১৯ মে, ১৮৪৫; গ্রীনহিথ বন্দর থেকে ধীরে ধীরে নোঙর তুলে নিচ্ছিল এরেবাস আর টেরর নামের দুটি জাহাজ। স্যার জন ফ্র্যাঙ্কলিনের অধীনে আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়ার নতুন পথ খুঁজে বের করার অভিযানে যোগ দিয়েছেন ১২৮ জন অভিজ্ঞ নাবিক। টেমস নদী থেকে শুরু হওয়া এ যাত্রা কোথায় যেয়ে শেষ হবে সে বিষয়ে কারোই স্পষ্ট ধারণা নেই। তবু, ফ্রাংকলিনের মতো অধিনায়কের সাথে সমুদ্রাভিযানে বের হওয়ার ব্যাপারে সবাই বেশ উত্তেজিত।
সমুদ্রপথে পৃথিবীর উত্তর-পশ্চিম প্যাসেজকে সংযুক্ত করার নতুন পথ আবিষ্কারের জন্য মূলত এই যাত্রা। তীব্র ঠাণ্ডা আর বিপদ উপেক্ষা করে এর আগে কেউ এই পথ আবিষ্কারের জন্য এগিয়ে আসেননি। বহু সফল অভিযানের নায়ক অভিজ্ঞ ক্যাপ্টেন স্যার জন ফ্রাংকলিন দীর্ঘ সময়ের পরিকল্পনা করে, ভালো মানের জাহাজ নির্বাচন করে, যোগ্য নাবিক বাছাই করে আর প্রায় তিন বছর চলার মতো রসদ জোগাড় করে তবেই এই অভিযানে যাবার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।
উচ্চাভিলাষী এই অভিযান প্রথমদিকে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিল। গ্রীনহিথ থেকে রওনা দেবার প্রায় দেড় মাস পর জুলাইয়ের ৪ তারিখে গ্রীনল্যান্ড পৌঁছায় ফ্রাংকলিন আর দলবল। উত্তাল ঝড়ো সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সেখানে পৌঁছুতে সময় কিছুটা বেশি লাগলেও বেশ খোশ মেজাজেই ছিল তারা। নাবিক আর অফিসারদের পাঠানো চিঠিতে সেরকমই ইঙ্গিত ছিল। জুলাই মাসের ১২ তারিখে ডাকে ফেলা এই চিঠিগুলোই ছিল ফ্রাংকলিন অভিযানের সদস্যদের কাছ থেকে তাদের পরিবারের পাওয়া শেষ চিঠি। একই মাসের ২৯ বা ৩১ তারিখে ব্যাফিন বে-তে একদল তিমি শিকারি তাদেরকে এগিয়ে যেতে দেখে, তারপর হঠাৎ করেই যেন নিখোঁজ হয়ে যায় দুটো জাহাজ আর শতাধিক নাবিক।
এরপর ঠিক কী ঘটেছিল ফ্রাংকলিন এবং তার অভিযানের নাবিকদের সাথে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, অত্যধিক ঠাণ্ডার কারণে সমুদ্রে আর এগোনো সম্ভব না হওয়ায় ১৮৪৫ এর শীতকালটা মেরু এলাকার বিইচি দ্বীপে কাটাতে বাধ্য হয় ফ্রাংকলিন অভিযানের সদস্যরা। দ্বীপে অবস্থানকালেই তিন নাবিকের মৃত্যু ঘটে, এবং সেখানেই তাদের সমাহিত করা হয়। অবশেষে ১৮৪৬ এর গ্রীষ্মে বরফ গলে সমুদ্র জাহাজ চলাচলের উপযোগী হলে আবারো যাত্রা শুরু করে এরেবাস আর টেরর।
অভিযান চলাকালে ১৮৪৭ এর জুন মাসের ১১ তারিখ স্যার জন ফ্রাঙ্কলিন ৬১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। বৈরি আবহাওয়া আর প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে ধুঁকতে থাকা অভিযানের সদস্যরা ১৮৪৮ এর এপ্রিলের দিকে কিং উইলিয়াম আইল্যান্ডের কাছে আটকে পড়ে। সেখানে দীর্ঘ সময় থাকার পরেও মুক্তি লাভের কোনো আসা দেখতে না পেয়ে তারা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে শুরু করে। সেই সাথে ধীরে ধীরে সংরক্ষিত রসদের পরিমাণও কমে আসতে শুরু করে।
২৫ এপ্রিল ১৮৪৮ সালে জাহাজের মায়া ত্যাগ করে কিং উইলিয়াম আইল্যান্ডে নেমে আসে জাহাজীরা। ততদিনে মূল দলের ৯ জন অফিসার এবং ১৫ জন সী ম্যান নানা কারণে মৃত্যুবরণ করেছে। জাহাজ থেকে উদ্ধার হওয়া এক চিরকুটে এই তথ্যগুলো পাওয়া যায়। সেই সাথে চিরকুটে এটাও উল্লেখ করা ছিল যে জাহাজ থেকে নেমে তারা অনুমানের ভিত্তিতে কাছাকাছি থাকা বেক নদী বের করার চেষ্টা করবে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয়েছিল সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো প্রমাণ আজও পাওয়া যায়নি।
অভিযান শুরুর প্রায় ৬ বছর পেরিয়ে যাবার পর কোনো তথ্য না আসায় ফ্রাংকলিন আর তার সঙ্গীদের খোঁজার জন্য উদ্ধার অভিযানের ব্যবস্থা করেন লেডি ফ্রাংকলিন। ১৮৫১ এবং ১৮৫২ সালে পরিচালিত দুটি অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন ম্যাকক্লুর এবং কলিনসন। তবে তাদের নিজেদের অভিযানও খুব একটা সুখকর হয়নি। তারা নিজেরাও নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন এবং দীর্ঘ সময় নিখোঁজ থাকেন।
মূল অভিযানের ৯ বছর পরেও ফ্রাংকলিন এবং তার দলের কাছ থেকে কোনো খবর আসে না। আবার তাদের খোঁজার জন্যে বের হওয়া ১৩টি উদ্ধারকারী দলেরও কেউ সফল হয় না। অগত্যা, ১৮৫৪ সালের ২০ জানুয়ারি ঘোষণা করা হয়— সে বছর মার্চ মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে ফ্রাংকলিন অভিযানের কোনো খোঁজ না পাওয়া গেলে অভিযানের সবাইকে মৃত বলে ঘোষণা করা হবে। ফ্রাংকলিন যাত্রার অভিযাত্রীদের খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়ে কোনোক্রমে ইংল্যান্ডে ফিরে আসতে সক্ষম হন। কলিনসন আর ম্যাকক্লুরকে ১৮৫৪ সালে উদ্ধার করা হয়।
এই অভিযানগুলোর প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ফ্রাংকলিন এবং তার সঙ্গীরা সবাই মারা গিয়েছেন এবং জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে শেষপর্যন্ত নাবিকদের অনেককে নরখাদকে পরিণত হন। তবে স্বভাবতই এই তথ্যগুলোকে নাবিকদের পরিবার বা তৎকালীন সমাজ মেনে নিতে পারেনি। ১৮৫৭ সালে ফ্রাংকলিনের দ্বিতীয় স্ত্রী লেডি জেন ফ্রাংকলিন আবারো উদ্ধার অভিযানের আয়োজন করেন। ফ্রান্সিস লিওপোল্ড ম্যাকক্লিনটকের তত্ত্বাবধানে সে অভিযানে অংশগ্রহণকারী দলটি ল্যাঙ্কাস্টার সাউন্ডের দক্ষিণ ও পশ্চিমে কিং উইলিয়াম দ্বীপে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
১৮৫৯ সালে প্রথমবারের মতো ফ্রাংকলিনের জাহাজের আংশিক খোঁজ মেলে। তবে এরেবাস বা টেরর জাহাজের ধ্বংসাবশেষ নয়, বরং খুঁজে পাওয়া যায় তিমি শিকারের ছোট একটি নৌকা। ফ্রাঙ্কলিন অভিযানের কোনো একটি জাহাজের নৌকা হিসেবে সেটিকে ধরে নেয়া হয়। তবে এই আবিষ্কার থেকে তাৎপর্যপূর্ণ কোনো তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তাই নিশ্চিত করে বলা যায়নি নৌকাটি জাহাজ থেকে নেমে কোনো জায়গার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল নাকি কোনো স্থান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জাহাজে ফিরে আসছিল। নৌকাটিতে দুজন হতভাগ্য নাবিকের কংকাল ছাড়াও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে বই আর চকলেট।
১৮৬০ থেকে ‘৬৩ সালে আমেরিকান অভিযাত্রী চার্লস ফ্রান্সিস হল, ১৮৭৯ সালে ফ্রেডরিক শোয়াটকা, এবং ১৯৩০ সালে কানাডিয়ান সরকার ফ্রাংকলিনের অভিযানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার জন্য অভিযান পরিচালনা করে। বিচ্ছিন্ন এ সব অভিযানে যেসব জিনিস উদ্ধার হয়েছিল তার মাঝে উল্লেখযোগ্য ছিল দ্বীপের এক স্থানে খুঁজে পাওয়া পরিত্যক্ত একটি ছাউনি আর সেখানে থাকা দুটি দেহাবশেষ। ছাউনিতে থাকা ব্যক্তিগত জিনিসের মধ্যে বেশ কিছু চিঠিও ছিল। যার কিছু লেখা ছিল উল্টোভাবে, আর কিছু লেখা ছিল সাংকেতিক ভাষায়। অন্য কিছু উদ্ধারকারী দল দাবি করে, তারা ফ্রাংকলিনের অভিযান দলের লেখা পাথর খুঁজে পেয়েছেন, অন্য এক দলের দাবি অনুযায়ী- তারা খুঁজে পেয়েছিল পুরনো সময়ের কিছু কংকাল।
স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে কথা বলেও নানা তথ্য সংগ্রহের দাবি করে এ সকল অভিযাত্রীরা। এসকল অধিবাসীর বর্ণনা থেকে জানা যায় তাদের পূর্বসূরিরা অনেকেই নাকি এই দ্বীপের কাছে দুটো বড় আকারের জাহাজকে বরফে আটকে থাকতে দেখেছিল। এই পূর্বসূরিরা নাকি সেই জাহাজগুলোর মৃত নাবিকদের দেহাবশেষ বা হাড়গোড় মাটিচাপা দিতেও অন্যদের সাহায্য করেছিল। কিন্তু আসল রহস্য অধরাই থেকে যায় সব উদ্ধারকারীর কাছে। আর সেটা হলো এরেবাস বা টেরর জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া, সেই সাথে খুঁজে বের করা ঠিক কী ঘটেছিল এই অভিযানকারীদের ভাগ্যে।
দীর্ঘ সময় কোনো ধরনের সাফল্য না আসায় ঝিমিয়ে পড়ে ইতিহাসের অন্যতম দীর্ঘ জাহাজ খুঁজে বের করার এই অভিযান। কিন্তু আবারো এ বিষয় সবার নজরে আসে ১৯৮৪-৮৬ সালে, যখন কানাডিয়ান কয়েকজন গবেষক বিইচি দ্বীপে প্রাচীন কিছু মৃতদেহের খণ্ডাংশ খুঁজে পায়। ১৯৯২-৯৩ সালের দিকে এরেবাস বে-তে আবারো অভিযান চালানো হয়, যেখানে ম্যাক ক্লিন্টক জাহাজের নৌকাটি আবিষ্কার করেছিলেন। বড় মাপের এই অভিযানে বিশাল এক শিলাস্তুপের নিচে বহু মানুষের হাড় একত্রে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় খুঁজে পায় দলটি। ধারণা করা হয়, ১৮৭৮ সালের আমেরিকান অভিযানকারী একটি দল সেই অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া সব হাড় একত্র করে এই শিলার নিচে পুঁতে রেখেছিল।
তবে এই হাড়গুলো আলোচনায় আসার মূল কারণ ছিল আধুনিক পরীক্ষার মাধ্যমে সেখানে খুঁজে পাওয়া লেড বিষাক্ততার অস্তিত্ব আর হাড়ের গায়ে থাকা ধাতব অস্ত্রের কাটা দাগ। বহুবার এ অভিযানের নাবিকদের নরখাদক হয়ে যাবার যে বিষয়টি বারবার সামনে আসলেও উপেক্ষা করা হচ্ছিল, সেই ঘটনা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে নতুন এই আবিষ্কারের ফলে। পক্ষের যুক্তি হিসেবে বলা হয়- যেহেতু সেখানকার স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে ধাতব হাতিয়ার বা অস্ত্র ছিল না, সেক্ষেত্রে জাহাজের নাবিকরাই মানুষ ভক্ষণ করায় হাড়ে কাটা দাগ পাওয়া গেছে।
তবে এর বিপক্ষে থাকা গবেষকরা বলেন, ক্যাপ্টেন জন রসের কাছ থেকে স্থানীয় আদিবাসিরা যে পরিমাণ ধাতব অস্ত্র যোগাড় করেছিল, সেগুলোর মাধ্যমে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে খুন করতে বা জখম করতে সেগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। এবং উদ্ধার করা হাড়ের সবগুলো যেহেতু পুরুষ মানুষের নয়, সেক্ষেত্রে এগুলোর সাথে ফ্রাঙ্কলিনের অভিযানের সম্পর্ক না থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
একই হাড় নিয়ে ২০১৫ সালে করা অপর এক পরীক্ষায় দাবি করা হয়- উদ্ধার করা হাড়গুলোর কয়েকটি চুলোয় সেদ্ধ করা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এই যুক্তির বিপরীতে যুক্তি দেখানো হয়, বহুবছর খোলা অবস্থায় পরে থাকা হাড় প্রকৃতির অত্যাচারে নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেয়ে থাকতে পারে। যার কারণে এত বছর পর পরীক্ষায় এ ব্যাপারে ভুল ফলাফল আসার সম্ভবনা থেকেই যায়।
সবকিছু ছাপিয়ে অভিযান প্রায় ১৭০ নিখোঁজ থাকার পর ২০১৪ সালে অবশেষে খোঁজ মেলে ফ্র্যাঙ্কলিনের হারিয়ে যাওয়া জাহাজগুলোর একটির। সে বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এরেবাসকে খুঁজে পেতে সমর্থ হয় এক অনুসন্ধানকারী দল। অবাক করা বিষয়- জাহাজটি পানির মাত্র ৩৬ ফুট নিচে অবস্থান করছিল! শনাক্ত হবার প্রায় তিন বছর অ্যাডভেঞ্চার কানাডা-চার্টার্ডের জাহাজ ওশান এন্ডেভার প্রথমবারের মতো সেখানে মানুষ পাঠাতে সক্ষম হয়। প্রথম জাহাজ আবিষ্কারের বছর দুয়েক পর ফ্র্যাঙ্কলিনের অপর জাহাজ টেররকে খুঁজে বের করতে সমর্থ হয় অনুসন্ধানকারীরা।
তবে জাহাজ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও সব রহস্যের সমাধান করা সম্ভব হয়নি। যেমন- প্রথমেই মাথায় আসে জাহাজের অবস্থানের ব্যাপারটি। ১৮৪৮ সালের নথিতে উল্লেখিত অবস্থান থেকে প্রায় ৬০ মাইল দক্ষিণে আবিষ্কৃত হয় এইচ.এম.এস টেরর। আর এরেবাসকে খুঁজে পাওয়া যায় সেখান থেকে আরো ৩০ মাইল দক্ষিণে। তাহলে কি সব নাবিক জাহাজ ছেড়ে স্থলে যায়নি? কিছু নাবিক কি তাহলে অসাধ্য সাধন করে জাহাজগুলোকে ফেরানোর চেষ্টা করেছিল? উনবিংশ শতকে আদিবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এখানে আরো বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। কারণ, তাদের মতে এরেবাস ডুবে যাবার কিছুদিন আগেও তাতে মানুষের চিহ্ন দেখেছিল তারা। তবে এমন হতে পারে যে, যেই বরফখণ্ডে জাহাজেগুলো আটকে গিয়েছিল, সেগুলো পানির স্রোতে ভেসে জাহাজগুলোকে প্রাথমিক অবস্থান থেকে দূরে নিয়ে গিয়েছিল।
ঠিক কী কারণে ফ্রাংকলিনের জাহাজের নাবিকরা জাহাজ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, লেড বিষাক্ততার কারণই বা কী ছিল, যারা জাহাজে রয়ে গিয়েছিল তাদের সেখানে থেকে যাবার কারণ কী ছিল, ঠিক কী কারণে তারা নরখাদকে পরিণত হয়েছিল বা আদৌ তারা নরখাদকে পরিণত হয়েছিল কিনা এই ব্যাপারগুলো এখনো অজানাই রয়ে গেছে। কোনো একদিন হয়তো উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যাবে এই সব ব্যাপারে। তার আগপর্যন্ত ফ্রাংকলিনের অসমাপ্ত অভিযানের ইতিহাস অসমাপ্তই রয়ে যাবে আমাদের কাছে।