বাগদাদের তিন ঘনিষ্ঠ সহপাঠী, যারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিল পরস্পরের সামনে। প্রতিজ্ঞাটি এমন ছিল, তিন জনের মধ্যে সবার আগে যে প্রতিষ্ঠিত হবে, অপর দুজনকে সে সাহায্য করবে প্রতিষ্ঠিত হতে। এর জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। তাদের একজন তৎকালীন সেলজুক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেলো। পূর্ববর্তী ওয়াদা অনুযায়ী হাত বাড়ালো অপর দুই বন্ধুর দিকে। প্রদান করলো গভর্নরের পদ। বন্ধুদের একজন কবি। গভর্নরের পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে ভাতা প্রাপ্তিতেই সন্তুষ্ট হলো। তবে অপর বন্ধু জানালো আপত্তি। তার দাবি মন্ত্রিত্ব লাভের। সুতরাং দুই বন্ধুতে শুরু হলো ব্যাপক দ্বন্দ্ব।
প্রধানমন্ত্রী বন্ধুর কৌশলের সামনে টিকতে না পেরে অপমানিত হয়ে রাজ্য ত্যাগ করতে হয় অপর বন্ধুকে। প্রতিজ্ঞা করলো চরম প্রতিশোধ গ্রহণের। কালক্রমে তিনজনই ইতিহাসে পরিচিতি লাভ করে। প্রথমজন মুসলিম রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে পুরোধা ব্যক্তিত্ব নিযামুল মুলক তুসী। দ্বিতীয়জন ইতিহাস বিখ্যাত কবি ও গণিতবিদ উমর খৈয়াম এবং দেশ ত্যাগ করে যাওয়া বন্ধুটি মধ্যযুগের ত্রাস হাসাসিন সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা হাসান বিন সাব্বাহ।
৯০৯ সালে প্রথমবারের মতো ইসমাইলিয়া শিয়ারা মিশরে খিলাফত কায়েম করে। ইসমাইলিয়া শিয়াদেরই আরেকটি শাখা প্রাধান্য লাভ করে ইরান ও সিরিয়ায়। ধর্মীয় নিষ্ঠুরতা ও দর্শনের ভিন্নতার কারণে সুন্নি-শিয়া নির্বিশেষে তাদের ‘মালাহিদা’ বা বিধর্মী বলে আখ্যা দেয়। ঐতিহাসিক ইবনে আসির তাদের ‘দাওয়াতুল আখিরা’ বা পরবর্তী আন্দোলন এবং শাহরিস্তানি তাদের ‘দাওয়াতুল জাদীদা’ বা নব্য আন্দোলন বলে উল্লেখ করেছেন। কালক্রমে তারা হাসাসিন নামেই অধিক পরিচিতি লাভ করে। আরবি এই হাসাসিন থেকেই ইউরোপে Assassins নামের আমদানি ঘটে। Benjamin of Tudela এই প্রসঙ্গে বলেন,
“প্রধানকে ডাকা হতো হাসাসিনদের সর্দার বলে। তিনিই ছিলেন বড় এবং তার নির্দেশেই দূর্গের সবাই ঢুকতো বা বের হতো। ঊর্ধ্বতনের কথা বিশ্বাস করা এবং সকল ক্ষেত্রে সকলকেই তা মেনে চলতে হতো। সবাই তাদের ভয় পেতো। কারণ বড় বড় রাজাকেও তারা হত্যা করার সক্ষমতা দেখিয়েছে।”
উৎপত্তির প্রেক্ষাপট
কুফায় জন্ম নেওয়া হাসান বিন সাব্বাহ ছিলেন শৈশব থেকেই মেধাবী। অঙ্ক, জ্যোতির্বিদ্যা, ধর্মতত্ত্ব ও দর্শনে তার জ্ঞানকে সমকালের পণ্ডিত নিযামুল মুলক, উমর খৈয়াম ও ইমাম গাজ্জালির পর্যায়ে ধরা হতো।
প্রথম জীবনে ইসনা আশারিয়া শিয়া মতবাদের সমর্থক হলেও মুমিন নামক এক ফাতেমীয় প্রচারকের মাধ্যমে ইসমাইলীয়া বা বাতেনী মত গ্রহণ করেন। ১০৭৮ সালে প্রচারক ইবনে আততাশের প্রতিনিধি হিসেবে মিশরের রাজধানী কায়রো যান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মুসতালী এবং সেনাপতি বদরের ষড়যন্ত্রের জন্য অচিরেই ত্যাগ করতে হয় কায়রো। ১০৮১ সালে ইস্পাহানে ফিরে খলিফা মুসতানসিরের জ্যেষ্ঠপুত্র নিযারের পক্ষে প্রচারণা চালান।
১০৮৪ খ্রিষ্টাব্দে খলিফা মুসতানসিরের মৃত্যু হলে সেনাপতি বদরের পুত্র আফজাল খলিফার নাবালক পুত্র আবুল কাসেমকে সিংহাসনে বসিয়ে ক্ষমতা হস্তগত করেন। যদিও খলিফা মনোনীত করে গিয়েছিলেন বড় ছেলে নিযারকে। এই ঘটনায় হাসান বিন সাব্বাহ কায়রোর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং পারস্যে নিযারের নামে প্রচারণা চালান। গোষ্ঠীটি নিযারিয়া নামে পরিচিতি পায়। আলামুত দুর্গকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ইতিহাস বিখ্যাত ‘গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়’ বা হাসাসিনদের উৎস ছিল এই নিযারিয়া মতবাদ। ইরানে বাতেনী প্রচারণা নতুন রূপ লাভ করে বলে এটি ‘দাওয়াতে জাদীদ’ হিসাবে পরিচিতি পায়।
প্রচারক দল ও কাঠামো
হাসাসিনদের প্রচারণা কাঠামো ছিল খুব সংগঠিত এবং পরিকল্পিত। মর্যাদা ও দায়িত্বের দিক থেকে গোটা প্রচারক দলকে ছয়টি পৃথক শ্রেণিতে বিভক্ত করা হতো। প্রধান প্রচারক বা দায়ী আদ দোআ’য়াত তাদের সদর দপ্তর আলামুত পার্বত্য দূর্গে অবস্থান করতেন।
তাকে আখ্যা দেয়া হতো শায়খুল জাবাল বা পর্বতের বৃদ্ধ ব্যক্তি বলে। তার অধীনে থাকতো সকল জেলা বা বাহারের প্রধানেরা। প্রতি বাহারের শ্রেষ্ঠ প্রচারককে নিযুক্ত করা হতো দায়ী আল কাবির হিসেবে। সাধারণ প্রচারকদের সহযোগিতার জন্য থাকতো কিছু সহযোগী বা রফিক। আবার রফিকদের সাথে থাকতো অনুসারী বা লাসিক। সবার নিচে ছিল ফিদায়ী বা আত্মোৎসর্গকারী। প্রকৃতপক্ষে ফিদায়ীরাই ছিল গুপ্তঘাতকতার প্রধান বাহক বা প্রকৃত হাসাসিন।
ফিদায়ীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
সাধারণত ফিদায়ী দলের জন্য পার্বত্য যুবকদের সংগ্রহ করে তাদের কষ্টসহিষ্ণু করে গড়ে তোলা হতো। শেখানো হতো অস্ত্রচালনা, ছদ্মবেশ ধারণ, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ভাষা। দেওয়া হতো ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মুসলিম সংস্কৃতি নিয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান। ফলে অনায়াসে গির্জা কিংবা মসজিদে ঢুকে নির্ধারিত ব্যক্তির বুকে ছুরি বসিয়ে আসতে পারতো তারা। ফিদায়ীদের অনুগত রাখার জন্য আলামুত দূর্গকে সাজানো হতো।
বিখ্যাত পর্যটক মার্কো পোলো ১২৭১-৭২ সালে এটি পরিদর্শন করে। তার ভাষ্য মতে, দুই পাহাড়ের মধ্যস্থলে এক কৃত্রিম উপত্যকা প্রস্তুত করে প্রবাহিত করা হয়েছিল শরাব, দুগ্ধ, মধু এবং সুপেয় পানির নহর। রাখা হয়েছিলো নৃত্যপটিয়সী, সুগায়িকা, চিত্তহারিণী রক্ষিতাও। সুখ ও ভোগের সমস্ত আয়োজন ছিল সেখানে।
শায়খুল জাবাল যাদের গুপ্তঘাতক দলে আনার মনস্থ করতেন, তারা ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করতে পারতো না। বারো থেকে বিশ বছর বয়সী যুবকদেরকে শায়খ তার দরবারে স্থান দিতেন। তাদের হাশিম লতার আরক পান করিয়ে চার পাঁচজন করে করে তন্দ্রাচ্ছন্ন করা হতো। তন্দ্রা ভাঙলে তারা দেখতে পারতো অপরূপ স্বর্গে বসে আছে। শায়খ যখন কোনো যুবককে কোনো মিশনে প্রেরণ করতেন, তার আগে আবার আরক পান করানো হতো। তারপর জ্ঞান ফিরলে শায়খের সামনে আনা হতো। বলা হতো সে যদি অমুক শাহজাদাকে হত্যা করে আসতে পারে, তবে তাকে সেই স্বর্গে পাঠানো হবে।
আর যদি এই অভিযানে গিয়ে তার মৃত্যুও হয়, তবুও তাকে এনে অনন্তকালের জন্য পাঠানো হবে সেখানে। এর ফলে শায়খের হুকুম পালনের জন্য তারা তৎপর হয়ে উঠতো। তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় দেখা স্বর্গের স্বরূপ আর শায়খের কথার প্রভাব তাদেরকে সম্মোহিত করে রাখতো। ফলে শায়খের আদেশে জীবন দিতেও তারা বিন্দুমাত্র কুণ্ঠিত হতো না।
বিকাশ ও প্রতিপত্তি
১০৯০-৯১ সালে হাসাসিনরা আলামুত দূর্গ অধিকার করে। ক্রমে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে ইয়াজিদ, কিরমান, তাবারিস্তান, দামগান, কাযবীন প্রভৃতি অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করে। একে একে দখল করে শাহদীজ, কালান্ জান, কুসাফ, ওয়াসম কুহ, উস তানাওয়ান্দ, আরদাহান, গীরদ্ই-ই-কুহ, কিলায়াতুন নাদীর, কিলায়াতুন তানবির, কিলায়াতুন খাল্লাত খান প্রভৃতি দূর্গ। সেলজুক আমির, পশ্চিম এশিয়ার রাজন্যবর্গ এবং তাদের সেনাপতি এমনকি ক্রুসেডাররাও তাদের ভয়ে তটস্থ থাকতো। এভাবে গুপ্তহত্যা ও ত্রাস সঞ্চার করে তারা সমগ্র পশ্চিম এশিয়ার ভূখণ্ডে আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছিল।
উল্লেখযোগ্য হত্যাকাণ্ড
ফিদায়ীরা বহু গণ্যমান্য রাজপুরুষ, মন্ত্রী, পণ্ডিত এবং শাহজাদাকে হত্যা করেছে। এমনকি কয়েকজন ক্রুসেড রাজাও তাদের হাতে নিহত হন। যাজক বেশে গির্জায় কিংবা প্রসিদ্ধ পুরুষের বেশে মসজিদে ঢুকে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতো। এভাবে ফিদায়ীদের হাতে ১০৯১ সালে নিহত হয় সে যুগের অনন্য মন্ত্রী নিজামুল মুলক।
তাদের খুনের তালিকা দীর্ঘতর হতে থাকে দিনকে দিন। নিহত হন মন্ত্রী আবদুর রহমান আল-সুমায়রামী (১০৯৭ সালে), উন রুবুলকা (১১০০ সালে), জানাহ উদ্দৌলাহ (১০৯৭ সালে), নিশাপুরের কাজি আবুল আলা সায়ীদ (১১০৫-৬), নিজামুল মুলকের ছেলে ফাখরুল মুলক (১১০৬), মাউদুদ (১১১৩-১৪), বাগদাদের আহমদ বিন ওয়াহ সুদান (১১১৬-১৭), কাজি সায়ীদ আল হালবী (১১২৫), আবদুল লতীফ আল খুজান্দী (১১২৯), ফাতেমীয় খলিফা আল আমির বি আমরিল্লাহ (১১৩৯), ফাতেমীয় মন্ত্রী আবু আলী বিন আফজাল (১১৩২), আব্বাসীয় খলিফা আল মুসতারশিদ (১১৩৫) এবং তার পুত্র আর রাশিদ (১১৩৭) প্রমুখ ব্যক্তিত্ব।
প্রতিক্রিয়া ও প্রতিশোধ হিসেবে তাদের উপরও নেমে আসে আক্রোশ। ১০৯৬ সালে বাতেনীদের উপর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। গোয়েন্দা মন্ত্রী সাদুল মুলককে চারজন সহকারীসহ হত্যা করা হয় ১১০১ সালে। ১১২৪ সালে বাতেনী পণ্ডিত আততাশকে মারা হয় নির্মমভাবে। ১১৪৬ সালে রাই-এর আব্বাস অজস্র বাতেনীকে হত্যা করে মাথার খুলি দিয়ে পিরামিড তৈরি করে।
হাসান বিন সাব্বাহ পরবর্তী কর্মকাণ্ড
১১২৪ সালের ২৩শে মে মৃত্যুবরণ করে হাসান বিন সাব্বাহ। নেতৃত্ব নেন নিকট সহচর বুযুর্গ উম্মিদ। ১১৩৮ তার মৃত্যুর পর পুত্র মুহম্মদকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ১১৬২ সালে মারা যায় মুহম্মদ। তার পুত্র হাসান নিজেকে ফাতেমীয় ইমাম নিযারের বংশধর এবং ইমাম দাবি করে পূর্ববর্তী আইন রহিত বলে ঘোষণা দেন। কোরানের আক্ষরিক অর্থ গ্রহণের বদলে বাতেনী ও রূপক অর্থের প্রতি জোর দেন। তার এই প্রচারণাকে তিনি ‘দাওয়াতে কেয়ামাত’ বলে আখ্যায়িত করেন। এইজন্য অনেকেই তাকে ধর্মত্যাগী বলে ত্যাগ করেন। ১১৬৬ সালে তিনি খুন হলে দায়িত্ব নেয় পুত্র নুরুদ্দীন। নুরুদ্দীন ছিলো জ্ঞান ও দর্শনের পৃষ্ঠপোষক। বিখ্যাত দার্শনিক ফখরুদ্দীন আল রাজীকে তিনি স্বীয় মতে দীক্ষিত করেন।
১২১০ সালে তার মৃত্যুর পর পিতার আসন পায় জালাল উদ্দীন। তিনি নিজেকে সুন্নি মুসলিম ঘোষণা করে আব্বাসীয় খলিফা আল নাসির লি দীনিল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করেন। পূর্বপুরুষের ধ্যান-ধারণা থেকে সরে আসেন। প্রমাণস্বরূপ মাকে মক্কায় হজ্বের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন। কিন্তু অকস্মাৎ ১২২০ সালে হেরেমে বিষপ্রয়োগে নিহত হন নুরুদ্দীন। ক্ষমতার ভার নেন পুত্র আলাউদ্দীন। দুর্ভাগ্যক্রমে ১২৫৫ সালে ষড়যন্ত্রের কবলে হত্যা হন তিনিও। দায়িত্ব পায় সর্বশেষ বাতেনী শায়খ রুকনউদ্দীন।
হাসাসিনদের পতন ও হালাকু খান
চেঙ্গিস খানের প্রতিষ্ঠিত মোঙ্গল বংশ তখন অপ্রতিরোধ্য। বাগদাদ ধ্বংসের আগে মোঙ্গল নেতা হালাকু খান হাসাসিন দূর্গের দিকে নজর দেন। তিন কুহস্তানের তুন এবং খাওফ নামক দুটি দুর্গ দখল করে কয়েকজন সুন্দরী নারী ছাড়া সবাইকে হত্যা করেন। আলামুত রক্ষার জন্য রুকনউদ্দীন নিজের ভাই শাহিনশাহ এবং ৩০০ জন সদস্যকে প্রতীভূ হিসেবে হালাকুর কাছে প্রেরণ করেন। জীবনের নিরাপত্তা দেওয়া সত্ত্বেও হালাকু সবাইকে হত্যা করে। হালাকু রুকনউদ্দীনকেও সর্বপ্রকার নিরাপত্তার ওয়াদা দেয়।
১২৫৬ সালের ১৯শে নভেম্বর রুকনউদ্দীন হালাকুর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। আলামুত এবং শাইমুন-দীয হালাকুর হস্তগত হয়। হালাকুর মন্ত্রী আতা মালিক জুওয়ায়নী আলামুতের পাঠাগার থেকে মূল্যবান গ্রন্থসমূহ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের মূল্যবান যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করেন। তারপর দূর্গ ধ্বংস করার আদেশ দেন হালাকু খান। রুকনউদ্দীনকে সসম্মানে কারাকোরামে মোঙ্গল সম্রাট মেঙ্গু খানের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু মেঙ্গু খান তাকে সহ সমগ্র ইসমাইলীয়কে হত্যার আদেশ দেন। পরামর্শ মোতাবেক তন্ন তন্ন করে খুঁজে হত্যা করা হয় ইসমাইলীয় বাতেনীদের।
তারপরেও এই সম্প্রদায় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়নি। বর্তমানে ভারত, পাকিস্তান, ইরান, সিরিয়া এবং জানজিবারেও তাদের সদস্য বিদ্যমান। বিখ্যাত বাতেনী নেতা আগা খান আলামুত শায়খদেরই বংশধর।