১
আগের ম্যাচটাতেই তারা হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে, কিন্তু সুপার সিক্সের সেই ম্যাচ জয়ের পরেও সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে একটু হলেও বেশি ফেভারিট ধরা হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। যে স্টিভ ওয়াহর অসাধারণ অপরাজিত ১২০ রানের সুবাদে অস্ট্রেলিয়া জয় পায়, সেই ইনিংসটা ৫৬ রানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো। কিন্তু হার্শেল গিবসের অস্বাভাবিক একটা ক্যাচ মিসে জীবন পেয়ে সুযোগটা কাজে লাগান স্টিভ ওয়াহ। তবে ভাগ্য যেহেতু প্রতিদিন একজনকে সহায়তা করে না, তাই দক্ষিণ আফ্রিকানদের আশায় বুক বাঁধাটা অমূলক ছিলো না।
টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিল। প্রথম ওভারেই ওপেনার মার্ক ওয়াহকে শূন্য রানে আউট করে পোলক বুঝিয়ে দিলেন যে, তাদের দলীয় সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল না। তবে রিকি পন্টিং মাঠে নেমে স্বচ্ছন্দে কিন্তু কিছুটা সাবধানে খেলতে লাগলেন। ১২তম ওভারেই দলীয় সংগ্রহ ৫০ পেরুলো, যার মাঝে পন্টিংয়ের সংগ্রহই ৩৭। কিন্তু দুর্দান্ত খেলতে থাকা পন্টিংকে নিজের প্রথম বলেই আউট করলেন অ্যালান ডোনাল্ড। একই ওভারের শেষ বলে ডোনাল্ড আউট করলেন লেহম্যানকেও।
খুব দ্রুত দুই উইকেট পড়ার ফলে অস্ট্রেলিয়ানদের রানের গতি কিছুটা কমে গেলো। এই অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য অস্ট্রেলিয়ানদের প্রয়োজন ছিল শুরুর পরিস্থিতিকে কিছুটা সামলে আক্রমণে গিয়ে রানের গতি বাড়ানো। কিন্তু ১৭তম ওভারে যখন গিলক্রিস্ট আউট হলেন, তখন অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৪ উইকেটে মাত্র ৬৮। যেভাবে আফ্রিকান বোলাররা মাঠে আগুন ছড়াচ্ছিলেন, তাতে অস্ট্রেলিয়ানরা পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারবে কি না সেটাই সেই মূহুর্তে প্রশ্নের সম্মুখীন।
Attack is the best defense – এই বাক্যটা যে সব পরিস্থিতির জন্য প্রযোজ্য নয় সেটা বেশ ভালো করেই বুঝলেন দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ সেনানী স্টিভ ওয়াহ। সেই মূহুর্তে আক্রমণ করার ঝুঁকি না নিয়ে টিকে থেকে একটা লড়াই যোগ্য স্কোর দাঁড় করানোটাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে ভাবলেন স্টিভ ওয়াহ আর আরেক লিজেন্ড মাইকেল বেভান। দুজনে মিলে টিকে থাকলেন ৪০তম ওভার পর্যন্ত। ৯০ রানের এক ধীরগতির, কিন্তু সময়োপযোগী জুটির পর যখন স্টিভ ওয়াহ ব্যক্তিগত ৫৬ রানে আউট হলেন, তখন দলের সংগ্রহ ১৫৮।
মাঠে নামলেন আরেক অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার টম মুডি, কিন্তু টিকতে পারলেন মাত্র ২ মিনিট। মুখোমুখি হওয়া ৩য় বলেই পোলকের শিকার হন শূন্য রানেই। শেন ওয়ার্নকে নিয়ে বেভান কিছুটা সময় লড়াই করেন। এই জুটিতে আসলো ৪৯ রান। দলীয় ২০৭ রানে শেন ওয়ার্ন আউট হবার পর একই স্কোরে আউট হয়ে গেলেন পল রেইফেল আর ডেমিয়েন ফ্লেমিং। শেষ পর্যন্ত ৫০তম ওভারের ২য় বলেই যখন মাইকেল বেভান শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন, তখন দলীয় সংগ্রহ মাত্র ২১৩ রান।
শন পোলক পেলেন ৫ উইকেট আর অ্যালান ডোনাল্ড ৪ উইকেট।
২
ছোট লক্ষ্য তাড়া করার সময় ব্যাটিংয়ে থাকা দলের টার্গেট থাকে উইকেট ধরে রেখে সাবধানী খেলা খেলে রান তুলে নেওয়া। অন্যদিকে বোলিং পক্ষের লক্ষ্য থাকে খুব দ্রুত কিছু উইকেট ফেলে দিয়ে ব্যাটিং করা দলকে চাপে ফেলা। দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ১২ ওভার পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা তার লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছিল। ১১তম ওভারে স্টিভ ওয়াহ নিয়ে আসলেন তার অন্যতম অস্ত্র শেন ওয়ার্নকে।
সেই বিশ্বকাপে তখন পর্যন্ত ওয়ার্ন মোটামুটি অ্যাভারেজ পারফর্মার। প্রথম ৭ ম্যাচে ১০ উইকেট পেলেও এর মাঝে স্কটল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে আর বাংলাদেশের বিপক্ষেই ছিলো ৫ উইকেট। উইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ উইকেট পেলেও সেই ম্যাচের শুরুতে ম্যাকগ্রাই আগুন ছড়িয়েছিলেন। ওয়ার্নের তাই নিজেকে প্রমাণ করার দায় ছিল। সুপার সিক্সের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৩ রানে ২ উইকেট ভালোই পারফরম্যান্স ছিল। শুধু উইকেট সংখ্যা দিয়ে যদিও ওয়ার্নকে পরিমাপ করা যাবে না। বহুদিন পর ওয়ার্নের বলে টার্ন এবং নিয়ন্ত্রণটা দেখা যাচ্ছিল। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টা ফুটে উঠেছিল সেটা হচ্ছে আত্মবিশ্বাস।
প্রথম ওভারটা ওয়ার্ন মোটামুটি ভালোই করলেন, মাত্র ৩ রান দিলেন। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই ছোবলটা মারলেন। লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে বলটা পিচ করার পর সেটা অন সাইডে খেলাটাই স্বাভাবিক। গিবসও সেই চেষ্টাই করেছিলেন। কিন্তু বলটা যে ছিল ম্যাজিক্যাল! অস্বাভাবিক টার্ন করে গিবসের অফ স্ট্যাম্পের বেল দুটো ফেলে দিল বলটা। ৪৮ রানে পড়লো দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম উইকেট। সেই ওভারের বাকি বলগুলোতে আর কোনো রান হলো না। ওয়ার্নের বোলিং ফিগার ২-১-৩-১।
নিজের ৩য় ওভারের প্রথম বলেই ওয়ার্ন আউট করলেন গ্যারি কারস্টেনকে। এবারেও প্রায় একই রকম বল করলেন। কারস্টেন বাঁ-হাতি হওয়ায় বল পড়লো অফ স্ট্যাম্পের সামান্য বাইরে। বল একটু খাটো হয়ে যাওয়ায় সুইপ করতে গিয়ে মিস করলেন কারস্টেন, ফলাফল বোল্ড। সতীর্থদের উজ্জীবিত করে তোলার জন্য ওয়ার্ন চিৎকার করে বলতে শুরু করলেন, “কাম অন, কাম অন”।
মাঠে নামলেন অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রনিয়ে। কিন্তু তিনিও টিকতে পারলেন মাত্র ১ বল। দ্বিতীয় বলেই স্লিপে মার্ক ওয়াহর ক্যাচে পরিণত হলেন। ওয়ার্নের বাকি বলগুলো সাবধানে খেলে ঠেকিয়ে দিলেন নতুন ব্যাটসম্যান জ্যাক ক্যালিস। এই ওভারেও কোনো রান না হওয়ায় ওয়ার্নের বোলিং ফিগার গিয়ে দাঁড়ালো ৩-২-৩-৩। ওয়ার্নের পরের ওভারেও কোনো রান হলো না। অষ্ট্রেলিয়ানরা ততক্ষনে প্রয়োজনীয় ব্রেক থ্রু পেয়ে গিয়েছে। দল পুরোপুরি উজ্জীবিত। ১২ ওভারে ৪৮ রান করার পরের ৬ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা করতে পারলো মাত্র ৭ রান, উইকেট হারালো ৩টি।
ব্যক্তিগত ৫ম ওভারের প্রথম বলে ওয়ার্ন আবার রান দিলেন, যা কি না তার সর্বশেষ ১৮টি বলের মধ্যে প্রথম। এই ওভারে রান হলো মাত্র ২। ওয়ার্নের ফিগার ৫-৩-৫-৩। ব্যক্তিগত ষষ্ঠ ওভারে ওয়ার্ন আরেকটি মেইডেন পেলেন। ওভার শেষে ফিগার ৬-৪-৫-৩। দক্ষিণ আফ্রিকানরা হয়তো চাচ্ছিলেন কোনোভাবে ওয়ার্নের ওভারগুলো পার করতে। কিন্তু একইসাথে আস্কিং রান রেটও বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের উপর রানের চাপ বেড়ে যাচ্ছিল। সেই চাপের জন্যেই হয়তো বা ২২তম ওভারে ক্যালিস খুব মারাত্মক একটা রান নিতে গেলেন। কিন্তু মিড অফ থেকে বল তুলে নিয়ে সরাসরি থ্রো করে যখন স্ট্যাম্প ভেঙে দিলেন মাইকেল বেভান, তখনও ব্যাটসম্যান কালিনান ক্রিজ থেকে ২ মিটার পেছনে। দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২২ ওভারে ৪ উইকেটে ৬২।
পরের ২ ওভারের ওয়ার্ন রান দিলেন যথাক্রমে ৬ আর ১; ফিগার ৮-৪-১২-৩। প্রথম স্পেল শেষ করে ওয়ার্ন আপাতত গেলেন বিশ্রামে।
৩
জ্যাক ক্যালিস তখন জন্টি রোডসকে নিয়ে ইনিংস মেরামত করার চেষ্টা করছেন। এই দুজনের ৮৪ রানের জুটিই আবার ম্যাচে ফিরিয়ে আনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ৪১ তম ওভারে গিয়ে পল রেইফেলের বলে যখন ক্যাচ আউট হন ৪৩ রান করা জন্টি রোডস, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ৫৭ বলে ৬৯। ৫ উইকেট পড়ে গেলেও দক্ষিণ আফ্রিকার লম্বা ব্যাটিং লাইন আপে তখনও রয়ে গিয়েছেন শন পোলক, মার্ক বাউচার আর সেই বিশ্বকাপের হিরো ল্যান্স ক্লুজনারের মতো ব্যাটসম্যানরা, সাথে সেট ব্যাটসম্যান জ্যাক ক্যালিস তো আছেনই।
৪৩তম ওভারের আবারও ওয়ার্নের হাতে বল তুলে দিলেন ওয়াহ। সেই ওভারে ওয়ার্ন দিলেন মাত্র ২ রান, তবে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ জয়ের জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না। ম্যাচ জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ছিল আরেকটি ব্রেক থ্রু, যা কি না ওয়ার্ন পেতে পারতেন তার শেষ ওভারের প্রথম বলেই। কিন্তু দৌড়ে এসে পল রেইফেল ক্যাচটা মিস তো করলেনই, সাথে দিলেন ৩টি মূল্যবান রান। ম্যাচটা সম্ভবত দক্ষিণ আফ্রিকাকে উপহারই দিয়ে দিলেন রেইফেল। সেই ধারণা আরো পাকাপোক্ত হয় যখন পরের দুটি বলে পোলক একটি ৬ আর একটি ৪ মারলেন। ইনিংসে ওয়ার্ন এই প্রথম দুটি বাউন্ডারি খেলেন। ৪র্থ বলে ১ রান নিয়ে পোলক অপর প্রান্তে যাওয়ার পরের বলেই ক্যালিসকে আউট করলেন ওয়ার্ন। মাঠে নামলেন সেই বিশ্বকাপের বিস্ময় ল্যান্স ক্লুজনার। ওয়ার্নের শেষ বলটাতে ক্লুজনার ১ রান নিলেন ।
ওয়ার্নের বোলিং ফিগার দাড়ালো ১০-৪-২৯-৪।
শেষ ৫ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ৩৮ রানের। ম্যাচে ওয়ার্নের অংশ আপাতত শেষ।
৪
তবে ওয়ার্নের পারফরম্যান্সের কারণে ততক্ষণে ম্যাচে ফিরে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। ৪৬ তম ওভারে রান আসলো ৮, তবে ২০ রান করা পোলককে বোল্ড আউট করলেন ফ্লেমিং। পরের দুই ওভারে রান আসলো যথাক্রমে ৫ আর ৭। ফলে শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন হলো ১৮ রানের।
৪৯ তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই মার্ক বাউচারকে বোল্ড আউট করে অস্ট্রেলিয়ানদের উল্লাসে ভাসিয়ে দিলেন ম্যাকগ্রা। পরের বলে নতুন ব্যাটসম্যান এলওয়ার্দি ১ রান নিয়ে স্ট্রাইক দিলেন ক্লুজনারকে। ক্লুজনার পরের বলে ঝুঁকি নিয়ে ২ রানের জন্য দৌড় দিলে নন স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট হন এলওয়ার্দি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন ডোনাল্ড। তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, স্ট্রাইকে তখনও ক্লুজনার রয়েছেন। ওভারের ৫ম বলেই ম্যাচের সমাপ্তি হতে পারতো। ম্যাকগ্রার বলে লং অনে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন ক্লুজনার। কিন্তু সহজ ক্যাচটা চাপের কারণে মিস তো করলেনই, সাথে বলটাকে ৬ বানিয়ে দিলেন আগেও একটা ক্যাচ মিস করা রেইফেল। শেষ বলে ১ রান নিয়ে যখন পরের ওভারের স্ট্রাইক নিলেন ক্লুজনার, তখন দক্ষিন আফ্রিকার প্রয়োজন ৬ বলে ৯ রান।
৫
৬ বলে ৯ রান, হাতে মাত্র ১ উইকেট – সম্ভাবনার পাল্লা দুই দলের দিকেই ঝুঁকে রয়েছে। ডেমিয়েন ফ্লেমিংয়ের প্রথম বলেই ৪ মেরে সম্ভাবনার পাল্লাটা দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে নিয়ে আসলেন ক্লুজনার, প্রয়োজন ৫ বলে ৫ রান। পরের বলে আরেকটা ৪, শেষ ৪ বলে প্রয়োজন মাত্র ১ রান। ম্যাচ সেখানেই মোটামুটি শেষ। কিন্তু আজন্ম লড়াই করে যাওয়া জাতির অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হাল ছাড়তে রাজি হলেন না। স্টিভ জানতেন, যদি এখনো আউট করা যায়, তাহলে ম্যাচ টাই হলেও টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী মুখোমুখি লড়াইয়ে জিতে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়াই ফাইনাল খেলবে।
দলের সব খেলোয়াড়কে তিনি নিয়ে আসলেন ছোট বৃত্তের ভেতর। যে ক্লুজনার সেই টুর্নামেন্টে প্রায় প্রতি বলে ৪/৬ মারাকে অভ্যেসে পরিণত করে ফেলেছিলেন, তার জন্য কি ৪ বলে ১ রান করা কোনো বিষয়? ৩য় বলে মিড অন বল গেলেও রান নিলেন না ক্লুজনার। তবে নন স্ট্রাইক প্রান্তে ডোনাল্ড কিছুটা এগিয়ে আসায় অষ্ট্রেলিয়ানদের পক্ষে সুযোগ ছিল রান আউট করার। কিন্তু লেহম্যানের থ্রো অল্পের জন্য মিস করে স্ট্যাম্প।
এতটা চাপ সম্ভবত নিতে পারছিলেন না ক্লুজনার। পরের বলে ছোঁয়া দিয়েই ক্লুজনার দৌড়ানো শুরু করলেন। কিন্তু মার্ক ওয়াহর হাতে বল দেখে নন স্ট্রাইক প্রান্তে ডোনাল্ড দৌড়ানো বন্ধ করে দিলেন। ততক্ষনে ক্লুজনার এগিয়ে এসেছেন। মার্ক ওয়াহর থ্রো স্ট্যাম্প মিস করলেও ফ্লেমিং ধরে পাঠিয়ে দেন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা কিপার গিলক্রিস্টের কাছে। ডোনাল্ড ততক্ষণে ব্যাট ফেলে দৌড় শুরু করলেও স্ট্যাম্প ভেঙে দেন গিলক্রিস্ট। ফলাফল ২ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ টাই এবং ফাইনালে গেলো অষ্ট্রেলিয়া। ১৬ বলে অপরাজিত ৩১ রান করলেও ট্র্যাজিক হিরো হিসেবেই রয়ে গেলেন ক্লুজনার।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন শেন ওয়ার্ন।
ক্রিকইনফো দ্বারা নির্বাচিত গত শতাব্দীর সেরা ১০০টি ম্যাচের মাঝে এই ম্যাচটির অবস্থান ৩ নম্বরে এবং ওয়ানডে ম্যাচগুলোর মাঝে ১ নম্বরে।
৬
ফাইনাল ম্যাচেও পাকিস্তানের বিপক্ষে শেন ওয়ার্ন ৪ উইকেট পান এবং ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে মাত্র ৩ জন খেলোয়াড় আছেন, যারা কি না সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল ম্যাচের ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। শেন ওয়ার্ন সেই তিনজনের একজন (বাকি দুজন মহিন্দর অমরনাথ এবং অরবিন্দ ডি সিলভা)। তার এই পারফরম্যান্সের কারণে অস্ট্রেলিয়া টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়নও হয়। মূলত সেই বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই শুরু হয় অষ্ট্রেলিয়ানদের জয়রথ।
ম্যাজিকাল ম্যাচের সেরা পারফর্মারও অবশ্যই ম্যাজিকাল হন। শতাব্দীর সেরা ওয়ানডে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় শেন ওয়ার্ন নিঃসন্দেহে গত শতাব্দীর অন্যতম সেরা পারফর্মারও বটে।
ফিচার ছবি: getty image