১.
সিরিজটা খুব বাজে যাচ্ছিল তার, অথচ যেকোনো টেস্ট ম্যাচেই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের প্রতি প্রতিটি দলের একটা বাড়তি প্রত্যাশা থাকে। কোনো সন্দেহ নেই যে, ১৬ বছর পর চির প্রতিদ্বন্দ্বীর দেশে ম্যাচ খেলতে এসে সেই প্রত্যাশা বিন্দুমাত্র মেটাতে পারেননি তিনি। অথচ সেই সময়ে তিনি বিশ্বের সেরা তিনজন ব্যাটসম্যানের একজন বলে স্বীকৃত। এখন ভাবলেও অবিশ্বাস্য মনে হয় যে, একটা সময় অন্তত একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাকে শচীন টেন্ডুলকারের চাইতেও ভালো ব্যাটসম্যান মনে করা হতো। সেই সময়টা ছিল ‘৯০ এর দশক এবং মানুষটা ব্রায়ান লারা নন। বিংশ শতাব্দীতে শচীন টেন্ডুলকার নিজ যুগের অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে সর্বকালের সেরার দৌড়ে থাকলেও সেই সময়টাতে সত্যিকার অর্থেই কিছু সময়ের জন্য শচীন পিছিয়ে গিয়েছিলেন। মানুষটির নাম ছিল সাঈদ আনোয়ার।
অথচ পরপর দুই সিরিজে অস্ট্রেলিয়া আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যথাক্রমে ৯৬.৬৭ এবং ৪৭.৩৩ গড় নিয়ে ফর্মে থাকার ইঙ্গিত দিলেও দুই টেস্টের সেই সিরিজের চারটি ইনিংসে তার রান ছিল যথাক্রমে ২৪, ৭, ১ আর ৬৯।সর্বশেষ ইনিংসটাও খেলেছিলেন এমন একটা সময়ে যখন দল হেরে যাবে সেটা মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল। পাকিস্তানি বোলারদের কৃতিত্বে সিরিজটা ১-১ এ ড্র হওয়ায় সমর্থকরা তাকালেন পরের ম্যাচে।
সেই ম্যাচটা ছিল এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচ। আগের সিরিজের সাথে কোনো সম্পর্ক না থাকলেও অলিখিতভাবে সমর্থকরা এটাকেই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হিসেবে ভেবে নিচ্ছিল। গুরুত্বহীন হলেও সর্বশেষ ইনিংসে ৬৯ রানের ইনিংস খেলায় ধারণা করা হচ্ছিল যে সাঈদ আনোয়ার হয়তো ফর্মে ফিরে এসেছেন। কিন্তু এই ইনিংসেও আনোয়ার আউট হলেন শূন্য রানে। পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৮৫ রানে অল আউট হয়ে গেলে ম্যাচটা ভারতের পক্ষেই হেলে ছিল। শোয়েব আকতারের দক্ষতায় ভারতকে মাত্র ২২৩ রানে অল আউট করে দিলে পাকিস্তানের সামনে সুযোগ আসে ম্যাচে ফেরত আসার। কিন্তু কে জানতো যে এই ইনিংসেই নিজের ক্যারিয়ারের সেরা বোলিংটা করবেন জাভাগাল শ্রীনাথ।
শ্রীনাথের তোপে একের পর এক ব্যাটসম্যান সাজঘরে যেতে থাকেন। তবে অন্যপ্রান্ত আগলে ধরে রেখে দলকে প্রায় একাই টেনে নিয়ে যান সাঈদ আনোয়ার। শেষ পর্যন্ত ইনিংসে শ্রীনাথ ৮ উইকেট পেলেও ১৮৮ রানে অপরাজিত থাকেন সাঈদ আনোয়ার। যুগ্মভাবে দুজনেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেও জয়ী দলে থাকেন সাঈদ আনোয়ার।
২.
ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে দলের বাকি সবাইকে আউট হতে দেখতে দেখতে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলে তাকে বলা হয় ক্যারিং ব্যাট থ্রু ইনিংস। সাঈদ আনোয়ারের অপরাজিত ১৮৮ রানের সেই ইনিংসটা ছিল এমনই একটা ইনিংস। অবশ্য টেস্ট ক্রিকেট এই পর্যন্ত ৫৬ বার এমন ঘটনা দেখেছে।
তবে সাঈদ আনোয়ারের একটা কীর্তি হচ্ছে তিনি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও এমন ঘটনা একবার ঘটিয়েছেন। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্যারিং ব্যাট থ্রু ইনিংসের ঘটনা রয়েছে ১২ বার। সাঈদ আনোয়ার হচ্ছেন সেই বিরল তিন ব্যাটসম্যানের একজন যাদের কি না টেস্ট এবং একদিনের ক্রিকেট দুই ফরম্যাটেই এই কীর্তি গড়ার রেকর্ড রয়েছে।
অথচ ক্যারিয়ারের শুরুটা একেবারেই ভালো ছিল না। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম ১১ ইনিংস শেষে তার গড় ছিল মাত্র ২০.৪৪, এর মাঝে পঞ্চোশোর্ধ কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি। টেস্ট ক্রিকেটের শুরুটা ছিল আরো বাজে, উইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ইনিংসেই করেন শূন্য রান।
কিন্তু সব প্রতিকুলতাকে পেছনে ফেলে ধীরে ধীরে পাকিস্তান দলে নিজের অবস্থান গড়ে তোলেন এই স্টাইলিস্ট ওপেনার। ক্যারিয়ারের মাত্র তৃতীয় টেস্টে নিউজিল্যন্ডের বিপক্ষে তাদের মাঠেই ১৬৯ রানের একটা ইনিংস খেলে আনোয়ার জানিয়ে দেন যে, ক্রিকেট মাঠ থেকে হারিয়ে যেতে তিনি আসেননি।
অথচ সাঈদ আনোয়ার হয়তো টেস্ট ক্রিকেটার না-ও হতে পারতেন। তার বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী যার কি না ক্লাব পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল। তবে সাঈদ আনোয়ার পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী হওয়ায় ইচ্ছে করলেই ক্যারিয়ারটা অন্য খাতে প্রবাহিত করতে পারতেন। ১৯৮৯ সালে করাচীর NED বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ গ্র্যাজুয়েট করা একজন মানুষের পক্ষে অন্য কিছু করা সম্ভবও ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে মাস্টার্স করার পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটেই মন দেন সাঈদ আনোয়ার।
ক্যারিয়ার পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় যে সিদ্ধান্তটা ভুল নেননি তিনি।
৩.
ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করা খুব সহজ কাজ নয়, তবে টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি করাটা নিঃসন্দেহে খুব কঠিন কাজ। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন কীর্তির ঘটনা মাত্র ১১টি। তবে সাঈদ আনোয়ার যে সময়টাতে এই কীর্তি ঘটিয়েছেন সেইসময় এটা আরো কঠিন ছিল। সাঈদ আনোয়ারের আগে কেবলমাত্র স্বদেশী জহির আব্বাস এই কাজটা করতে পেরেছিলেন। রান বন্যার এই যুগে অনেকেই টানা ৩ সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করতে পারলেও আনোয়ারের পর প্রায় ৯ বছর অন্য কোনো ব্যাটসম্যান এই কাজটা করতে পারেনি।
তবে সাঈদ আনোয়ারকে অন্য সবার চাইতে আরেকটু এগিয়ে দিয়েছিল ভারতের বিপক্ষে খেলা একটি ইনিংস। ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, দুই দলের জন্যেই। শক্তির দিক থেকে ভারত একটু এগিয়ে ছিল। নিজ মাঠে খেলা, তার উপর পাকিস্তান দলে খেলছেন না ফর্মে থাকা ওয়াসিম আর ওয়াকার ইউনুসের মতো দুজন বোলার। নিজ দেশের স্বাধীনতা কাপ উপলক্ষ্যে তাই ভারত একটু হলেও ফেভারিট ছিল। এর চেয়েও বড় সমস্যা ছিল, চার জাতির এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে দুর্বল দল হিসেবে বিবেচিত নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রথম ম্যাচেই হেরে যায় পাকিস্তান। সমীকরণটা এমন ছিল, যে দল জিতবে সেই দলই ফাইনাল খেলবে।
এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যেকোনো দলই প্রথমে ব্যাট করতে চায়। রান তাড়া করার চাপটা কেউ নিতে চায় না। পাকিস্তানও তাই টস জিতে অনুমিতভাবেই ব্যাটিং নিল। পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের মূল ভরসা সাঈদ আনোয়ার সেই টুর্নামেন্টে ফর্মে ছিলেন না। আগের দুই ম্যাচে তার রান মাত্র ১৭ আর ৩৬। তুলনামূলকভাবে আফ্রিদী সেই মুহূর্তে ধারাবাহিক ছিলেন (৪৬ বলে ৫৯ আর ২৯ বলে ৫২)। কিন্তু দলীয় মাত্র ৮ রানেই আফ্রিদি বিদায় নিলে পাকিস্তান চাপে পড়ে যায়।
সেই চাপ থেকে মোটামুটি এক হাতে ম্যাচটিকে বের করে নিয়ে আসেন সাঈদ আনোয়ার। করেন ১৯৪ রান, সেটিও মাত্র ১৪৬ বলে। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল ৩৯ রান। আনোয়ার বাউন্ডারি মেরেছিলেন ২২টি, ওভার বাউন্ডারি ৫টি। বাকি সবাই মিলে বাউন্ডারি মারতে পেরেছিলেন ১১টি। দলীয় ৩২৯ রানের মাঝে ১৯৪ রানই তার। যখন আউট হলেন, তখনও বল বাকি ছিল দুই ওভারের বেশি। টিকে থাকলে ডবল সেঞ্চুরিটা হয়তো হয়েই যেত।
তবে ডবল সেঞ্চুরি করতে না পারলেও এই ইনিংসটি খেলেই ভিভের অপরাজিত ১৮৯ রানের রেকর্ডটি ভাঙেন তিনি। আনোয়ারের রেকর্ডটি টিকে ছিল টানা এক যুগ। এছাড়া গত শতাব্দীর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সেরা ইনিংসের তালিকায় এর অবস্থান ছিল ৫ নম্বরে।
৪.
সাঈদ আনোয়ার ছিলেন একজন সত্যিকারের ম্যাচজয়ী ব্যাটসম্যান। একটা সময় ছিল যখন সাঈদ আনোয়ারের ব্যাট হাসলে পাকিস্তানের জয় মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যেত। ক্যারিয়ারের ২০টি সেঞ্চুরীর মাঝে ৩টি ম্যাচেই পাকিস্তান ম্যাচ জিততে পারেনি। পাকিস্তানের হয়ে সাঈদ আনোয়ার বিশ্বকাপ খেলেছেন মোট ৩টি (১৯৯৬, ১৯৯৯ আর ২০০৩)। প্রতিটি বিশ্বকাপেই তিনি পাকিস্তানের পক্ষে সবচাইতে বেশি রান করেছেন। ন্যূনতম তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছেন এমন কোনো ব্যাটসম্যানের এই কীর্তি নেই।
‘৯৬ বিশ্বকাপে ৯৫.৯১ স্ট্রাইক রেট আর ৮২.২৫ গড়ে রান করেছিলেন ৩২৯। ‘৯৯ বিশ্বকাপে ৪০.৮৮ গড় আর ৭২.০১ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৩৬৮ রান। ২০০৩ বিশ্বকাপে ৫৪.৫০ গড় আর ৭১.৯৪ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২১৮ রান। বিশ্বকাপের ২১ ম্যাচে ৫৩.৮২ গড়ে সাঈদ আনোয়ার রান করেছেন ৯১৫, যা কি না পাকিস্তানের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তবে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী জাভেদ মিয়াদাদের (৪৩.৩২) চাইতে তার গড় ভালো।
শুধু বিশ্বকাপই নয়, সাঈদ আনোয়ারের সময়কালে পাকিস্তানের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের হয়ে সিরিজ খেলেছেন ৬৫টি। এর মাঝে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন ৮ বার যা কি না তার সময়ে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ। এছাড়া পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন ১৯ বার, এটাও পাকিস্তানের পক্ষে তার সময়ে সর্বোচ্চ। পাকিস্তানের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন ১০ বার। এর অর্থ হচ্ছে ক্যারিয়ারের ৬৫টি সিরিজের মাঝে ২৯ বারই পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় প্রথম দুজনের মাঝে একজন ছিলেন সাঈদ আনোয়ার। এই পরিসংখ্যান থেকে তার প্রতি পাকিস্তানের নির্ভরতাটা অনুমান করা যায়।
৫.
সাঈদ আনোয়ার ৭টি টেস্ট আর ১১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করেছেন। অধিনায়ক হিসেবে উল্লেখযোগ্য কোনো পারফর্মেন্স তার ছিল না। তবে কিছু চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন। তার সময়েই ইজাজ আহমেদ ওপেনিংয়ে পিঞ্চ হিটারের ভূমিকায় নেমেছিলেন। ৮৪ বলে অপরাজিত ১৩৯ রানের একটা ইনিংস খেলে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদানও দিয়েছিলেন।
এছাড়া শহীদ আফ্রিদী নামক এক পাঠান তরুণের উত্থানের পেছনেও তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। লেগ স্পিনার হিসেবে স্কোয়াডে ডাক পাওয়া এই তরুণকে নেটে ব্যাটিং করতে দেখে তার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে ওঠে। সেই বুদ্ধির ফলাফল হচ্ছে পরের দিন আফ্রিদির ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা এবং ৩৭ বলে সেঞ্চুরি করে তৎকালীন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া।
পৃথিবীতে মেধাবী মানুষ প্রচুর আছে, কিন্তু সব মেধাবী মানুষদেরকে আমরা খুঁজে বের করতে পারি না। যারা পারেন তাদেরকে বলা হয় জহুরী। শহীদ আফ্রিদির মেধা নিয়ে কারো সন্দেহ নেই, তবে সেদিন সাঈদ আনোয়ারের মাথা থেকে বুদ্ধিটা না বেরুলে আদৌ কতদিনে এই মেধার বিকাশ ঘটতো সেটা নিয়ে একটা সন্দেহ থেকেই যায়।
৬.
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের পক্ষে সাঈদ আনোয়ার ম্যান অব দি ম্যাচ হয়েছেন ২৮ বার, যা কি না পাকিস্তানের কোনো খেলোয়াড়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তবে শহীদ আফ্রিদির সর্বোচ্চ ৩২ বার ম্যান অব দি ম্যাচ হবার ক্ষেত্রে সাঈদ আনোয়ারের চেয়ে ম্যাচ বেশি খেলতে হয়েছে মাত্র ১৫১টি। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমির সোহেলকে নিয়ে টানা ওপেন করেছেন ৩২টি ম্যাচে, যা কিনা পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ এবং সব মিলিয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ।
সাঈদ আনোয়ার টেস্ট ক্রিকেটের সেই ৩৩ জন ব্যাটসম্যানের একজন যারা কি না ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন। এই ৩৩ জন ব্যাটসম্যানের মাঝে ৫ জন ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল শূন্য দিয়ে, আনোয়ার সেই ৫ জনের একজন। তবে সাঈদ আনোয়ার টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি কি না ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ইনিংসে শূন্য দিয়ে শুরু করলেও শেষ করেছেন সেঞ্চুরি দিয়ে। সাঈদ আনোয়ারের শেষ টেস্ট সেঞ্চুরি নিয়েও একটা দুঃখজনক অধ্যায় রয়েছে। যেদিন তিনি সেঞ্চুরি করেন ঠিক সেদিনই তার সাড়ে ৩ বছরের মেয়ে মারা যায়।
২০০৩ বিশ্বকাপের পর সাঈদ আনোয়ার ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। তখন তার বয়স মাত্র ৩৪ বছর। আরো কিছুদিন ক্যারিয়ার টেনে নেওয়ার ইচ্ছে থাকলেও যে সময় তিনি বুঝতে পারলেন যে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কাছে তিনি অপাংতেয়, সেই মূহুর্তেই তিনি অবসর নিয়ে নেন। ২০০৩ বিশ্বকাপে তারকাসমৃদ্ধ পাকিস্তান দলের ভরাডুবির পর নির্বাচকরা সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে যান। ক্যারিয়ারটা আরো দুই বছর দীর্ঘ করার ইচ্ছে থাকলেও নির্বাচকদের উপেক্ষার জন্য অভিমান থেকেই মূলত আনোয়ারের অবসরে চলে যাওয়া।
আনোয়ার অবসরে যাওয়ার পর থেকে পাকিস্তানে সেই মানের আর ওপেনার আসেনি সেটা চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়। ভবিষ্যতে আর আসবে কি না সেটা না হয় সময়ের হাতেই ছেড়ে দেওয়া যাক।
ক্রিকেট নিয়ে আরও জানতে পড়ুন এই বইগুলো:
১) মাশরাফি
২) কাছের ক্রিকেট দূরের ক্রিকেট