১.
আরও এক যুগ আগেও ক্রিকেটখেলুড়ে দেশ হিসাবে আফগানিস্তানের নামডাক ছিল না, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হিসাবেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের পরিচিতি ছিল। কয়েকজন প্রতিভাবান ক্রিকেটারের হাত ধরে তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হয়। অনেকে তো তাদের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন টেপ-টেনিস বল দিয়ে ক্রিকেট খেলে। ছিল না কোনো আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষক, মাঠের স্বল্পতা, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তাসহ নানাবিধ জটিলতা থাকা সত্ত্বেও নিজেদের প্রচেষ্টায় তারা উঠে এসেছে। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী, মুজিব-উর রহমানের মতো ক্রিকেটারদের বদৌলতে ক্রিকেটখেলুড়ে দেশ হিসাবে আফগানিস্তান খুব দ্রুত পরিচিতিও লাভ করছে।
কোনো রকম কাঠামো ছাড়াই আফগানিস্তান বেশ কিছু প্রতিভাবান ক্রিকেটারের সন্ধান পেয়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগ ক্রিকেটার বোলিং অলরাউন্ডার। প্রকৃত ব্যাটসম্যান বলতে যা বুঝায়, তার দেখা খুব একটা পায়নি আফগানরা। বোলারের চেয়ে ব্যাটসম্যান হওয়াটা একটু বেশি খরুচে, সেটাও কারণ হতে পারে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক মানের ব্যাটসম্যান হওয়ার জন্য সঠিক প্রশিক্ষণও দরকার।
২.
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগদের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলোর একটি ভালো দিক হলো, এখানে অনেক তরুণ ক্রিকেটার তাদের শৈশবের হিরোদের সাথে একই ড্রেসিংরুমে ওঠাবসা করতে পারেন। বিভিন্ন নামীদামী ক্রিকেটারদের সান্নিধ্য পাওয়ার ফলে তারা অনেক কিছুই শিখতে পারেন।
খুব কম সময়ে ক্রিকেটের নতুন পরাশক্তি হয়ে ওঠা আফগানিস্তানও গত বছর থেকে তাদের নিজস্ব টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজন করে, যেখানে অনেক নামকরা ক্রিকেটার অংশগ্রহণ করেছেন। তারকা ক্রিকেটারদের সাথে আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগে খেলে আফগানিস্তানের অনেক তরুণ ক্রিকেটার উপকৃত হয়েছেন। সেই সাথে আফগানিস্তানও বেশ কিছু তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারের সন্ধান পেয়েছে।
এমনই একজন হযরতুল্লাহ জাজাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক ২০১৬ সালে হলেও এপিএলের মধ্য দিয়েই এই বিধ্বংসী ওপেনারকে ক্রিকেট বিশ্ব চেনে। আফগানিস্তানে তাকে অনেকে আফগানিস্তানের গেইল বলে ডাকে। এই এপিএলের কারণেই নিজের শৈশবের হিরো গেইলের সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয় জাজাইয়ের।
আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগের ১৪তম ম্যাচে মোকাবেলা করে মোহাম্মদ নবীর বালখ লিজেন্ডস এবং রশিদ খানের কাবুল জওনান। এপিএলের প্রথম আসরে বালখ লিজেন্ডসের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন ‘টি-টোয়েন্টির রাজা’ ক্রিস গেইল। অন্যদিকে, রশিদ খানের কাবুল জওনানের হয়ে খেলেছেন হযরতুল্লাহ জাজাই। দুই দলের প্রথম দেখায় ক্রিস গেইল ছিলেন না, তাই শৈশবের হিরোর সাথে জাজাইয়ের দেখা হয়নি। আসরের ১৪তম ম্যাচের আগে গেইলের সাথে দেখা করার সুযোগ পান জাজাই। তার দলের অধিনায়ক রশিদ খান তাকে গেইলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।
“Meet Hazrat, He is a big fan of yours. Back home, they call him Afghanistan’s Gayle.”
ক্রিস গেইলের সাথে সাক্ষাতের পর জাজাই বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। নিজের আইডলের বিপক্ষে খেলতে নেমে এইদিন নিজের সেরাটা উজাড় করে দেন তিনি। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ক্রিস গেইলের ৮০ রানের উপর ভর করে বালখ লিজেন্ডস ২৪৪ রান সংগ্রহ করে। বিশাল রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছিলেন হযরতুল্লাহ জাজাই। মাত্র ১২ বলে অর্ধশতক হাঁকানোর পথে বাঁহাতি স্পিনার আব্দুল্লাহ মাজারির ছয় বলে ছয়টি ছয় হাঁকান তিনি। স্বপ্নের নায়কের সাথে সাক্ষাতের পরই রেকর্ডবুকে তার নামের পাশেই নাম লেখান তিনি। টি-টোয়েন্টিতে জাজাই ছাড়াও ক্রিস গেইল এবং যুবরাজ সিংও ১২ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়েছিলেন। ক্রিস গেইল ২০১৬ সালে বিগ ব্যাশে মেলবোর্ন রেনেগেডসের হয়ে ১২ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়েছিলেন, এবং যুবরাজ ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছয় বলে ছয়টি ছয় হাঁকানোর পাশাপাশি ১২ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়েছিলেন।
প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে জাজাইসহ মোট ছয়জন ব্যাটসম্যান ছয় বলে ছয়টি ছয় হাঁকিয়েছেন, টি-টোয়েন্টিতে যার সংখ্যা তিনজন। ২০০৭ সালে যুবরাজ সিং-এর পর ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের রস হোয়াইটলি ছয় বলে ছয়টি ছয় হাঁকিয়েছিলেন।
ফিরে আসি কাবুল জওনান এবং বালখ লিজেন্ডসের ম্যাচ প্রসঙ্গে। জাজাই উড়ন্ত সূচনা পেলেও নিজের ইনিংসকে বড় করতে পারেননি। মাত্র ১৭ বলে চারটি চার এবং সাতটি ছয়ের মারে ৬২ রানের ইনিংস খেলার পর সাজঘরে ফিরে যান, যার ফলে শেষ পর্যন্ত কাবুল ২১ রানের ব্যবধানে পরাজিত হয়।
এক ওভারে ছয়টি ছয় হাঁকানো সম্পর্কে জাজাই বলেন,
‘আমি সাধারণত প্রথমে দেখেশুনে খেলি। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৪৫ রান। তাই আমি সব বল মেরে খেলতে চেয়েছিলাম।’
মাজারি সম্পর্কে বলেন,
‘তিনি খুব অভিজ্ঞ বোলার। তিনি শুরু থেকেই আমাকে সিঙ্গেল রান না দিয়ে আউট করার জন্য বোলিং করেছেন।’
জাজাই খুব একটা ভুল বলেননি। মাজারি প্রথম দুই বল পুল লেন্থে করে ছয় হজম করেছিলেন। এরপর লেগ সাইডে প্যাড বরাবর করতে গিয়ে ওয়াইড দিলেন। যদি ঐ বল ব্যাটে-বলে হতো, তাহলে হয়তো ছয়টি ছক্কা হজম করতে হতো না তাকে। কারণ বলটিকে জাজাইও চার হাঁকানোর মতো করে খেলেছিলেন। এরপর বাকি চার বলেও দৃশ্যপট বদলায়নি। প্রান্ত বদল, ইয়র্কার সবকিছু চেষ্টা করেও জাজাইকে আটকে রাখতে পারেননি তিনি। হতাশা এবং বিস্ময়ে মিশ্রিত হাসি দিয়েই নিজের ওভার শেষ করেছিলেন।
ক্রিস গেইলের সামনে এমন তাণ্ডবলীলা চালানোর পর তার কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছিলেন জাজাই। তিনি আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগে বেশ কয়েকটি ম্যাচেই ঝড়ো ব্যাটিং করেছিলেন। আসরে দশ ম্যাচে একটি শতকসহ ৩২২ রান করেছিলেন ১৯৩.৯৭ স্ট্রাইক রেটে। একই আসরে গেইলের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৭২.১৩।
৩.
হজরতুল্লাহ জাজাই বিপিএলে প্রথমবারের মতো খেলতে এসে প্রথম দুই ম্যাচেই ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন। প্রথম ম্যাচে ৪১ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও ৩৬ বলে ৫৭ রান করেছিলেন। এরপর অবশ্য আর বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। পরবর্তী পাঁচ ইনিংসে যথাক্রমে ১, ৪, ৬, ১ এবং ১৭ রানে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন।
বিপিএলের পর জাজাই পরবর্তী ম্যাচ খেলেন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। এতদিন বল হাতে প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করতো আফগানিস্তান। জাজাইয়ের আবির্ভাবের পর ব্যাট হাতেও উড়ন্ত সূচনা পাচ্ছে আফগানিস্তান। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে নিজের অভিষেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২৪ বলে ১৮ রান করেছিলেন। এরপর ফিটনেসের জন্য দল থেকে বাদ পড়েন। ২০১৮ সালের ২০শে আগস্ট আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন। প্রায় দুই বছর দলে ডাক পেয়ে মাত্র ৩৩ বলে আটটি চার এবং ছয়টি ছয়ের ৭৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সিরিজের পরের টি-টোয়েন্টিতেও বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ঐ ম্যাচে মাত্র ৫৪ বলে ৮২ রান করেছিলেন তিনি।
হযরতুল্লাহ জাজাই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজেও অসাধারণ ব্যাটিং করেছিলেন। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ৬২ বলে ১১টি চার এবং ১৬টি ছয়ের মারে অপরাজিত ১৬২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন, যা টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয় হাঁকানোর রেকর্ডটিও তার দখলে। তিনি এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের হয়ে ছয়টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন, যার মধ্যে একটি শতক ও দু’টি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৭৫.৬০ ব্যাটিং গড়ে এবং ১৯২.৮৫ স্ট্রাইক রেটের সাহায্যে ৩৭৮ রান সংগ্রহ করেছেন। মাত্র ছয় ম্যাচ খেলেই তিনি টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যানদের র্যাংকিংয়ে সাত নাম্বারে উঠে এসেছেন।
৪.
আফগানিস্তানের অন্যান্য ক্রিকেটারদের মতো তারও ক্রিকেটে পথচলা শুরু হয়েছিলো টেপ-টেনিস বল দিয়ে খেলে। ‘আফগানিস্তানের গেইল’ নামে পরিচিত জাজাই কাবুল টেপ-টেনিস বলের টুর্নামেন্টগুলোতে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। টেপ-টেনিস বলে দশ ওভারের ম্যাচে তার লম্বা লম্বা ছয় দেখার জন্য অনেক দর্শক জড়ো হতো। ওভারপিচ কিংবা শর্ট বল করলেই তিনি সজোরে হাঁকিয়ে বল সীমানা ছাড়া করতেন।
প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বলে ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছিলেন পাঁচ বছর আগে। তখনই প্রথম হেলমেট, প্যাড, গার্ডস, গ্লাভস পরেন তিনি। আফগানিস্তানের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্য তার প্যাড এবং হেলমেটে আফগানিস্তানের পতাকার রঙ লাগাতেন। আফগানিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখেছিলেন ২০১০ সালে। যখন তিনি প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে দেখেন, তখনই ঠিক করেন, এই জার্সি আমারও চাই।
অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট খেলার সময়ও সেভাবে কারো কাছ থেকে পরামর্শ পাননি জাজাই। সপ্তাহে তিন-চারটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতেন সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে পিচে। তার ক্লাবেও কোনো কোচ ছিল না। টিভিতে খেলা দেখে এবং বিভিন্ন ভিডিও দেখে তিনি শিখতে থাকেন। ক্রিকেট খেলাটা তখন তার কাছে বিলাসিতা ছাড়া কিছুই ছিলোনা। কারণ ক্রিকেট খেলে তিনি কোনো টাকা আয় করতেন না। দিনে ক্রিকেট খেলে রাতে মোবাইল সার্ভিস টাওয়ারে দারোয়ানের চাকরি করতেন জাজাই।
তিনি নিজ শহরের বাইরে প্রথম পরিচিতি লাভ করেন ২০১৪ সালে আন্তঃজেলা টুর্নামেন্টে। জালালাবাদে খেলতে গিয়ে সেখানে নিজের দানবীয় ব্যাটিং প্রদর্শন করে সবার সুদৃষ্টিতে পড়েন। জালালাবাদ যখন ২৫০ রানের বেশি রান তুললো, তখন অনেকেই তাদের জয় অবধারিত ভেবে নিয়েছিল। কিন্তু জাজাই দুর্দান্ত শতক হাঁকিয়ে জয় এনে দিয়েছিলেন তার দলকে। এরপর তার টিম ম্যানেজার এবং ভবিষ্যতে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান তাকে চাকরি ছেড়ে ক্রিকেটে মনোযোগ বাড়াতে বলেন।
৫.
শুধুমাত্র খেলার ধরন এক হওয়ার কারণেই তিনি ক্রিস গেইলকে নিজের আইডল মানেন, তা বললে ভুল হবে। গেইলের প্রতি তার ভালো লাগা শুরু হয় যখন তিনি গেইলকে টেস্টে ৩৩৩ রানের ইনিংস খেলতে দেখেন। টিভিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা গেইলের ইনিংসটি দেখেই তার ফ্যান হয়ে যান তিনি। এই সম্পর্কে তিনি বলেন,
‘এটা অবিশ্বাস্য, এরকম একজন দ্রুতগতির রানসংগ্রাহক এত লম্বা ইনিংস খেলার সক্ষমতা রাখেন।’
হযরতুল্লাহ টেপ-টেনিসের বলে দশ ওভারের ম্যাচ বেশি খেলতেন বলে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে এখনও লম্বা সময় ধরে ব্যাট করতে পারেননি। গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কোচ এবং তারকা ক্রিকেটারদের সান্নিধ্যে এসে বড় ইনিংস খেলার অনেক পরামর্শ নিয়েছেন নিশ্চয়ই। আসন্ন বিশ্বকাপে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করতে হলে যে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে! এখন পর্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ৭৬ ইনিংসে ব্যাট করে মাত্র দুইবার শতাধিক বল মোকাবেলা করেছেন তিনি। রান অবশ্য ঠিকই করেছেন; প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনটি, টি-টোয়েন্টিতে দুইটি এবং লিস্ট-এ ক্রিকেটে একটি শতক হাঁকিয়েছেন (সেটাও মাত্র ৫০ বলে)।
আফগানিস্তান এখন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলছে। এই সিরিজে ভালো করতে পারলে আসন্ন বিশ্বকাপেও জায়গা করে নিবেন জাজাই। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ওয়ানডেতে বেশি সময় ধরে ব্যাটিং করলে কী হবে?
তার উত্তরটাও স্বভাবসুলভ ছিল,
‘আমি যদি ৩০ ওভার ব্যাটিং করি, তাহলে আমি ২০০-র কাছাকাছি রান করবো।’
তিনি যেভাবে ব্যাট করেন, তাতে এই কথায় মোটেও আশ্চর্য হওয়া যাবে না। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক হাঁকানোর পথে সেটারই ইঙ্গিত দিলেন। মাত্র ৪৩ বলে পাঁচ চার এবং পাঁচ ছয়ে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সিরিজের বাকি তিন ম্যাচের উপর নির্ভর করছে তার বিশ্বকাপ ভাগ্য।
তার বয়সী অন্যান্য আফগান ক্রিকেটারের মতো তিনিও টিভি এবং ইউটিউব দেখে খেলা শিখেছেন। তিনি জানেন, কীভাবে বড় শট খেলা যায়। এখন তার উন্নতির জন্য রয়েছেন বিশ্বমানের কোচ। বড় ইনিংস কিংবা ৩০ ওভার পর্যন্ত কীভাবে খেলা যায়, সেটাই তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নেবেন, সেটাই প্রত্যাশিত।