- মানুষের মৃত্যুর সময় সম্পর্কে তাদের জিন থেকে সূত্র পাওয়া যাবে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
- স্পেনের বার্সেলোনায় সেন্টার ফর জেনোমিক রেগুলেশন এর এক গবেষণায় মৃত্যুর পরে জিনের কার্যক্রম জরিপ করে স্বতন্ত্র প্যাটার্ন দেখতে পাওয়া যায়, যা থেকে একজন মানুষের মৃত্যুর সময় বের করা যেতে পারে।
- ব্যাপকভাবে নমুনা বিশ্লেষণ ও যন্ত্রের কাজের পরে এই গবেষণার ফলাফল ন্যাচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত হয়।
আমাদের সম্পর্কে প্রতিটি তথ্য আমাদের জিনে অন্তর্ভুক্ত থাকে। মৃত্যুর পরে জিনের কার্যক্রমে পরিবর্তন নির্ণয়ের জন্য সিআরজি কম্পিউটেশনাল জীববিজ্ঞানী রডেরিক গুইগো ও তার সহকর্মীরা ৩৯ জনের থেকে প্রায় ৯ হাজার নমুনা টিস্যু সংগ্রহ করেন। এর সাথে তারা টিস্যু দাতাদের মৃত্যু ও নমুনাগুলো সংরক্ষণের সময় জেনে রাখেন।
গুইগো বলেন,“জীবের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া নির্দিষ্ট টিস্যুভিত্তিক।” মৃত্যুর পর ৬০০ এর বেশি মাংসপেশীর জিনের সক্রিয়তা হয় বেড়ে যায় অথবা কমে যায়। অপরদিকে মস্তিষ্ক ও প্লীহার জিনের কার্যক্রমে যৎসামান্য পরিবর্তন দেখা গেছে।
গুইগো ও তার সহকর্মীরা প্রতিটি টিস্যুর প্যাটার্নের অনন্য পরিবর্তনকে ব্যক্তির মৃত্যুর সময় নির্ধারণে কাজে লাগান। এ ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী কতটা সঠিক হতে পারে, তা নির্ণয়ে একটি মেশিন লার্নিং মডেল তৈরি করে, যা ৩৯৯ জন মানুষের জিনের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করেন।
অন্য ১২৯ জনের মৃত্যুর সময় নির্ণয়ে তারা যে সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, সেটি দেখায় বেশিরভাগ জিনের কার্যক্রম মৃত্যুর ৭ থেকে ১৪ ঘন্টা পরে বেড়ে যায় অথবা কমে যায়। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে রক্ত যেখানে জিনের কার্যক্রম ডিএনএ তৈরি, রোগ প্রতিরোধের প্রতিক্রিয়া ও বিপাক ক্রিয়া নমুনা সংগ্রহের প্রায় ৬ ঘণ্টা আগে মৃত্যুর সময় নির্দেশ করে।
সাম্প্রতিক সময়ে মানব জিনোম সংক্রান্ত গবেষণাগুলো এই গবেষণায় কাজে লেগেছে। জিনোমিক সূত্র সাজিয়ে বিজ্ঞানীরা কী কী করতে করতে পারবেন এই গবেষণাটি তার সূচনামাত্র। গুইগো বলেন, “এ মুহূর্তে আমাদের কাজ শুধু অ্যাকাডেমিক অনুশীলনের জন্য।”
মৃত্যুর যথাযথ সময় নির্ধারণ করতে পারলে তা নিঃসন্দেহে ফরেনসিক বিশ্লেষণে কাজে দেবে। মৃত ব্যক্তির জিন ব্যবহার করে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণ অপরাধমূলক তদন্তকে ঘিরে গড়ে ওঠা অনিশ্চয়তাও এড়ানো সম্ভব।
ফিচার ইমেজ: New Scientist