জুলাই ৯, ২০১৪; কাঁদছে পুরো মিনেইরো স্টেডিয়াম, কাঁদছে ব্রাজিল। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় লজ্জার হারের কলঙ্ক ব্রাজিলের ললাটে এঁটে গেছে ততক্ষণে। হতভম্ব খেলোয়াড়দের সান্তনা দিচ্ছেন কোচ লুই ফেলিপে স্কোলারি, কিন্তু তাঁকে কে সান্ত্বনা দেবে? অথচ সবচেয়ে বেশি তো হারালেন তিনিই। ত্রাতা হতে আসা মহানায়ক পরিণত হলেন খলনায়কে! আজ সেই স্কোলারির জীবন নিয়েই আলোকপাত করা যাক এই লেখায়।
ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাস বহু প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের নামে পূর্ণ, সেই ইতিহাস বইয়ের ধারেকাছেও স্কোলারিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। গড়পড়তার চেয়েও খারাপ মানের খেলোয়াড় ছিলেন তিনি, যার পুরো ক্যারিয়ারে কোনো গোলই নেই! সারা জীবন খেলেছেন ২য় সারির কয়েকটি দলে। ১৯৮২ সালে অবসরে যাওয়ার পর আসেন কোচিং জগতে।
ব্রাজিলের কোচিং সংস্কৃতি খুবই নিষ্ঠুর। কোনো কোচই জানেন না আগামী সপ্তাহে তিনি কোচ থাকবেন কিনা! সেই জায়গায় অখ্যাত এই লোকটির ক্যারিয়ার শুরুই হয় তাঁরই সদ্য সাবেক এক ছোট ক্লাবে। এরপর থেকে তাঁর ‘বোহেমিয়ান’ কোচিং শুরু। আজ ব্রাজিলে তো সামনের মাসে কুয়েতে, কিছুদিন পর আবার সৌদি আরবে! পাঁচ বছর এমন করার পর ১৯৮৭ সালে প্রথম সুযোগ পান ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব গ্রেমিওতে। সেখানে ব্রাজিলিয়ান কাপ ‘কোপা দো ব্রাজিল’ জিতলেও লীগে ফলাফল খারাপ থাকায় ক্লাব তাঁকে রাখতে চায়নি। আবার ফিরে যান কুয়েতে। অল্প সময়ের জন্য কুয়েত জাতীয় দলেও ডাক পান, সেই সময়ের মধ্যেই কুয়েতকে ‘গালফ কাপ’ জেতান। আরো বছর দুই মধ্য প্রাচ্য পরিক্রমা শেষে চলে আসেন ব্রাজিলের অখ্যাত এক ক্লাব ক্রিশিওমাতে। এই অখ্যাত ক্লাবটিকে তাঁদের ইতিহাসের প্রথম জাতীয় পর্যায়ের শিরোপা হিসেবে ব্রাজিলিয়ান কাপ জেতান। তবে বোর্ডের সাথে মতানৈক্যের কারণে আবার চলে আসেন মধ্যপ্রাচ্যে। সেখানে বেশ সফলতা পাচ্ছিলেন। আবার ডাক এলো ব্রাজিলিয়ান ক্লাব গ্রেমিও থেকে।
সাফল্যযাত্রার শুরু
এবার স্কোলারির থিতু হওয়ার পালা। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের অলিখিত দুটো ভাগ আছে। ভৌগোলিকভাবেই তাদের এক অংশের ক্লাবগুলো ব্রাজিলিয়ান ঐতিহ্যবাহী সাম্বা ঘরানার চেয়ে ইউরোপীয় ঘরানায় খেলে থাকে। গ্রেমিও সেই রকমই ক্লাব। বড় ক্লাব হলেও তখন তাদের এত অর্থবিত্ত নেই। সীমিত সুযোগ নিয়েই স্কোলারি গড়ে তুললেন শক্ত-সমর্থ এক দল। মিডিয়ায় ছিল প্রচন্ড সমালোচনা তাঁর রক্ষণাত্মক খেলার ধরনের জন্য। ১৯৯৩ সালে গ্রেমিও লাতিন আমেরিকার ‘চ্যাম্পিয়ন্স লীগ’ কোপা লিবার্তাদোরেস জিতে নেয়। বলে রাখা ভালো, খুব বেশি প্রচারে না থাকলেও লাতিন শ্রেষ্ঠত্বের এই প্রতিযোগিতাটি প্রচন্ড রকমের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে থাকে।
এর পরের বছর ১৯৯৪ সালে গ্রেমিওকে ব্রাজিলিয়ান লীগ জেতান স্কোলারি। মাত্র তিন বছরে গ্রেমিওকে মোট ৬টি শিরোপা এনে দেন স্কোলারি, হয়ে ওঠেন গ্রেমিও সমর্থকদের নয়নের মণি। সে যত প্রিয়ই হোক, ব্রাজিলিয়ান সব ক্লাবই একই ধাতুতে গড়া! ১৯৯৭ সালে খারাপ ফলাফলের জন্য গ্রেমিও ছাড়তে হয় তাঁকে, চলে আসেন জাপানে। মাত্র এগার ম্যাচ পরে মন না টেকায় আবার চলে আসেন ব্রাজিলে। এবার গ্রেমিওর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব পালমেইরাসে। তখন গ্রেমিও সমর্থকরা যেমন গর্ব করতো স্কোলারির এনে দেয়া কোপা লিবার্তাদোরেস নিয়ে, পালমেইরাসের বলার মতো তেমন কিছু ছিল না। তাঁদের এত বছরের ইতিহাসেও এই শিরোপা নেই। স্কোলারি দায়িত্ব নেয়ার পরের বছরই পালমেইরাসকে নিয়ে আবার লিবার্তাদোরেস জিতে নেন। তিন বছরে পালমেইরাসকে এনে দেন ৫টি শিরোপা। হয়ে যান ব্রাজিল তথা গোটা লাতিন আমেরিকার অন্যতম সেরা কোচ!
ব্রাজিলের হয়ে অমরত্বের পথে
২০০১ সালে ডাক আসে জাতীয় দল থেকে, ব্রাজিলের তখন তথৈবচ অবস্থা। ১৯৯৪ এর বিজয়ী আর ১৯৯৮ এর রানারআপ ব্রাজিল কোয়ালিফায়িং এ ৩য় স্থানে, ব্যবধান এমন যে বাদ পড়েও যেতে পারে। ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সময়কালে ব্রাজিলের সফলতম ঘরোয়া কোচ স্কোলারির কাছে তাই ব্যাপক প্রত্যাশা। পোড় খাওয়া স্কোলারি জানতেন, যদি বাছাই পর্ব উতরায় ব্রাজিল, পাঁচ মিনিট পর থেকেই জনতার মনে চলে আসবে বিশ্বকাপের নেশা, একবারও ভাববে না তারা কী অবস্থা থেকে উতরে এসেছে। আর ব্রাজিলের জনগণের কাছে রানারআপ হওয়াটাও বিশাল ব্যর্থতা।
জেনে বুঝেই দায়িত্ব নেন দলের। পাঁচ ম্যাচ বাকি, খাদের কিনারে ব্রাজিল। প্রথম ম্যাচেই উরুগুয়ের কাছে হেরে বসে ব্রাজিল, বিপদ প্রায় সমাগত। কিন্তু এই লজ্জায় পড়তে দেননি তিনি, নিয়ে যান বিশ্বকাপে। বিশ্বকাপের আগে জন্ম দেন এক বিশাল আলোড়নের। বাদ দেন ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো স্ট্রাইকার রোমারিওকে, যিনি তখনও তাঁর ফর্ম হারাননি। তাঁর বদলে প্রথম পছন্দের স্ট্রাইকার হিসেবে নিলেন রোনালদোকে, যিনি গত দেড় বছরে এমন এক ইনজুরিতে দুবার পড়েছেন, যে ইনজুরি কারো একবার হলেই ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়। মিডিয়ায় অনেক প্রশ্ন, কীভাবে পারবে ব্রাজিল? শোনা যায়, স্বয়ং প্রেসিডেন্টও বলেছিলেন আকারে ইঙ্গিতে রোমারিওকে নিতে। জবাবে স্কোলারি বলেছিলেন, “আমি কি আপনার মন্ত্রীসভা বেছে নিই?” রোমারিও নিজে সংবাদ সম্মেলনে আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন তাঁকে দলে নিতে। স্কোলারি ছিলেন অটল। পাহাড়সম চাপ নিয়ে ব্রাজিলকে নিয়ে যান বিশ্বকাপে। রোনালদো-রিভালদো-রোনালদিনহো জুটির জাদুতে ব্রাজিল ঘরে তুলে নেয় বিশ্বকাপ ট্রফি। নেপথ্য নায়ক ছিল সেই অখ্যাত এক বোহেমিয়ান কোচ লুই ফেলিপে স্কোলারি।
পর্তুগাল অধ্যায়
সবাই বলে থাকে খ্যাতির চূড়ায় থাকতে বিদায় নেয়া ভালো। স্কোলারিও ২০০২ বিশ্বকাপের পর আর ব্রাজিলের কোচ থাকেননি, দায়িত্ব নেন ‘ইউরোপের ব্রাজিল’ খ্যাত পর্তুগালের। ফিগো, ডেকো, কস্তাদের সেই পর্তুগালকে ‘সোনালী প্রজন্ম’ বলা হতো। পর্তুগালের আক্ষেপ তাঁদের ট্রফি কেসে কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা নেই। আবার ২০০৪ সালের ইউরোর স্বাগতিক তারা, বিশাল দায়িত্ব মাথায় নিয়ে স্কোলারি এবার পর্তুগালের কোচের আসনে। সোনালী প্রজন্মের সাথে তরুণ রোনালদোকে নিয়ে স্কোলারি গড়ে তুললেন দারুণ এক দল। প্রচুর আক্রমণাত্মক ছিল সেই পর্তুগাল। কোয়ার্টারে ইংল্যান্ড আর সেমি ফাইনালে হল্যান্ডকে হারিয়ে ঘরের মাঠে ফাইনালে পর্তুগাল, প্রতিপক্ষ গ্রিস। সামর্থ্যে যোজন যোজন ফারাক। সবাই ধরেই নিল পর্তুগাল চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে। ঠিক সেই সময়ই গ্রিস দিল সেই শতাব্দীর শুরুর সেরা চমক। ১-০ গোলে হারিয়ে দিল পর্তুগালকে। ৭৫ ভাগের বেশি সময় বল নিজেদের পায়ে রেখে একের পর এক আক্রমণ করেও লাভ হয়নি তাঁদের। হয়তো এই ইতিহাস ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হাতেই পূর্ণতা পাওয়ার ছিল!
সেই হারে স্কোলারির থোড়াই দায় ছিল, পর্তুগালও তাঁকে বরখাস্তের চিন্তাই করলো না। ২০০৬ বিশ্বকাপেও পর্তুগাল ছিল সপ্রতিভ। আবারো কোয়ার্টারে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিতে উঠে পর্তুগাল। সেখানে ফ্রান্সের কাছে বিতর্কিত কিছু সিদ্ধান্তের জন্য হেরে বাদ পড়ে যায় পর্তুগাল। তিনি কোচ হিসেবে থেকেই যান। মাঝে একবার গুজব ছিল ইংল্যান্ডের কোচ হবেন ২০০৬ সালে। এই গুজবের কয়েকদিনেই মিডিয়া এত পড়েছিল তাঁর পেছনে যে তিনি বলতে বাধ্য হন যে, “আমি এখনো কোচই হইনি আর এখনই এই হাল!” ২০০৮ ইউরোতে পর্তুগালের যাত্রা থেমে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে। ২০০২-০৮ সময়টায় পর্তুগালের হয়ে স্কোলারির ট্রফি সংখ্যা শূন্য, কিন্তু তবুও তিনি আপামর পর্তুগালবাসীর কাছে আদৃত। কেন? কারণ তাঁর হারগুলো ছিল খানিকটা ভাগ্যের কারণে, কোনো বিদায়ই লজ্জার ছিল না। বাছাইপর্বগুলোও উতরে যেত ভালোভাবেই। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, খেলার ধরন ছিল একটি বড় দলের মতোই। সে সময় অবধি স্কোলারি ছিলেন বহুল আকাঙ্ক্ষিত একজন জাতীয় দলের কোচ।
পর্তুগাল ছাড়ার পর যান চেলসিতে। ইংলিশ লীগে তিনিই ছিলেন প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী ম্যানেজার। খুব সুখকর হয়নি তাঁর চেলসি অধ্যায়। খেলোয়াড়দের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ায় মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই বরখাস্ত হন। আর সেই সাথেই আন্তর্জাতিক ফুটবলের লাইমলাইট থেকে হারিয়ে যেন হারিয়ে যান। এরপর কোচিং করিয়েছেন বুনিয়োদকর ও পালমেইরাসে। ২০১২ সালে আবার ডাক পান টালমাটাল এক ব্রাজিলের হাল ধরতে। ২০১০ সালে ব্রাজিলকে ঢেলে সাজাতে দায়িত্ব দেয়া হয় মানো মেনেজেসকে, উল্টো তিনি করে রাখেন এক বিশাল হ-য-ব-র-ল অবস্থা। স্মরণকালের সেরা দল নিয়েও অলিম্পিকে হারেন, কোপাতেও যাচ্ছেতাই অবস্থা ব্রাজিলের। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ ছিল তাই সময়ক্ষেপণ না করে ব্রাজিলকে সঁপে দেয়া হলো স্কোলারির হাতে।
ব্রাজিলের দায়িত্বে প্রত্যাবর্তন
দায়িত্ব পেয়েই ব্রাজিলের খোলনলচে বদলে ফেলেন স্কোলারি। নেইমারকে দেন পূর্ণ স্বাধীনতা, তাঁর অধীনেই নেইমার ফুটতে শুরু করে। আলভেস, সিলভা, গুস্তাভোর মতো অভিজ্ঞ, নেইমার, অস্কারের মতো তরুণ আর ফ্রেড, পাউলিনহোর মতো ঘরোয়া পারফর্মার নিয়ে দল গোছান। ২০১৩ সালে নিজেদের মাটিতে কনফেডারেশন কাপে শুরু থেকেই দারুণ ছিল ব্রাজিল, নিজেদের অবস্থান প্রথম জানান দেয় ইতালিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে। এরপর শক্তিশালী উরুগুয়েকে ২-১ এ হারিয়ে ফাইনালে পায় স্পেনকে। সেই স্পেন যারা টানা দুটো ইউরো ও বিশ্বকাপ জয়ী। যেকোনো দল তখন স্পেনের সাথে খেলতে ভয় পেত। মারাকানায় স্পেনকে যেন এক শিক্ষাই দিয়েছিল ব্রাজিল। ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয় ব্রাজিল, যবনিকাপাত হয় সেই অদম্য স্পেন দলের।
পুরো দৃশ্যকল্প যেন ২০০২ এর মতোই- বিপদে ব্রাজিল, স্কোলারি এলেন, ব্রাজিল দাঁড়িয়ে গেল, কনফেডারেশন কাপ জিতলো। কেবল বাকি ছিল বিশ্বকাপ জয়ের। সব নাটকে কি আর সুখী সমাপ্তি থাকে? সেমিফাইনালে ব্রাজিল শিকার হলো তাঁদের ইতিহাসের সেরা লজ্জার। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ দেয়া যায়। জার্মানির কাছ থেকে বিন্দুমাত্র ক্রেডিট সরিয়ে না নিয়েও বলা যায়, এই দিনটাই ছিল অন্যরকম ব্রাজিলের জন্য। এমনকি হয়তো কোনো অনুর্ধ্ব-২৩ দলও ৭ গোল হজম করতো না। কিন্তু ভগ্নমনোরথ খেলোয়াড়দের সান্ত্বনা দিতে থাকা স্কোলারি কি জানতেন না, দেশের পরেই সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে তাঁর নিজের?
বিশ্বকাপের পর তিনি কিছুদিনের জন্য ফিরে আসেন তাঁর বহু সাফল্য প্রাপ্তির ক্লাব গ্রেমিওতে। সাফল্য আসেনি, উল্টো এসেছে সমর্থকদের কাছ থেকে বিদ্রুপ। অথচ খুব সযত্নেই স্কোলারি পারতেন ২০০১ সালে খাঁদের কিনারায় থাকা ব্রাজিলের দায়িত্ব না নিয়ে ২০০২ বিশ্বকাপের পর নতুন করে দায়িত্ব নিতে। তিনি কি পারতেন না ২০১২ সালে নিজের কিংবদন্তীতুল্য মর্যাদাকে বাজির আসরে না রেখে মাইক্রোফোন হাতে টিভিতে বিশ্লেষণ করে টু-পাইস কামাতে? তাঁর পরেও তিনি যখনই ব্রাজিলের দরকার হয়েছে তিনি হাল ধরেছেন। তাঁর মুখাবয়ব ও ব্যক্তিত্বের জন্য বিখ্যাত ট্রিলজি ‘গডফাদার’ এর অনুকরণে তাঁকে ‘গডফাদার’ বলা হতো। খুব ভালোভাবে খেয়াল করে দেখুন, ব্রাজিলের কোচ হিসেবে স্কোলারি তিনটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, যার মধ্যে দুটিতেই চ্যাম্পিয়ন, বাকি একটিতেও সেমিফাইনালে। ৯ জুলাইয়ের একটি ম্যাচ, সেই ৯০ মিনিট কি তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে ব্রাজিলকে যা দিয়েছেন তার প্রাপ্য সন্মান?
ফিচার ছবিসত্ত্ব- Africa Top Sports