- গত বুধবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে দলীয় প্রধান পদে নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট।
- গত বছর তাকে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক দেওয়া দুর্নীতির দায়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর রায়ের ছয় মাস পরে আবার এ রায় দেওয়া হলো।
নতুন এই নিয়ম আসন্ন মার্চের ৩ তারিখের সিনেট নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। কেননা বিরোধীদলগুলোর মতে, এর ফলে ক্ষমতায় থাকা পাকিস্তানি মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) দলের প্রার্থী, যাদেরকে নওয়াজ শরীফ মনোনীত করেছেন, তারা যোগ্যতা হারায়। সিনেটে ক্ষমতা নিতে পারলে পিএমএল-এন সংবিধান পরিবর্তন করে এ বছরে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নওয়াজ শরিফকে আবার ক্ষমতায় আনতে সক্ষম হবে।
অযোগ্য রাজনীতিবিদদেরকে দলীয় প্রধান হতে অনুমতি প্রদান করে এমন একটি আইনের মাধ্যমে তিনি দলীয় ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু গতকালের রায়ের ফলে এটি আর বহাল থাকবে না। তার ছেলের মালিকানায় থাকা একটি কোম্পানি থেকে প্রতি মাসে ১০ হাজার আমরাতি দিরহাম আয়ের ব্যাপার না জানানোর কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল।
প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনকে অফিসের সকল দলিলপত্র থেকে পিএমএল-এন এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নওয়াজ শরিফের নাম অপসরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে নওয়াজ শরিফের নেওয়া সকল পদক্ষেপ ও আদেশ বাতিল বলে ঘোষিত হয়।” শরিফ সকল প্রকার অপরাধ অস্বীকার করে বলেন যে, তার পরিবারের সৌভাগ্য বৈধভাবেই অর্জিত।
জাতীয় নির্বাচন জনসাধারণের ভোটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হলেও, সিনেট নির্বাচন সংসদ সদস্যদের ভোট এবং পাকিস্তানের চার প্রদেশের স্থানীয় বিধানসভার ভোটেই সম্পন্ন হয়।
এদিকে সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল বুধবারের এ রায়কে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতির বিপক্ষে জয় বলে উল্লাস করছে। অন্যদিকে নওয়াজ শরিফের দলের সদস্যরা এর বিরোধিতা করেছেন। তার দলের একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, “এটি পাকিস্তান। নওয়াজ শরিফ কারাগারের প্রকোষ্ঠে থাকলেও তিনি পিএমএল-এন পরিচালনা করবেন।”
শরিফ শাসিত দলের বৈধ উপদেষ্টা জাফরুল্লাহ খান বলেন, “জনসাধারণ এবং আমাদের দলের কাছে তুলে ধরবে যে, নওয়াজ শরিফের উপর চাপ সৃষ্টি করতেই এ পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে।”
শরিফের মতে, তাকে পদচ্যুত করা তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। এর আগে তিনি দুবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন এবং প্রতিবারই অপসারিত হয়েছেন। ১৯৯৩ সালে প্রেসিডেন্টের নির্দেশে এবং ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।
ফিচার ইমেজ: Firstpost