মানুষ যেকোনো কাজে জড়ায় দুই কারণে। প্রথমত, সে রাজনৈতিক মতাদর্শ বা ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে আদর্শকেন্দ্রিক ভাবনা থেকে কোনো কাজে জড়াতে পারে, জড়াতে পারে ভাবনাকে প্রতিষ্ঠিত করার তাড়না থেকেও। দ্বিতীয়ত, সে অর্থনৈতিক স্বার্থের জায়গা থেকেও বিভিন্ন কাজে জড়াতে পারে। মানুষ যেকোনো কাজে জড়ালে সাধারণভাবেই অন্য মানুষের সাথে তার মিথস্ক্রিয়া তৈরি হবে; সেই মিথস্ক্রিয়া ইতিবাচক হতে পারে, আবার হতে পারে নেতিবাচক। মানুষের ইতিবাচক বা নেতিবাচক মিথস্ক্রিয়ার মধ্য থেকেই মানুষে মানুষে স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেই স্বার্থের দ্বন্দ্ব রূপ নেয় সংঘাতে।
সংঘাতপ্রবণ মানবসভ্যতা
প্রতিটি সংঘাত আবার ব্যক্তিকেন্দ্রিক হতে পারে, হয়ে উঠতে পারে সামষ্টিক সংঘাতও। অর্থাৎ, সামষ্টিক স্বার্থের সংঘাতে একটি রাজনৈতিক অংশের সাথে আরেকটি রাজনৈতিক গ্রুপের সংঘাতের সৃষ্টি হতে পারে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক কিংবা সামষ্টিক, যেকোনো সংঘাতই সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে আসে, নিয়ে আসে নিষ্ঠুরতা। প্রতিটি সংঘাতের ফলে দুটি গ্রুপই রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
যুদ্ধ আর সংঘাতের এই নেতিবাচক প্রচারণা সত্ত্বেও পৃথিবীর রাষ্ট্রকেন্দ্রিক শাসনতান্ত্রিক ক্ষমতা ছিল যুদ্ধবাজদের নিয়ন্ত্রণে, সংঘাত তৈরির ক্ষমতা দিয়ে সম্রাট আলেকজেন্ডার, সম্রাট সিজারদের মতো অনেকে জায়গা করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। মানবসভ্যতার একটি বড় অংশ এই সংঘাতপ্রিয়দের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব মেনে নিয়েছে, তাদেরকে বসিয়েছে শ্রদ্ধার আসনে।
প্যাসিফিজম কী?
সংঘাতপ্রিয়দের এই রাজনৈতিক কর্তৃত্বের মধ্যেও, পৃথিবীতে সবসময়ই শান্তিকামী মানুষের উপস্থিতি ছিল। শান্তিকামী এই মানুষেরা যুদ্ধের প্রতি কখনোই সমর্থন প্রদান করেনি, সমর্থন করেনি জাতীয় নিরাপত্তার নামে সীমাহীন সংঘাতকে, মন থেকে মেনে নিতে পারেনি মানুষে মানুষের নিষ্ঠুরতাকে। স্বার্থের দ্বন্দ্ব সমাধানের উপায় হিসেবে তারা সংলাপকে প্রাধান্য দিয়েছে, গুরুত্বারোপ করেছে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থের দ্বন্দ্বগুলো সমাধানের জন্য। যেকোনো ধরনের যুদ্ধকে নৈতিকভাবে মেনে নিতে না পারা, সংঘাতকে গ্রহণ না করার যে রাজনৈতিক আদর্শ রয়েছে, সেটির নামই প্যাসিফিজম।
ল্যাটিন শব্দ ‘প্যাক্স’ (pax) থেকে এসেছে প্যাসিফিজম শব্দটি, যার অর্থ রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি মতে প্যাসিফিজমের অর্থ হচ্ছে, ‘আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলোর সমাধান শান্তিপূর্ণ উপায়ের মাধ্যমে করা সম্ভব এবং করা উচিত, এমন বিশ্বাস এবং ডকট্রিন’। প্যাসিফিজম যেহেতু জাতিরাষ্ট্রের মধ্যে সমস্যা এবং বিরোধগুলো শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বলে, রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসেবে এর বিকাশও হয়েছে জাতিরাষ্ট্রের যুগের সাথে। জাতিরাষ্ট্র বলতে এমন একটি কাঠামো বোঝায়, যার নির্দিষ্ট ভূখণ্ড আছে, যেখানে জনসংখ্যা আছে, জনগণ ও ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব আছে, আছে সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সরকার।
জাতিরাষ্ট্রের কাঠামোতে অনেকগুলো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিকাশ ঘটেছে। যেমন, রাজনৈতিক দল, স্থানীয় সরকার, সুশীল সমাজ, ট্রেড ইউনিয়ন ইত্যাদি। এসব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিকাশের মূল বার্তাই হচ্ছে, মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেওয়া, বিশ্বাস আর অবিশ্বাস প্রকাশের সুযোগ দেওয়া। প্যাসিজমে বিশ্বাসীরা এরকম মুক্ত কাঠামোতেই নিজেদের মতবাদ প্রকাশ এবং প্রচারের সুযোগ পেয়েছেন, কারণ যুদ্ধের সাথে জাতীয়তাবাদ জড়িত, জড়িত জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা। কর্তৃত্ববাদী কাঠামোতে এই জাতীয়বাদের উন্মাদনার বিপরীতে শান্তির বার্তা প্রচার করা সহজ না, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অসম্ভব।
প্যাসিফিজমে যারা বিশ্বাস করেন রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে, মতবাদ হিসেবে এর চর্চা করেন, রাষ্ট্রনায়কদের সংঘাত এড়ানোর জন্য রাজনৈতিক চাপ তৈরিকারী গ্রুপ হিসেবে কাজ করেন, তারা একাডেমিকালি প্যাসিফিস্ট হিসেবে পরিচিত। সভ্যতার শুরু থেকে প্যাসিফিজমে বিশ্বাসী মানুষের উপস্থিতি থাকলেও, মানবসভ্যতার ক্ষুদ্র একটি অংশই সংঘাত থেকে দূরে থাকার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিল। তবে, গত দুই শতাব্দীতে এই চিত্র বদলে গেছে অনেকটাই, রাজনৈতিকভাবে ডমিনেন্ট একটি গ্রুপ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে প্যাসিফিজমে বিশ্বাসীরা, তৈরি করছে রাজনৈতিক মেনিফেস্টো, প্রভাব বিস্তার করছে সরকারের পলিসির উপর, একই সাথে বাড়ছে এই মতবাদের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতাও।
গত দুই শতাব্দী ধরে প্যাসিফিজমের চর্চা বেড়েছে, রাজনৈতিক মতবাদ হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবির বিভিন্ন প্রান্তে, প্যাসিফিজমে বিশ্বাসীরা নিজেদের মতবাদ প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন স্থানে তৈরি করছে রাজনৈতিক গোষ্ঠী। এর মধ্যে গত শতাব্দীতে দুটি বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে, বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা এড়ানোর জন্য তৈরি হয়েছে বৈশ্বিক জনমত। সংলাপের মাধ্যমে স্বার্থের দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য তৈরি হয়েছে জাতিসংঘের মতো সংস্থা, বিভিন্ন প্রান্তে আবার তৈরি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আসিয়ান, সার্কের মতো আঞ্চলিক সংগঠনও। বর্তমান সময়ে প্যাসিফিজম একটি প্রাধান্য বিস্তারকারী রাজনৈতিক মতবাদ।
প্যাসিফিজমের বিকাশে বন্ধুর পথ
প্যাসিজমের বিকাশের পথ মসৃণ ছিল না গত দুই শতাব্দীতে। উনবিংশ শতাব্দীতে পূর্ব ইউরোপ আর শিল্পের বিকাশের পথে থাকা অধিকাংশ দেশেই বাধ্যতামূলভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে হতো, নিতে হতো সামরিক প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন সময় জড়িয়ে পড়তে হতো যুদ্ধে। আবার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রায় সব প্রাধান্য বিস্তারকারী শক্তি নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক নিয়োগের ব্যবস্থা করে, স্বল্পমেয়াদের ট্রেনিংয়ের পরেই সাধারণত রিক্রুটদের পাঠিয়ে দেওয়া হতো যুদ্ধক্ষেত্রে। ফলে, বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে প্যাসিজমে বিশ্বাসীদের জন্য একটি কঠিন সময় পার করতে হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই নিজের রাজনৈতিক আদর্শের সাথে সমঝোতা করে জড়িয়ে পড়তে হয়েছে যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা, সংঘাতের রাজনৈতিক বলি হিসেবে।
বিশ্বব্যাপী সংঘাতের যে উপস্থিতি আমরা দেখতে পাই, তার অধিকাংশ দায় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক এলিটর, অতিধনী ব্যবসায়ী আর অস্ত্রের কারবারিদের উপর। ব্যবসায়িক স্বার্থের নিরিখে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সংঘাত দেখতে চান, রাজনৈতিক এলিটদের তারা প্রভাবিত করেন সংঘাত তৈরিতে। রাজনৈতিক এলিটরা সংঘাত তৈরি করে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসার সুযোগ করে দেন, বিনিময়ে ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবিদদের সহায়তা করেন ইলেকশন ফান্ডিংয়ের কাজে। বর্তমানেও পৃথিবির বিভিন্ন প্রান্তে যে তৈরি করা সংঘাতগুলোর উপস্থিতি আমরা দেখতে পাই, সেগুলো তৈরির একটা সরল কারণ এই সমীকরণ।
বিশ্বের বিখ্যাত প্যাসিফিস্টরা
প্যাসিফিজমে বিশ্বাসীদের মধ্যে আলোচিত ব্যক্তিত্ব মহাত্মা গান্ধী। ভারতের জাতির পিতা হিসেবে পরিচিত এই ব্যক্তিত্ব আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন, অহিংস উপায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের। আরেকজন আলোচিত প্যাসিফিস্ট হচ্ছেন বার্ট্রান্ড রাসেল, যিনি যুক্তরাজ্যের একজন পলিটিক্যাল ফিলোসফার। এই তালিকায় আরো আছেন বেরা ব্রিটেইন, লিও টলস্তয়, নোমান থমাস, এবে হফম্যানের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা।
প্যাসিফিজমের সমালোচনা ও সীমাবদ্ধতা
যুদ্ধ অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়, যুদ্ধ সাধারণের জন্য দুঃখ নিয়ে আসে, নিয়ে আসে দুর্দশা। কিন্তু, বিরোধ নিরসনের জন্য প্যাসিফিজম যে মডেল অপস্থাপন করছে, তা সংঘাত নিরসনে আদতে কতটা কার্যকর?
মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হচ্ছে অন্যের চেয়ে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করা। মানুষ অন্যের চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে দুটি উপায়ে। প্রথমত, প্রকৃতিপ্রদত্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর সাহায্যে, দ্বিতীয়ত, প্রকৃতিপ্রদত্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহার করে নতুন নতুন দক্ষতা তৈরির মাধ্যমে। যেহেতু, প্রাকৃতিকভাবেই সৃষ্টিকর্তা প্রত্যেক মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন ক্ষমতা প্রদান করেন, ক্ষমতার তারতম্য থাকে, ফলে স্বাভাবিকভাবেই সকল মানুষের সমান ক্ষমতা থাকে না। ফলে, একজনের চেয়ে অন্যজন শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই শক্তিশালী হওয়ার মাপকাঠি শারীরিক সক্ষমতা হতে পারে, হতে পারে বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতাও। মানুষ শক্তিশালী হওয়ার মাধ্যমে ক্ষমতা অর্জন করে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকায় এই ক্ষমতাকে ব্যবহার করে শক্তিশালী মানুষ অন্যদের বঞ্চিত করে সম্পদের উপর কর্তৃত্বমূলক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে।
অনেক সময়ই শক্তিশালী মানুষ অন্যের অধিকার হরণ করে, হরণ করে মানুষের জন্মগত অধিকার। কখনো কখনো দুর্বল মানুষদের বানিয়ে রাখে দাস। এরকম শক্তিশালী মানুষদের হাত থেকে সকলকে রক্ষা করতেই প্রতিষ্ঠিত হয় রাষ্ট্র। জাতিরাষ্ট্রের যুগেও এই ধারাবাহিকতা বজায় আছে, রাষ্ট্রের আমলাতন্ত্র, বিচার বিভাগ কাজ করে শক্তিশালী মানুষদের হাত থেকে বাকিদের রক্ষা করতেই। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও একই কাঠামো প্রযোজ্য। দুটি রাষ্ট্র সমান শক্তিধর হয় না সাধারণভাবে, আর শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিগুলোর দিকে অধিক গুরুত্ব দিলে কর্তৃত্ববাদী শাসকরা একে দুর্বলতা ভাবে, জাতীয়তাবাদ ব্যবহার করে উন্মাদনা তৈরি করে শাসনের বৈধতা অর্জন করতে যুদ্ধ বাঁধায়। ফলে, বিরোধ নিরসনের জন্য কেবলমাত্র শান্তির বার্তা একটি জাতিরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য যথেষ্ট না। অনেক দার্শনিকই যুদ্ধকে তাই দেখেছেন প্রয়োজনীয় ক্ষতি হিসেবে, কেউ কেউ দেখেছেন শান্তি অর্জনের উপায় হিসেবে। পৃথিবীতে সম্পদের যেহেতু সীমাবদ্ধতা আছে, ফলে মানুষে মানুষে সংঘাত হবেই, হবে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব অনিবার্য। রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রেরও একই ধরনের অনিবার্য দ্বন্দ্ব হবে।
প্যাসিফিজমের ভবিষ্যৎ
সংঘাতের পৃথিবীর মধ্যেও প্যাসিফিজমের চর্চা বাড়ছে। আগের চেয়ে রেকর্ড পরিমাণ বেশি মানুষ এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে, সচেতন হয়ে উঠছে নিজেদের রাজনৈতিক অধিকারের বিষয়ে, নিজেদের সিভিল লিবার্টিগুলোর ব্যাপারে। ফলে যুদ্ধের মাধ্যমে যেভাবে রাজনৈতিক অধিকার সংকুচিত হয়, সংঘাতের অজুহাতে যেভাবে সিভিল লিবার্টি সীমিত বা বাতিল করা হয়, সেগুলো আগের চেয়ে বেশি মানুষ বুঝতে সক্ষম হচ্ছে। সচেতন হচ্ছে নিজের দেয়া আয়কর কীভাবে সরকার ব্যয় করছে, সেই ইস্যুতেও। যুদ্ধের মাধ্যমে, সংঘাতের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যয় করার চেয়ে মানুষের অগ্রাধিকার এখন স্বাস্থ্যসেবা আর শিক্ষাকেন্দ্রিক, নাগরিক সুবিধাকেন্দ্রিক।
সংঘাতের ব্যাপারে মানুষের নেতিবাচক প্রবণতা বাড়ছে, বিশ্বের সব প্রান্তেই। আগামী দিনগুলোতে তাই প্যাসিফিজম একটি সংখ্যালঘু রাজনৈতিক মতবাদ থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেতে পারে সংখ্যাগরিষ্ঠের রাজনৈতিক মতবাদ হিসেবে, যুদ্ধবাজ রাজনৈতিক নেতাদের অস্তিত্ব সংকট তৈরির মতো জনমত গড়ে উঠতে পারে শীঘ্রই। সংঘাতময় পৃথিবী ভরে উঠুক এমনই শান্তিকামীদের ভিড়ে।