ক্রিকেট অদ্ভুত এক খেলা! কখনও সেটা হাসায়, কখনও কাঁদায়, কখনও আবার কপাল কুঁচকানো সব ঘটনার জন্ম দেয়। সেসব ঘটনাপ্রবাহের কতকগুলো নিয়েই শুরু হয়েছে আমাদের সিরিজ, ‘ক্রিকেটের রঙ এবং রঙ্গ‘। এখানে থাকবে মজার কিছু গল্প, কিছু অদ্ভুত ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, আবার থাকবে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনারও বিবরণ। তারই দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে আজ থাকছে ‘ক্রিকেট স্লেজকাব্য’।
ক্রিকেট এবং স্লেজিং – যেন একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আন্তর্জাতিক হাইভোল্টেজ ক্রিকেট হোক, কিংবা পাড়ার দুষ্টুমিচ্ছলে খেলা ক্রিকেট, স্লেজিং ছাড়া যেন সেভাবে জমে না খেলাটা। কখনও কখনও সেটা যেমন হয়ে ওঠে হাস্যরসাত্মক, কখনও কখনও লাগে দারুণ কুৎসিত। এই পর্বে বলতে যাচ্ছি কয়েকটি ঘটনা, যেগুলো কখনও কখনও আপনার কপালে ভাঁজ ফেলবে, কখনও আপনাকে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়াবে মেঝেতে। বলে রাখা ভালো, এখানে স্বেচ্ছায় বেশ কিছু কুৎসিত স্লেজ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই সেই স্লেজগুলোকে বাংলায় অনুবাদ করে ছাপানো সম্ভব নয়, এতটাই জঘন্য ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোতে!
১. মার্ক ওয়াহ – জেমস অরমন্ড
ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এক অখ্যাত ইংলিশ অলরাউন্ডার জেমস অরমন্ডের কথার জবাবে মার্ক ওয়াহ একদম চুপ হয়ে গিয়েছিলেন। গল্পটা অনেকটা এমন: অরমন্ড যখন ড্রেসিংরুম থেকে ব্যাট-প্যাড পড়ে রেডি হয়ে ব্যাটিংয়ে নামছেন, মার্ক ওয়াহ সেটা দেখে কিছুটা শ্লেষ মিশিয়েই বলেছিলেন,
“যাহ বাবা! দেখো ভাই, কে ব্যাটিং করতে নামছে! তুমি এইখানে কী করছো? দেখে তো কোনোভাবেই তোমাকে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার যোগ্য বলে মনে হচ্ছে না!”
বিন্দুমাত্র ঘাবড়ে না গিয়ে উত্তর ছুঁড়ে দিলেন অরমন্ড,
“হয়তো বা! কিন্তু অন্তত একটা ব্যাপারে আমি নিঃসন্দেহ, আমার পরিবারে আমিই সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড়!”
বেচারা মার্ক ওয়াহ আর গোটা ম্যাচেই সেভাবে আর মুখ খোলেননি!
২. ভিভ রিচার্ডস – মার্ভ হিউজ
স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস ছিলেন নিঃসন্দেহে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের শেষ কথা। একবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে বেদম মার মারছিলেন বোলারদেরকে, এর মধ্যে মার্ভ হিউজকে টানা চার বলে চারটা বাউন্ডারি মেরে দেওয়াতে হতাশ হয়ে অদ্ভুত এক কান্ড করে বসলেন হিউজ। চার নম্বর চারটি হওয়ার পর হিউজ পিচের অর্ধেকটা বরাবর এসে পিছন ঘুরে জোরে শব্দ করে বায়ুত্যাগ করেন, এরপর ভিভের মুখের উপর চিৎকার করে বলেন,
“নাও, পারলে এটাকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দেখাও দেখি!”
বেচারা ভিভ রীতিমতো হতভম্ব হয়ে মুখ নাড়ানোরই আর সময় পাননি!
৩. ফ্রেড ট্রুম্যান – রমন রো
স্লেজিং সবসময় হাস্যরস নয়, বরং মাঝেমধ্যে কিছুটা কুৎসিত রূপও ধারণ করে। ফ্রেড ট্রুম্যান একবার বোলিং করছিলেন, আর রো তখন স্লিপে দাঁড়িয়েছেন। হঠাৎ ব্যাটসম্যানের ব্যাটের কানায় লেগে বল রো’র পায়ের ফাঁকা দিয়ে বেরিয়ে গেলো, আর বিরক্ত হয়ে একটা কড়া চাহনি দিয়ে আবার বোলিং এন্ডে ফিরে গেলেন ট্রুম্যান। ওভার শেষে রো ট্রুম্যানের কাছে দৌড়ে এসে বললেন, “স্যরি ফ্রেড, আমার দুই পা বন্ধ রাখা উচিত ছিলো।” ট্রুম্যান ঝাঁঝমাখানো কন্ঠে কাঁধ ঝাঁকিয়ে উত্তর দিলেন, “তোমার মায়েরও খুব সম্ভবত সেটাই করা উচিত ছিলো!”
৪. শচীন টেন্ডুলকার – আবদুল কাদির
বরাবরই শান্তশিষ্ট স্বভাবের শচীন টেন্ডুলকার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ছিলেন দারুণ মারকুটে এবং দাপুটে একজন ব্যাটসম্যান। তখন তার ক্যারিয়ারের শুরু, একের পর এক দুর্দান্ত সব ইনিংস খেলে চলেছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানের অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার আবদুল কাদির চলে এসেছেন ক্যারিয়ার সায়াহ্নে, ফর্মে যেন তার অনেকটাই ভাটার টান।
১৯৯০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক ম্যাচে লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদের এক ওভারে দুটো ছক্কা মারার পর মুশতাকের মেন্টর এবং অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আবদুল কাদির এসে শচীনকে বললেন, “বাচ্চাদেরকে কেন এভাবে মারছো? পারলে আমাকে মেরে দেখাও দেখি, পারো কিনা!” জবাব না দিয়ে ঈষৎ হেসে শচীন আবার গিয়ে স্ট্যান্স নিয়ে দাঁড়ালেন। আর এরপরের ওভারেই আবদুল কাদির বোলিংয়ে এলে শচীন ওই ওভারে চারটা ছক্কা এবং একটা চার মেরে আরেকটা মিষ্টি হাসি দিয়ে যেন বলে দিলেন, “তথাস্তু!”
৫. রিকি পন্টিং – শন পোলক
গ্রেট খেলোয়াড়দের ছোট্ট তালিকাতেও অনায়াসে চলে আসে রিকি পন্টিং এবং শন পোলকের নাম। কিন্তু স্লেজিং ইতিহাস যখন ঘাঁটতে বসবো আমরা, সেখানে পন্টিং-পোলকের একটি ঘটনা না এসেই পারে না! এই একই ঘটনা যদিও ভিভ রিচার্ডস এবং গ্রেগ টমাসের নামেও প্রচলিত আছে, তবে সেটা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায় না।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা চলছিলো অস্ট্রেলিয়ার। ব্যাটিংয়ে স্ট্রাইকে ছিলেন রিকি পন্টিং, আর বোলিংয়ে শন পোলক। পন্টিং একটানা বেশ কয়েকটা বল ছেড়ে দেওয়াতে পোলক চাইলেন পন্টিংকে কিছুটা তাতিয়ে দিতে, তাই কিছুটা সামনে এগিয়ে গিয়ে বললেন, “এটা দেখতে লাল, গোলাকার আর ওজন পাঁচ আউন্সের মতো। এটাকে আমরা বল বলে ডাকি।” ঠিক এর পরের বলেই পন্টিং উড়িয়ে মারলেন পোলককে, আর বল গিয়ে পড়লো গ্যালারির ভিতরে। এবার পন্টিংই কিছুটা এগিয়ে এলেন, বললেন, “বলটা দেখতে কেমন, সেটা বেশ ভালোভাবেই জানো দেখতে পাচ্ছি। এবার যাও, সেটা খুঁজে আনো দেখি!”
৬. রডনি মার্শ – ইয়ান বোথাম
স্লেজিংয়ের তালিকা করতে বসলে আরেকটা অবশ্যম্ভাবী জুটি রডনি মার্শ এবং ইয়ান বোথাম। এটাকে বলা হয়ে থাকে অন্যতম সেরা এবং সবচেয়ে মজার ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা। অ্যাশেজ সিরিজ চলছে, হাইভোল্টেজ ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত চলছে। এমন সময়ে ইয়ান বোথাম হঠাৎ মার্শকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার স্ত্রী এবং আমার ছেলেমেয়েরা ভালো আছে তো?” প্রত্যুত্তরে মার্শ বললেন, “স্ত্রী তো দারুণ আছে, তবে ছেলেমেয়েগুলো একেবারে গর্দভ হয়েছে!”
৭. মাইক হুইটনি – রবি শাস্ত্রী
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার রবি শাস্ত্রী এবং সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার মাইক হুইটনি একবার এক বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। হুইটনি অবশ্য মূল একাদশে ছিলেন না, মাঠে ছিলেন বদলি ফিল্ডার হিসেবে। ক্লোজ-ইন সার্কিটে দাঁড়াতে এসে ক্রিজে থাকা রবি শাস্ত্রীকে বললেন, “ভালো ছেলের মতো ক্রিজে থাকো, নতুবা মাথা ফাটিয়ে দেবো।”
রবি শাস্ত্রীও কম যান না। হেলমেট নাড়িয়ে মাথাটা কিছুটা বাঁকিয়ে তিনিও জবাব দিলেন, “মুখ যতটা চলে, ততটা ভালো বোলিং যদি করতে পারতে, তাহলে আজ আর দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে ফিল্ডিং করতে হতো না!”
৮. ড্যারিল কালিনান – শেন ওয়ার্ন
শেন ওয়ার্নের বোলিং তূণে ফ্লিপার কিংবা টপ স্পিনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র ছিলো মাইন্ডগেম খেলতে পারার সক্ষমতা। ব্যাটসম্যান ক্রিজে আসামাত্র কিছু একটা বলে তাতিয়ে দেওয়াটা মোটামুটি নিয়মিত ঘটনা ছিলো তার জন্য। অধিকাংশ সময়ই সেটা তার পক্ষেই থেকেছে, দারুণ সফলতাও এসেছে এই টেকনিক অনুসরণ করায়। তবে ব্যতিক্রম হয়েছিলো সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার ড্যারিল কালিনানের ক্ষেত্রে, এ যাত্রায় আচ্ছামত পর্যুদস্ত হয়েছিলেন বাকযুদ্ধে।
১৯৯৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া প্রথম টেস্ট চলছিলো। এর আগে কালিনান এবং ওয়ার্নের ব্যক্তিগত কিছু খন্ড লড়াইয়ের ঘটনা ছিলো, সেই জের ধরেই ওয়ার্ন কালিনানকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “দুই বছর ধরে তোমার অপেক্ষাতেই বসে ছিলাম তোমার সাথে আরেক দফা মোকাবেলার সুযোগ পাবো বলে।” কালিনান বিন্দুমাত্র ঘাবড়ে না গিয়ে পাল্টা সুইপ খেলে দিলেন, ওয়ার্নের মেদবহুল শরীরের দিকে ইঙ্গিত করে উত্তর দিলেন, “দেখে মনে হচ্ছে পুরো সময়টা খেতে খেতেই পার করে দিয়েছো!”
৯. মার্ভ হিউজ – গ্রাহাম গুচ
স্লেজিং যদি হয় শিল্প, তবে তাতে পিকাসো ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার মার্ভ হিউজ। একবার অ্যাশেজের একটি ম্যাচে হিউজের বলে সেভাবে সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না ইংলিশ ব্যাটসম্যান গ্রাহাম গুচ। টানা কয়েকটা বল পরাস্ত হলেন একেবারে, একদম টাচই করাতে পারলেন না ব্যাটে! বিরক্ত হয়ে হিউজ বলে উঠলেন, “তার চেয়ে একটা পিয়ানো ছুঁড়ে মারি? দেখি সেটা অন্তত বাজাতে পারো কিনা!”
১০. মার্ভ হিউজ – জাভেদ মিয়াঁদাদ
আরেক দফা মার্ভ হিউজ। এবারের ঘটনাটি ১৯৯০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট চলাকালীন ঘটে। জাভেদ মিয়াঁদাদ তখন তার ক্যারিয়ার সায়াহ্নে উপস্থিত, ফর্মটাও সেরকম ভালো যাচ্ছিলো না। তবু স্ট্র্যাটেজির অংশ হিসেবেই যেন ক্রিজে এসেই তাতিয়ে দিলেন হিউজকে, বললেন, “মার্ভ, তোমাকে দেখে বিকট মোটা বাস কন্ট্রাক্টরের মতো লাগছে!”
কি অদ্ভুত, সেভাবে কোনো গুরুতর উত্তর মুখে দিলেন না হিউজ! তবে এর কিছুক্ষণ পর হিউজই মিয়াঁদাদকে ফিরিয়ে দিলেন দারুণ এক ডেলিভারিতে, আর তারপর মিয়াঁদাদের পাশ দিয়ে দৌড়ে গিয়ে সামনে দাঁড়ালেন। এরপর হাতটা মিয়াঁদাদের সামনে পেতে শ্লেষমাখানো কণ্ঠে বলতে শুরু করলেন, “টিকেট প্লিজ!”
১১. মার্ভ হিউজ – রবিন স্মিথ
এবারের ঘটনাও সেই মার্ভ হিউজেরই, তবে এবার তিনি ঘটালেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান রবিন স্মিথের সঙ্গে। ১৯৮৯ সালে লর্ডসে অ্যাশেজের দ্বিতীয় ম্যাচ। হিউজের বলে সেভাবে সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না রবিন, হিউজ তাকে মাঝেমধ্যেই বেশ সমস্যায় ফেলছিলেন ! এর মধ্যে একটি বল ব্যাটে-বলে করতে না পারায় হিউজ বাক্যবাণ ছুড়লেন, “ব্যাটিংয়ের কিচ্ছুটা তো পারো না!”
পরের বলেই রবিন হাঁকালেন দারুণ একটা বাউন্ডারি। এরপর হিউজকে ডেকে বললেন, “আমাদের জুটিটা কিন্তু দারুণ জমেছে! আমি ব্যাটিংয়ের ‘ব’টাও করতে পারি না, আর তুমি বোলিংয়ের ‘ব’টাও করতে পারো না!”
১২. মাইকেল আথারটন – ইয়ান হিলি
আথারটন প্রথমবারের মতো গিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া সফরে। ব্যাটিং করতে নামার পর একটি বলে প্রবল এক কট বিহাইন্ড আবেদনের মুখে পড়েও ক্রিজ থেকে বিন্দুমাত্র নড়েননি আথারটন, আম্পায়ারও ‘নট আউট’ ঘোষণা করে দিয়েছেন। ক্রুদ্ধ-বিরক্ত হয়ে অজি উইকেটকিপার ইয়ান হিলি এসে দাঁত কিড়মিড় করে বললেন, “তুই একটা নিম্নশ্রেণীর প্রতারক!” ঠোঁটের কোণে দুষ্টু একটা হাসি দিয়ে হিলিকে আথারটন উত্তর দিলেন, “যস্মিন দেশে যদাচার, বুঝলে ভাইয়া!”
১৩. ফিল টাফনেল – ক্রেইগ ম্যাকডারমট
ইংলিশ ফাস্ট বোলার ফিল টাফনেল ছিলেন ভক্তদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। তবে ক্রেইগ ম্যাকডারমটের সাথে তার সম্পর্কটা খুব ভালো ছিলো, সেটা অবশ্য দাবি করা যায় না! ১৯৯১ সালে পেসারদের স্বর্গরাজ্যে অ্যাশেজের একটি টেস্ট চলছিলো, ম্যাকডারমট আগুন ঝড়াচ্ছিলেন সেদিন। টাফনেল যে ব্যাট হাতে খুব ভালো ছিলেন, সেটাও বলা যায় না। ফলে ক্রিজে আসামাত্র ম্যাকডারমট টাফনেলকে কিছুটা মানসিকভাবে পিছিয়ে দিতে চাইলেন, ছুঁড়ে দিলেন এক বাক্যবাণ, “আর এক মিনিটের মধ্যে এই পিচে ব্যাটিং করতে যাচ্ছো টাফার্স, হাসপাতালের খাবার খেতে ভাল্লাগে তো?” বলাই বাহুল্য, মাত্র তিনটা বলই টিকতে পেরেছিলেন টাফনেল। সেই ইনিংসে শেষ অবধি ম্যাকডারমট ৯৭ রানে ৮ উইকেট পান।
১৪. শেন ওয়ার্ন, ড্যারেন বেরি – মাইকেল স্ল্যাটার
নিউ সাউথ ওয়েলস বনাম ভিক্টোরিয়ার মধ্যে ম্যাচ চলছিলো শেফিল্ড শিল্ডে। ভিক্টোরিয়া দলে খেলছিলেন শেন ওয়ার্ন এবং ড্যারেন বেরি, নিউ সাউথ ওয়েলসের ব্যাটসম্যান মাইকেল স্ল্যাটার মাত্রই ক্রিজে এসেছেন। কিছুটা অস্থিরমস্তিষ্ক হিসেবে পরিচিত স্ল্যাটারকে বিরক্ত করার জন্য ওয়ার্ন অদ্ভুত এক বুদ্ধি দিলেন ব্যারিকে। দুজন মিলে হঠাৎ টাইমবোম্ব কাউন্টডাউন শুরু করলেন।
ওয়ার্নঃ টিক।
বেরিঃ টক।
ওয়ার্নঃ টিক!
বেরিঃ টক!
বেশ কয়েক ওভার ধরে একটানা টাইমবোম্ব কাউন্টডাউন শুনতে শুনতে শেষ পর্যন্ত আর নিতে পারলেন না স্ল্যাটার, ত্যক্ত-বিরক্ত-অস্থির হয়ে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে আউট হয়ে গেলেন মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে। হাসিতে ফেটে পড়লেন বেরি-ওয়ার্ন, হঠাৎ স্ল্যাটারের কানের কাছে গিয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন, “বুম!”
প্রথম পর্বঃ হঠাৎ উধাও খেলোয়াড়দের গল্প