রোহিঙ্গা সংকটের জন্য কতটা দায়ী অং সান সু চি?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীন হওয়া মিয়ানমারের সাত দশকের রাজনৈতিক ইতিহাস ক্রমাগত রাজনৈতিক সংঘাতের ইতিহাস, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর সাথে সামরিক বাহিনী তাতমাদৌর সশস্ত্র সংঘাতের ইতিহাস, নাগরিক অধিকারের ধারণাকে সরিয়ে এক শক্তিশালী কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র তৈরি হওয়ার ইতিহাস। স্বাধীনতার পর থেকেই গৃহযুদ্ধ চলছে জাতিগত বৈচিত্র্যের দেশ মিয়ানমারে, সাত দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধ পরিচিতি পেয়ছে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘকালীন গৃহযুদ্ধ হিসেবে। সাত দশক ধরে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতার দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কারেনরা, কাচিম, চিন, শানদের মতো জাতিগোষ্ঠী, এখনো লড়ছে নিজেদের স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবিতে।

ক্রমাগত সংঘাতের মধ্যে থাকা মিয়ানমারে ২০১৫ সালের নির্বাচনে জয় পায় ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি, অং সান সু চির নেতৃত্বে গঠিত হয় এনএলডি সরকার। এনএলডির সেই সরকার ছিল মিয়ানমারের দুই প্রজন্মের জন্য প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার দেখার অভিজ্ঞতা। সামরিক বাহিনীর তৈরি করা ২০০৮ সালের সংবিধান অনুযায়ী আইনসভায় এনএলডির সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকার পরেও সু চি রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারেননি, স্বামী আর সন্তানেরা বিদেশি পাসপোর্টধারী হওয়ায়। হতে পারেননি সরকারপ্রধানও। আইনসভায় ২৫ শতাংশ সিট সংরক্ষিত ছিল সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য, তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সীমান্ত মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোও। রাজনৈতিক বাস্তবতায়, বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে তৈরি করা স্টেট কাউন্সিলরের পদ, সু চি দায়িত্ব নেন ডি-ফেক্টো সরকারপ্রধান হিসেবে।

ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ছিলেন অং সান সু চি; Image Source: 

অং সান সু চির রাজনৈতিক উত্থান

অং সান সু চির বাবা নেতৃত্ব অং সান দিয়েছেন মিয়ানমারের স্বাধীনতা আন্দোলনকে, মিয়ানমারকে মুক্ত করেছেন শত বছরের উপনিবেশ শাসন থেকে, স্বীকৃতি পেয়েছেন জাতির পিতার। এক আত্নঘাতী হামলায় আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার স্বীকৃতির কিছুদিন আগে নিহত হন অং সান। বাবার মৃত্যুর পর সু চির শৈশবের বড় একটা অংশ কেটেছে ভারতে, পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে। অসুস্থ মায়ের দেখাশোনা করতে মিয়ানমারে আসা সু চি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ১৯৮৮ সালে, নিন্দা জানান ছাত্রদের মিছিলে সামরিক বাহিনীর নির্বিচার গুলি চালানোর। দ্রুতই আনুষ্ঠানিক রাজনীতির সাথে যুক্ত হন অং সান সু চি, তৈরি করেন রাজনৈতিক দল। বাবা অং সানের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করেন সু চি।

১৯৮৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে সু চির দলের বিশাল বিজয় তখনকার সময়ে সু চির রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতাকেই প্রমাণ করে। সাধারণ নির্বাচনে জিতেও ক্ষমতায় যেতে পারেননি অং সান সু চি, গৃহবন্দী হয়ে থাকতে হয়েছে পরবর্তী দুই দশকের প্রায় পুরোটাই। এই সময়টাতে সু চি গণতন্ত্রের জন্য তার অবিচল ত্যাগে স্বীকৃতি পেয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, পেয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার

গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল ত্যাগের জন্য বৈশ্বিক আইকনের পরিণত হয়েছিলেন অং সান সু চি; Image Source: The New Yroker

মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক পথচলা শুরু হয় একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এসে, সু চি প্রধানমন্ত্রীর সম-পদমর্যাদার স্টেট কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০১৫ সালে। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার পরেও ২০১৫ সালে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর বিপুল প্রত্যাশাকে সঙ্গী করে এনএলডি সরকার ক্ষমতা নেয়, গণতান্ত্রিক বিশ্বেও প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে উঠে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির সরকারকে কেন্দ্র করে। এই প্রত্যাশার পতন ঘটে ২০১৭ সালে, রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে।

রোহিঙ্গা সংকট

স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই মিয়ানমারে জাতি গঠনের প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয় রোহিঙ্গাদের, নৃগোষ্ঠী হিসেবে রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি মেলেনি প্রথম গণতান্ত্রিক সরকারের আমলেও। তবে, সেই সময়ে নাগরিকত্ব অর্জনের পথ খোলা ছিলো তাদের জন্য। রোহিঙ্গাদের অনেকে দায়িত্ব পালন করেছেন আইনসভার নির্বাচিত সদস্য হিসেবেও। তাদের উপর জাতিগত নিপীড়ন শুরু হয় জেনারেল নে উইনের সামরিক সরকারের আমল থেকে, তাদের রাষ্ট্রহীন করার প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে। এরপরও, হোয়াইট কার্ডের মাধ্যমে সাংবিধানিক প্রক্রিয়াগুলোতে অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল রোহিঙ্গাদের। ২০১৫ সালে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রহীন জনগোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হয় রোহিঙ্গারা।

২০১৭ সালের আগস্ট মাস। পুলিশের ৩০ টিরও বেশি চৌকিতে হামলা চালায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), নিহত হন ১২ জন সীমান্তরক্ষী। জবাবে পোড়ামাটির নীতিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর অপারেশন শুরু করে সামরিক বাহিনী। নির্বিচারে হত্যা করে রোহিঙ্গাদের, জ্বালিয়ে দেয় রোহিঙ্গাদের শত-শত গ্রাম, লুট করে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি। সামরিক বাহিনীর এই আক্রমণের মুখে জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে, কয়েক মাসের মধ্যেই আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় দশ লাখ।

নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে; Image Source: Voanews.com

জাতিসংঘ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হত্যাকাণ্ডকে আখ্যায়িত করে ‘পাঠ্যপুস্তকে থাকার মতো জাতিগত নিধনের চেষ্টার উদাহরণ’ হিসেবে। পরের বছর জাতিসংঘ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর চালানো হামলাকে ‘গণহত্যার চেষ্টা’ হিসেবে চিহ্নিত করে, মতামত দেয় সামরিক বাহিনী সিনিয়র অফিসারদের গণহত্যার চেষ্টার অভিযোগে বিচারের আওতায় আনার। রোহিঙ্গা সংকট প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো লাভ করে গাম্বিয়ার মাধ্যমে, ২০১৯ সালে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র সমর্থিত গণহত্যার অভিযোগে মামলা করার মাধ্যমে। একই বছর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও তদন্ত শুরু হয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে।

রোহিঙ্গা সংকটে অং সান সু চির দায়

সামরিক বাহিনীর রোহিঙ্গাদের উপর আক্রমণের পর থেকেই নিরব থেকেছেন স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি, নিরব সমর্থন জুগিয়েছেন সামরিক বাহিনীকে। তার নিরবতার নিন্দা জানিয়েছেন গণতান্ত্রিক বিশ্বের নেতৃবৃন্দ, নিন্দা জানিয়েছেন নোবেল বিজয়ীরা।

২০০৭ সু চি সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন কানাডার, রোহিঙ্গা সংকটের জেরে কানাডার আইনসভা যা প্রত্যাহার করে নেয় ২০১৮ সালের অক্টোবরে। এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রত্যাহার করে নেয় তাদের দেওয়া সম্মানসূচক এম্বাসেডর অব কনসাইন্স এওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম প্রত্যাহার করে তাদের এলি ওয়েসলি এওয়ার্ড। কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটি প্রত্যাহার করে নেয় সু চিকে দেওয়া ডিএল ডিগ্রি। কার্লিটন ইউনিভার্সিটিও ডিএল ডিগ্রী প্রত্যাহার করে নেয়।

অক্সফোর্ড ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রত্যাহার করে সু চিকে দেওয়া তাদের ফ্রিডম অব দ্য সিটি এওয়ার্ড, প্যারিস প্রত্যাহার করে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। রোহিঙ্গা সংকটে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় ব্যর্থতায় ফ্রিডম অব দ্য সিটি এওয়ার্ড প্রত্যাহার করে এডিনবার্গ, গ্যালওয়ে, শিফিল্ড, গ্ল্যাসগোর মতো শহরগুলো। অং সান সু চি একসময় প্রশংসিত রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিলেন বাংলাদেশেও। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের মতো বাংলাদেশেও গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হয় অং সান সু চির।

রোহিঙ্গা সংকটের জন্য দায়ী করা হয়েছে সু চির রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতাকে; Image Source: PRI.org

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আমাদের আলোচনায় প্রধান দায় গেছে অং সান সু চির দিকে, তাকেই নিতে হয়েছে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো সামরিক বাহিনীর বর্বরতার। কিন্তু সংকটের জন্য কি অং সান সু চি সরাসরি দায়ী? এই সংকটের উৎস কি তার রাজনৈতিক নেতৃত্ব? অনেকগুলো কারণেই এই উত্তরটি হচ্ছে, না, সু চি সরাসরি দায়ী নন এই সংকটে।

প্রথমত, রোহিঙ্গাদের উপর পোড়ামাটির নীতিতে সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামরিক বাহিনী তাতমাদৌ, তাদের সঙ্গী হয়েছে স্থানীয় বৌদ্ধরা। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারের এস্টাবলিশমেন্ট আবর্তিত হয় সামরিক বাহিনীকে কেন্দ্র করে, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণের মূল চাবিকাঠিও হয় সামরিক বাহিনীর মতামত। স্টেট কাউন্সিলর হিসেবে অং সান সু চির রাজনৈতিক নেতৃত্ব এখানে অনেকটা বহিরাগতের মতো, সাঙ্গঠনিকভাবে তার মতামতের গুরুত্বও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় কম ছিল। 

দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রকাঠামোতে ক্রিয়াশীল কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠন অপরাধে জড়িয়ে গেলে সেই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব অধিনস্তদের অপরাধের দায় এড়াতে পারেন না। রোহিঙ্গা সংকটে অং সান সু চির ব্যাপারেও একই রকমের নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা আলোচনায় আনা যায়।

কিন্তু, এই আলোচনায় আমাদের মনে রাখতে হবে, সামরিক বাহিনী অং সান সু চির রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে না। সামরিক বাহিনী তার কাজকর্মের জন্য জবাবদিহি করে এগারো সদস্যের ন্যাশনাল ডিফেন্স এন্ড সিকিউরিটি কাউন্সিলের কাছে, যে কাউন্সিলের সদস্যও সু চি ছিলেন না। অর্থাৎ, নেতৃত্বের যুক্তিতেও ব্যক্তি হিসেবে অং সান সু চিকে রোহিঙ্গা সংকটের জন্য দায়ী করা যায় না।  

তৃতীয়ত, রোহিঙ্গা সংকটে রাজনৈতিকভাবে অং সান সু চি লাভবান হননি, লাভবান হয়েছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে চলছে। ইউ ন্যু এর গণতান্ত্রিক সরকার রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি দেয়নি, জেনারেল নে উইনের সামরিক সরকার তাদেরকে বানিয়েছে বহিরাগত। ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে রোহিঙ্গাদের করা হয় রাষ্ট্রহীন। এর সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ বামারদের সাথে কয়েক শতাব্দী ধরে বিরোধ ছিল রোহিঙ্গাদের, ধর্মীয় সংখ্যালঘু হওয়ায় রোষানলে পড়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদেরও। সামরিক বাহিনী এই কারণগুলোকে ব্যবহার করেছে পুনরায় নিজেদের রাজনৈতিক বৈধতা বাড়াতে, কট্টরপন্থী রক্ষণশীল বৌদ্ধদের মতো নিজেদের সমর্থন বাড়াতে।

রোহিঙ্গা সংকটকে সামরিক বাহিনী ব্যবহার করেছে নিজেদের রাজনৈতিক বৈধতা বাড়াতে; Image Source: cfr.org.

চতুর্থত, রোহিঙ্গা সংকটের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে রাখাইন প্রদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা, রাখাইনে থাকা বিভিন্ন খনিজের নিয়ন্ত্রণ সরাসরি কেন্দ্রের হাতে তুলে নেওয়া। সামরিক বাহিনীর আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে কাজ করে এই খনিগুলো, জেনারেলদের ব্যক্তিগত আয়ের উৎসও এই খনিগুলোকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। 

প্রসঙ্গত, রাখাইনে সংকট পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো তৈরি হচ্ছে সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে, খনিজ সম্পদগুলোর নিয়ন্ত্রণও যাচ্ছে সামরিক বাহিনীর কাছেই। ফলে, রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক, কোন দিক থেকেই লাভবান হননি অং সান সু চি, লাভবান হয়নি অং সান সু চির এনএলডি সরকার। বরং, লাভবান হয়েছে সামরিক বাহিনী তাতমাদৌ, লাভবান হয়েছে সামরিক বাহিনীতে ব্যক্তিগত স্বার্থ লালন করা জেনারেলরা। 

রোহিঙ্গা সংকটে সু চি কি দায়মুক্তি পেতে পারেন?

রোহিঙ্গা সংকট থেকে প্রশ্নের মুখে পড়েছে সু চির আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাও। মিয়ানমারের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে গঠনমূলক আলোচনা দেখিয়ে দেয়, রোহিঙ্গা সংকটে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না অং সান সু চির। কিন্তু, এই যুক্তিতে কি তিনি দায়মুক্তির সুযোগ পাবেন রোহিঙ্গা সংকট থেকে?

না, অং সান সু চির দায়মুক্তির কোন সুযোগ নেই। ২০০২ সালে সু চি অস্বীকার করেছিলেন রোহিঙ্গাদের উপর বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা জানাতে, ২০০৬ সালে ধর্মীয় কারণে হেয় করেন বিবিসির সাংবাদিককে। ২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের উপর চলা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরে সু চি রাখাইনে গেলেও দেখতে যাননি ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের, সমালোচনা করেননি উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের। রোহিঙ্গাদের উপর সামরিক বাহিনী হামলা চালানোর পরে ২০১৭ সালের নভেম্বরে যখন সু চি রাখাইনে যান, সেখানেও তিনি সাফাই গান সামরিক বাহিনীর হয়ে। ২০২০ সালে তিনি আইসিজেতে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলকে, রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার করা মামলায়।

This article is written in Bangla about Aung San Suu Kyi's role and responsibilities in the Rohingya Crisis. 

All the necessary links are hyperlinked inside. 

Feature Image: WSJ

Related Articles

Exit mobile version