আমরা যারা প্রাচ্যের দেশগুলোতে বাস করি, তাদের কাছে ‘পশ্চিমা বিশ্ব’ বলতে শুধুমাত্র পশ্চিমের দেশ বোঝায় না। এই শব্দ যুগল যতটা না ভৌগোলিক অর্থ প্রকাশ, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিচয় বহন করে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে কোনো ঘটনা ঘটলে তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে ‘পশ্চিমা বিশ্ব’ কী ভাবছে এমন কথা হরহামেশাই শুনে থাকি। রাজনৈতিক অস্থিরতা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। কিন্তু এর সমাধান করার আসল মাতব্বর হাজার কিলোমিটার দূরের পশ্চিমা বিশ্ব।
পশ্চিমা বিশ্ব বলতে ইউরোপ, ওশেনিয়া ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোকে বোঝানো হয়। যাদের সংখ্যা এশিয়া ও আফ্রিকার চেয়ে কম। জনসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদে এই দেশগুলো এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে। অথচ তারাই এই সম্পদের নিয়ন্ত্রণ করছে। সারাবিশ্বে পশ্চিমাদের যে আধিপত্য তা হাজার বছরের না হলেও একেবারেও কিন্তু অল্পদিনের নয়। কয়েক শত বছর ধরেই তারা বিশ্বের অধিকর্তা।
কিন্তু এর রসদ কোথায়? কীভাবে তারা কয়েক শত বছর ধরে সারাবিশ্বে নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছে? এক্ষেত্রে মূল প্রভাবকগুলোই কী? কীভাবে তারা এই আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করলো? এই প্রশ্নগুলোই চারজন বিখ্যাত ইতিহাসবিদের কাছে রেখেছিল বিবিসি।
তারা হলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার সম্পর্ক বিষয়ক এবং পূর্ব এশিয়া বিষয়ক গবেষক ও অধ্যাপক আর্ন ওয়েস্টেড, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের আধুনিক ও সমসাময়িক ইতিহাস বিষয়ক এমিরেটাস অধ্যাপক ক্যাথলিন বার্ক, চিচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের আফ্রিকার ইতিহাস বিষয়ক অধ্যাপক হাকিম আদি এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ইতিহাসের অধ্যাপক মার্গারেট ম্যাকমিলান।
বিবিসির প্রশ্নের জবাবে তারা নিজস্ব মতামত ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের আধিপত্যের পেছনের রহস্য উদঘাটন করার চেষ্টা করেছেন। তাদের সেই মতামতের ভিত্তিতে পশ্চিমা দেশগুলোর শক্তির আধার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সামরিক শক্তি
নিজ দেশের বাইরে অন্য কোনো রাষ্ট্রকে শাসন করতে হলে একইসাথে আর্থিক প্রাচুর্য ও টেকসই সামরিক শক্তির প্রয়োজন। সেই সাথে সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর সমন্বয় ও সফল প্রয়োগের সামর্থ্যও থাকা দরকার। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কৌশল কিংবা চিন্তাভাবনা কিছুটা কম গুরুত্বপূর্ণ। তবে একটি দেশে বিভিন্নভাবেই শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায়। কিন্তু সকল ক্ষেত্রেই সামরিক শক্তির প্রয়োজন।
কোনো অঞ্চলে প্রবল অর্থনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন আর্থিক ও বাণিজ্যিক শক্তি। সেই সাথে পেছন থেকে সামরিক শক্তির আনুকূল্য প্রয়োজন। অনেক সময় শত্রুপক্ষকে শায়েস্তা করার জন্য পশ্চিমা বিশ্ব অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে থাকে। তাদের আর্থিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সামর্থ্য আছে বলেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়।
বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলো যখন যুদ্ধ থেকে নিজেদের বিরত রাখতে চায়, তখনই তারা এমন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। কিন্তু তাদের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে তাদের উন্নত সামরিক বাহিনী। যখন কোনো দেশ তাদের অর্থনৈতিক অবরোধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর চেষ্টা করে, তখন তারা সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। যেমন- বর্তমান বিশ্বে ইরানের উপর একের পর এক অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের এই অবরোধের কারণে ভারতের মতো দেশের ইরান থেকে তেল কেনা বন্ধ হয়ে গেছে।
বিগত কয়েক শতক ধরেই পশ্চিমা পরাশক্তিরা সামরিক শক্তিতে স্থল, নৌ ও আকাশ, সবখানেই একচেটিয়া আধিপত্য সৃষ্টি করেছে। আর এই তিন সামরিক শক্তি দিয়ে শত শত বছর ধরে বিশ্বের আনাচে-কানাচে সাম্রাজ্যবাদী শাসন অব্যাহত রেখেছে। যেমন- রুশ সাম্রাজ্যের শুরুতে মূল ক্ষমতা ছিল তাদের স্থলভাগের সামরিক শক্তি। এরপর তারা ট্রেনের মাধ্যমে বিশাল এক অঞ্চল শাসন করেছে।
অন্যদিকে ব্রিটিশ, ফরাসি, পর্তুগিজ, ডাচ ও স্প্যানিশরা তাদের নৌশক্তির মাধ্যমে উপমহাদেশ থেকে শুরু করে চীন, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত শাসন করেছে। সামরিক শক্তির সামনে বিশাল জনগোষ্ঠীও কিছু নয়। সেই কারণেই ব্রিটিশরা ভারতে তাদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল।
তবে বর্তমান সময়ে যাদের যোগাযোগ প্রযুক্তি যত বেশি উন্নত, যুদ্ধের ময়দানে তাদের সাফল্য লাভের সম্ভাবনা তত বেশি। সেই সাথে যারা অস্ত্রশস্ত্র দ্রুত একস্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে পারবে, তারাই বিশ্ব শাসন করবে। কারণ অর্থনীতি যখন নিজ গতিতে চলতে গিয়ে তার খেই হারায়, তখন নিষ্ঠুর সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে, অপরের সম্পদ লুট করে হলেও তাকে স্বাভাবিক করা হয়। এবার পশ্চিমা শক্তিগুলোর নীতির দিকে লক্ষ্য করলেই উত্তর পাওয়া যাবে।
পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা
ষোড়শ শতকের শুরুর দিকে সমুদ্রপথে এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকা যাওয়ার পথ খুঁজে পায় ইউরোপিয়ান নাবিকরা, যা প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো ঘটনা। মূলত সেই সময় থেকেই সারাবিশ্বে ইউরোপিয়ানদের আধিপত্য। কিন্তু সপ্তদশ শতকের শেষ দিকে এসেও শুধুমাত্র উত্তর আমেরিকা ছাড়া অন্য কোনো মহাদেশে ইউরোপিয়ানরা শাসন চালিয়ে যেতে পারবে তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। তবে আমেরিকায় তাদের নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা ছিল। কারণ, ধারণা করা হয়, শতকরা ৯০ ভাগ আদিবাসী আমেরিকানদের হত্যা করেছিল ইউরোপিয়ানরা।
ইউরোপিয়ান আধিপত্যের অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে স্থায়িত্ব এনে দিয়েছিল পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, যা প্রথম শুরু হয়েছিল পশ্চিম ইউরোপে। এরপর ভয়ঙ্কর গতিতে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পুঁজিবাদী অর্থনীতি ব্যবস্থা এমন এক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে যা গুটিকতক মানুষকে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষকে শোষণ করার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
একদিকে সামরিক শক্তি আর অন্যদিকে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় শোষণ করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে পশ্চিমারা। যার মাধ্যমে তারা সারাবিশ্বে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য ধরে রেখেছে। কিন্তু এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার শোষণ হাত থেকে পশ্চিমারাও ছাড় পাচ্ছে না।
অন্যান্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাথে তুলনা করা যায়, তাহলে পুঁজিবাদের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত। কোনোভাবেই বলা যায় না যে পুঁজিতন্ত্র অনন্তকাল ধরে চলবে। আর যদি তা চলেও তাহলে তার নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে চীন সহ প্রাচ্যের গুটিকতক দেশের হাতে। তখন সম্ভবত পশ্চিমা বিশ্বের আধিপত্য কমে আসতে পারে। তবে এর আগে অবশ্যই প্রাচ্যের দেশগুলোর সামরিক শক্তির ব্যাপক উন্নতি করতে হবে।
ইতোমধ্যে বিশ্বে নতুন ধরনের একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সাথে সাধারণ মানুষ পরিচিত হয়েছে। তা হলো সমাজতন্ত্র। এক শতক আগে এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার যখন আত্মপ্রকাশ হয়, তখন বলা হয়েছিল এর মাধ্যমে পশ্চিমা আধিপত্য ও সাধারণ মানুষকে শোষণ, দুটোই ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শ পুঁজিবাদী অর্থনীতর জন্য বড় কোনো হুমকি তৈরি করতে পারেনি। ফলে পশ্চিমা আধিপত্য সেই আগের মতোই আছে।
শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতা
সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে এশিয়ার দেশগুলো অর্থনীতি ও প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। এশিয়ায় যখন মানব সভ্যতার সূচনা হয়, ইউরোপে তখন এর বীজ বপণই হয়নি। যদিও এ বিষয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে।
তবে সভ্যতার শুরুতে এশিয়ার চেয়ে ইউরোপ পিছিয়ে থাকলেও শিল্প বিপ্লবের হাত ধরে তারা পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ায়। বিশ্বের বুকে তাদের আধিপত্যের সূচনা হয়েছিল শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে, যার পূর্ণতা পেয়েছে সর্বশেষ তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লবের মাধ্যমে।
অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করেন, সম্পদ অধিগত করার ক্ষমতা ও প্রযুক্তির উন্নয়ন- এ দুটি বিষয়ই ইউরোপকে শক্তিশালী এক অঞ্চল হতে সাহায্য করেছে। কিন্তু এর মধ্যে শেষোক্ত বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কয়লা কিংবা তেল হয়তো ইউরোপের দেশসমূহকে উন্নত করতে ভূমিকা রেখেছে। তবে প্রযুক্তি তাকে বিশ্ব খেলোয়াড়ে রূপ দিয়েছে।
তবে ইউরোপ তথা পশ্চিমা বিশ্বের শক্তির উত্থানের পেছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে আন্তঃরাজ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং দুর্বল ধর্মীয় শাসন ব্যবস্থা। এ দুটি বিষয় ইউরোপে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের সুযোগ করে দিয়েছে। সেই সাথে নতুন নতুন বাজার তৈরি করেছে। তবে ইউরোপের শক্তির স্থায়িত্ব এনে দিয়েছে তাদের সামরিক প্রযুক্তি ব্যাপক উন্নয়ন এবং বিভিন্ন সামরিক সংস্থা সৃষ্টি।
অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে এসেও বিশ্বের একপ্রান্তের কোনো দেশ অন্য কোনো প্রান্তে আধিপত্য বিস্তার করবে তেমন কল্পনাই সম্ভব ছিল না। তখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আঞ্চলিক পরাশক্তি ছিল। যেমন- ইউরোপে ফ্রান্স, এশিয়ায় চীন। এছাড়া মুঘল, অটোমানদের মতো প্রভাবশালী কিছু সাম্রাজ্য ছিল। কিন্তু এদের কেউই এককভাবে বিশ্বজুড়ে প্রভাব-প্রতিপত্তি সৃষ্টি করতে পারেনি। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল খুবই ধীরগতির এবং নিখুঁত প্রযুক্তিও ছিল অপ্রতুল।
তবে এটি সত্য যে, তখন বিশ্বের অনেক দেশেই ইউরোপিয়ানদের কলোনি ছিল। কিন্তু সেই কলোনিতে নিজেদের শাসন ব্যবস্থা বলবৎ রাখার জন্য স্থানীয় জনবল ও শাসকদের সহায়তা নিতে হয়েছে। কিন্তু ঊনিশ শতকে এসে পশ্চিমাদের অভূতপূর্ব পরিবর্তন হতে থাকে। বিশেষ করে শিল্পক্ষেত্রে।
শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে পশ্চিমাদের বিপ্লবই তাদের বর্তমান সময়ের হর্তাকর্তা বানিয়েছে। বাকি বিশ্ব তাদের ধারে-কাছে আসার আগেই তারা উন্নত অস্ত্র, উৎপাদনশীল বিশাল অর্থনীতি এবং উন্নততর প্রযুক্তির মালিক বনে গেছে। ফলে গত শতকে পশ্চিমাদের চ্যালেঞ্জ করে দুটি পারমাণবিক বোমা হামলার শিকার হয়েছে জাপান।
জাপানে পারমাণবিক হামলা প্রমাণ করে পশ্চিমাদের আধিপত্য দূর করতে হলে প্রয়োজন তাদের মতো আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র। সময়ের ব্যবধানে তার কাছাকাছি এশিয়ার দেশগুলো যেতে সক্ষম হয়েছে। তবে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ধ্বংস করতে হলে তা ছাপিয়ে যেতে হবে।
তবে বর্তমান সময়ের সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র এখনো দীর্ঘ সময় নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে পারবে। কিন্তু অর্থনীতিতে তারা আগের মতো শক্তিশালী নয়। ক্রমশ এশিয়ার দেশগুলো অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তিতেও পশ্চিমা বিশ্বে এশিয়ারই জয়জয়কার। পশ্চিমাদের অনেকেই এখন থাই ফুড খাচ্ছে, জাপানের তৈরি গাড়ি চালাচ্ছে এবং চীনের তৈরি ফোনে আফ্রিকান কোনো শিল্পীর গান শুনছে। একে কী বলবেন? একে এশিয়ার আধিপত্যই বলতেই হবে। তবে যুদ্ধ কিংবা রাজনীতির ময়দানে এখনো পশ্চিমারা প্রধান খেলোয়াড়।
সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বৈচিত্র্য
ইউরোপ, আমেরিকা এবং ওশেনিয়া মহাদেশ নিয়েই মূলত পশ্চিমা বিশ্ব। আমেরিকা ও ওশেনিয়া মহাদেশ মূলত ইউরোপিয়ানদের মাধ্যমে সভ্যতা লাভ করেছে। এবং এই তিনটি অঞ্চলে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়, তা হলো সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বৈচিত্র্য।
পশ্চিমা বিশ্বে একসময় গির্জার প্রবল প্রতাপ ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে সেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে বড় এক পরিবর্তন ঘটেছে। আর এর মাধ্যমেই ইউরোপেই প্রযুক্তি থেকে অর্থনীতি সবই গড়ে উঠেছে। অন্যদিকে এশিয়ার দেশগুলোতে বৈচিত্র্য থাকলেও এখানে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ও সহনশীলতা খুবই কম।
তবে এ কথাও সত্য যে, মানব ইতিহাসে পশ্চিমা সাম্রাজ্য কিংবা আধিপত্য সময়ের হিসেবে খুবই সংক্ষিপ্ত। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘদিন টিকে ছিল রোমান সাম্রাজ্য। মিসরের ফারাওরা টিকে ছিল দুই হাজার বছরের বেশি সময়। কিন্তু পশ্চিমারা এত সময় আধিপত্য ধরে রাখতে পারবে? বর্তমান রাজনৈতিক গতিবিধি তা বলে না। তবে সেই উত্তর ভবিষ্যতই জানিয়ে দেবে।