কাল ভৈরবের ঘাট: বাস্তব খুনীর কাল্পনিক অটোবায়োগ্রাফি

“গঙ্গায় স্নান করে বাড়ি এসে প্রতিজ্ঞা করলাম আর এমন লেখা লিখব না! বেজায় চিন্তায় ছিলাম এই বীভৎস উপন্যাস হয়তো হুবহু ছাপানো সম্ভব হবে না।”

ভূমিকাতে এটাই ছিল নিজের লেখা উপন্যাস ‘কাল ভৈরবের ঘাট’ নিয়ে লেখক বিনোদ ঘোষালের সোজাসাপ্টা স্বীকারোক্তি। এই ছোট কলেবরের উপন্যাসটি লেখককে এতটাই নাড়া দিয়েছিল। কিন্তু নিজের লেখা নিয়ে লেখক যখন নিজেই এত আতঙ্ক অনুভব করেন, সেই বইটি আসলে তখন ভয় পেতে ভালবাসে এমন পাঠককে আরো একটু বেশি করেই নাড়া দেয়। ভয়ংকর এক খুনির জীবনকাহিনী ও তার ক্রিয়াকলাপের বীভৎসতা বর্ণনা করে ‘কাল ভৈরবের ঘাট’।

বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ভারতের ‘নবকল্লোল’ পত্রিকায়। এরপর দ্রুতই যখন উপন্যাসটি পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে, তখন ভারতের ‘দেব সাহিত্য কুটীর প্রাঃ লিমিটেড’ বইটিকে দুই মলাটের ভেতরে নিয়ে এসে বই হিসেবে প্রকাশ করে। বাংলাদেশে বইটি প্রকাশ হয়েছে ‘চন্দ্রভুক’ প্রকাশনী থেকে। তবে বইটির বাংলাদেশ মুদ্রণের ব্যাপারে লেখক নিজেই বইয়ের শুরুতে লিখেছেন,

“(ভারতে প্রকাশের) বছর খানেক পর আমার সঙ্গে বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা চন্দ্রভুক-এর পক্ষ হতে যোগাযোগ করলেন। ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তারা এই বইটি বাংলাদেশে তাদের প্রকাশনা থেকে আলাদাভাবে প্রকাশ করতে চান। প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলাম। আবারও খানিক ঘষামাজা চলল।”

বইটির ভারতীয় সংস্করণের প্রচ্ছদ; Image Credit: Goodreads

চরিত্রায়ণ

থ্রিলার গল্পের নৃশংসতা নিতে অভ্যস্ত নয় এমন কারো জন্যে ‘কাল ভৈরবের ঘাট’ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। গল্পটির পুরো প্লট জুড়ে আছে কেবল এক কুখ্যাত সন্ত্রাসীর কার্যকলাপ। খুবই অনুমিতভাবে বইয়ের মূল চরিত্র ঐ কুখ্যাত সন্ত্রাসীই!

কালো মন্ডল

যে কুখ্যাত সন্ত্রাসীর কথা বলছিলাম, বইয়ে সেই চরিত্রটির নাম ‘কালো মন্ডল’। বইয়ে চরিত্রটির নামকরণে মূলত চরিত্রটির গাত্রবর্ণকেই আমলে নিয়েছেন লেখক। বইতে দেখা যায়, কালো মন্ডল মূলত ঘরহারা একটি চরিত্র। খুব ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পরে কালো মন্ডলের পরিবারে দুরবস্থা দেখা দেয়। এরপর সংসারের টানাপোড়েনে কালো মন্ডল ছোটবেলা থেকেই নানারকম দুষ্ট প্রবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ে। কালো মন্ডলের জীবন হয়ে যায় অনিয়ন্ত্রিত। মূলত মায়ের সাথে কালো মন্ডলের খুব একটা সদ্ভাব ছিল না। তবে এতেও হয়তো কালো মন্ডলের জীবন দিব্যি ‘দুষ্ট’ হয়েই চলে যেত, কিন্তু কালো মন্ডলকে ‘দুষ্ট’ থেকে পাপাচারের পথে ঠেলে দেওয়ার পেছনে আছে কৈশোরের এক করুণ কাহিনী।

বইটির বাংলাদেশ সংস্করণের প্রচ্ছদ; Image Credit: Goodreads

গল্পের শুরুতেই লেখক কালো মন্ডলের শৈশবকে ধাক্কা দেওয়া এই গল্পটি পাঠককে জানিয়ে দিয়েছেন। আর পুরো গল্পেই দেখা যায়, এই ধাক্কাটিই কালো মন্ডলকে আজন্ম তাড়িয়ে বেড়ায়। ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্নে সে দেখতে পায় তার জীবনকে এলোমেলো করে দেওয়া সেই ঘটনাটিই। মূলত পুরো জীবনে কালো মন্ডল সেই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সাক্ষাৎ নরকের মত তাকে তাড়া করে বেড়িয়েছে সেই ঘটনাটি, যে ঘটনা নিছক ডানপিটে কালো মন্ডলকে করেছে শহরের ত্রাস।

কালো মন্ডলকে বইতে দেখানো হয়েছে মূলত একটি খুনে চরিত্র হিসেবে। কালো মন্ডল নৃশংসতা পছন্দ করে, পছন্দ করে কাউকে প্রচন্ড কষ্ট দিতে। সেক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানের হিসেবে কালো মন্ডলকে একটি ‘স্যাডিস্ট’ চরিত্র বললে ভুল হবে না। লেখক নিজেই কালো মন্ডলের চরিত্র নিয়ে বইয়ের মাঝে লিখেছেন,

“ছোটবেলা থেকেই কালোর স্বভাবের মধ্যে একটা নৃশংসতা রয়েছে। অবলা পশুপাখিকে অত্যাচার করা কিংবা বন্ধুদের নির্দয়ভাবে পেটানো এগুলো বরাবর ওর ভাল লাগে।”

কিংবা বইয়ের মাঝেই, রক্ত দেখে রোমাঞ্চ অনুভব করা কালো মন্ডলের বীভৎস চরিত্র নিয়ে লেখকের বলা ঐ কথা দিয়েও কালো মন্ডলের চরিত্র নিয়ে পাঠক একটি ধারণা পোষণ করতে পারেন,

“ডান্ডার গায়ে লেগে থাকা চটচটে রক্ত হাতে ঠেকতে আবারও শিরশিরানি অনুভব করল কালো।”

কালো মন্ডল কেন এতটা বীভৎস হলো? সঠিক কারণ অবশ্য বইয়ে খুঁজে পাওয়া যায় না তবে কালো মন্ডলের এই বীভৎসতার পেছনে কালো মন্ডলের ছোটবেলার পারিবারিক কলহের মধ্যে দিয়ে যাওয়া কিংবা কৈশোরেই মুখোমুখি হওয়া সেই ট্রমার ঘটনাটাকে কারণ হিসেবে দাঁড় করানো যায়। সে হিসেবে কালো মন্ডলের মধ্যে ট্রমা কাটিয়ে উঠতে না পারার যে লক্ষণ দেখা যায়, সেটাও তাকে অপরাধজগতের দিকে ধাবিত করতে পারে।

কালো মন্ডলের চরিত্রের মধ্যে আরো যে বিষয়টা চোখে পড়ে সেটি হলো প্রবল ক্ষমতার লোভ। মূলত বইয়ের বিভিন্ন ঘটনায় দেখা যায় কালো মন্ডল কখনোই অপরের কর্তৃত্ব মানতে চায় না। সবসময় সর্বাবস্থায় নিজেকেই সর্বেসর্বা ভাবতে চায় আর সেজন্য সে চূড়ান্ত রকমের বেপরোয়াও হয়ে উঠতে পারে। কালো মন্ডলের বেশিরভাগ হত্যাকান্ডের পেছনের কারণ মূলত এই কর্তৃত্বের লোভ।

নওশাদ

নওশাদ মূলত কালো মন্ডলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ভৃত্য। বলা যায়, নানা ধরনের পাপাচারে কালোর ডানহাত এই নওশাদ। বইয়ের ভেতরেই কালো মন্ডল বলেছেন তিনি পৃথিবীতে নিজেকে ছাড়া আর শুধুমাত্র নওশাদকে বিশ্বাস করেন। নওশাদও প্রভুভক্ত দাসের মতোই কালো মন্ডলের সেবা করে যেতে থাকে।

নওশাদের সাথে কালো মন্ডলের পরিচয়টা ঘটে আকস্মিকভাবে। একটা দুর্ঘটনার মাধ্যমে তিনি পরিচিত হন নওশাদের সাথে। সেখানে তিনি মূলত নওশাদকে একটি সমূহ বিপদ থেকেই উদ্ধার করেন। আর এরপর থেকেই নওশাদকে দেখা যায় কালো মন্ডলের বিশ্বস্ত অনুচর বনে যেতে। বইয়ের কোথাও নওশাদের কোনো আত্মীয় কিংবা পিতা-মাতা চোখে পড়ে না। সে হিসেবে নওশাদকে আমরা একটি একক চরিত্র হিসেবে ধরে নিতে পারি। এর সাথে সাথে নওশাদের আরো যেসব গুণ বইতে দেখা যায় সেগুলো হল নওশাদের মধ্যে কোনো মমত্বের ছাপ চোখে পড়ে না। অবশ্য একক চরিত্র হিসেবে কারো প্রতি মমত্ব অনুভব না করার জন্যে নওশাদকে একদমই দোষ দেওয়া যায় না। তবে নওশাদের এই চরিত্রের বিধি অবশ্য বইয়ের একাংশে গিয়ে পাল্টে যায়।

অন্যান্য চরিত্র

গল্পের প্রয়োজনে লেখক বইতে নানা রকমের চরিত্রের সংযোগ ঘটিয়েছেন। তবে সহচরিত্র হিসেবে সবচেয়ে বেশি করে বলতে হয় কাশেম সর্দারের কথা। বইয়ের প্রথমে কাশেম সর্দারকে কালো মন্ডলের ‘মিরর ইমেজ’ মনে হলেও পরে গিয়ে কালো মন্ডলের অত্যাধিক নৃশংসতা কাশেম সর্দার থেকে তাকে আলাদাভাবে নিরূপণ করেছে। বইয়ে কাশেম সর্দার চরিত্রটির মধ্যে বিচক্ষণতার অভাব চোখে পড়ে। অবশ্য কাশেম সর্দারের এই বিচক্ষণতাই শেষ অব্দি কালো মন্ডলের টিকে থাকার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে এই বিচক্ষণতাকে গল্পের প্লট অনুসারে খুব একটা অপ্রয়োজনীয় বলার সুযোগ নেই। কাশেম সর্দার ছাড়াও বইয়ে আরো যেসব চরিত্র আছে সেগুলোকে মূলত আমরা দুভাগে ভাগ করতে পারি-

  • কালো মন্ডলের সহযোগী চরিত্র
  • কালো মন্ডলের ভিক্টিম

এর মধ্যে প্রথম চরিত্রগুলোর মধ্যে আমরা কালো মন্ডলের নৃশংসতার কিছুটা আভাস পাই আর দ্বিতীয় চরিত্রগুলির মধ্যে আমরা তীব্র অসহায়ত্ব আর দুঃখবোধ লক্ষ্য করতে পারি।

কাহিনী

‘কাল ভৈরবের ঘাট’ মূলত এক ভয়ংকর খুনীর আত্মজীবনী। খুনী মূলত কালো মন্ডল নিজেই। ছোটবেলায় একটা ধাক্কার মাধ্যমে কালো মন্ডল ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। কালো মন্ডলের অপরাধ জগতে পা রাখাই মূলত ঐ ঘটনার মধ্য দিয়ে। তবে কিশোর বয়সের ঐ অপরাধের পর দেখা যায় কালো মন্ডলের মধ্যে কোনো অনুতাপ আসেনি, এমনকি কোনো দুঃখবোধও তাকে স্পর্শ করেনি। আর এতে করেই কালো মন্ডল আস্তে আস্তে জড়িয়ে যায় আরো বড় বড় পাপাচারের মধ্যে দিয়ে। খুন, ধর্ষণ, লুটতরাজ ইত্যাদি হেন কোনো কাজ নেই যা সে করেনি। ভৈরব নদীর পাড়ে একটা ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ধীরে ধীরে সে নিজের সাম্রাজ্যও তৈরি করে। এই সাম্রাজ্য বানানোর পথে কালো মন্ডলকে আরো নানাবিধ খুন ও অনৈতিক পথের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আর এসব পথের গল্পই মূলত ‘কাল ভৈরবের ঘাট’ গল্পের মূল প্লট। বইটি মূলত লেখা হয়েছে আত্মজীবনী ধাঁচে। আর এ কারণেই বইয়ের সব অধ্যায়ে কালো মন্ডল চরিত্রটি অবধারিতভাবেই এসে পড়ে।

এরশাদ শিকদার?

এরশাদ শিকদার, বাংলাদেশের এই ভয়ংকর খুনীর সাথে ‘কাল ভৈরবের ঘাট’ এর কালো মন্ডলের বেশ সামঞ্জস্য চোখে পড়ে। কারো যদি এরশাদ শিকদারের ঘটনা জানা থাকে তাহলে তার কাছে ‘কাল ভৈরবের ঘাট’ গল্পটিকে স্রেফ এরশাদ শিকদারের আত্মজীবনীই মনে হবে। লেখক অবশ্য নিজেই বইয়ের শুরুতে বলে দিয়েছেন,

“আমার মনে হলো একেবারে অন্যরকমের কিছু লিখি, যা আগে কখনও লিখিনি। ভাবতে ভাবতে বিষয় হিসেবে বাছলাম এমন এক ব্যাক্তির জীবনকে যা ভয়ানক। কল্পনায় ধরা দিল আটের দশকের ত্রাস ছিল এক কুখ্যাত নরপিশাচ। যেমন নির্মম তেমনই ধূর্ত। অসংখ্য খুন, ধর্ষণ এবং সমস্ত রকমের অবৈধ কাজে লিপ্ত সে ছিল হাজার হাজার মানুষের রাতের দুঃস্বপ্ন। তার জীবন সম্পর্কে অনেক তথ্য সংগ্রহ করে আমি একই সঙ্গে যেমন শিহরিত হয়েছিলাম এবং একইসঙ্গে ঠিক করে নিয়েছিলাম এই ভয়াবহ গল্প লিখবই।”

এই অংশটুকু পড়ে বোঝা যায় লেখক আসলে গল্পের ছক কষেছিলেন এক বাস্তব চরিত্র ধরেই। লেখকের বলা ‘আটের দশকের ত্রাস’ শুনলে বুঝে নিতে কষ্ট হয় না এই চরিত্রটি মূলত এরশাদ শিকদার। তবে পাশার দান উল্টে গেল বইটির বাংলাদেশ সংস্করণের এসে। সেখানে লেখক লিখেছেন,

“এই উপন্যাস আসলে কাল্পনিক জীবনকাহিনি। তথ্য তো রয়েছেই তার সঙ্গে উপন্যাসের কারণেই যুক্ত হয়েছে লেখকের কল্পনা। কল্পনা ও বাস্তবের মিশেলেই তো সাহিত্য। কাজেই এই উপন্যাসের মাধ্যমে সেই মানুষটির প্রকৃত জীবনকে খোঁজা বা জানার চেষ্টা ভুল হবে।”

বইয়ের ‘ভূমিকা’ অংশে এই কথাটুকু বইটির বাংলাদেশের প্রকাশনীর সংস্করণে থাকলেও ভারত হতে যে সংস্করণটি প্রকাশ পেয়েছে সেই অংশে কিন্তু একদমই ছিল না।

এরশাদ শিকদার; Image Credit: Daily Star

আর লেখক যতভাবেই এটাকে কাল্পনিক বলতে চান, বইটি যে মূলত কুখ্যাত এরশাদ শিকদারের জীবনির উপরে লিখিত হয়েছে সেটা বইটি পড়লেই বুঝতে পারার কথা। তবে যদি না পড়ে থাকেন আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি।  স্মৃতির পাতায় হাতড়ে একটু মনে করার চেষ্টা করুন, এরশাদ শিকদারের প্রাসাদপম অট্টালিকার নাম কি ছিল? মনশ্চক্ষুতে দেখতে পাচ্ছি, কপালটা কুঁচকে যাচ্ছে আপনার। থাক, আমিই মনে করিয়ে দিচ্ছি- ‘স্বর্ণকমল’। বইতে কালো মন্ডলের প্রাসাদটির নামও ছিল এই ‘স্বর্ণকমল’ ই। আবার আরেকটু মনে করা যাক, পত্রিকায় আসা খবর অনুসারে এরশাদ শিকদারের সেই আইকনিক গানটা-

“আমি তো মরে যাব,

চলে যাব, রেখে যাব সবই

আছস নি কেউ সঙ্গের সাথী,

সঙ্গে নি কেউ যাবি?

আমি মরে যাব

আমি তো মরে যাব”

ঠিক এই গানটাই চরিত্রের কালো মন্ডলকেও বারবার গাইতে দেখা যায়। আর শুধু এ দুটোই না, এরশাদ শিকদারের সাথে কালো মন্ডলের মিল আছে আরো অনেক। দুজনের মধ্যে সেই একই রকম হিংস্রতা, বীভৎসতা চোখে পড়ে। সেজন্যেই, লেখক যতই কল্পকাহিনী বলতে চান না কেন- বইটা আসলে এরশাদ শিকদারের জীবনের ওপরই লেখা।

স্বর্ণকমল; Image Credit: Daily Inqilab

পাঠ প্রতিক্রিয়া

‘কাল ভৈরবের ঘাট’ পড়তে গিয়ে যে কয়টি ব্যাপার বেশি করে নজর কেড়েছে সেটি হলো পাঠক এখান থেকে একজন খুনীর মনঃস্ত্বাত্ত্বিক বিশ্লেষণ জানতে পারবে। একজন খুনী কিভাবে চিন্তা করে, কিংবা খুনের পর তার উল্লাস কেমন হয় সেটা জানা যাবে এখান থেকেই। তবে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ব্যাপারটা হলো, বাস্তব এক খুনীর জীবন এখানে ধরা দেবে কল্পকাহিনীর মধ্য দিয়ে। বইটি পড়ার সময়ে মানুষের অসহায়ত্বও পাঠককে প্রবলভাবে নাড়া দেবে। এছাড়াও সমাজে একজন অপরাধী যে যে সুবিধা পেয়ে থাকে সেটি জানতে পেরে পাঠকের মনে প্রবল বিদ্বেষও আসতে পারে। তবে বইতে যে ব্যাপারটি সবচেয়ে কটুভাবে চোখে পড়ে সেটি হলো বিরামচিহ্নের অভাব। কোথাও কোথাও লেখক বিরামচিহ্ন ব্যাবহারে এমন অসতর্কতা দেখিয়েছেন যে পুরো ভাবের অনেকাংশ পাঠককে নিজে থেকে বুঝে নিতে হচ্ছে।

লেখক

লেখক বিনোদ ঘোষাল; Image Credit: facebook.com/Binod Ghoshal

বিনোদ ঘোষাল একজন স্বাধীনচেতা লেখক। নিজেকে তিনি কখনও কোন ছকের মধ্যে ফেলতে রাজি নন। তিনি চান কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে বাংলা সাহিত্যের সব ধরনের লেখার কষ্টিপাথরে নিজেকে যাচাই করতে। বিনোদ ঘোষালের প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে, ‘দেশ’ পত্রিকাতে। প্রথম গল্পটি আকস্মিকভাবে প্রকাশ পেলেও এরপর থেকে তিনি লেখালেখিতে নিয়মিত হন। তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘ডানাওয়ালা মানুষ’ ২০১১ সালে সাহিত্য আকাদেমি যুব পুরষ্কার লাভ করে। এছাড়াও ২০১৭ সালে ‘মিত্র ও ঘোষ স্মৃতি পুরষ্কার’ এবং ২০১৮ সালে ‘শৈলজানন্দ স্মৃতি পুরষ্কার’ লাভ করেন তিনি। তার লেখা অনেক গল্প থেকে টিভি পর্দায় নাটক-সিনেমা নির্মিত হয়েছে।

Related Articles

Exit mobile version