সামাজিক ন্যায্যতা, বৈষম্য দূরীকরণ আর দুর্নীতি বন্ধের সংকল্প নিয়ে হুগো শ্যাভেজ ভেনিজুয়েলার ক্ষমতায় আসেন ১৯৯৮ সালে। ক্ষমতাইয় এসেই সংবিধান সংশোধন করেন, পার্লামেন্টের ক্ষমতা কমিয়ে সামরিক বাহিনীকে নিয়ে আসেন ক্ষমতার কেন্দ্রে। তেল রাজস্ব দিয়ে শুরু করেন ‘বলিভিয়ান রেভ্যলুশন’, বিনামূল্যে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন শিক্ষা, নিরাপদ খাদ্য, চিকিৎসা সুবিধার মতো মৌলিক প্রয়োজনগুলো। উদ্যোগ নেন দরিদ্রদের আবাসন প্রকল্পের, বিজ্ঞান আর পরিবেশ খাতে বাড়ান বরাদ্দ। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তৈরি করেন অর্ধ-সামরিক মিলিশিয়া বাহিনী।
তবুও, এক যুগেরও বেশি সময়ের শাসনে শ্যাভেজের সাফল্য খুব প্রশংসনীয় কিছু না। বাকপটুতা আর স্বপ্নবাজ হয়ে যে হুগো শ্যাভেজ ক্ষমতায় এসেছিলেন, সময়ের সাথে সাথে তিনি কর্তৃত্ববাদের দিকে ঝুঁকেছেন, গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো বাধাগ্রস্ত করেছেন। এর একটি চিত্র পাওয়া যাবে প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনে তার জনসমর্থনের হারে। ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছিলেন ৫৬.২% ভোট, ২০০৬ সালে যা বেড়ে হয় ৬২.৮%। শ্যাভেজের জনপ্রিয়তার ভাটা মূলত তখন থেকেই শুরু হয়, পরাজিত হন ২০০৭ সালের গণভোটে। ২০১২ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনে অসুস্থতা নিয়েও জিতেছেন, জনসমর্থনের হার কমে যায় ৭%।
ভেনিজুয়েলা যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে আছে, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে, তার দায় অনেকটা শ্যাভেজেরই উপর আসে। ২০১৩ সালে মৃত্যু হয় শ্যাভেজের, ক্ষমতায় আসেন তার বলয়েরই নিকোলাস মাদুরো। তিনিও একই ধরনের কর্তৃত্ববাদী শাসনতন্ত্র বজায় রাখছেন, জনগণকে বঞ্চিত করছেন রাষ্ট্রীয় আর নাগরিক সুবিধা থেকে।
কিন্তু কেন শ্যাভেজের স্বপ্নচারী লক্ষ্যগুলো পূরণ হয়নি? কেন তুমুল জনপ্রিয় নেতার জনপ্রিয়তায় ধস নামলো? নন্দিত নেতা কেন নিন্দিত হলেন?
দুর্নীতি
বিংশ শতাব্দীতে তেলের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে তেল রাজস্বই ভেনিজুয়েলার বৈদেশিক আয়ের প্রধান খাত। বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয়ের অধিকাংশটাই গেছে ক্ষমতায় থাকা শাসকদের পকেটে, জড়িত ছিলেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও। ফলে দুর্নীতি ভেনিজুয়েলার শাসনব্যবস্থায় ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। শ্যাভেজ এই সুবিধাভোগী এলিট ক্লাসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেই আলোড়ন তুলেছিলেন, জনপ্রিয়তা অর্জন করে হয়েছিলেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট।
ক্ষমতায় আসার পরেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পায়, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিয়ে আসেব বিপুল তেল রাজস্ব, হিসেবে যা ৩০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তিনি এই বিপুল রাজস্ব দিয়ে সংস্কারকাজ শুরু করেন, জনগণকে আশ্বাস দেন বৈষম্য মোচনের। কিন্তু এই সংস্কারে দুর্নীতি শ্যাভেজ আটকাতে পারেননি, যোগ দিয়েছেন পরিবারসহ।
শ্যাভেজের সংস্কারমুখী প্রথম প্রকল্প ছিল মিশন বলিভার ২০০০, বরাদ্দ করেছিলেন প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার। এর অর্ধেকটাই গেছে প্রশাসকদের পকেটে, যার দায় নিতে সরে যেতে হয় মিশনে নেতৃত্ব দেওয়া তৎকালীন সেনাপ্রধানকে। এরপর একে একে প্রতিটি ক্ষেত্রেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার খবর বেড়িয়েছে। শ্যাভেজের পরিবারের বিলাসবহুল জীবন যেন দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করেছিল, দিয়েছিল নিরাপত্তার গ্যারান্টি।
একে একে ব্যবসা খাত, ফার্ম, ব্যাংক সবকিছুতেই দুর্নীতির বিস্তার বাড়তে থাকে। ফলে বিপুল রাজস্ব আসার পরও শ্যাভেজের আমলে ভেনিজুয়েলার ঋণ ২২ বিলিয়ন ডলার থেকে হয় ৭০ বিলিয়ন ডলার। শুধু ব্যাংকাররা সরিয়েছিলেন প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার, যা উদ্ধারের কোনো চেষ্টাও হয়নি।
প্রতিটি ক্ষেত্রে দৃষ্টিকটুভাবে আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতি হয়, ঘুষ আর স্বজনপ্রীতিতে ছেয়ে যায় দেশ। ধারাবাহিকভাবেই, বলিভিয়ান রেভ্যলুশন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৭০০ বিলিয়ন ডলারের অর্ধেকই যায় শাসকশ্রেণীর কাছে। ট্যাক্স জাস্টিজ নেটওয়ার্কের মতে পরিমাণটা আর বেশি, প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলার।
হুগো শ্যাভেজের আমলে আমলাতন্ত্র আর নাগরিকদের মধ্যে সম্পর্কের যে ফারাক দেখা গেছে, সেটি রেন্টিয়ার ইফেক্ট হিসেবে পরিচিত। রেন্টিয়ার ইফেক্টে রাষ্ট্রের ব্যয়ের অধিকাংশ অর্থ আসে তেলের মতো অনুৎপাদনশীল খাত থেকে, রাষ্ট্র তখন কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠে। নাগরিকদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা শিথিল হয়ে ওঠে, শাসকেরা নির্ভরশীল হয়ে ওঠেন আমলাতন্ত্রের প্রতি। তেলের মতো এরকম রাজস্বের উৎস, যার সাথে জনগণের সরাসরি সম্পর্ক নেই, সেসব অর্থের উৎস জনগণের জন্য আশীর্বাদ না হয়ে একসময় অভিশাপ হয়ে ওঠে। নাইজেরিয়ার মতো ভেনিজুয়েলার ক্ষেত্রেও তেল রাজস্বের অর্থ নাগরিকদের জন্য অভিশাপ হয়েই এসেছে। তৈরি করেছে আমলাতন্ত্রের সীমাহীন কর্তৃত্ববাদ আর দুর্নীতির সুযোগ।
জনস্বার্থের সাথে এই দুর্নীতি প্রতারিত করেছে জনগণকে, ব্যর্থ করেছে বলিভিয়ান রেভ্যলুশনকে।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা
প্রকৃতিগতভাবেই ভেনিজুয়েলা ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে সহিংস দেশ। খুন, ধর্ষণ আর সংঘবদ্ধ অপরাধের ঘটনা শ্যাভেজের শাসনামলের আগেও ঘটত। তার শাসনামল আসার পর সামাজিক ন্যায্যতা আর সংস্কারের যে উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়িত হলে দরিদ্রতা কমার সাথে সাথে অপরাধের হারও কমতো। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি আর লুটপাট সামাজিক বৈষম্য নিরসনে কোনো ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারেনি, বাড়িয়েছে অপরাধের হার।
শ্যাভেজের আমলে বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা ধ্বংস করা হয়, ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে পুলিশও। ফলে অপরাধের মাত্রার লাগাম ছুটে যায়, ভেনিজুয়েলার রাজধানী পরিচিত হয় ‘Global Murder Capital‘ নামে। হত্যা বৃদ্ধি পায় তিনগুণ, দশগুণ বৃদ্ধি পায় অপহরণের ঘটনা। প্রতিদিন ভেনিজুয়েলায় অপহরণ হতো গড়ে ৫০ জন নাগরিক, বছর শেষে সেই সংখ্যা ষোল হাজার পার হতো। এর বেশিরভাগ শিকার হতেন সাধারণ নাগরিকরা, অপহরণকারীদের সাথে যোগসাজশের অভিযোগ ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোরও। অবশ্যম্ভাবীভাবেই, অপহরণের শিকার হওয়া মানুষদের প্রায় কেউই বিচার পাননি। অনেকে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছেন, একটি অংশ পরিণত হয়েছেন অপহরণকারীদের শিকারে।
ভেনিজুয়েলা হয়ে উঠেছে মাদকদ্রব্য আর মানব পাচারে বিশ্বের অন্যতম এক ব্যবহৃত রুট হিসেবে। পুরো ভেনিজুয়েলা জুড়েই গড়ে উঠেছে অপরাধীদের সংঘবদ্ধ চক্র। শ্যাভেজের আমলে যারা সহিংসতায় হত্যা করেছে প্রায় লাখ খানেক মানুষকে, যার মধ্যে বিচার হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশের।
ভেনিজুয়েলার প্রতি পাঁচটি অপরাধের একটি সংগঠিত হয় পুলিশের দ্বারা, জনমনে তারা আবির্ভূত হয়েছে ‘রাষ্ট্র স্বীকৃত ডাকাতের দল’ হিসেবে। শ্যাভেজ এদের নির্মূলে কার্যকর কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে পারেননি, অভিযোগ আছে এমন অপরাধীদের মদদ দেওয়ারও।
হুগো শ্যাভেজের আমলের মতো একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারের ব্যাপারে জনসমর্থন টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন ন্যায়বিচার এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ভেনিজুয়েলার নায়ক হুগো শ্যাভেজ এই কোনটাই নিশ্চিত করতে পারেননি। অর্থনীতিতে যেমন বৈষম্য বেড়েছে তাঁর সময়ে, বেড়েছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি।
শ্যাভেজের পুরো আমলটা জুড়েই নিরাপত্তার অভাবে ভুগেছে নাগরিকেরা, কমিয়েছে নন্দিত নায়কের উপর জনগণের আস্থা।
অর্থনৈতিক দুরবস্থা
শ্যাভেজের আমলে বিপুল তেল রাজস্ব আসার ফলে অর্থনীতিতে হঠাৎ করেই ব্যাপক লিকুইড মানি ছড়িয়ে পড়ে দেশের অর্থনীতিতে। জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে দ্রুতগতিতে, যার ফলাফল হিসেবে দেখা দেয় মুদ্রাস্ফীতি। শ্যাভেজের আমলে এই হার ছিল ২০-৩০% শতাংশের মধ্যে, যা তৈরি করেছিল অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা।
শ্যাভেজের সময়ে ভেনিজুয়েলা থেকে পাচার হয়েছে ২২ বিলিয়ন ডলার, যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে শাসকগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের। অর্থনৈতিক কাঠামোকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল এই অর্থ পাচারের ঘটনা, একইসাথে বাড়িয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। বিপুল তেল রাজস্বের সুবিধা পরোক্ষভাবেও পায়নি নাগরিকেরা। কারণ, টাকার যোগান পাওয়া অভিজাতেরা দেশের অভ্যন্তরে বিনিয়োগ করেননি, তৈরি হয়নি নতুন অর্থনৈতিক ক্ষেত্র, নতুন কর্মক্ষেত্র।
সত্যিকার অর্থে, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার মতো কোনো পদক্ষেপ শ্যাভেজ নেননি। ফলে অর্থনীতি হয়ে পড়ে তেলনির্ভর, যে খাত থেকে আসত বৈদেশিক মুদ্রার প্রায় ৯০ শতাংশ। ফলে আরব বিশ্বে অস্থিতিশীলতার সুযোগে যখন আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে ধস নামে, ধস নামে ভেনিজুয়েলার অর্থনীতিতেও। ডাচ ডিজিজের সব বৈশিষ্ট্য নিয়ে ভেঙে পড়ে অর্থনীতি। ডাচ ডিজিজের ক্ষেত্রে একটি দেশের বৈদেশিক আয়ের ৮০ শতাংশ আসে একটি নির্দিষ্ট খাত থেকেই, সেই খাতের উপর নির্ভরশীলতাই একসময় হয়ে আসে অভিশাপ হিসেবে।
আজকের দিনে ভেনিজুয়েলার অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি ৮০,০০০% হয়েছে, এর দায়ও হুগো শ্যাভেজের অপরিণামদর্শী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ
শ্যাভেজ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা হলেও একসময় ছিলেন সামরিক বাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল, নেতৃত্ব দেন ক্ষমতা দখলের একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানেরও। ফলে ক্ষমতায় আসার পরেও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি তিনি নিজেকে শ্রদ্ধাশীল হিসেবে প্রমাণ করেননি, সংবিধান সংশোধন করে প্রবর্তন করতে চেয়েছিলেন কর্তৃত্ববাদী শাসন। ফলে তৃতীয় বিশ্বের দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোর মতো তিনিও দমন করার চেষ্টা করেছেন বিরোধীদের, ক্ষমতা কমিয়েছেন পার্লামেন্টের। একটি কার্যকর আইনসভা হিসেবে হিসেবে বিকশিত হতে দেওয়া হয়নি দেশের পার্লামেন্টকে, দেশের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত আসতো প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকেই। ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পার্লামেন্টের যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, সেটিও পালন করতে দেওয়া হয়নি।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছেন, বাধাগ্রস্ত করেছেন অবাধ তথ্যের প্রবাহ। সাংবাদিকেরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে হুমকির মুখে পড়েছেন, পড়েছেন নিরাপত্তার সংকটে। শ্যাভেজের আমলে বাজেট প্রকাশ করা হয়নি, তেল থেকে অর্জিত মুনাফা জানানো হয়নি জনগণকে, জনগণকে জানানো হয়নি তেল রাজস্ব ব্যয়ের হিসাবও। কারচুপির অভিযোগ রয়েছে হুগো শ্যাভেজের আমলে আয়োজিত গণভোট আর প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনে। ফলে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে, এবং জন্ম দেয় দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার। এখনও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেই আছে ভেনিজুয়েলা, রয়েছে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এসে শ্যাভেজ নিজেই পরিবারসহ জড়িয়ে পড়েন অন্তহীন দুর্নীতিতে, বিপ্লবের নামে প্রতারণা করেছিলেন জনগণের সাথে। নিরাপত্তা সঙ্কট আর নির্বাচনে কারচুপি ধস নামায় তার জনপ্রিয়তায়। দেশকে ঠেলে দিয়ে গেছেন এক অন্তহীন অর্থনৈতিক আর রাজনৈতিক সঙ্কটে। নন্দিত নায়ক এভাবেই নিন্দিত হয়েছেন।