- কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর ছেলে ফিদেল কাস্ত্রো দিয়াজ-বালার্ত আত্মহত্যা করেছেন। তিনি ফিদেলিতো নামে পরিচিত।
- গতকাল বৃহস্পতিবার ৬৮ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন তিনি।
- অবসাদে ভোগার কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে তার চিকিৎসা চলছিল বলে জানায় কিউবার সরকারি গণমাধ্যম।
প্রাথমিকভাবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও পরবর্তীতে বহির্বিভাগের রোগী হিসেবে তার চিকিৎসা চলছিল। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ‘কিউবান কাউন্সিল অব স্টেট’ এর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ‘কিউবাস অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স’ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করেছেন।
তিনি ১৯৮০-৯২ সাল পর্যন্ত কিউবার জাতীয় নিউক্লিয়ার কার্যক্রমের প্রধান ছিলেন। এ সময় তিনি জুরাগুয়াতে একটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বানানোর প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে ১৯৯২ সালে তহবিলে টান পড়ে। প্রকল্পটি ২০০০ সালে বন্ধ হয়ে যায়।
ফিদেলিতো ১৯৪৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম মিরতা দিয়াজ-বালার্ত। ১৯৫৫ সালে ছয় বছর বয়স থাকাকালীন তার বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তার তত্ত্বাবধানে কে থাকবেন, তা নিয়ে তাদের মাঝে লড়াই চলছিল। মেক্সিকোতে থাকাকালীন ফিদেল কাস্ত্রো দু’সপ্তাহের জন্য ছেলের সাথে সাক্ষাৎ করার ব্যবস্থা করেন। এই সাক্ষাতের শেষে ফিদেলিতোকে এক বন্ধুর কাছে রেখে তিনি কিউবাতে এক গেরিলা অভিযানে বেরিয়ে যান।
তার মা এর মাঝে মেক্সিকোতে অবস্থিত কিউবার দূতাবাস ও তার পরিবারের সাহায্যে ছেলেকে উদ্ধার করে নিউ ইয়র্কে চলে যান। পরবর্তীতে ১৯৫৯ সালে ফিদেল কাস্ত্রো ক্ষমতায় এলে ছেলেকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।
কিউবার ক্ষেত্রে তার বাবার ভূমিকা অনেক বড় হলেও তিনি নিজেকে কিছুটা আড়াল করে রেখেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, তার কখনোই রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল না। ২০১৩ সালের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,“আমি সারা জীবনই একজন বিজ্ঞানী ছিলাম”।
তিনি জানান ম, তার প্রজন্মকে কাস্ত্রো পরিবার জোর করে রাজনীতিতে পাঠাননি। তিনি বলেন,“অন্য সকল পরিবারের মতোই কাস্ত্রো পরিবারও একজন ব্যক্তি বা একটি দেহ নয়। এটি ভিন্ন ভিন্ন মানুষের দূরদর্শিতা ও অতীতের সমন্বয়ে গঠিত।”
তার মৃত্যুর প্রায় এক বছর পূর্বে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তার বাবা ফিদেল কাস্ত্রো ৯০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মায়ের দিক থেকে তার আত্মীয় হচ্ছেন ‘রিপ্রেজেন্টেটিভ’ মারিও দিয়াজ-বালার্ত ও সাবেক ‘রিপ্রেজেন্টেটিভ’ লিঙ্কন দিয়াজ-বালার্ত।
ফিচার ইমেজ: Unian