঙ্কলি স্পিকিং। আমার মনে হয়, ‘ইশ, যদি তামিমের মতো ওই ড্রাইভটা খেলতে পারতাম! বা সাকিবের মতো যদি এই কাটটা খেলতে পারতাম!’ অনেক কিছু মনে হয় তামিম পারে, আমি পারি না। আল্লাহ সবাইকে সব কিছু দেয় না। আল্লাহ আমাকে একটা জিনিস দিয়েছে, মাথাটা অন্যদের চেয়ে একটু বেটার। যেটা আমি সবসময় ইউটিলাইজেশনের চেষ্টা করি। আমি আমার লিমিটেশন্স জানি। কখন কী করতে হয়, সেটা করার চেষ্টা করি। ভুলগুলো থেকে যেন শিখতে পারি, এই কাজটা আমি করি।
তামিম কিছুদিন আগে ৩৩৪ রান করেছে। এটা ভাঙার চিন্তা করেন কি?
আমাদের সব রেকর্ড কিন্তু ওর। ও একটা বেঞ্চমার্ক সেট সবসময় করেছে। নতুন একটা করেছে ৩৩৪। আমি বলেছি, এটা কে ভাঙতে পারে! যদি সুযোগ হয়, এর কাছাকাছি যেন যেতে পারি। এবার এটা হয়নি, পরবর্তীতে যেন ওকে টপকাতে পারি। আমার ইচ্ছা, আমার বলে ওকে একবার আউট করব।
মুমিনুলের ইনিংসটা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আমি মনে করি, মুমিনুল বাংলাদেশের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান। আমি মনে করি, টেস্টে নেতৃত্বের জন্য সে-ই উপযুক্ত ব্যক্তি। ওর পারসোনালিটি বলেন, ও যত ছোটই হোক, সে বিশ্বমানের। ও কিন্তু অনেক প্রেশারে ছিল, সেখান থেকে এসে এমন ইনিংস খেলা অসাধারণ। আমি ওর সাথে সবসময়ই যেকোনো ইনিংসে ইনজয় করি। আমি আগেও বলেছি। আমার আগের ডাবল সেঞ্চুরি ওর সাথে ছিল, মানে অনেকক্ষণ ব্যাটিং করেছি। গলে যে ডাবল সেঞ্চুরি করেছি, সেটাতে ওর প্রথম হাফ সেঞ্চুরি ছিল। অনেকক্ষণ ব্যাটিং করার সৌভাগ্য হয়েছে। আমার মনে হয়, সে চ্যাম্পিয়ন প্লেয়ার। এই ধরনের প্লেয়াররা তখনই কামব্যাক করে, যখন সে চাপে থাকে। ভবিষ্যতে সে আরও ভালো করবে। আমাদের যদি আরও সাপোর্ট পায়, আরও ভালো করবে।