ফিফা বিশ্বকাপ আসে প্রতি চার বছরে একবার, এছাড়া এই মাঝামাঝি সময়ে বসে ইউরোপিয়ান কাপ কিংবা কোপা আমেরিকার আসর। আর বছরের বাকি সময়টুকু জুড়ে ফুটবল বিশ্ব মাতিয়ে রাখে বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া লিগ। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগ, স্পেনের লা লিগা, ইতালিতে সিরি এ, জার্মানির বুন্দেসলিগা ও ফ্রান্সের লিগ ওয়ানের মতো আসরগুলো মৌসুমজুড়ে মাতিয়ে রাখে সারাবিশ্বের অগণিত ভক্তদের।
সেই উত্তেজনাকে আরো উস্কে দেওয়ার জন্য মৌসুমে দু’বার বসে খেলোয়াড় কেনাবেচার হাট। সেসময় বিভিন্ন ক্লাব কিনে নেয় তাদের পছন্দের খেলোয়াড়দের বা কোনো খেলোয়াড় চাইলে ট্র্যান্সফারের নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে যোগ দেন তার পছন্দের দলে। গতকাল শেষ হয়ে গেল বিশ্বের নামীদামী লিগগুলোর এই মৌসুমের শীতকালীন ট্রান্সফার উইন্ডো। চলুন তাহলে জেনে নেই, এই উইন্ডোর গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের ঘটনার কথা।
- ডিয়েগো কস্তা – চেলসি থেকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ (লেনদেনের পরিমাণ অপ্রকাশিত)
- ভার্জিন ফন ডাইক – সাউদাম্পটন থেকে লিভারপুল (৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড)
- অ্যাড্রিয়েন সিলভা – স্পোর্টিং লিসবন থেকে লেসটার সিটি (২২ মিলয়ন পাউন্ড)
- চেংক টসান – বেসিকটাস থেকে এভারটন (২৭ মিলিয়ন পাউন্ড)
- রস বার্কলি – এভারটন থেকে চেলসি (১৫ মিলিয়ন পাউন্ড)
- কার্লোস তেভেজ – সাংহাই শেনহুয়া থেকে বোকা জুনিয়রস
- কেভিন মিরালাস – এভারটন থেকে অলিম্পিয়াকস (লোন)
- ফিলিপে কৌতিনহো – লিভারপুল থেকে বার্সেলোনা (১৪৬ মিলিয়ন পাউন্ড)
- ফ্রান্সিস কোকালিন – আর্সেনাল থেকে ভ্যালেন্সিয়া (লেনদেনের পরিমাণ অপ্রকাশিত)
- আর্দা তুরান – বার্সেলোনা থেকে ইস্তানবুল বাসাকসেহির (লোন)
- থিও ওয়ালকট – আর্সেনাল থেকে এভারটন (২০ মিলিয়ন পাউন্ড)
- আলেক্সিস সানচেজ – আর্সেনাল থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (বিনিময়)
- হেনরিখ মিখতারিয়ান – ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে আর্সেনাল (বিনিময়)
- অ্যারন লেনন – এভারটন থেকে বার্নলি (লেনদেনের পরিমাণ অপ্রকাশিত)
- বাবা রাহমান – চেলসি থেকে শালকে (লোন)
- ড্যানিয়েল স্টারিজ – লিভারপুল থেকে ওয়েস্ট ব্রোম (লোন)
- জেরার্ড ডিউলোফিউ – বার্সেলোনা থেকে ওয়াটফোর্ড (লোন)
- এমারসন পালমেইরি – রোমা থেকে চেলসি (১৭ মিলিয়ন পাউন্ড)
- আইমেরিক লাপোর্ত – অ্যাটলিক বিলবাও থেকে ম্যানচেস্টার সিটি (৫৭ মিলিয়ন পাউন্ড)
- পিয়েরে-এমরিক অবামেয়াং – বুরুশিয়া ডর্টমান্ড থেকে আর্সেনাল (৬০ মিলিয়ন পাউন্ড)
- অলিভিয়ে জিরুড – আর্সেনাল থেকে চেলসি (লেনদেনের পরিমাণ অপ্রকাশিত)
- লুকাস মৌরা – পিএসজি থেকে টটেনহাম হটসপার (২৩ মিলিয়ন পাউন্ড)
- এলিয়াক্যুইম মাঙ্গালা – ম্যানচেস্টার সিটি থেকে এভারটন (লোন)
এই উইন্টার ট্রান্সফার উইন্ডোর সবচেয়ে অবাক করা ঘটনা ছিল চিলিয়ান স্ট্রাইকার সানচেজের আর্সেনাল ছেড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়া। মৌসুমের শুরু থেকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল সানচেজ আর্সেনাল ছাড়তে চাচ্ছেন এবং সবারই ধারণা ছিল, তিনি যোগ দেবেন তার প্রাক্তন কোচ পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটিতে। শেষমেশ তাকে উঠতে হয়েছে সিটির শত্রুশিবির ওল্ড ট্রাফোর্ডে। তার বিনিময়ে আর্সেনালে যোগ দিয়েছেন হেনরিখ মিখতারিয়ান। আর সানচেজের অভাব পূরণ করতেই আর্সেনাল ৬০ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময় ডর্টমুন্ড থেকে নিয়ে এসেছে পিয়েরে-এমরিক অবামেয়াংকে। তবে এর অনেক আগেই আর্সেনাল ক্লাব বিসর্জন দিয়েছে ১২ বছরের পুরনো খেলোয়াড় থিও ওয়ালকটকে এবং একদম শেষ পর্যায়ে এসে ফরাসি স্ট্রাইকার অলিভিয়ে জিরুডকে।
এছাড়া এই উইন্ডোতে সবচেয়ে বিশাল অংকের টাকা গুণে কৌতিনহোকে ঘরে তুলেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা। খুব সম্ভবত আগামী মৌসুমে ক্লাব ছাড়ছেন অথবা অবসর নিচ্ছেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। অনেকটা তার জায়গা পূরণ করতেই বার্সেলোনা দলে ভিড়িয়েছে কৌতিনহোকে।
এদিকে অনেকেই ধারণা করছিলেন সানচেজের পাশাপাশি আর্সেনাল ছাড়ছেন জার্মানির মেসুত ওজিল। তাদেরকে অবাক করে দিয়ে ক্লাবের সাথে নতুন চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন তিনি। আগামী ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি আর্সেনালের সাথে চুক্তিবদ্ধ এবং ক্লাব তাকে প্রতি সপ্তাহে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার পাউন্ড পারিশ্রমিক দেবে।
ফিচার ইমেজ: Skysports (Collage)